জাতীয় পার্টি
৯০ সালের পর থেকেই দেশে গণতান্ত্রিক চর্চা নেই: জিএম কাদের
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদই সর্বস্তরে বাংলাভাষা প্রচলনের আইন করেছিলেন। অনেক ক্ষেত্রেই তা বাস্তবায়ন হলেও উচ্চ আদালতে এখনো পুরোপুরি বাংলা প্রচলন হয়নি।
আজ রোববার (২১ ফেব্রুয়ারি) জাপার বনানী কার্যালয়ে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, একুশের ধারাবাহিকতায় মুক্তির জন্য স্বাধীনতা সংগ্রাম হয়েছিলো। মুক্তিযুদ্ধে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি কিন্তু এখনো আমরা মুক্তি পাইনি। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ক্ষমতা হস্তান্তরের পর থেকে দেশে সংসদীয় গণতন্ত্রের নামে সংসদীয় একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এতে একদিকে বৈষম্য বেড়েছে, অপরদিকে জবাবদিহিতা নেই কোথাও। স্বাধীনতার আগে পশ্চিম পাকিস্তানের সাথে আমাদের বৈষম্য ছিলো কিন্তু ৯০ সালের পর থেকে দেশের মানুষের সাথে বৈষম্য করছে যারা রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকে। দেশের মানুষকে বঞ্চিত করে দলীয়করণ চলছে। উপজেলা পর্যায়ের নেতারাও হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছে। যারা রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকে তারাই চাকরি ও ব্যবসায় সুযোগ পাচ্ছে কিন্তু দেশের সাধারণ মানুষ সকল অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
জিএম কাদের বলেন, সংসদীয় গণতন্ত্রের নামে সংবিধানে ৭০ ধারা সংযোজনের কারণে সরকার প্রধানের অধীনে দেশের নির্বাহী বিভাগ, আইন বিভাগ ও নিম্ন আদালত। আবার উচ্চ আদালতের নিয়োগ থেকে অনেক কিছুই সরকার প্রধানের প্রভাব থাকে, যাতে কোন মতেই গণতান্ত্রিক চর্চা সম্ভব নয়। তাই ৯০ সালের পর থেকেই দেশে গণতান্ত্রিক চর্চা নেই।
তিনি বলেন, দেশের মানুষ সকল বৈষম্য থেকে মুক্তি চায়। দেশের মানুষ তাদের অধিকার পেতে চায়। ন্যায় বিচার ভিত্তিক শাসন ব্যবস্থা ফিরে পেতে চায় দেশের মানুষ। আইনের শাসন চায়। ভাষা আন্দোলন আমাদের অন্যায়-অবিচারের কাছে মাথা নত না করে প্রতিবাদ করতে শিক্ষা দেয়। তাই জাতীয় পার্টি প্রতিটি অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে দেশের মানুষের পক্ষে আপোষহীন ভাবে প্রতিবাদ করবে। দেশ ও মানুষের অধিকারের প্রশ্নে জাতীয় পার্টি কখনোই আপোষ করবে না। নির্ভয়ে গণমানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে জাতীয় পার্টি সবসময় সামনের সারিতে থাকবে।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, সৈয়দপুর পৌর নির্বাচনে অন্যায়ভাবে আধিপত্য বিস্তার এবং নির্বাচনকে কলুষিত করতেই শনিবার রাত ১১টায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীদের ওপরে হামলা করেছে। আওয়ামী সন্ত্রাসীদের অবৈধ কর্মকাণ্ড প্রতিহত করতে জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা প্রস্তুত আছে। কোনভাবেই আওয়ামী সন্ত্রাসীদের ছাড় দেওয়া হবে না। সৈয়দপুরে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করতে ব্যর্থ হলে স্থানীয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন শুরু করবে জাতীয় পার্টি।
তিনি আরও বলেন, ১৯৫২ সালে মানুষের প্রশ্ন ছিলো আমরা কোন ভাষায় কথা বলবো, আর এখন মানুষের প্রশ্ন হচ্ছে আমরা কী কথা বলতে পারবো? দেশের মানুষ আজ কথা বলতে পারছে না, গণমাধ্যম সত্য কথা তুলে ধরতে পারছে না। এটা লজ্জাজনক, দুঃখজনক। তিনি বলেন, অন্যায়-অবিচার আর লুটপাটের গণতন্ত্রের থেকে দেশের মানুষকে মুক্তি দিতেই জাতীয় পার্টির রাজনীতি।
জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও অতিরিক্ত মহাসচিব এডভোকেট শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মো. মসিউর রহমান রাঙ্গা এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য এস.এম. ফয়সল চিশতী, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহমুদুর রহমান মাহমুদ, হেনা খান পন্নি, ভাইস চেয়ারম্যান ও জাতীয় যুব সংহতির আহ্বায়ক এইচ.এম. শাহরিয়ার আসিফ, যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু, ইকবাল হোসেন তাপস, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা পার্টির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসহাক ভূঁইয়া।
শুভ মাহফুজ
জাতীয় পার্টি
জীবন্ত কিংবদন্তি ড. ইউনুস আমাদের অহংকারের ধন: জিএম কাদের
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে শিক্ষক প্রতিনিধিসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ ও তিন বাহিনী প্রধানের বৈঠকে দেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নাম চূড়ান্ত হওয়ায় স্বস্তি ও আনন্দ প্রকাশ করে প্রাণঢালা অভিনন্দন জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের।
বুধবার (৭ আগস্ট) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
জিএম কাদের বলেন, জীবন্ত কিংবদন্তি ড. ইউনুস আমাদের অহংকারের ধন। ক্ষুধা ও দারিদ্র বিমোচনে ক্ষুদ্র ঋণ এবং সামাজিক ব্যবসার যে ধারণা তিনি প্রবর্তন করেছেন তা সারা বিশ্বের সামনে এক অনন্য মডেল। বিশ্ববাসীর কল্যাণে ড. ইউনুসের প্রতিটি কর্মকাণ্ড ঈর্ষনীয় সাফল্য পেয়েছে।
তিনি বলেন, দেশের বর্তমান বাস্তবতায় ড. মোহাম্মদ ইউনূসের বিকল্প হয় না। ড. ইউনূসের নেতৃত্বকে সহায়তা দিতে জাতীয় পার্টি প্রস্তুত।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, দেশের শান্তি, সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতা ফেরাতে ড. ইউনূস সফল হবেন । তার নেতৃত্বেই ন্যায়বিচার ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার অভিযাত্রা শুরু হবে।
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান আরও বলেন, দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক হয়ে পড়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে খুনাখুনি, চুরি, ডাকাতি ও হাইজ্যাকের খবর আসছে। দেশের মানুষ আতঙ্কিত হয়ে আছে। স্বৈরাচারের কবল থেকে মুক্তি পাওয়া জাতির মাঝে আতঙ্ক থাকবে কেন?
উল্লেখ্য, দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
এএম/
জাতীয় পার্টি
আটক ৬ ছাত্রনেতাকে মুক্তি দিতে হবে: জি এম কাদের
বাংলাদেশ প্রজাতন্ত্র, এখানে দেশের মালিক জনগণ। দেশের সব ক্ষমতার মালিকও জনগণ। সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা বা প্রতিবাদ করার অধিকার প্রতিটি নাগরিকের আছে। সে কারণে শুধু ছাত্র নয়, কোনো আন্দোলন দমাতেই আবলছেন বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টি (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের।
সোমবার (২৯ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।
বিবৃতিতে বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, বাংলাদেশ প্রজাতন্ত্র, এখানে দেশের মালিক জনগণ। দেশের সব ক্ষমতার মালিকও জনগণ। সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা বা প্রতিবাদ করার অধিকার প্রতিটি নাগরিকের আছে। অহিংস প্রতিবাদকে রাষ্ট্রদ্রোহ হিসেবে বিবেচনা করার বা সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে রাষ্ট্রীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী এবং প্রতিরক্ষা বাহিনীকে ব্যবহার করে সংহিসভাবে মোকাবিলা করার অধিকার সরকার বা সরকারি দলের নেই। সে কারণে শুধু ছাত্র নয়, কোনো আন্দোলন দমাতেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য গুলি করতে পারে না।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, নিরাপত্তা হেফাজতের নামে বেশ কয়েক দিন ধরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয়জন সমন্বয়ককে ডিবি অফিসে আটকে রাখা হয়েছে। তাদের পরিবার ও স্বজনদের সঙ্গে দেখা পর্যন্ত করতে দেওয়া হচ্ছে না। আবার ডিবি হেফাজতে থেকেই আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
এদিকে সাধারণ ছাত্ররা মনে করছেন, গোয়েন্দা সংস্থা বলপূর্বক এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করে তাদের বাধ্য করছে। এ কারণে সাধারণ ছাত্ররা আটক সমন্বয়কদের সেই ঘোষণা প্রত্যাখান করেছেন। দিনের পর দিন সাধারণ ছাত্রদের নিরাপত্তার নামে তাদের ও তাদের পরিবারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে আটকে রাখাকে আমরা আইনসম্মত মনে করি না।
জাপার চেয়ারম্যান বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমন করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বৃষ্টির মতো গুলি ছুড়েছেন। হেলিকপ্টার এবং বহুতলবিশিষ্ট বাড়ির ছাদের ওপর থেকে এবং ভ্রাম্যমাণ গাড়ি থেকে জনগণের ওপর নির্বিচারে গুলি করা হয়েছে। যে কারণে বাবা-মায়ের কোলের মধ্যে ও ঘরের মাঝে খেলাধুলারত অবস্থায় শিশু নিহত হয়েছে। আবার ঘরের ভেতরে কাজ করতে করতে গুলিবিদ্ধ হয়ে গৃহিণী নিহত হয়েছেন বলেও গণমাধ্যমে এসেছে।
একইভাবে অসংখ্য নিরীহ পথচারী গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। প্রশ্ন হলো, এ ধরনের গুলির উদ্দেশ্য কী ছিল? সন্ত্রাসীদের নির্মূল করা যদি লক্ষ্য হয়, তাহলে এ ধরনের প্রক্রিয়ায় কী সন্ত্রাসী চিহ্নিত করা সম্ভব ছিল? বাবার কোলে শিশু, রান্নাঘরে গৃহিণী ও নিরীহ পথচারী, তারা কী সন্ত্রাসী? এই মৃত্যুর দায়ভার সরকারকে নিতে হবে।
বিবৃতিতে বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, আন্দোলন দমাতে দেদারছে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে, গ্রেপ্তার বাণিজ্য চালাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। সাধারণ মানুষের মাঝে গ্রেপ্তার আতঙ্ক বিরাজ করছে। দেশের মানুষ যেন আতঙ্কের রাজ্যের বাসিন্দা। প্রতিটি হতাহত এবং সহিংসতার নিরপেক্ষ তদন্তসাপেক্ষে আমরা বিচার চাচ্ছি।
এএম/
জাতীয় পার্টি
গ্রেপ্তার হলেন ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ
জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
বুধবার (২৪ জুলাই) রাত ১টার দিকে রাজধানীর গুলশানের বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন ডিবি প্রধান হারুন-উর-রশিদ।
ডিবি প্রধান জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলনে উসকানি দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে ব্যারিস্টার পার্থের বিরুদ্ধে। এ কারণে তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
সম্প্রতি কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষে ফেসবুকে বিভিন্ন পোস্ট দিয়েছেন ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ। এ জন্য তাকে তুলে নেয়া হতে পারে বলে মনে করছেন দলের নেতাকর্মীরা।
উল্লেখ্য, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে রাজধানীতে সহিংসতা ও নাশকতার ঘটনায় ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানায় ২০১টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আর এসব মামলায় এখন পর্যন্ত ২২০৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) কে এন রায় নিয়তি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানিয়েছেন, সহিংসতা নাশকতার ঘটনায় গোয়েন্দা তথ্য ও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল বুধবার (২৪ জুলাই) ৭৩ মামলায় ১৭৫৮-কে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আর আজ ১২৮ মামলায় ৪৫১ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এর মধ্যে ডিবি পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে ২০১ জনকে। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছেন ডিএমপির এ কর্মকর্তা।
এসি//