ইসলাম
ঝগড়া-মারামারিতে লিপ্ত না হয়ে বলতে হবে ‘আমি রোজাদার’
সব পাপাচার, ঝগড়া-বিবাদ কিংবা গালাগাল থেকে বিরত থাকা রোজার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিধান। রোজা ছাড়াও ইসলামে ঝগড়া-বিবাদ বা অশ্লীল কথাবার্তা বা গালাগাল নিষিদ্ধ, আর রোজা অবস্থায় আরও মারাত্মক।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘তোমাদের কেউ রোজা রাখলে সে যেন অশ্লীল কথা ও মূর্খতা পরিহার করে। যদি কেউ তাকে গালমন্দ করে কিংবা তার সঙ্গে ঝগড়া-মারামারিতে লিপ্ত হয়, সে যেন বলে, আমি রোজাদার।’
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘যখন তোমাদের কেউ কোনো দিন রোজা অবস্থায় ভোরে উপনীত হয়, সে যেন অশ্লীল কথাবার্তা ও জাহিলি আচরণ না করে। যদি কেউ তাকে গালাগাল করে বা তার সঙ্গে ঝগড়া-বিবাদে লিপ্ত হতে উদ্যত হয়, তখন সে যেন বলে, আমি রোজা পালনকারী, আমি রোজা পালনকারী।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৫৯৩)
আমাদের প্রিয় নবি (সা.) কথাবার্তায় অশ্লীলভাষার প্রয়োগ পছন্দ করতেন না। তাই মুমিনদের তিনি এ ব্যাপারে বিশেষভাবে সতর্ক করেছেন। হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, ‘মুমিন কখনো দোষারোপকারী, অভিশাপদাতা, অশ্লীলভাষী ও গালাগালকারী হয় না।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২০৪৩)
তাই রোজা অবস্থায় কেউ গালি দিলেও তার জবাবে গালি দেয়া যাবে না। কেউ মারামারি কিংবা ঝগড়া-বিবাদ করতে চাইলেও তা এড়িয়ে চলতে হবে।
ইসলাম
পা ছুঁয়ে সালাম করা কি ইসলামে জায়েজ?
সালাম ইসলামে সর্বোত্তম ও একমাত্র অভিবাদন। সালাম দেয়া-নেয়া নবী-রসুলদের সুন্নত। মহান আল্লাহ আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করে সর্বপ্রথম সালামের শিক্ষা দেন। তিনি সালাম দিলে ফেরেশতারাও উত্তর দিতেন। আমাদের সমাজে অনেককে দেখা যায়, বাবা-মাকে বা নতুন বিয়ে করলে গণহারে কদমবুসি করেন। পায়ে ধরে সালাম করেন। ইসলামে এভাবে পা ছুঁয়ে সালাম করা কি জায়েজ?
পা ছুঁয়ে সালাম করা ইসলামি সংস্কৃতি নয়। ইসলামে সালাম বলতে ‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ’ বুঝায়। ইসলামে উত্তমভাবে সালাম ও সালামের উত্তর দেয়ার কথা রয়েছে। সাহাবায়ে কেরামরা নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ‘আসসালামু আলাইকুম’ বলেই সালাম দিয়েছেন। পায়ে ধরে সালাম করেননি। সুতরাং এটি আমাদের করা কোনোভাবেই উচিত নয়।
হাদিসে বড়জোর মুসাফাহা-মুআনাকার কথা এসেছে; কিন্তু কদমবুসির কথা আসেনি। আনাস (রা.) বলেন, এক ব্যক্তি এসে বলল, হে আল্লাহর রসুল! আমাদের মধ্যে কোনো ব্যক্তি যখন তার কোনো ভাই বা বন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে, তখন সে কি মাথা ঝুঁকাবে বা তাকে জড়িয়ে ধরবে বা চুমু খাবে? তিনি বললেন, না। লোকটি বলল, তাহলে কি কেবল হাত ধরবে ও মুসাফাহা করবে? নবীজি বললেন, হ্যাঁ৷ (তিরমিজি: ২৭২৮; ইবনে মাজাহ: ৩৭০২)
নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাথা ঝুঁকাতে নিষেধ করেছেন। বাস্তবতা হচ্ছে, পা ছুঁয়ে ‘সালাম’ করার সময় সাধারণত মাথা ঝুঁকে যায়। আর রুকুর কাছাকাছি হয়ে সালামের জন্য ইশারা করা, ঝুঁকে পড়া এসব মাকরুহ। (সাকবুল আনহুর ৪/২০৫)
বর্তমান প্রচলিত কদমবুসিতে রুকুর হালত এবং সেজদার হালত হওয়া স্পষ্ট। সেই সঙ্গে এটি ইসলামি সংস্কৃতি নয়। তাই সালামের এ নতুন পদ্ধতি থেকে বিরত থাকতে হবে।
নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ ছাড়া কারও সামনে মাথা ঝুঁকাতে নিষেধ করেছেন। সুতরাং বর্তমান সমাজে প্রচলিত পা ছুঁয়ে সালাম বা কদমবুচি করা মাকরুহ। বিশেষত সালামের সময় কারও সম্মানে মাথা ঝোঁকানো শরিয়তে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। (আদ্দুররুল মুখতার : ২/২৪৫, রদ্দুল মুহতার : ৬/৩৮৩)
এএম/
ইসলাম
হজের ফিরতি ফ্লাইট শুরু আজ
হজের ফিরতি ফ্লাইট শুরু হচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার (২০ জুন)। প্রথমদিনে দুটি ফ্লাইটে ৮৩৯ জন হাজির দেশে ফেরার কথা রয়েছে। হজ পোর্টালে আইটি হেল্প ডেস্কের প্রতিদিনের বুলেটিন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
হেল্প ডেস্কের তথ্যমতে, আজ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এবং ফ্লাইনাস এয়ারের দুটি পৃথক ফ্লাইটে ৮৩৯ জন হাজি দেশে ফিরবেন। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের প্রথম ফিরতি ফ্লাইটটি রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে অবতরণ করবে।
তথ্যমতে, ফিরতি হজ ফ্লাইটের অর্ধেক যাত্রী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এবং বাকি অর্ধেক সৌদি এয়ারলাইন্স এবং ফ্লাইনাস এয়ার বহন করবে।
এবার বাংলাদেশ থেকে মোট ৮৫ হাজার ২২৫ জন সৌদি আরবে যান হজ পালন করতে। আগামী ২২ জুলাইয়ের মধ্যে তাদের সবাইকে দেশে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে এয়ারলাইন্সগুলো ফ্লাইট সূচি সাজিয়েছে। এদিকে হজ পালন করতে গিয়ে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশি মোট ২৭ জন হজযাত্রী মারা গেছেন।
গেলো ৯ মে হজের প্রথম ফ্লাইট শুরু হয়ে ১২ জুন পর্যন্ত চলে। মোট ২১৮টি ফ্লাইটে বাংলাদেশি হজযাত্রীদের সৌদি আরবে পৌঁছে দেয়া হয়। এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস পরিচালিত হজ ফ্লাইটের সংখ্যা ছিল ১০৬টি। এছাড়া সৌদি এয়ারলাইনস ৭৫টি এবং ফ্লাইনাস ৩৭টি ফ্লাইট পরিচালনা করেছে।
জেএইচ
ইসলাম
ঈদুল আজহার নামাজ পড়ার নিয়ম
ঈদের নামাজ খোলা জায়গা, মসজিদ কিংবা যেখানেই পড়া হোক না কেন, অবশ্যই তা জামাতের সঙ্গে পড়তে হবে। জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হওয়ার জন্য যেসব শর্ত প্রয়োজন, ঈদের নামাজ আদায় করার জন্যও একই শর্ত প্রযোজ্য। সুতরাং জামাত ছাড়া ঈদের নামাজ আদায় করা যাবে না।
ঈদের নামাজের জন্য কোনো আজান ও ইকামত নেই। তবে জুমার নামাজের মতোই উচ্চ আওয়াজে কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে ঈদের নামাজ আদায় করতে হয়। তবে ঈদের নামাজের পার্থক্য হলো অতিরিক্ত ছয়টি তাকবির দিতে হবে।
নামাজ পড়ার নিয়ম-
প্রথম রাকাতে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে হাত বেঁধে অতিরিক্ত তিন তাকবির দিয়ে সুরা ফাতিহা পড়া।
দ্বিতীয় রাকাতে সুরা মেলানোর পর অতিরিক্ত তিন তাকবির দিয়ে রুকতে যাওয়া।
ঈদের দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ অতিরিক্ত ছয় তাকবিরের সঙ্গে এই ইমামের পেছনে কিবলামুখী হয়ে আল্লাহর জন্য আদায় করছি…আল্লাহু আকবার।
প্রথম রাকাত
১. তাকবিরে তাহরিমা
ঈদের নামাজে নিয়ত করে তাকবিরে তাহরিমা ‘আল্লাহু আকবার’ বলে হাত বাঁধা।
২. সানা পড়া
সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয়া তাবারাকাসমুকা ওয়াতাআলা যাদ্দুকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুকা।
৩. অতিরিক্ত তিন তাকবির দেওয়া।
এক তাকবির থেকে আরেক তাকবিরের মধ্যে তিন তাসবিহ পরিমাণ সময় বিরত থাকা। প্রথম ও দ্বিতীয় তাকবিরে উভয় হাত উঠিয়ে তা ছেড়ে দেওয়া এবং তৃতীয় তাকবির দিয়ে উভয় হাত বেঁধে নেওয়া।
৪. আউজুবিল্লাহ-বিসমিল্লাহ পড়া
৫. সুরা ফাতিহা পড়া
৬. সুরা মেলানো। অতঃপর নিয়মিত নামাজের মতো রুকু ও সিজদার মাধ্যমে প্রথম রাকাত শেষ করা।
দ্বিতীয় রাকাত
১. বিসমিল্লাহ পড়া
২. সুরা ফাতিহা পড়া
৩. সুরা মেলানো।
৪. সুরা মেলানোর পর অতিরিক্ত তিন তাকবির দেওয়া। প্রথম রাকাতের মতো দুই তাকবিরে উভয় হাত কাঁধ বরাবর উঠিয়ে ছেড়ে দেওয়া; অতঃপর তৃতীয় তাকবির দিয়ে হাত বাঁধা।
৫. তারপর রুকুর তাকবির দিয়ে রুকুতে যাওয়া।
৬. সিজদা আদায় করে তাশাহহুদ, দরুদ, দোয়া মাসুরা পড়ে সালাম ফেরানোর মাধ্যমে নামাজ সম্পন্ন করা।
তারপর খুতবা
ঈদের নামাজ পড়ার পর ইমাম খুতবা দেবেন আর মুসল্লিরা খুতবা মনোযোগের সঙ্গে শুনবেন।
দুই রাকাত ঈদের ওয়াজিব নামাজ ছয়টি অতিরিক্ত ওয়াজিব তাকবিরসহ আদায় করতে হয়। ঈদের নামাজের অতিরিক্ত ওয়াজিব তাকবিরে ভুল হলে অর্থাৎ তাকবির কম বা বেশি হলে অথবা বাদ পড়লে সাহু সিজদা প্রয়োজন নেই।
এএম/
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন