আইন-বিচার
এসকে সিনহা ও তার ভাইয়ের ব্যাংক হিসাব-বাড়ি জব্দের আদেশ
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহা ও তার ভাই অনন্ত কুমার সিনহার যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও বাড়ি জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুদকের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, এসকে সিনহা ও তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে অবৈধ অর্থ অর্জন এবং যুক্তরাষ্ট্রে বাড়ির সন্ধান পাওয়ায় এ মামলা দায়ের করে দুদক। মামলায় বিদেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও বাড়ি জব্দের আবেদন করা হয়েছিল। আদালত আবেদন মঞ্জুর করে তাদের তিনটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও বাড়ি জব্দ করার আদেশ দিয়েছেন।
ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে অবৈধ অর্থ উপার্জন করেন এসকে সিনহা। এরপর তার ছোট ভাই অনন্ত কুমার সিনহার যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাকাউন্টে ২ লাখ ৮০ হাজার ডলার পাচার করেন। এসকে সিনহার টাকায় সেখানে তিনতলা বাড়ি কেনেন তিনি। এসব অভিযোগে করা মানি লন্ডারিং আইনের মামলায় তদন্তের জন্য দুদকের আবেদনের পরিপ্রক্ষিতে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আছাদুজ্জামান এ আদেশ দেন।
জব্দ হওয়া তিনটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট হলো- ম্যাসাচুসেটসের সিটিজেন ব্যাংক বস্টনের পারসোনাল চেকিং অ্যাকাউন্ট, ম্যাসাচুসেটসের বস্টনে সেফ ডিপোজিট বক্স ও ভ্যালে ন্যাশনাল ব্যাংকে অনন্ত কুমার সিনহার অ্যাকাউন্ট। এছাড়া সম্পত্তি হিসেবে নিউ জার্সির প্যাটারসনের জ্যাসপার স্ট্রিট্রের ১৭৯ নম্বরের বাড়ি।
এর আগে তিনটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও বাড়ি জব্দ চেয়ে গত ২০ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান আদালতে আবেদন করেন। এরপর দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মোশাররফ হোসেন কাজল শুনানি করেন। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামান আদালত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও বাড়ি জব্দের আদেশ দেন।
আবেদনে বলা হয়, সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বিপুল পরিমাণ সম্পদ ও সম্পত্তি অর্জন করেছেন। তার একটি অংশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্থানান্তরিত হয়েছে। সেসব সম্পদ ও সম্পত্তি অবৈধ উপায়ে অর্জিত হয়েছে।
২০২২ সালের ৩১ মার্চ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তিনতলা বাড়ির সন্ধান পাওয়ায় দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলাটি করেন সংস্থাটির উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান। মামলায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়। এ মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ৬ এপ্রিল দিন ধার্য রয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, এসকে সিনহা প্রধান বিচারপতি থাকার সময় অপরাধলব্ধ অর্থ হুন্ডিসহ বিভিন্নভাবে আমেরিকায় পাচার করেন। পরে তার ছোট ভাই অনন্তের অ্যাকাউন্টে এসব অর্থ স্থানান্তর হয়। ২ লাখ ৮০ হাজার ডলারে এসকে সিনহা তার ভাইয়ের নামে বাড়িটি কেনেন। ২০১৮ সালের ১২ জুন কেনা হয় বাড়িটি।
২০২১ সালের ৯ নভেম্বর ফারমার্স ব্যাংক থেকে চার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে দুদকের করা মামলার পৃথক দুই ধারায় এসকে সিনহার ১১ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। পাশাপাশি তাকে ৪৫ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সাজা দেওয়া হয়। এছাড়া তার অ্যাকাউন্টে অবরুদ্ধ থাকা ৭৮ লাখ টাকা রাষ্ট্রীয় অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দেওয়া হয়। এছাড়া ক্ষমতার অপব্যবহার করে মোট ৭ কোটি ১৪ লাখ ৫ হাজার ৮৬৫ টাকা সম্পদ অর্জন করে ভাই ও আত্মীয়ের নামে বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তর করেন এসকে সিনহা, এমন অভিযোগে দুদকের করা আরেকটি মামলা তদন্তধীন।
২০১৫ সালের ১৭ জানুয়ারি ২১তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন এসকে সিনহা। ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারি তার অবসরে যাওয়ার কথা ছিল। তবে বিচারিক ক্ষমতার কার্যকাল শেষ হওয়ার ৮১ দিন আগেই তিনি পদত্যাগ করেন।
আইন-বিচার
নতুন অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান
রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামান।
বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তাকে এ নিয়োগ দেন।
রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, ‘রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয় আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামানকে পুনরাদেশ না দেয়া পর্যন্ত অ্যাটর্নি জেনারেল পদে নিয়োগ প্রদান করলেন।’
উল্লেখ্য, আ.লীগ সরকারের পতনের পর পদত্যাগ করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। বুধবার (০৭ আগস্ট) রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। তার স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন মো. আসাদুজ্জামান।
২০২০ সালের ৮ অক্টোবর রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এ এম আমিন উদ্দিনকে অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেন। এর আগে তিনি ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
এসি//
আইন-বিচার
পদত্যাগ করেছেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর
পদত্যাগ করেছেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর। বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেন।
পদত্যাগ করার বিষয়টি এস এম মুনীর নিজেই গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও আরেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মো. মোরসেদ পদত্যাগ করেন।
২০২০ সালের ১ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক এবং জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম মুনীরকে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।
প্রসঙ্গত, ছাত্র-জনতার চূড়ান্ত আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেশত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। গেলো ৫ আগস্ট দুপুর আড়াইটায় বঙ্গভবন থেকে একটি সামরিক হেলিকপ্টার তাকে নিয়ে ভারতের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এ সময় তার সঙ্গে তার ছোট বোন শেখ রেহানা ছিলেন। ভারতে যাওয়ার আগে রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র দেন শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে বড় বড় পদে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তাদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। আবার অনেকেই স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করছেন।
এসি//
আইন-বিচার
সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণের সেই ভাস্কর্যটি উপড়ে ফেলা হয়েছে
সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে হাইকোর্ট এনেক্স ভবনের সামনে থাকা গ্রিক দেবী থেমিসের ভাস্কর্যটি ভাঙচুরের পর উপড়ে ফেলা হয়েছে।তবে কে বা কারা ভাস্কর্যটি ভেঙেছে তা জানা যায়নি।
বুধবার (৭ আগস্ট) দুপুরে ভাস্কর্যটি মাটিতে পরে থাকতে দেখা যায়। এর আগে,গেলো মঙ্গলবার সকালে ইস্পাতের তৈরি ভাস্কর্যটির হাত ও দাঁড়িপাল্লা ধরে থাকা হাত ভাঙা অবস্থায় দেখা গিয়েছিলো।
সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা জানান, গ্রিক দেবী থেমিসের আদলে ন্যায়বিচারের প্রতীক হিসেবে গড়ে তোলা ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। তবে কে বা কারা এটি করেছেন, তা তাদের জানা নেই।
এর আগে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্টে প্রবেশের মূল ফটকের বরাবর থাকা লিলি ফোয়ারায় প্রথমে ভাস্কর্যটি বসানো হয়। হেফাজতসহ কয়েকটি ইসলামি সংগঠনের দাবির মুখে ২০১৭ সালের মে মাসে ভাস্কর্যটি সরিয়ে এনেক্স ভবনের সামনে স্থাপন করা হয়।
আই/এ
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন