ফুটবল
৩৯ বছর কোমায় থাকা ফুটবলারের মৃত্যু
দীর্ঘ ৩৯ বছর কোমায় থাকার পর, স্ত্রীকে ছুটি দিয়েছেন ফ্রান্সের সাবেক ফুটবলার জাঁ পিয়েরে আদামস। হাঁটুর অস্ত্রোপচার করতে গিয়ে ১৯৮২ সালে ভুল চিকিৎসায় কোমায় চলে যান তিনি। পরের বছরগুলোয় জন্ম নেয় স্ত্রী বের্নাদেত্তের অকৃত্রিম ভালোবাসার গল্প। ভালোবাসায় সেই গল্পের শেষ টেনে গতকাল না ফেরার দেশে চলে যান জাঁ পিয়েরে।
এক দু'বছর নয়, অপেক্ষাটা দীর্ঘ ৩৯ বছরের। তবে শেষ পর্যন্ত আর দু'চোখ খোলা হলো না তার। হলো না, বদলে যাওয়া পৃথিবীটাকে একবার দেখার। পারলেন না কোমা থেকে ফিরতে।
অকল্পনীয়, হৃদয়বিদারক আর ভালোবাসায় মোড়ানো এই গল্পটা ফ্রান্সের সাবেক ফুটবলার জাঁ পিয়েরে আদামসের। কাগজে-কলমে তার জীবনের দৈর্ঘ্য ৭৩ বছর হলেও সত্যিকার অর্থে বেঁচে ছিলেন ৩৪ বছর।
১৯৮১ সালে পেশাদার ক্যারিয়ারের ইতি টানার পরের বছরই হাঁটুর ইনজুরি নিয়ে ভর্তি হন হাসপাতালে। দিনটা ছিলো ১৭ মার্চ। ছোট্ট এক অস্ত্রোপচারে বড্ড বড় ভুল করে বসেন শিক্ষানবীশ এক চিকিৎসক। চেতনানাশক ওষুধের ভুল প্রয়োগে মস্তিস্কে রক্তসঞ্চালনে ব্যাঘাত ঘটায় কোমায় চলে যান আদামস। এরপর আর জেগে উঠা হয়নি।
পরের প্রায় চার দশকের গল্পটা, তার স্ত্রী বের্নাদেত্তের অকৃত্রিম ভালোবাসার। স্বামীকে বাঁচিয়ে রাখার প্রাণান্তকর চেষ্টায় দিন-রাত সেবা করেই কেটেছে তার সহধর্মীনির। ১৫ মাস পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হাল ছেড়ে দিলেও আশা হারাননি বের্নাদেত্তে। আদামসকে সুস্থ্য করে তুলতে চালিয়ে যান দীর্ঘ যুদ্ধ। যে যুদ্ধে অর্থ সহায়তা দিয়ে বিভিন্ন সময়ে পাশে দাঁড়ায় আদামসের ক্লাব নিম, নিস ও পিএসজি। পূর্বসূরির চিকিৎসায় এগিয়ে আসেন মিশেল প্লাতিনি, জিনেদিন জিদানরাও।
সময়ের সাথে এক বিন্দুও কমেনি স্ত্রীর ভালোবাসা। বরং বেড়েছে টান, বেড়েছে প্রিয়তমকে ফিরে পাবার আশা। ফুটবলার স্বামীকে উৎসর্গ করে একসময় বাড়ির নাম পাল্টে রাখেন হাউস অব বিউটিফুল স্লিপিং অ্যাথলেট।
যে ঘুম থেকে আর জেগে উঠা হয়নি আদামসের। সোমবার ডাক্তারের ঘোষণায় চলে গেলেন চিরনিদ্রায়।
ফ্রান্সের হয়ে ২২ ম্যাচ খেলা আদামসের শেকড় গাঁথা সেনেগালে। কৈশরের গন্ডি পেরুনোর আগেই পাড়ি জমান ফ্রান্সে। স্থানীয় এক পরিবারে দত্তক থাকা অবস্থায় পেশাদার ফুটবলে পা রাখেন আদামস। নিমে দারুণ পারফরমেন্স দেখিয়ে একসময় গায়ে জড়ান লেস ব্লু জার্সি। তার দেখানো পথ ধরেই পরবর্তীতে ফ্রান্স দলে খেলেছেন পশ্চিম আফ্রিকান বংশদ্ভূত মার্সেল দেসাই-প্যাটট্রিক ভিয়েরারা।
আদামসের জীবনাবসানের মাধ্যমেই অজানা এই ভালবাসার গল্প জানা হলো বিশ্ববাসীর। কিন্তু বের্নাদেত্তে. সে এখন ব্ড্ড একা।
এস
ফুটবল
ফুটবলকে বিদায় জানালেন পেপে
সব ধরনের ফুটবল থেকে বিদায় নিলেন পর্তুগালের ডিফেন্ডার পেপে। বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তিনি।
সর্বশেষ ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে পর্তুগালের ম্যাচটাই হয়ে রইল ৪১ বছর বয়সী এই ফুটবলারের ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ।
সে ম্যাচে টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নিয়েছিল পর্তুগাল। ইউরোর মূলপর্বে সবচেয়ে বয়স্ক খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামার রেকর্ডও গড়েন তিনি।
পর্তুগালের হয়ে ১৪১ ম্যাচ খেলেছেন পেপে। জিতেছেন ২০১৬ ইউরো।
ফুটবল
বাফুফে থেকে পদত্যাগ করলেন সালাম মুর্শেদী
পদত্যাগ করেছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সিনিয়র সহসভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী। তিনি ২০০৮ সাল থেকে পদটিতে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
এছাড়াও সালাম মুর্শেদী বাফুফের অর্থ কমিটি ও রেফারিজ কমিটির প্রধানও ছিলেন। এই দুটি পদ থেকেও তিনি পদত্যাগ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সালাম মুর্শেদীর পদত্যাগের কথা জানায় বাফুফে। সালাম মুর্শেদী খুলনা–৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন।
ফুটবল
চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সংগঠক সাইদুর রহমান প্যাটেল
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অন্যতম সংগঠক ও উদ্যেক্তা সাইদুর রহমান প্যাটেল মারা গেছেন। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ছিলেন। হাসপাতালে থাকাকালীন সেসব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করতেন তিনি। অবশেষে ৭৩ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসের একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন সাইদুর রহমান। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) শোক জানিয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সাইদুর রহমানের অবদান ছিল অনস্বীকার্য। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন স্থানে তহবিল তুলতেন সাইদুর রহমানরা। তারা ভারতে ঘুরে ঘুরে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের হয়ে প্রীতি ম্যাচ খেলতেন। সেখান থেকেও তহবিল সংগ্রহ করতো এই দলটি।
একজন ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা রাখার লক্ষ্য নিয়েই স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠন করার উদ্যেগ নিয়েছিলেন সাইদুর রহমান প্যাটেলরা। এখানে খেলে যে অর্থ উত্তোলন হবে, তা মুক্তিযুদ্ধের জন্য গঠিত তহবিলে প্রদান করা হবে; এমনই ছিল স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সেসময়ের ভাবনা।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ইচ্ছা ছিল সাইদুর রহমানের। সবশেষ সাধারণ নির্বাচনের আগেই অবশ্য চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমাতে হয় তাকে। সেখানে লম্বা সময় ধরে চিকিৎসা নেওয়ার পর আর দেশে ফিরতে পারলেন না তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতেই নিজের জীবনের শেষ সময়টুকু কাটালেন।
সাইদুর রহমানের জন্ম ১৯৫১ সালের ৭ অক্টোবর। তিনি ঢাকার কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। পরে অবশ্য গেন্ডারিয়ায় চলে যায় তার পরিবার। গেন্ডারিয়াতেই বেড়ে উঠেছেন, স্থানীয় পর্যায়ে ফুটবল খেলতে খেলতে শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলেও নিজের জায়গা করে নেন। তিনি ঢাকার ইস্টএন্ডের হয়ে ফুটবল খেলেছেন। দ্বিতীয় বিভাগে ফরাশগঞ্জের হয়ে, প্রথম বিভাগে পিডব্লুডি’র হয়ে খেলেছেন সাইদুর রহমান প্যাটেল।
এম এইচ//