ফুটবল
উরুগুয়ের মাঠে ব্রাজিলের দাপুটে জয়
ল্যাটিন আমেরিকা অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইয়ে প্রথম তিন ম্যাচ জিতে সুবিধাজনক অবস্থানে ছিল শক্তিশালী দল ব্রাজিল। তবে সে তিন ম্যাচের প্রতিপক্ষ ছিল তুলনামূলক সহজ। তাই উরুগুয়ের বিপক্ষে চতুর্থ ম্যাচটি ছিল বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ব্রাজিলের বড় পরীক্ষা।
ম্যাচটি আবার উরুগুয়ের ঘরের মাঠে হওয়ায় বেড়ে গিয়েছিল ব্রাজিলের চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে জয় তুলে নিতে একদমই ভুল করেনি তিতের শিষ্যরা। উরুগুয়েকে তাদেরই মাঠে ২-০ গোলে হারিয়ে চার ম্যাচে চতুর্থ জয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।
একের পর এক ইনজুরি, সঙ্গে আবার করোনা ভাইরাসের ছোবল- ব্রাজিল ও উরুগুয়ের মধ্যকার ম্যাচটিতে সেরা একাদশ নামাতে পারেনি কোন দলই। তবু যাদের ওপর আস্থা রেখেছেন ব্রাজিল কোচ তিতে, তারা দিয়েছেন পূর্ণ প্রতিদান। যার ফলে এসেছে দুর্দান্ত এক জয়।
উরুগুয়ের ঘরের মাঠে স্বাগতিকদের এক কথায় পাত্তাই দেয়নি ব্রাজিল। ম্যাচের প্রথমার্ধেই দুই গোল করেন আর্থুর মেলো ও রিচার্লিসন। জবাবে দুইবার ক্রসবারে লাগানো ছাড়া পুরো ম্যাচে যেন খুঁজেই পাওয়া যায়নি উরুগুয়েকে। ব্রাজিল যেখানে অন্তত ৪টি শট রেখেছিল লক্ষ্য বরাবর, সেখানে উরুগুয়ে পারেনি একটিও।
ম্যাচের পাঁচ মিনিটের প্রথম সুযোগটা অবশ্য তৈরি করেছিল উরুগুয়েই। ডি-বক্সের বাম পাশ দিয়ে ঢুকে কাছের পোস্ট দিয়েই শট নিয়েছিলেন ডারউইন নুনেজ। কিন্তু সেটি প্রতিহত হয় পোস্টে লেগে। এর মিনিট দুয়েক পর ২৫ গজ দূর থেকে ফ্রি-কিক পায় ব্রাজিল। যেটি কাজে লাগাতে পারেননি ডগলাস লুইজ।
ব্রাজিলের সামনে এমন সুযোগ আসে আরও বেশ কয়েকবার। কিন্তু ফাইনাল থার্ডে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলায় গোল পায়নি তারা। উল্টো ব্রাজিলের ফ্রি-কিক থেকে কাউন্টার অ্যাটাক করে ভয় ধরিয়ে দিয়েছিলেন উরুগুয়ের স্ট্রাইকার এডিনসন কাভানি। গোলরক্ষক এডারসনের ক্ষিপ্রতায় সে যাত্রায় রক্ষা পায় ব্রাজিল।
প্রথম গোল পেতে তাদের অপেক্ষা করতে হয় ৩৪ মিনিট পর্যন্ত। ডানপ্রান্ত থেকে ক্রস বাড়িয়েছিলেন গ্যাব্রিয়েল হেসুস, ডি-বক্সের ভেতরে ঠিকঠাক ক্লিয়ার করতে পারেনি উরুগুয়ে। ফলে ফাঁকায় পেয়ে যান মিডফিল্ডার আর্থুর মেলো। নিকটবর্তী ডিফেন্ডারকে পাশ কাটিয়ে বাম পাশের পোস্ট দিয়ে বল জালে জড়ান মেলো।
গোল হজম করে ম্যাচে সমতা ফেরাতে মরিয়া হয়ে পড়ে উরুগুয়ে। কিন্তু উল্টো ৪৫ মিনিটের সময় দ্বিতীয় গোল হজম করে তারা। ডি-বক্সের বাইরে পাওয়া ফ্রি-কিক থেকে বল পান রেনান লোদি। তার বাড়ানো ক্রসে মাথা ছুঁইয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন রিচার্লিসন। এ গোলের ফলে প্রথমার্ধেই যেন ম্যাচের ফল ঠিক করে ফেলে ব্রাজিল।
তবে বিরতিতে যাওয়ার আগেই ব্রাজিল শিবিরে কাপন ধরিয়েছিল উরুগুয়ে। অতিরিক্ত যোগ করা তৃতীয় মিনিটে ম্যাচের প্রথম হলুদ কার্ড দেখেন ডগলাস লুইজ, বিপজ্জনক জায়গায় ফ্রি-কিক পায় স্বাগতিকরা। সেই ফ্রি-কিক থেকে উড়ে আসা বলে দারুণ এক হেড করেছিলেন গডিন। অসামান্য দক্ষতায় সেটিতে হাত ছুঁইয়ে বারের ওপর দিয়ে পাঠিয়ে দেন ব্রাজিল গোলরক্ষক।
ফলে দুই গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় ব্রাজিল। দ্বিতীয়ার্ধে ফিরে নিজের প্রথমার্ধের ধারেকাছেও খেলতে পারেনি উরুগুয়ে। উল্টো ৭১ মিনিটের সময় লাল কার্ড দেখেন কাভানি। যার ফলে দশজনের দলে পরিণত হয় উরুগুয়ে। তবে এ সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি ব্রাজিল, ম্যাচে হয়নি আর কোনো গোল।
তাই প্রথমার্ধে করা দুই গোলেই জয় নিশ্চিত হয় ব্রাজিলের। উরুগুয়ের মাঠে দুই গোলের এ জয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থান ধরে রাখল ব্রাজিল। চার ম্যাচে পূর্ণাঙ্গ ১২ পয়েন্ট পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের। আর কোন দলই এখন সব ম্যাচ জেতেনি।
নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে পেরুর বিপক্ষে খেলছে ব্রাজিলের চির প্রতিদ্বন্দ্বী দল আর্জেন্টিনা। প্রথমার্ধে তারা এগিয়ে রয়েছে ২-০ গোলে, ম্যাচটি তারা জিতলেও চার ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানেই থাকবে। অন্যদিকে চার ম্যাচে ৬ পয়েন্ট পাওয়া উরুগুয়ের অবস্থান পঞ্চম।
এস
ফুটবল
ফুটবলকে বিদায় জানালেন পেপে
সব ধরনের ফুটবল থেকে বিদায় নিলেন পর্তুগালের ডিফেন্ডার পেপে। বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তিনি।
সর্বশেষ ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে পর্তুগালের ম্যাচটাই হয়ে রইল ৪১ বছর বয়সী এই ফুটবলারের ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ।
সে ম্যাচে টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নিয়েছিল পর্তুগাল। ইউরোর মূলপর্বে সবচেয়ে বয়স্ক খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামার রেকর্ডও গড়েন তিনি।
পর্তুগালের হয়ে ১৪১ ম্যাচ খেলেছেন পেপে। জিতেছেন ২০১৬ ইউরো।
ফুটবল
বাফুফে থেকে পদত্যাগ করলেন সালাম মুর্শেদী
পদত্যাগ করেছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সিনিয়র সহসভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী। তিনি ২০০৮ সাল থেকে পদটিতে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
এছাড়াও সালাম মুর্শেদী বাফুফের অর্থ কমিটি ও রেফারিজ কমিটির প্রধানও ছিলেন। এই দুটি পদ থেকেও তিনি পদত্যাগ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সালাম মুর্শেদীর পদত্যাগের কথা জানায় বাফুফে। সালাম মুর্শেদী খুলনা–৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন।
ফুটবল
চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সংগঠক সাইদুর রহমান প্যাটেল
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অন্যতম সংগঠক ও উদ্যেক্তা সাইদুর রহমান প্যাটেল মারা গেছেন। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ছিলেন। হাসপাতালে থাকাকালীন সেসব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করতেন তিনি। অবশেষে ৭৩ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসের একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন সাইদুর রহমান। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) শোক জানিয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সাইদুর রহমানের অবদান ছিল অনস্বীকার্য। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন স্থানে তহবিল তুলতেন সাইদুর রহমানরা। তারা ভারতে ঘুরে ঘুরে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের হয়ে প্রীতি ম্যাচ খেলতেন। সেখান থেকেও তহবিল সংগ্রহ করতো এই দলটি।
একজন ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা রাখার লক্ষ্য নিয়েই স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠন করার উদ্যেগ নিয়েছিলেন সাইদুর রহমান প্যাটেলরা। এখানে খেলে যে অর্থ উত্তোলন হবে, তা মুক্তিযুদ্ধের জন্য গঠিত তহবিলে প্রদান করা হবে; এমনই ছিল স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সেসময়ের ভাবনা।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ইচ্ছা ছিল সাইদুর রহমানের। সবশেষ সাধারণ নির্বাচনের আগেই অবশ্য চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমাতে হয় তাকে। সেখানে লম্বা সময় ধরে চিকিৎসা নেওয়ার পর আর দেশে ফিরতে পারলেন না তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতেই নিজের জীবনের শেষ সময়টুকু কাটালেন।
সাইদুর রহমানের জন্ম ১৯৫১ সালের ৭ অক্টোবর। তিনি ঢাকার কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। পরে অবশ্য গেন্ডারিয়ায় চলে যায় তার পরিবার। গেন্ডারিয়াতেই বেড়ে উঠেছেন, স্থানীয় পর্যায়ে ফুটবল খেলতে খেলতে শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলেও নিজের জায়গা করে নেন। তিনি ঢাকার ইস্টএন্ডের হয়ে ফুটবল খেলেছেন। দ্বিতীয় বিভাগে ফরাশগঞ্জের হয়ে, প্রথম বিভাগে পিডব্লুডি’র হয়ে খেলেছেন সাইদুর রহমান প্যাটেল।
এম এইচ//