এশিয়া
ভাঙনের সুর পাকিস্তান সরকারে
জোট গঠন করে ইমরান খানকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়েছিল দক্ষিণ এশিয়ার এ দেশটির বেশ কয়েকটি দল। পরে পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করে শেহবাজ শরিফের নেতৃত্বে সরকারও গঠন করে তারা। এরপর বিরোধী নেতা হিসেবে ইমরান দেশটির ক্ষমতাসীনদের চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে দিলেও এবার অসন্তোষ দেখা দিয়েছে খোদ জোট সরকারের ভেতরেই।
সোমবার (৬ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিশ্রুতি পূরণ করা বা না করা নিয়ে পাকিস্তানের সরকার থেকে বেরিয়ে যাওয়ার হুমকি দিয়েছেন ক্ষমতাসীন জোটের অন্যতম শরিক পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) চেয়ারম্যান এবং দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো-জারদারি।
তিনি বলেছেন, কেন্দ্রীয় সরকার যদি সিন্ধু প্রদেশের বন্যা দুর্গতদের ত্রাণ দেয়ার প্রতিশ্রুতি পূরণ না করে তবে তার দলের পক্ষে ফেডারেল সরকারের অংশ হিসেবে থাকা খুব কঠিন হবে।
গেলো বছরের ডিসেম্বরে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ সিন্ধু প্রদেশের খয়েরপুর জেলার বন্যাকবলিত পীর গুড্ডু এবং কোট ডিজি এলাকায় বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসন কাজ পরিদর্শন করেন এবং বন্যা দুর্গতদের জন্য ঘর নির্মাণের ঘোষণা দেন।
পিপিপি নেতা ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার তীব্র ক্ষোভ ও দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ফেডারেল সরকার বন্যার্তদের জন্য যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তা পূরণ করা হয়নি। তিনি আরও বলেন, দেশে ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতির মধ্যে বন্যাকবলিত জনগোষ্ঠী কঠিন সময় পার করছে।
বিলাওয়াল ভুট্টো-জারদারি আরও বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত বন্যা দুর্গতদের অগ্রাধিকার দেওয়া। তার ভাষায়, ‘যদি ফেডারেল সরকার বা প্রধানমন্ত্রী (শেহবাজ শরিফ) কোনও প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকেন, তাহলে সেগুলো পূরণ করতে হবে।’
সিন্ধু প্রদেশের ক্ষমতায় রয়েছে পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)। পিপিপি চেয়ারম্যানের মতে, সিন্ধুর ক্ষমতাসীন দল জাতীয় পরিষদের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর সামনেও বিষয়টি উত্থাপন করবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ফেডারেল সরকার (প্রতিশ্রুতি পূরণের মাধ্যমে) তাদের উদ্বেগ দূর করবে।পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল বলছে, নিজের জোট সরকারের প্রতি বিরক্তি প্রকাশ করে ‘সিন্ধুতে বন্যা দুর্গতদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ না হলে’ মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিলাওয়াল ভুট্টো-জারদারি।
রোববার (৫ মার্চ) করাচিতে বন্যাকবলিত কৃষকদের জন্য বিআইএসপির অধীনে বীজ ভর্তুকি কর্মসূচির উদ্বোধন শেষে তিনি এই মন্তব্য করেন। বিলাওয়াল বলেন, ‘বন্যা দুর্গতদের যে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে তা পূরণ করা প্রয়োজন অন্যথায় আমাদের (ফেডারেল সরকারের) অংশ হিসেবে থাকা কঠিন হবে।’
এছাড়া পাকিস্তানে চলমান দেশটির প্রথম ডিজিটাল আদমশুমারি নিয়েও ক্ষমতাসীনদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। পাকিস্তানের ইতিহাসে প্রথম এ ডিজিটাল আদমশুমারিকে ‘ত্রুটিপূর্ণ’ বলেও আখ্যায়িত করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো-জারদারি। একইসঙ্গে সিন্ধুর মুখ্যমন্ত্রী মুরাদ আলি শাহ চলমান আদমশুমারির বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
অন্যান্য প্রদেশের তুলনায় সিন্ধুতে আবাসন আদমশুমারির ফলাফলে ব্যাপক পার্থক্য ছিল উল্লেখ করে বিলাওয়াল বলেন, আমরা ২০১৮ সালের আদমশুমারির ফলাফলে আপত্তি জানিয়েছিলাম। এছাড়া সেসময় আবাসন আদমশুমারির ১০ শতাংশ পুনঃগণনার দাবি করেছিলেন বলেও জানান এ পিপিপি নেতা।
ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন পিটিআই সরকারের নাম না করে বিলাওয়াল বলেন, ২০১৮ সালের সেই আদমশুমারি লক্ষ্য ছিল একটি ‘বাছাইকৃত’ দলকে ক্ষমতায় আনা। সিন্ধু আন্তঃ-প্রাদেশিক বৈঠকে আদমশুমারি নিয়ে আপত্তি উত্থাপন করেছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, তার প্রদেশ ইতোমধ্যেই ফেডারেল সরকারের কাছে ডিজিটাল আদমশুমারি নিয়ে আপত্তি পাঠিয়েছে।
তার ভাষায়, ‘এমনকি আমি জানতামও না যে এবারের আদমশুমারি অনলাইনে অনুষ্ঠিত হবে।’
পাকিস্তানের এ পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্পষ্ট করে বলেন, ‘যদি একটি বা দু’টি প্রদেশে ভোট ভিন্ন আদমশুমারির ভিত্তিতে হয় এবং অন্য প্রদেশের নির্বাচন ত্রুটিপূর্ণ ডিজিটাল আদমশুমারির ভিত্তিতে অনুষ্ঠিত হয়, তবে তা পিপিপির কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না।’
ফেডারেল সরকার এসব অভিযোগের কোনও প্রতিকার না করলে সিন্ধু সরকার ডিজিটাল আদমশুমারিকে সমর্থন করবে না বলেও ঘোষণা দেন পিপিপি চেয়ারম্যান।
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
এশিয়া
শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর যা বললেন পুতুল
ছাত্র-জনতার ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন শেখ হাসিনা। দেশে গঠিত হচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে মায়ের পদত্যাগ ও দেশত্যাগ নিয়ে এবার মুখ খুলেছেন মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। জানিয়েছেন তার প্রতিক্রিয়া।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে যেতে বাধ্য হওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে এ বিষয়ে আবেগঘন পোস্ট দিয়েছেন মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল।
পোস্টে তিনি লিখেছেন, আমার দেশ বাংলাদেশ যাকে আমি ভালোবাসি, সেখানে প্রাণহানির ঘটনায় হৃদয় ভেঙে গেছে। আরও হৃদয়বিদারক যে, আমি এই কঠিন সময়ে আমার মাকে দেখতে ও আলিঙ্গন করতে পারিনি। আমি আরডি হিসেবে আমার দায়িত্ব পালনের বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছি।
প্রসঙ্গত, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল বর্তমানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে দায়িত্বপালন করছেন।
জিএমএম/
এশিয়া
ভারতীয় গণমাধ্যম বাংলাদেশ নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে: পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের স্থানীয় গণমাধ্যমে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। জানিয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। এ ব্যাপারে রাজ্যের বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এ আহ্বান জানানো হয়।
পোস্টে বলা হয়, কিছু স্থানীয় টিভি চ্যানেলে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে যেভাবে রিপোর্টিং হচ্ছে, তা খুবই দৃষ্টিকটুভাবে সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক এবং ভারতের প্রেস কাউন্সিলের নিয়মাবলীর পরিপন্থী। দর্শকদের অনুরোধ, এই ধরনের কভারেজ দেখার সময় নিজস্ব বিচারবিবেচনা প্রয়োগ করুন এবং মাথায় রাখুন যে, চ্যানেলের দেখানো ফুটেজের সত্যতা কিন্তু কোনও নিরপেক্ষ তৃতীয় সংস্থা দিয়ে যাচাই করা নয়। একতরফা বিদ্বেষমূলক এবং বিভ্রান্তিকর প্রচারের ফাঁদে পা দেবেন না। শান্ত থাকুন, শান্তি বজায় রাখুন।
সোমবার (৫ আগস্ট) পদত্যাগ করে ভারত চলে যান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকেই ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলার মিথ্যা তথ্য ছড়ানো শুরু করে।
এমনকি বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় লিটন দাসের বাড়িতে হামলা হয়েছে বলে খবর বের হয়। পরে জানা যায়, মাশরাফির বাড়িতে হামলার ভিডিও ব্যবহার করে সেটি লিটন দাসের বাড়ি বলে গুজব ছড়ানো হয়েছে।
জিএমএম/
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন