বিএনপি
ভণ্ড রাজনীতি করে আওয়ামী লীগ: ফখরুল
আওয়ামী লীগ সব সময় মিথ্যা কথা বলে, প্রতারণা করে। ভণ্ড রাজনীতি করে মানুষকে ভুল পথে পরিচালিত করে তারা বারবার ক্ষমতায় যেতে চায়। বলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সোমবার (২০ মার্চ) দুপুরে সৈয়দপুরে আয়োজিত নীলফামারী জেলা বিএনপির সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ছাড়া দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যাবে না জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘ভোট জিনিসটা তারা (আওয়ামী লীগ) তুলে দিয়েছে কিন্তু দেখাতে চায় তারা একটা ভোট করছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ছাড়া দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যাবে না বিএনপি। ভোট জিনিসটা আওয়ামী লীগ তুলে দিয়েছে কিন্তু দেখাতে চায় তারা একটা ভোট করছে।’
তিনি বলেন, ‘এবার ভিন্নভাবে আবারও আওয়ামী লীগ একদলীয় শাসন ব্যবস্থা বাকশাল প্রতিষ্ঠা করতে চায়। ২০১৪ সালে তারা নির্বাচন করেছে, কোনো নির্বাচনই হয়নি। ১৫৪ জনকে ঘোষণা করে দিয়েছে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত। ২০১৮ সালে নির্বাচন করেছে, কোনো নির্বাচনই হয়নি। আগের রাতে সবাইকে নির্বাচিত ঘোষণা করে দিয়েছে। আর ক্ষমতায় পরে তারা একে একে রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে।’
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ জুডিসিয়ারি সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে।
সংসদে কোনো জবাবদিহিতা নেই উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, সেখানে কোনো বিতর্ক, দেশের সম্পর্কে কোনো আলোচনা হয় না। শুধুমাত্র দুটি কাজই তারা সফলভাবে করতে পেরেছে—চুরি; রাষ্ট্রের সমস্ত সম্পদ তারা লুট করে নিয়ে যাচ্ছে এবং সেটাকে পাচার করে দিচ্ছে দেশের বাইরে। আরেকটা হচ্ছে, সন্ত্রাস সৃষ্টি করে ভয় দেখাচ্ছে, মানুষ প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ আবারও একটি নতুন নির্বাচনের পাঁয়তারা শুরু করেছে। দেশের স্বার্থে এ নির্বাচন অবশ্যই প্রতিহত করতে হবে। বিএনপি কোনো মতেই আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে এ দেশে কোনো নির্বাচন হতে দেবে না। যেখানে ভোটের অধিকার থাকে না, জনগণ সেই ভোট মানে না। আওয়ামী লীগের অধীনে এ দেশের মানুষ কোনো নির্বাচনে যাবে না।’
ফখরুল বলেন, ৫০ বছর হয়ে গেছে স্বাধীনতার। এখনো শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর ব্যবস্থা করা যায়নি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ধারণা আওয়ামী লীগ নিয়ে এসেছিল। জামায়াত ও জাতীয় পার্টির সঙ্গে ১৭৩ দিন হরতাল করেছিল। বিএনপি প্রথম দিকে মনে করেছিল এটা ঠিক হবে না। পরে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দেখলেন জনগণ চায় নির্বাচনকালীয় নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক থাকুক, তখন তিনি সেটা মেনে নিয়েছিলেন। ৪টি নির্বাচন হয়েছে অত্যন্ত সুষ্ঠু-সুন্দরভাবে, একবার আওয়ামী লীগ এসেছে, একবার বিএনপি এসেছে। কেউ তো প্রশ্ন করেনি!
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেই সংবিধান পাল্টে দিলো। কারণ কিছু দিনের মধ্যেই দেখল তারা নিরপেক্ষ নির্বাচনে জয়ী হতে পারবে না। সেই জন্য তারা দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করেছে। এখনো তারা চিৎকার করছে, সংবিধানের আলোকে নির্বাচন হবে। কোন সংবিধান? এই সংবিধান তো সেই সংবিধান নেই! এটা তারা পরিবর্তন করেছে গায়ের জোরে।
ফখরুল আরও বলেন, ‘এ কথাটা তারা বিএনপিকে ক্ষমতায় নেয়ার জন্য নয়, বলছেন দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।
বিএনপি
অন্তর্বর্তী সরকারকে অভিনন্দন জানালেন তারেক রহমান
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের জন্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং তার সহযোগী উপদেষ্টাদের অভিনন্দন জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপাসন তারেক রহমান। বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাত ১২টা ১২ মিনিটে নিজের ফেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এ অভিনন্দন জানান।
অভিনন্দন বার্তায় তারেক রহমান লিখেছেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের জন্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং তার সহযোগী উপদেষ্টাদের অভিনন্দন। যদি পেছনে ফিরে তাকাই গেলো ১৬ বছর ধরে শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী শাসনামলে বাংলাদেশের মানুষ ব্যাপক অধিকার লঙ্ঘন ও অবিচারের সম্মুখীন হওয়ার পর এই মুহুর্তটি এসেছে। আমাদের সাহসী ছাত্র-শিক্ষক, কর্মী, রিকশাচালক থেকে শুরু করে গৃহিণী, সাধারণ নাগরিক এবং রাজনৈতিক কর্মী- সমস্ত গণতন্ত্রপ্রেমী মানুষ ব্যাপকভাবে কোটা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছে
তিনি বলেন, এই বিক্ষোভ শুধু কোটা সংস্কার নিয়ে নয়, নজিরবিহীন দুর্নীতি, মূল্যস্ফীতি, বেকারত্ব, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা দমন-পীড়ন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান। আওয়ামী লীগের শাসনামলে অন্যায়ের মাত্রা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছিল।
নতুন সরকারের কাছে জনগণের প্রত্যাশার কথা তুলে ধরে বিএনপির এই নেতা বলেন, সেই শাসনের পতনের সাথে সাথে বাংলাদেশের জনগণ অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য স্বাধীনভাবে ভোটাধিকারের প্রত্যাশা করে যেন তারা তাদের গণতান্ত্রিক আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটাতে পারে।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশে বিএনপির অবস্থা তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, বিএনপি একটি পাবলিক ম্যান্ডেটসহ একটি নির্বাচিত সরকার গঠন এবং জনগণের সেবা করে একটি জবাবদিহিমূলক সংসদ, জনগণের অধিকার ও স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার এবং এর ফলে আইনের শাসন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠাকে সমর্থন করে।
উল্লেখ্য, নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়েছে। বঙ্গভবনের দরবার হলে বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে শপথ নিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টারা। প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে প্রথমে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন। এরপর বাকি ১৬ উপদেষ্টার মধ্যে ১৩ জন শপথ পাঠ করেন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুকী আযম।
জেএইচ
বিএনপি
ছাত্র-জনতার সমর্থনেই ড. ইউনূসকে সরকারের প্রধান করা হয়েছে: ফখরুল
ছাত্র-জনতার সমর্থনেই ড. ইউনূসকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান করা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নিতে যাওয়া নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে দেশে চলমান সহিংসতা ও সংকট কেটে যাবে। বলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে আহত নেতাকর্মীদের দেখতে রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় আবেগপ্লুত মির্জা ফখরুল বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতদের যে দৃশ্য দেখেছি তা সহ্য করার মতো না।
নতুন সরকার দেশে দ্রুত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করবে আশা প্রকাশ করে ফখরুল বলেন, অর্থনীতিকে সচল রাখার দ্রুত উদ্যোগ নিবে সরকার। অন্তবর্তীকালীন সরকার দেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করার কথা জানান তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ছাত্র ও আমাদের মনোনীত ব্যক্তি ড. ইউনূস। তার সফল নেতৃত্বে চলমান সহিংসতা ও সংকট কেটে যাবে বলে বিশ্বাস করি।
এএম/
বিএনপি
নির্বাচন আয়োজনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহায়তা করবে বিএনপি : ফখরুল
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে তিন মাসের মধ্যে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এসময়ে নির্বাচন আয়োজনে এ সরকরারকে বিএনপি পূর্ণ সহযোগিতা করবে বলেও জানান তিনি।
বুধবার (৭ আগস্ট) বিকেলে নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে এ দাবি জানান তিনি।
রাষ্ট্রপতির কাছে দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, কোনো বিলম্ব না করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করুন। এই সরকার যারা হবেন, তারা তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন করবেন; সেই ব্যবস্থা তারা করবেন এবং এর জন্য পূর্ণ সহযোগিতা বিএনপি তাকে দেবে।
বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারকে পদত্যাগ করে পালিয়ে যেতে হয়েছে। এ বিজয় ছাত্রদের, এ বিজয় আপনাদের। যে বিজয় অর্জিত হয়েছে, এটাকে রক্ষা করতে সবাই সচেতন থাকবেন। চক্রান্তকারীরা নতুন করে চক্রান্ত করতে পারে। তারা বিজয়কে বিলিয়ে দিতে পারে চক্রান্তের মধ্য দিয়ে। সেই সুযোগ যেন তাদের না দেয়া হয়। যারা এসব করছে তারা দেশের শক্র। এরা কোনো আন্দোলনকারী হতে পারে না।
হামলা বা ভাঙচুর হচ্ছে তারা বিএনপির লোক নয় দাবি করে তিনি আরও বলেন, যারা আজকে বিভিন্ন এলাকায়, বিভিন্ন শহরে বন্দরে ভাঙচুর করছে, লুটপাট করছে তারা কেউ বিএনপির লোক নয়। তারা ছাত্রদের কেউ না। তারা দুর্বৃত্ত, দুষ্কৃতকারী। এটা তাদেরই লোক যারা এদেশে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে চায়। সজাগ থাকবেন, সাবধান থাকবেন। বার বার বিজয় ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। এ বিজয় যেন ছিনিয়ে নিতে না পারে।
প্রসঙ্গত, সমাবেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও দলটির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
আই/এ
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন