অপরাধ
ধার পরিশোধ করতে নবজাতককে অপহরণ: র্যাব
ঢাকার ধামরাইয়ে সাত দিনের নবজাতক শিশুকে অপহরণের পর মুক্তিপণ দাবির ঘটনায় জড়িত এক দম্পতিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। ধারের টাকা পরিশোধের জন্যই সাত দিনের শিশুকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করেন। জানালেন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
শনিবার (৪ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-মো. রুবেল শেখ (৩৫) ও তানিয়া আফরোজ (২৩)।প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অপহরণের ঘটনায় তাদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য দিয়েছেন।
র্যাব জানিয়েছে, গ্রেপ্তার রুবেল ধামরাইয়ের ঢুলিভিটার বাজার এলাকায় বিভিন্ন দোকান ও মানুষজনের কাছ থেকে বিভিন্ন অংকের টাকা ধার নিয়ে পরিশোধ করতেন না। তবে ধারের টাকা পরিশোধের জন্যই সাত দিনের শিশুকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করেন।
এলিট ফোর্স জানায়, শুক্রবার (৩ মার্চ) রাতে র্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল যশোরের অভয়নগর থানার আমতলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে অপহরণকারী দম্পতি মো. রুবেল শেখ ও তানিয়া আফরোজকে গ্রেপ্তার করে।
খন্দকার আল মঈন জানান, ভুক্তভোগী মিলি আক্তার কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার পাঠানপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ধামরাইয়ের ঢুলিভিটা এলাকার বিভিন্ন বাসা বাড়িতে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করে আসছিলেন। ঢুলিভিটা বাজারের পাশে থাকার কারণে একই এলাকার ভাড়াটিয়া রুবেল ও তার স্ত্রীর সাথে তার পরিচয় হয় এবং তাদের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। গ্রেপ্তারকৃত রুবেল মিলি আক্তারকে ফুফু বলে ডাকতেন।
তিনি গেলো ১৯ ফেব্রুয়ারি ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেন। ২৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় রুবেল ও তার স্ত্রী ভুক্তভোগীর সাথে দেখা করতে তার বাসায় আসেন। ভুক্তভোগী অসুস্থ থাকায় তার সাত দিনের নবজাতক শিশুকে রুবেল ও তার স্ত্রীর কাছে রেখে ওষুধ কেনার জন্য টাকা আনতে তিনি যে বাসায় কাজ করেন ওই বাসায় যান এবং টাকা নিয়ে ওষুধ কিনতে বাসায় ফিরে আসেন।
তিনি আরও জানান, ২০ মিনিট পর বাসায় ফিরে ভুক্তভোগী মিলি আক্তার রুবেল ও তার স্ত্রীকে তার বাসায় নবজাতকসহ তাদের না পেয়ে পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন স্থানে সন্ধান করেন। পরে ঢুলিভিটা বাজার কমিটির সহায়তায় রুবেলের বাসার ঠিকানা নিয়ে বাসায় গেলে বাসা তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখতে পান এবং রুবেলের মোবাইল ফোন বন্ধ পান। রুবেল মোবাইল ফোন চালু করলে প্রথমে নবজাতক শিশুকে নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে ফোন বন্ধ করে দেন। পরবর্তী সময়ে অন্য একটি নাম্বার দিয়ে ফোন করে ভুক্তভোগীর কাছে তার সন্তানকে ফিরিয়ে দিতে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। মুক্তিপণের টাকা না দিলে নবজাতককে মেরে ফেলারও হুমকি দেন।
র্যাব কর্মকর্তা জানান, গ্রেপ্তারকৃতরা ২-৩ মাস যাবত ঢুলিভিটা বাজার এলাকায় ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করে আসছেন। রুবেল ধামরাইয়ের ঢুলিভিটার বাজার এলাকায় বিভিন্ন দোকান ও মানুষজনের কাছ থেকে বিভিন্ন অংকের টাকা ধার নিয়ে পরিশোধ করতেন না। পাওনাদাররা ধার পরিশোধের জন্য চাপ দিতে থাকায় তিনি ঢুলিভিটা এলাকা থেকে অন্যত্র চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। পাশাপাশি ভুক্তভোগীর সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকায় কৌশলে মিলি আক্তারের নবজাতক শিশুকে অপহরণের মাধ্যমে মুক্তিপণ আদায়ের পরিকল্পনাও করেন।
পরিকল্পনা মোতাবেক গত ২৬ ফেব্রুয়ারি তারা ভুক্তভোগীর বাসায় যান। ভুক্তভোগী ওষুধ কিনতে বাইরে গেলে তারা সুযোগ বুঝে নবজাতক শিশুকে নিয়ে বের হয়ে যান এবং ধামরাই এলাকা থেকে প্রথমে বাসে করে খুলনায় যান। সেখানে আত্মগোপনের জন্য তারা সুবিধামত ভাড়া বাসা খুঁজতে থাকেন। পরে খুলনার অদূরে রূপসা নদীর অপর পাশে যশোরের আমতলা এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় উঠেন। গ্রেপ্তারকৃতরা বিভিন্নভাবে শিশুটির মাকে মুক্তিপণের টাকার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন। এরই মধ্যে নবজাতক শিশুটি তার মায়ের অনুপস্থিতিতে অসুস্থ হয়ে পড়লে তারা সিদ্ধান্ত নেন যে, মুক্তিপণ না পেলে শিশুটিকে গোপনে রূপসা নদীতে ফেলে দিয়ে আত্মগোপন করবেন।
র্যাব জানায়, গ্রেপ্তার রুবেল খুলনার একটি বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। জীবিকার তাগিদে ৭/৮ বছর আগে রাজধানী ঢাকায় আসেন। তিনি পেশায় একজন গামেন্টসকর্মী। পাশাপাশি রাজমিস্ত্রীর কাজ করতেন। রুবেল একাধিক বিবাহ করেছেন বলে জানা যায়। এছাড়াও তিনি ইতঃপূর্বে ধর্ষণচেষ্টা, অপহরণসহ বিভিন্ন অপরাধের সাথে যুক্ত ছিলেন।
আর গ্রেপ্তার তানিয়া আফরোজ একজন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার। তিন বছর আগে পরিবারের অমতে রুবেলকে বিয়ে করে ধামরাই ঢুলিভিটা এলাকায় বসবাস করতে থাকেন।
অপরাধ
রাজধানীতে বস্তা ভর্তি টাকাসহ একটি গাড়ি আটক করলেন শিক্ষার্থীরা
রাজধানীর উত্তরায় একটি প্রাইভেটকার থেকে এক বস্তা টাকাসহ একটি শটগান উদ্ধার করেছেন শিক্ষার্থীরা। এই ঘটনায় তিনজনকে হেফাজতে নিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
বুধবার (৭ আগস্ট) এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা গণমাধ্যমে জানান, রাজধানীর উত্তরার একটি বাসার গ্যারেজ থেকে গাড়িটি জব্দ করা হয়। এ সময় তিনজনকে হেফাজতে নেয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। পরে গাড়ি থেকে এক বস্তা টাকা উদ্ধার করে হেফাজতে নেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় স্থানীয় জনতা ও শিক্ষার্থীরা উল্লাস করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, আওয়ামী লীগ ঘরোয়ানার একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের এমডির গাড়ি থেকে এ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। গাড়ি থেকে এক বস্তা টাকাসহ একটি শটগান উদ্ধার করে উত্তরা টাউন কলেজের শিক্ষার্থীসহ অনান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এএম/
অপরাধ
কাশিমপুর কারাগার থেকে পালিয়েছে ২০৯ বন্দি, নিহত ৬
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২০৯ জন বন্দি পালিয়েছেন। পালিয়ে যাওয়ার সময় নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জন বন্দি নিহত হয়েছেন।
বুধবার (৭ আগস্ট) বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান,গেলো মঙ্গলবার বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দিরা কারাগার ভেঙে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কারারক্ষীরা তাদের নিভৃত করার চেষ্টা করলে বন্দিরা কারারক্ষীদের ওপর চড়াও হয়। বন্দিদের কেউ দেয়াল ভেঙে, কেউ দেয়াল টপকে, আবার কেউ দেয়ালের সঙ্গে বিদ্যুতের পাইপ লাগিয়ে কারারক্ষীদের মারধর করে পালিয়ে যেতে চান।
একপর্যায়ে সেনাবাহিনীকে খবর দিলে তারা কমান্ডো অভিযান চালিয়ে বিদ্রোহ দমন করেন।এসময়ে বন্দিদের মধ্যে ২০৯ জন দেয়াল টপকে পালিয়ে গেছে।বন্দিদের ঠেকাতে নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, নিহতদের নাম পরিচয় পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন সিনিয়র জেল সুপার।
আই/এ
অপরাধ
কাশিমপুর কারাগারে তীব্র উত্তেজনা, সেনাবাহিনীর শক্ত অবস্থান
গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে বন্দিরা মুক্তির দাবিতে উত্তেজনা শুরু করেছেন। কারারক্ষীদের জিম্মি করে অনেকে দলবদ্ধভাবে বের হয়ে আসার চেষ্টা করছেন। খবর পেয়ে সেনা সদস্যরা এসে প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) দুপুরের দিকে এ পরিস্থিতি দেখা গেছে। এসময়ে ওই এলাকার আকাশে হেলিকপ্টার চক্কর দিতে দেখা যায়।
কারা কর্তৃপক্ষ জানান, কাশিমপুর কারা কমপ্লেক্সে পৃথক চারটি কারাগার রয়েছে। এর মধ্যে বিডিআর বিদ্রোহ মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি, ফাঁসি ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত দুর্ধর্ষ জঙ্গি বন্দিরা রয়েছে। এছাড়া রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার অনেক নেতাকর্মীও ওই কারাগারে রয়েছে।
জানা যায়, বেলা ১১টার দিকে কিছু বন্দি কারাগারের অভ্যন্তরে থাকা কারারক্ষীদের জিম্মি করে মুক্তির দাবিতে বিদ্রোহ শুরু করে। এসময়ে কারারক্ষীরা তাদের শান্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। আগে থেকেই সেখানে অল্প সংখ্যক সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন। উত্তেজনা আরও বেড়ে গেলে দুপুর দেড়টার দিকে অতিরিক্ত সেনা সদস্য হেলিকপ্টার যোগে কারা অভ্যন্তরে এসে বন্দিদের নিয়ন্ত্রণ করেন।
প্রসঙ্গত, কারা অভ্যন্তরে বিদ্রোহের খবর পেয়ে বন্দিদের স্বজনরা সকাল থেকেই কারাগারের সামনে অবস্থান করেন। এ সময় তাদের সঙ্গে আন্দোলনকারীরা যোগ দিয়ে বিক্ষোভ করে। কারাগারের বাইরে একটি ঝুট গুদামে অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরে সেনা সদস্যরা বাইরের বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে দেন।
আই/এ
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন