বাংলাদেশ
আড়াই বছরের ভাতিজাকে মেরে বাথরুমে পুঁতে রাখলেন চাচি
মাদারীপুরের শিবচরে আপন চাচির নির্মাণাধীন ভবনের বাথরুমের মেঝের নিচ থেকে বালুচাপা দেয়া অবস্থায় কুতুবউদ্দিন নামে আড়াই বছরের এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ভোরে উপজেলার কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের বাঘিয়ার আরব আলী বেপারীকান্দি এলাকা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় শিশুটির চাচি নার্গিস আক্তার ও চাচাতো বোন হাফসা আক্তারকে গ্রে করেছে পুলিশ। নিহত শিশু কুতুবউদ্দিন উপজেলার কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের ইউনুস বেপারীর ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শিবচরের কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের বাংলাবাজার এলাকার ওহাব বেপারীর বড় ছেলে আবুল হোসেন বেপারীর মৃত্যুর পর তার স্ত্রী নার্গিস বেগম দুই ছেলে-মেয়ে নিয়ে বাবার বাড়ি কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকা বাঘিয়ার আরব আলী বেপারীকান্দি এলাকায় বসবাস করেন। স্বামী পীরের বাড়িতে গিয়ে মারা গেলেও নার্গিস এ মৃত্যুর জন্য শ্বশুরসহ ওই বাড়ির লোকদের দায়ী করতেন।
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিরাজ হোসাইন জানান, স্বামীর মৃত্যুর পর তার ছোট ভাই ইসমাইল বেপারীকে নার্গিস বিয়ে করতে চাইলে পরিবার এতে রাজি হয়নি। জমিজমা নিয়েও তাদের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। গত মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ওহাব বেপারীর বাড়িতে বেড়াতে আসে নার্গিস আক্তারের মেয়ে হাফসা আক্তার (১৪)। পরদিন বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালে মা নার্গিস ফোন দিলে মেয়ে হাফসা বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়। চলে যাওয়ার আগে হাফসা চাচা ইসমাইল বেপারীর স্ত্রী ময়না বেগমের কাছ থেকে তাদের একমাত্র শিশু সন্তান কুতুবউদ্দিনকে কোলে নেয়। ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে হাফসা কুতুবউদ্দিনকে নিয়ে পালিয়ে যায়। সন্তানসহ ভাবি ও ভাতিজিকে বাড়িতে গিয়ে না পেয়ে কুতুবউদ্দিনের বাবা ইউনুস বেপারী শিবচর থানায় অভিযোগ করেন।
তিনি আরও জানান, অভিযোগ পেয়ে শিবচর থানার একাধিক টিম শিশুটিকে উদ্ধারে মাঠে নামে। একটি মাদরাসার সিসি টিভি ফুটেজ দেখে পুলিশ নিশ্চিত হয় হাফসা কুতুবউদ্দিনকে নিয়ে তার মা নার্গিসের কাছে দিয়েছে। নার্গিস শিশুটিকে কাপড়ে ঢেকে পালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কোনো কিছুতেই নার্গিস বিষয়টি স্বীকার করছিলেন না। পরে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের পর নার্গিস তার ঘরের ভেতরে নির্মাণাধীন বাথরুমের মাটির নিচে শিশুটিকে পুঁতে রাখা হয়েছে বলে জানান। পরে পুলিশ নার্গিসকে নিয়ে শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ভোরে বাথরুমের মেঝেতে পুঁতে থাকা অবস্থায় কুতুবউদ্দিনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ব্যাপারে শিশুটির বাবা ইউনুস বেপারী বলেন, সম্পত্তির লোভে আমার সন্তানকে হত্যা করা হয়েছে। এর আগেও আমাকে হুমকি দিয়েছিল আমার কোনো বংশধর রাখবে না। সেটাই করেছে বড় ভাইয়ের স্ত্রী ও তার সন্তানরা। এ নির্মম হত্যার বিচার চাই।
এ ব্যাপারে মাদারীপুরের সহকারী পুলিশ সুপার মো. আনিসুর রহমান বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করেছি। প্রাথমিকভাবে ঘাতক নার্গিস বেগম জানিয়েছেন- পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য থাকার কারণেই তার ভাতিজা কুতুবউদ্দিনকে হত্যা করেছেন। এ ঘটনায় নার্গিস ও তার মেয়েকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এস
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ