ফুটবল
শেষ হলো ইউরোপিয়ান ফুটবলের জমজমাট দলবদল
শেষ হলো ইউরোপিয়ান ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে জমজমাট দলবদল। শেষদিনও ছিলো রোামঞ্চে ভরপুর। বার্সা ছেড়ে আবারো আতলেতিকোতে পাড়ি জমিয়েছেন আতোয়ান গ্রিয়েজম্যান। মেসি-রোনালদোর ক্লাব বদল যেমন ছিলো আলোচনায়, তেমনি এমবাপ্পের জন্য ২২০ মিলিয়ন ইউরোর রিয়ালের প্রস্তাবও আলোড়ন তুলেছে।
ইউরোপিয়ান দলবদলে এমন পাগলাটে বছর কখনো দেখা যায়নি। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিস্ময়, রোমাঞ্চ আর চমকের জন্ম দিয়েছে। যার প্রায় পুরোটা অংশ জুড়ে গ্রহের দুই সেরা ফুটবলার লিওনেল মেসি ও ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো।
১০ আগস্ট। ইতিহাসের পাতায় লিখা থাকবে এ তারিখ। বার্সেলোনার সাথে ২১ বছরের সম্পর্ক ছিন্ন করে পিএসজিতে যোগ দেন লিওনেল মেসি। লা লিগার আর্থিক নীতিকে উপেক্ষা করতে পারেনি মেসি কিংবা বার্সা। তাই কেঁদে এবং কাঁদিয়ে কাতালুনিয়ার ক্লাবকে বিদায় জানান আর্জেন্টাইন জাদুকর। পাড়ি জমান প্যারিসে, তাও ফ্রি এজেন্ট হিসেবে। রাঁসের বিপক্ষে ম্যাচে অভিষেকও হয়ে গেছে এলএমথার্টির।
মেসির মতো অভিষেক না হলেও, নাটকীয়তায় ভরপুর ছিলো ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর দলবদল। য়্যুভেন্তাস ছাড়ার গুঞ্জনকে উড়িয়ে দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেছিলেন সিআর সেভেন। তবে ৯ দিন যেতেই পাল্টে যায় দৃশ্যপট। রোনালদোর এজেন্ট জোর্জে মেন্ডেস ম্যানচেস্টার সিটির সাথে আলোচনা শুরু করে। তবে সিটিজেনরা কোন ট্রান্সফার ফি দিতে রাজি না হওয়ায়, শেষ মুহূর্তে রোনালদোর দিকে হাত বাড়ায় তাদের নগর প্রতিদ্বন্দী ইউনাইটেড। প্রায় ১৩ মিলিয়ন পাউন্ডে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে ফেরেন পর্তুগিজ যুবরাজ।
তবে বছরের সবচেয়ে দামি ট্রান্সফারে নেই সেরা দুই তারকার নাম। ইংল্যান্ডের জার্সিকে মাত্র ১২ ম্যাচ খেলা আর কোন গোল না পাওয়া মিডফিল্ডার জ্যাক গ্রিলিশ সবচেয়ে দামি খেলোয়াড়। অ্যাস্টন ভিলা থেকে প্রায় ১১৮ মিলিয়ন ইউরোতে যোগ দিয়েছেন ম্যানচেস্টার সিটিতে। এরপর আছে রোমেলু লুকাকুর নাম। ইন্টার ছেড়ে পুরনো ক্লাব চেলসিতে ফিরেছেন বেলজিয়াম স্টার। এরপর আছে জাডোন সাঞ্চো, আশ্রাফ হাকিমি ও বেন হোয়াইটের নাম।
এবারের দলবদলের বাজারে উত্তাপ ছড়িয়েছে ফরাসী ক্লাব পিএসজি। কোন সন্দেহ নেই লিওনেল মেসি ক্লাব ইতিহাসের সেরা সাইনিং। এছাড়াও তারা দলে টেনেছে ইউরো সেরা গোলরক্ষক দোনারুমা, রিয়াল মাদ্রিদের রক্ষণের দূর্গ সার্জিও রামোস, আশ্রাফ হাকিমি, জিনি ভাইনালদামের মতো তারকাদের। সাথে নেইমার, এমবাপ্পে, ডি মারিয়াদের নিয়ে নতুন গ্যালাক্টিকো ফরাসী ক্লাবটি।
দলবদলের শেষ দিনও ছিলো উত্তেজনায় ভরপুর। পুরনো ক্লাবে ফিরেছেন আতোঁয়ান গ্রিয়েজম্যান। এ ফরাসী স্ট্রাইকারকে ধারে আতলেতিকোতে পাঠিয়েছে বার্সেলোনা। আর স্প্যানিশ ক্লাবটি থেকে ধারে চেলসিতে গেছেন সাউল নিগেজ। তরুন ফরোয়ার্ড এদুয়ারদো কামাভিঙ্গাকে দলে ভিড়িয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। আর সেভিয়া থেকে লোনে লুক ডি ইয়ংকে নিয়েছে বার্সেলোনা।
তবে দলবদল না করেও বাজার গরম রেখেছেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। স্বপ্নের ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদে যেতে চেষ্টার কমতি ছিলো না বিশ্বকাপ জয়ী এ তারকার। পিএসজিও এ গোলমেশিনকে ছাড়তে নারাজ। হাত গুটিয়ে নিয়েও শেষ মুহুর্তে ২০০ মিলিয়ন ইউরো প্রস্তাব করে লস ব্লাঙ্কোরা। তবে নিজেদের সিদ্ধান্তে অটল ফরাসী ক্লাব। শেষ পর্যন্ত পিএসজিতেই থাকছেন এসবাপ্পে। চুক্তি নবায়ন না করলে আগামী মৌসুমে ফ্রি এজেন্ট হিসেবে রিয়ালে যোগ দিতে পারবেন ফ্রেঞ্চ সুপারস্টার।
এস
ফুটবল
ফুটবলকে বিদায় জানালেন পেপে
সব ধরনের ফুটবল থেকে বিদায় নিলেন পর্তুগালের ডিফেন্ডার পেপে। বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তিনি।
সর্বশেষ ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে পর্তুগালের ম্যাচটাই হয়ে রইল ৪১ বছর বয়সী এই ফুটবলারের ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ।
সে ম্যাচে টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নিয়েছিল পর্তুগাল। ইউরোর মূলপর্বে সবচেয়ে বয়স্ক খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামার রেকর্ডও গড়েন তিনি।
পর্তুগালের হয়ে ১৪১ ম্যাচ খেলেছেন পেপে। জিতেছেন ২০১৬ ইউরো।
ফুটবল
বাফুফে থেকে পদত্যাগ করলেন সালাম মুর্শেদী
পদত্যাগ করেছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সিনিয়র সহসভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী। তিনি ২০০৮ সাল থেকে পদটিতে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
এছাড়াও সালাম মুর্শেদী বাফুফের অর্থ কমিটি ও রেফারিজ কমিটির প্রধানও ছিলেন। এই দুটি পদ থেকেও তিনি পদত্যাগ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সালাম মুর্শেদীর পদত্যাগের কথা জানায় বাফুফে। সালাম মুর্শেদী খুলনা–৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন।
ফুটবল
চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সংগঠক সাইদুর রহমান প্যাটেল
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অন্যতম সংগঠক ও উদ্যেক্তা সাইদুর রহমান প্যাটেল মারা গেছেন। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ছিলেন। হাসপাতালে থাকাকালীন সেসব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করতেন তিনি। অবশেষে ৭৩ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসের একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন সাইদুর রহমান। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) শোক জানিয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সাইদুর রহমানের অবদান ছিল অনস্বীকার্য। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন স্থানে তহবিল তুলতেন সাইদুর রহমানরা। তারা ভারতে ঘুরে ঘুরে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের হয়ে প্রীতি ম্যাচ খেলতেন। সেখান থেকেও তহবিল সংগ্রহ করতো এই দলটি।
একজন ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা রাখার লক্ষ্য নিয়েই স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠন করার উদ্যেগ নিয়েছিলেন সাইদুর রহমান প্যাটেলরা। এখানে খেলে যে অর্থ উত্তোলন হবে, তা মুক্তিযুদ্ধের জন্য গঠিত তহবিলে প্রদান করা হবে; এমনই ছিল স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সেসময়ের ভাবনা।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ইচ্ছা ছিল সাইদুর রহমানের। সবশেষ সাধারণ নির্বাচনের আগেই অবশ্য চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমাতে হয় তাকে। সেখানে লম্বা সময় ধরে চিকিৎসা নেওয়ার পর আর দেশে ফিরতে পারলেন না তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতেই নিজের জীবনের শেষ সময়টুকু কাটালেন।
সাইদুর রহমানের জন্ম ১৯৫১ সালের ৭ অক্টোবর। তিনি ঢাকার কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। পরে অবশ্য গেন্ডারিয়ায় চলে যায় তার পরিবার। গেন্ডারিয়াতেই বেড়ে উঠেছেন, স্থানীয় পর্যায়ে ফুটবল খেলতে খেলতে শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলেও নিজের জায়গা করে নেন। তিনি ঢাকার ইস্টএন্ডের হয়ে ফুটবল খেলেছেন। দ্বিতীয় বিভাগে ফরাশগঞ্জের হয়ে, প্রথম বিভাগে পিডব্লুডি’র হয়ে খেলেছেন সাইদুর রহমান প্যাটেল।
এম এইচ//