বাংলাদেশ
টিকা না দিয়েও সনদ পেলেন ৮৫৭ জন
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় করোনার দ্বিতীয় ডোজের টিকা না নিয়েও সনদপত্র সংগ্রহ করতে পেরেছেন ৮৫৭ জন। মোবাইলে এসএসএস পাওয়ার পর এদের অনেকেই ডাউনলোড করে নিয়েছেন সনদপত্র। এখন টিকার দ্বিতীয় ডোজ পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তায় পরেছেন তারা।
স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, টিকা নিয়েছেন এমন কিছু মানুষের টিকা কার্ডের কিউআর কোড স্ক্যান না করায় এ সমস্যা তৈরী হয়েছে। তবে দ্বিতীয় ডোজ না নিয়েও খুদে বার্তা পাওয়া লোকদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নবীগঞ্জ উপজেলার করগাঁও গ্রামের তোফায়েল আহমদ ৭ আগস্ট গণটিকা কর্মসূচীতে করোনার প্রথম ডোজের টিকা নিয়েছেন। তবে ৭ সেপ্টেম্বর পরবর্তী তারিখে দ্বিতীয় ডোজের টিকা নেননি। এরপরও দুই ডোজ সম্পন্ন হয়েছে এবং টিকার সনদ ডাউনলোডের জন্য তার মুঠোফোনে খুদে বার্তা আসে। পরে স্থানীয় একটি ইন্টারনেট ব্রাউজিংয়ের দোকানে গিয়ে সনদপত্র ডাউনলোডও করেছেন তিনি।
তোফায়েল আহমদ বলেন, ‘দ্বিতীয় ডোজ না নিয়েও আমি টিকা গ্রহণের সনদপত্র পেয়েছি। এখন দ্বিতীয় ডোজ পাবো কি না তা জানতে পারিনি। এ ব্যাপারে সহযোগিতার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাব।’
নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুস সামাদ জানান, গত ৭ আগস্ট গণটিকা কর্মসূচিতে প্রথম ডোজের টিকা নিয়েছেন নবীগঞ্জের ৭ হাজার ৯৯০ জন। এদের মধ্যে ৭ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় ডোজ নেন ৬ হাজার ৯৩৩ জন। কিন্তু ওইদিন দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণকারী কিছু মানুষের ভ্যাকসিন কার্ডের কিউআর কোড স্ক্যান করা সম্ভব হয়নি। তাই কারা টিকা নিয়েছেন আর কারা নেননি সেটি শনাক্ত করা যাচ্ছে না। ’
তিনি আরো বলেন, ‘সবাইকে খুদেবার্তা পাঠানো হচ্ছে। ফলে উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে দ্বিতীয় ডোজ না নেয়া ৮৫৭ জনও খুদেবার্তা পেয়েছেন। দ্বিতীয় ডোজ না দেয়া ব্যক্তিদের শনাক্ত করে দ্রুত টিকা দেয়ার চেষ্টা চলছে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক জানান, টিকাদান কার্যক্রমে এমন গাফিলতি দুঃখজনক। যদিও ভ্যাকসিন গ্রহণ নিয়ে অনিশ্চতায় পড়ে যাওয়া ৮৫৭ জনকে শনাক্ত করা কঠিন, তারপরও এদের খোঁজে বের করা প্রয়োজন।
হবিগঞ্জের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মুখলিছুর রহমান উজ্জ্বল বলেন, ‘জেলায় গণটিকা কর্মসূচিতে প্রথম ডোজ গ্রহীতাদের ৮৪ শতাংশের অধিক দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন। তবে কোথাও এমন ঘটনার খবর আসেনি। নবীগঞ্জের এই সমস্যা সম্পর্কে জেনে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এস
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ