ব্যাংকিং ও বীমা
সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক দেউলিয়া
আর্থিক সংকটে বন্ধ হওয়া সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক নিয়ে দুশ্চিন্তায় বিনিয়োগকারীরা। বিশেষ করে প্রযুক্তিনির্ভর প্রতিষ্ঠানগুলো এ নিয়ে বেশি চিন্তিত। ক্রমাগত পতনের পর গ্রাহকরা ব্যাংক থেকে তাদের আমানত উঠাতে শুরু করেছে। এরইমধ্যে গেলো শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের রেগুলেটর ব্যাংকটির গচ্ছিত সম্পদ অধিগ্রহণ করেছে। বিশ্বব্যাপী এ নিয়ে তুমুল শঙ্কা কাজ করছে বড় বড় ব্যাংকগুলোর মধ্যে। কেন ব্যাংকটির এই বিপর্যয়।
আল জাজিরার এক বিশ্লেষণে এর কারণ হিসেবে সবার আগে উঠে এসেছে প্রযুক্তি নির্ভর স্টার্টআপে ঋণ দেয়া।
সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক তার বেশিরভাগ অর্থ বিনিয়োগ করেছিল বন্ডে। যা নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে ধরা হয়। মূলত যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের বন্ডে সুদের পরিমাণ বৃদ্ধির ফলে মুদ্রাস্ফীতি বাড়তে থাকে। আর তার ফলশ্রুতিতে কমে যায় বন্ডের মূল্যমান।
আরেকটি কারণ হলো যুক্তরাষ্ট্রে করোনা বৃদ্ধির ফলে টেক সেক্টরে বড় ধরণের পতন আসে। যার কারণে আমানতকারীরা তাদের মূলধন বিপর্যয় সামাল দিতে বিনিয়োগ তুলে নিতে থাকে। এসভিবি বিশাল আর্থিক ক্ষতি দিয়ে বন্ড বিক্রি করতে বাধ্য হয়। আমানতকারীদের ক্রমাগত অর্থ উত্তোলন ব্যাংকের এই বড় পতনে ভূমিকা রাখে।
জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্লোবাল ফাইনান্সিয়াল মার্কেট বিশেষজ্ঞ জেমন মাইকেল মনে করেন, ব্যাংকের পতনের আরেকটি কারণ হলো সুদের হার নির্ধারণ ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় বড় ধরণের ভুল করা। তারা স্বল্পমেয়াদি আমানত দীর্ঘমেয়াদি বন্ডে বিনিয়োগ করে। যখন সুদের হার বাড়িয়ে দেয়া হয় তখন বন্ডের দামও কমতে থাকে। এর ফলে সমস্ত সম্পদ বিক্রি করেও বিনিয়োগকারীদের টাকা শোধ করার মতো আমানত উঠে আসেনি।
ডিউক ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ক্যাম্পবেল আর হার্ভে বলেন, ঘটনাটি ব্যাংকগুলোর জন্য উদহারণ। কারণ গচ্ছিত আমানত বেশ কয়েকটি খাতে বিনিয়োগ করতে হয় একটি খাতে নয়। ব্যাংকের ঋণ ও আমানত বহুমুখী খাতে বিনিয়োগ না করার মাশুল দিয়েছে সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক।
এসভিবি ১৬তম বড় ব্যাংক। যাকে বলা হয় মধ্যসারির ব্যাংক। ফেডারেল ডিপওজিট ইন্সুরেন্স কর্পোরেশনের তথ্যমতে, গেল বছরের ডিসেম্বরে বিনিয়োগকারীদের ২০৯ বিলিয়ন সম্পদ ছিল এর বাইরে আরো ১৭৫ বিলিয়ন আমানতের অর্থ ছিল। যার বিপরীতে আমেরিকার সবচেয়ে বড় ব্যাংক জেপি মরগান চেজের গচ্ছিত আমানত ছিল ৩,৬৭ ট্রিলিয়ন।
শুধু তাই নয় এসভিবির প্রযুক্তিখাতে বড় ধরণের প্রভাব আছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সিলিকন ভ্যালি ব্যাংকে টেক স্টার্টআপের বড় ঋণ সরবরাহকারী হিসেবে দেখতো। যেখানে অন্য ব্যাংকগুলো এই খাতে ঋণ দেয়াকে ঝুকি মনে করতো।
যদিও আমানতকারীদের অর্থ অনেকটাই নিরাপদ বলছে ব্যাংক। বিয়ার স্টিয়ান্স এবং লেম্যান ব্রাদারস এর মতো প্রতিষ্ঠান অনেক খাতে বিনিয়োগ করেছিল। যেখানে এসভিবি একটি খাতে বিনিয়োগ করেছে এবং অন্যসব ব্যাংকের সাথে তাদের লেনদেনও ছিল সীমিত।
ব্যাংক তার তারল্য সংকট দূর করতে ঋণ নিতে পারবে। এছাড়াও আমেরিকার অন্য ব্যাংকগুলো এখন আর্থিক দুরবস্থার মধ্যে নেই, যা সিলিকন ভ্যালি ব্যাংকের জন্য আশার কারণ হতে পারে।
ব্যাংকিং ও বীমা
বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার
বাংলাদেশে ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে। গেলো এপ্রিল মাসে বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশে অলিখিত নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলো গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর কাজী ছাইদুর রহমান।
তিনি বলেন, গভর্নর ও ডেপুটি গভর্নরদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সাংবাদিকরা আগের মতো কেন্দ্রীয় ব্যাংকে প্রবেশ করতে পারবেন। তবে এমন কোনো প্রতিবেদন করবেন না, যার ফলে এ খাতে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়ে সংকট দেখা দেয়। তারা অনিয়মের সঙ্গে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন। যারা অনৈতিক সুবিধা নিয়েছেন তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে এ বিষয় তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। দেশে সংস্কার শুরু হয়েছে। পরবর্তী সরকার যেভাবে নির্দেশনা দেবে ওইভাবে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, এর আগে সাংবাদিকদের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভেতরে প্রবেশের অস্থায়ী পাস ইস্যু বন্ধ রাখা হয়। সেসময় অর্থনীতিবিষয়ক রিপোর্টিংয়ের সঙ্গে যুক্ত সাংবাদিকরা এবং গণমাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন বিষয়টির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছিলো।
আই/এ
ব্যাংকিং ও বীমা
৩ দিন ব্যাংক বন্ধ থাকবে
আগামী তিন দিন (সোম-মঙ্গল-বুধবার) ব্যাংক বন্ধ থাকবে। রোববার (৪ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, সরকারের নির্বাহী আদেশে সারাদেশে তিন দিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এসময় সব ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।
এরআগে সরকার নির্বাহী আদেশে সারাদেশে তিন দিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে।এসময় দেশের সকল সরকারি, বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।
সন্ধ্যা ছয়টা থেকে সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে ছাত্র-জনতার সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনে দেশব্যাপী ব্যাপক সংঘর্ষ ও প্রাণহানির ঘটনার পর রোববার বিকালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এমন সিদ্ধান্তের কথা জানানো হলো।
জেএইচ
অর্থনীতি
বুধবার থেকে স্বাভাবিক নিয়মে চলবে ব্যাংকিং কার্যক্রম
আগামীকাল বুধবার (৩১ জুলাই) থেকে সকল সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকিং কার্যক্রম চলবে আগের মতো স্বাভাবিক নিয়মে। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ব্যাংকে লেনদেন হবে, আর ব্যাংকগুলোর দাপ্তরিক কার্যক্রম চলবে ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত।
মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে ব্যাংকের মত দেশের শেয়ারবাজারেও বুধবার থেকে স্বাভাবিক লেনদেন হবে। অর্থাৎ সকাল ১০টায় লেনদেন শুরু হয়ে চলবে দুপুর ২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত। মূল লেনদেন হবে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা ২০ মিনিট পর্যন্ত। পরের ১০ মিনিট থাকবে পোস্ট ক্লোজিং।
উল্লেখ্য, কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দেয়া কমপ্লিট শাটডাউন ঘিরে সহিংসতা শুরু হয়। এর ফলে গত শনিবার (২০জুলাই) রাতে দেশে কারফিউ জারি করে। রোববার, সোমবার ও মঙ্গলবার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। কারফিউ ও সাধারণ ছুটির জন্য ব্যাংক তিনদিন বন্ধ ছিল। এরপর পাঁচ কার্যদিবসে কারফিউ শিথিলের সময় সীমিত পরিসরে ব্যাংকিং কার্যক্রম চলে। ফলে ১২ দিন ও ৮ কার্যদিবস পর স্বাভাবিক ব্যাংকিং চালু হচ্ছে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) সবশেষ স্বাভাবিক ব্যাংকিং কার্যক্রম হয়।
জেডএস/
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন