বাংলাদেশ
১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে নোয়াখালী পৌর শহরে, সঙ্গে কঠোর নজরদারি
নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীতে আওয়ামী লীগের তিন গ্রুপ সভা আহ্বান করায় সকাল থেকে ১৪৪ ধারা চলছে। জেলা শহর মাইজদী, দত্তেরহাট ও সোনাপুরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন করা হয়েছে।
সোমবার (০৬ সেপ্টেম্বর) সকালে দেখা যায়, ১৪৪ ধারা জারির কারণে জেলা শহর মাইজদীতে অঘোষিত হরতাল চলছে। বেশির ভাগ দোকানপাট খোলেনি। সাধারণ লোকজনের উপস্থিতি অনেক কম। ভোর ৬টা থেকে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে র্যাব ও পুলিশ টহল দিচ্ছে।
জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান জানান, আওয়ামী লীগের তিন পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে জেলা শহর মাইজদীতে সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ১৪৪ ধারা চলার সময় পৌর এলাকায় ব্যক্তি, সংগঠন, রাজনৈতিক দল, গণজমায়েত, সভা, সমাবেশ, মিছিল, র্যালি, শোভাযাত্রাসহ যেকোনো ধরনের অনুষ্ঠান এবং রাজনৈতিক প্রচার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এসব এলাকায় চারজনের বেশি মানুষ জমায়েত হতে পারবে না। তবে দোকানপাট খোলাসহ জনগণের স্বাভাবিক চলাচল ১৪৪ ধারার আওতামুক্ত রাখা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, ১৪৪ ধারা কার্যকর করতে দুজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ১৬ জন র্যাব ও শতাধিক পুলিশ সদস্য নোয়াখালী পৌরসভা এলাকায় টহল দিচ্ছে। এ ছাড়া উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
এদিকে পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারির পরিপ্রেক্ষিতে শহরে লোকজনের উপস্থিতি অনেকটাই কম। শহরের বেশির ভাগ দোকানপাট বন্ধ।
স্থানীয়রা জানান, তিন পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি এবং প্রশাসনের ১৪৪ ধারা জারির পরিপ্রেক্ষিতে আতঙ্কের কারণে অধিকাংশ ব্যবসায়ী আজ দোকান খোলেননি।
কিছু দিন ধরে নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে জেলা ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভক্তি দেখা দেয়। অভিযোগ রয়েছে, জেলার বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী, নোয়াখালী পৌরসভার মেয়র শহীদ উল্লাহ খান সোহেল এবং সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহীনের অনুসারীরা আলাদাভাবে নিজেদের কর্মসূচি পালন করে আসছেন।
এক পর্যায়ে বিবদমান তিনটি গ্রুপই সোমবার পাল্টাপাল্টি সমাবেশ ডাকে। তা সফল করতে রোববার বিকেলেই জেলা শহরে অবস্থান নেয় তারা। এ সময় তিন গ্রুপের অনুসারী নেতাকর্মী জেলা শহরে পথসভা ও মিছিল করলে ত্রিমুখী উত্তেজনা ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা দেখা দেয়। এ অবস্থায় জেলা প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে।
সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাহেদ উদ্দিন জানান, সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করে ১৪৪ ধারা জারির পরিপ্রেক্ষিতে আজ সকাল থেকে মাইজদীতে পুলিশের কঠোর টহল রয়েছে। এ ছাড়া শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল ইসলাম জানান, ১৪৪ ধারা জারি করা এলাকায় অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। কেউ কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চাইলে তা কঠোর হাতে দমন করা হবে।
মুক্তা মাহমুদ
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ