চট্টগ্রাম
মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ড: স্বচ্ছ তদন্তের দাবি যুক্তরাষ্ট্রের
কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যার ঘটনায় প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। হত্যাকান্ডের ঘটনায় জড়িত অপরাধীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার পাশাপাশি মুহিবুল্লাহর মৃত্যুর পূর্ণ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন এক প্রেস বিবৃতিতে এ দাবি জানান।
বিবৃতিতে ব্লিনকেন বলেন, ২৯ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার এবং কমিউনিটির নেতা মুহিবুল্লার হত্যাকাণ্ডে আমরা গভীরভাবে শোকাহত এবং ব্যথিত। তিনি বিশ্বজুড়ে রোহিঙ্গা মুসলমানদের একজন সাহসী মানবাধিকার সমর্থক ছিলেন।
মুহিবুল্লাহর হত্যার ঘটনায় জড়িতদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার আহ্বান জানান মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, এই জঘন্য অপরাধের অপরাধীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার লক্ষ্যে আমরা তার মৃত্যুর পূর্ণ ও স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা রোহিঙ্গাদের পক্ষে সমর্থন অব্যাহত রেখে এবং তাদের ভবিষ্যতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সম্প্রদায়ের সদস্যদের কণ্ঠস্বর তুলে ধরে তার কাজকে সম্মান জানাই।
বিবৃতিতে ব্লিনকেন বলেন, ২০১৯ সালে মুহিবুল্লার জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থায় রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধিত্ব করেছে। জেনেভায় মানবাধিকার কাউন্সিল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফর করেছিলেন ‘মিনিস্টারিয়াল টু অ্যাডভান্স রিলিজিয়াস ফ্রিডম’ ইস্যুতে। সে সফরে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট এবং ভাইস প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছিলেন।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের মুখে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর দেশটির রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে আসে প্রায় আট লাখ রোহিঙ্গা। বাস্তুচ্যুত অন্য রোহিঙ্গাদের সঙ্গে এ দেশে এসেছিলেন রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহও। ২০১৯ সালের ১৭ জুলাই রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউসে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনান্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করে আলোচনায় এসেছিলেন মুহিবুল্লাহ।
বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে কক্সবাজারের উখিয়ায় লাম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একদল দুর্বৃত্ত মুহিবুল্লাহকে গুলি করে হত্যা করে। মুহিবুল্লাহ আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের (এআরএসপিএইচ) চেয়ারম্যান ছিলেন। এই সংগঠনের হয়ে তিনি রোহিঙ্গাদের অধিকারের কথা তুলে ধরতেন। মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের চেষ্টায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছিলেন তিনি।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আগে মুহিবুল্লাহ ইস্যুতে সরব হয়েছেন পশ্চিমা কূটনীতিকরা। বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার, ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটার্টন ডিকসন, নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত আন্নে গেরার্ড ভেন লিউইন টুইটারে দেওয়া পৃথক বার্তায় মুহিবুল্লা হত্যার বিচারের দাবি করেন।
মুহিবুল্লা হত্যার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘও। সংস্থাটি একটি বিবৃতিতে বলেছে, কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী নেতা মুহিবুল্লাহর মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) গভীরভাবে মর্মাহত ও শোকাহত। আমরা এ হামলার তীব্র নিন্দা জানাই।
এদিকে আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে নিহত মুহিবুল্লাহর ভাই হাবিবউল্লাহ বাদী হয়ে উখিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলার এজাহারে হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। তবে আসামির সংখ্যা কত সে প্রসঙ্গে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য তাৎক্ষণিক পাওয়া যায়নি।
চট্টগ্রাম
কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় প্রাণ হারালেন দুই সাইকেল আরোহী
কর্ণফুলীতে পণ্যবাহী কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় দুই সাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। কাভার্ডভ্যানটি আটক করা হয়েছে।
বুধবার (৭ আগস্ট) বেলা একটার দিকে চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের ইছানগর বাংলাবাজার এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার নন্দনালী গ্রামের কামাল মণ্ডলের ছেলে চঞ্চল মণ্ডল (১৮) ও রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার ছোট পাগলা গ্রামের মোহাম্মদ আবদুল জলিলের ছেলে জাহিদুল ইসলাম (১৬)। তারা কর্ণফুলী উপজেলার ইছানগর গ্রামে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
চরপাথরঘাটার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আবু তাহের গণমাধ্যমকে বলেন, দুপুরে তারা তিনজন সাইকেল চালিয়ে কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন। এ সময় কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত হয়। অপরজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানো হয়। কাভার্ডভ্যানটি আটক করা হয়েছে।
এএম/
চট্টগ্রাম
রাতেও ট্রাফিক সামলাচ্ছেন ছাত্রীরা
সরকার পতনের পরে চট্রগ্রামে নগরীর থানাগুলো ফাঁকা পড়ে আছে। এ অবস্থায় নগরীর রাস্তায় নেই কোন ট্রাফিক পুলিশ। দিনভর রাস্তায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করেন সরকার পতনের আন্দোলন করা শিক্ষার্থীরা। তবে দিন পেরিয়ে রাত হলেও, রাস্তায় ছাত্রদের পাশপাশি ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা যায় ছাত্রীদেরও।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার অলী খা মসজিদ মোড় এলাকায় এমন চিত্র দেখতে পায় গণমাধ্যম।
নগরীর অলী খা মসজিদ মোড়ে শৃঙ্খলা রক্ষার কাজ করা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাইজা তাবাসসুম বলেন, দেশে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। এখন দেশকে এগিয়ে নিতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। নিজের দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে এখানে আসা। সকালে শুনেছি সড়কে ট্রাফিক পুলিশ নেই। তাই তারা কাজ করতে এসেছেন।
আসিফুর রহমান নামে আরেক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী জানান, শিফট সিস্টেম করে ছাত্ররা কাজ করছে। এখন তিনি দায়িত্ব পালন করছেন। নিজেদের ইচ্ছায় তারা এখানে এসেছেন।
আই/এ
চট্টগ্রাম
‘বালুখেকো’ চেয়ারম্যান সেলিম ও তার ছেলে গণপিটুনিতে নিহত
চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের আলোচিত ‘বালুখেকো’ খ্যাত চেয়ারম্যান সেলিম খান ও তার ছেলে নায়ক শান্ত খান গনপিটুনিতে নিহত হয়েছেন।
সোমবার (৫ আগস্ট) শেখ হাসিনা পদত্যাগ করার পর নিজ এলাকা থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় বালিয়া ইউনিয়নের ফরক্কাবাদ বাজারে এসে জনগণের তোপের মুখে পড়েন তারা। এরপর সেখানে নিজের পিস্তল থেকে গুলি করে উদ্ধার হয়ে আসতে পারলেও পার্শ্ববর্তী বাগাড়া বাজারে এসে জনতার মুখোমুখি হয়। তারপর সেখানে জনগণের পিটুনিতে নিহত হোন সেলিম খান ও তার ছেলে শান্ত খান।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শেখ মুহসীন আলম গণমাধ্যমে বলেন, তাদের মৃত্যুর বিষয় জেনেছি। তবে কেউ খবর দেয়নি। আর জানমালের নিরাপত্তার কারণে সেখানে কাউকে পাঠানো হয়নি।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সেলিম খান চাঁদপুর নৌ-সীমানায় পদ্মা-মেঘনা নদীতে শত শত ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যান। এসব ঘটনায় সে কারাভোগ করেন এবং দুদকে তার বিরুদ্ধে মামলা চলমান রয়েছে। সেলিম খান একজন আলোচিত প্রযোজকও। তিনি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান শাপলা মিডিয়ার কর্ণধার।
এছাড়া সেলিম খানকে পদ্মা-মেঘনার চর থেকে বিভিন্ন সময় বালু তোলাসহ নানা কারণে চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান পদ থেকে আজীবন বহিষ্কার করে আওয়ামী লীগ। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি।
এএম/