ইউরোপ
সুইজারল্যান্ডের গ্রামে মাটির নীচে অস্ত্রভাণ্ডার, বিস্ফোরক!
মনোরম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঠাসা সুইজারল্যান্ডের কিনডের উপত্যকা। মাথার উপর উজ্জ্বল আকাশ, চারদিকে আকাশভেদী পাহাড় আর মধ্যে ছোট গ্রাম মিতহোলজৎ। এই পাহাড়ি গ্রামে মাত্র ১৭০টি পরিবার থাকে। প্রতিটি বাড়ি একই আদলে তৈরি। একতলায় গবাদি পশু আর দোতলায় নিজেদের থাকার স্থান। আল্পস পর্বতমালার পাদদেশের প্রায় সব গ্রামেই এই কায়দায় ঘরবাড়ি গড়ে উঠেছে।
ব্যস্ত জীবন থেকে ছুটি নিয়ে রাজ্যের সব দুশ্চিন্তা দূর করতে মিতহোলজৎ গ্রাম হতে পারে পর্যটকদের আদর্শ ঠিকানা। তবে গ্রামের প্রতিটি ঘরের প্রতিটি মানুষের কপালে সারাক্ষণই দুশ্চিন্তার ভাঁজ। যে কোন দিন মুছে যাবে গোটা গ্রাম। প্রতি মুহূর্ত মৃত্যুর হাতছানিকে সঙ্গে করেই তাদের বাস। ৭৪ বছর আগে ঘটা ভয়ঙ্কর ইতিহাস আজও পিছু ছাড়েনি গ্রামবাসীর।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সুইস সেনাদের অস্ত্রভাণ্ডার ছিল পাহাড়ি গ্রামটি। মাটির নীচে গোপনে অস্ত্রভাণ্ডার পরিচালনা করত তারা। সেখানে মজুত ছিল প্রচুর পরিমাণ বিস্ফোরক। ১৯৩৯ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত চলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। গোলা-বারুদের রমরমা দেখেই দিন কাটিয়েছে গ্রামবাসী। ১৯৪৫ সালে যুদ্ধ সমাপ্তি হলে বাসিন্দারা ভেবেছিল আর কোন বিস্ফোরণ, গোলাগুলির সম্মুখীন হতে হবে না।
তবে দুঃস্বপ্নের রাত দুই বছর পর আবারো ফিরে আসে গ্রামবাসীর জীবনে। ১৯৪৭ সাল। গভীর রাত। আচমকা কেঁপে ওঠে পুরো গ্রাম। গ্রামবাসী ভেবেছিল ভূমিকম্প হয়েছে। কিন্তু বাইরে বেরিয়ে যে দৃশ্য দেখেছিল তা আজও চোখের সামনে বিভীষিকা। চারদিক দাউ দাউ করে জ্বলছিল। জীবন বাঁচানোর মরিয়া চেষ্টায় হুড়োহুড়ি লেগে যায় বাসিন্দাদের মধ্যে।
এক রাতেই পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল পুরো গ্রাম। মারা গিয়েছিল অনেক মানুষ। আহতের সংখ্যাও ছিল অসংখ্য। গ্রামের এমন কোন ঘর অবশিষ্ট ছিল না যা আগুন থেকে রক্ষা পেয়েছিল।
পরে জানা যায়, অস্ত্রভাণ্ডারে মজুত বিস্ফোরকে বিস্ফোরণ ঘটেছিল। রাতারাতি প্রায় জনশূন্য হয়ে গিয়েছিল গোটা গ্রাম। সরকারি হিসেবে, সে দিন সাত হাজার টন বিস্ফোরকে বিস্ফোরণ ঘটেছিল। পরের বছর ১৯৪৮ সালে গ্রামটিকে নিরাপদ ঘোষণা করে বসতি গড়ে তোলার সবুজ সঙ্কেত দেয় সুইস সরকার।
একে একে গ্রামে ফিরে আসে বাসিন্দারা। আবারো নতুন করে বাড়ি বানিয়ে নেয় তারা। আর কোনও বিপদ আসবে না বলে অনেকটা নিশ্চিত ছিল। তেমনই আশ্বাস মিলেছিল সুইস সরকার থেকেও। তাই সঞ্চয়ের অনেকটা খরচ করে স্বপ্নের বাড়ি বানিয়েছিল অনেকেই।
২০১৮ সালে আবারো গ্রামটিতে প্রচুর পরিমাণ বিস্ফোরকের হদিশ পায় সুইস সরকার। এখনও গোপন অস্ত্রভাণ্ডারে সাড়ে তিন হাজার টন বিস্ফোরক রয়েছে। এমনটাই জানিয়েছে সুইস সরকার। ওই সময় গ্রাম খালি করে বিস্ফোরক অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরুর ঘোষণাও দেওয়া হয়। তা না করলে যে কোন দিন আবারো ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে উঠতে পারে পুরো গ্রাম। তা সত্ত্বেও ভিটে ছাড়তে নারাজ গ্রামবাসীর একাংশ।
সুইস সরকারের হিসেবে, নিরাপদে বিস্ফোরক অন্যত্র সরিয়ে নিতে ১০ বছর লেগে যাবে। এই ১০টা বছর ভিটেছাড়া হয়েই কাটাতে হবে গ্রামবাসীকে। এজন্য ক্ষতিপূরণ দিতেও রাজি সুইস সরকার। তবে এতে রাজি হয়নি গ্রামবাসীর একাংশ। বিপদের ঝুঁকি নিয়েই গ্রামেই পড়ে আছে তারা।
এসএন
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাজ্যে অভিবাসীদের পক্ষে হাজারো মানুষের মিছিল
যুক্তরাজ্যে বার্মিংহাম, লিভারপুল, শেফিল্ড, ব্রিস্টলে ও লন্ডনসহ আরো বিভিন্ন শহরে হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে অভিবাসীদের পক্ষে ও অতি ডানপন্থিদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন । খবর ডয়চে ভেলে।
বুধবার ( ৭ আগস্ট ) সন্ধ্যায় হাজার হাজার মানুষ হাতে পোস্টার নিয়ে রাস্তায় নামেন। সেখানে বর্ণবাদীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ছাড়াও অভিবাসী, শরণার্থী ও যারা আশ্রয় নিতে চান, তাদের স্বাগত জানাবার কথাও বলা হয়েছিল।
মেট্রোপলিটান পুলিশ জানিয়েছে, লন্ডনে কয়েক হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। তাছাড়া সম্ভাব্য হামলা সামলাবার জন্য এক হাজার তিনশ বিশেষ প্রশিক্ষিত বাহিনীকে ‘স্ট্যান্ড বাই’ হিসাবে রাখা হয়েছে।
লন্ডনের ফিঞ্চলিতে মিছিলে নিরাপত্তা বজায় রাখতে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অতি দক্ষিণপন্থিদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন মিছিলে যোগদানকারীরা। মিছিলকে ঘিরেপূর্ব লন্ডনের একটি অভিবাসন কেন্দ্রর সামনে প্রচুর মানুষ জমায়েত হয়েছিলেন। সেখানে ফ্যাসিবাদীদের বিরুদ্ধে স্লোগান ওঠে। এছাড়াও মানুষ সোচ্চারে বলেন, ‘অভিবাসন কোনো অপরাধ নয়’, ‘অতি ডানপন্থিদের থামানো হোক’।
প্রধানমন্ত্রী স্টারমার বলেছেন, যে দাঙ্গা হয়েছে তা সরকারের অভিবাসন নীতির জন্য নয়, এটা অতি ডানপন্থিদের গুণ্ডামির জন্য হয়েছে।
জেডএস/
ইউরোপ
টিউলিপের পর ব্রিটিশ মন্ত্রিসভায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত রুশনারা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি টিউলিপ সিদ্দিকের পর যুক্তরাজ্যের মন্ত্রিসভায় জায়গা পেলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ এমপি রুশনারা আলী।
যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভায় বাসস্থান, কমিউনিটি ও স্থানীয় সরকারের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বাংলাদেশি অধ্যুষিত বেথানাল গ্রীন বো আসন থেকে টানা পাঁচবার এমপি নির্বাচিত হওয়া রুশনারাকে।
মন্ত্রী হিসেবে টিউলিপ সিদ্দিকের নাম ঘোষণার ঘণ্টাদুয়েক পরেই রোশনারা আলীর মন্ত্রীদের সংবাদ প্রকাশিত হয়।
মন্ত্রী হিসেবে টিউলিপ সিদ্দিকের নাম ঘোষণার ঘণ্টাদুয়েক পরেই রোশনারা আলীর মন্ত্রীদের সংবাদ প্রকাশিত হয়।
যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এমপি রুশনারা আলীর জন্ম সিলেটে। তার বয়স যখন সাত বছর তখন যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমায় তার পরিবার। তিনি অক্সফোর্ডের সেন্ট জনস কলেজ থেকে দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতিতে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন।
রোশনারা আলী যুক্তরাজ্যে প্রথম বাংলাদেশি এমপি হিসাবে নির্বাচিত হয়ে ইতিহাসে নাম লিখিয়েছিলেন। যুক্তরাজ্যে বাঙালির জয়যাত্রা নিয়ে উঠে আসে রোশনারা আলীর নাম। এরপর টিউলিপ সিদ্দিক, রূপা হক, আপসানা বেগমসহ চার বাঙালি এমপি পেয়েছে বাঙালি কমিউনিটি।
গেলো সপ্তাহে (৪ জুলাই) অনুষ্ঠিত যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে লেবার পার্টি থেকে টানা পঞ্চমবারের মতো এমপি নির্বাচিত হন রুশনারা আলী। তিনি ২০১০ সাল থেকে চলতি বছর পার্লামেন্ট বাতিল করা পর্যন্ত বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড বো-এর সংসদ সদস্য (এমপি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি লেবার পার্টির একজন সদস্য।
২০১০ থেকে আন্তর্জাতিক উন্নয়নবিষয়ক ছায়ামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন রুশনারা আলী। এরপর তিনি ২০১৩ সালের অক্টোবরে ছায়া শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী নিযুক্ত হন।
জেএইচ
ইউরোপ
গিনেস বুকে বিশ্বের দীর্ঘতম বাইসাইকেলের নাম লিখালো ৮ প্রকৌশলী
এতোদিন বিশ্বের দীর্ঘতম সাইকেল তৈরির রেকর্ড দখলে রেখেছিলো অস্ট্রেলিয়ার বার্নি রায়ান। তিনি ২০২০ সালে ১৫৫ ফুট দীর্ঘ ৮ ইঞ্চি চওড়া সাইকেল বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলো গোটা বিশ্বকে। এবার নেদারল্যান্ডসের ৭ জন প্রকৌশলীকে সঙ্গে করে সেই রেকর্ড ভেঙে দিলেন ইভান শাল্ক। নতুন বাইসাইকেলটি ১৮০ ফুট লম্বা, ১১ ইঞ্চি চওড়া।
চাকা আবিষ্কারের অন্যতম সেরা প্রাপ্তি হল বাইসাইকেল। দূষণে জর্জর পৃথিবীতে এর চেয়ে উপকারী যান আর হয় না। তাই বলে ১৮০ ফুট লম্বা বাইসাইকেল কে দেখেছে? দুই বা খুব বেশি হলে তিন চাকার (সার্কাসের কুশীলবরা চালান) সাইকেলই সাধারণত নজরে পড়ে। কিন্তু ৩৯ বছরের ইভান শাল্ক হৃদয়ের অন্তঃপুরে লালন করছিলেন ব্যতিক্রমী ইচ্ছে।
শৈশব থেকেই গিনেস বুকে নাম তোলার প্রতি প্রবল আগ্রহ ছিল তার। এর ফলে জন্ম হলো বিশ্বের দীর্ঘতম সাইকেলের। আদৌ কি চলে এই দু-চাকার যান?
২০১৮ সালে দীর্ঘতম সাইকেল তৈরির কাজ শুরু করেন ইভানসহ আট ইঞ্জিনিয়ার। তবে চাইলেই এই সাইকেল নিয়ে পথেঘাটে নামা যাবে না। বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে সাইকেলটির বিরাট দৈর্ঘ্যই।
ইতোমধ্যে নেটিজেনদের মন জয় করেছে ইভানের সাইকেল। আজব ‘সৃষ্টি’ ভাইরাল হয়েছে নেটদুনিয়ায়। এই বিষয়ে ইভান বলেন, ‘অন্যরা যখন আড্ডা দিয়ে সময় নষ্ট করে, আমরা তখন সৃষ্টিশীল কাজে মগ্ন থাকি।’
টিআর/