জনদুর্ভোগ
রাজধানীতে তীব্র যানজটে কারণ জানাল ট্রাফিক পুলিশ
রাজধানীতে যানজটে এমনভাবে নাকাল হচ্ছেন নগরবাসী। টানা তিন দিনের ছুটির পর রমজানের মধ্যে কর্মদিবস বলতে গেলে শুরু হয় গতকাল সোমবার। গতকালও ছিল ভয়াবহ যানজট। বিশেষ করে অফিস ছুটির পর। অফিস থেকে বাড়িতে ফিরছেন, এমন দুজনের সঙ্গে কথা হলো। তাঁদের একজন সাইফুল ইসলাম গতকালের অভিজ্ঞতা জানিয়ে বললেন, বিকেল সাড়ে চারটায় কারওয়ান বাজার অফিস থেকে বের হয়ে সাড়ে ছয়টায় নিকেতনে পৌঁছালাম। স্বাভাবিক সময়ে লাগে ২০ থেকে ২৫ মিনিট।’
গতকাল বিকেল সোয়া চারটার দিকে রওনা হয়েছিলেন শুভ রহমান। তাঁর বাসা জিগাতলায়। নিকেতন থেকে গুলশান-১ ও মহাখালী দিয়ে জিগাতলায় যেতে সাড়ে তিন ঘণ্টা সময় লেগেছিল তাঁর। গতকাল বিকেলে যানজটের এমন অভিজ্ঞতা অনেকের।
আজ সকালেও কিন্তু যানজট কমেনি।
রাজধানীর আফতাবনগর থেকে মোটরসাইকেলে কারওয়ান বাজার অফিসে আসতে আজ স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে দ্বিগুণের বেশি সময় লেগেছে বলে জানান সাদ্দাম হোসেন। তিনি কারওয়ান বাজারে একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করেন। তিনি জানান, এ সময় রামপুরা ইউলুপ, রামপুরা থেকে বিমানবন্দরমুখী সড়ক, এফডিসি থেকে সোনারগাঁও মোড় পর্যন্ত সড়ক এবং কারওয়ান বাজার রেলগেট এলাকায় তীব্র যানজট দেখা গেছে।
সাদ্দাম তাঁর অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়ে বলেন, সকাল পৌনে ১০টায় আফতাবনগর জি ব্লক থেকে রামপুরা ইউলুপ পর্যন্ত আসতে ৭-৮ মিনিটের মতো সময় লেগেছে। এরপর ইউলুপের ওপর যানজটে আটকে থাকতে হয়েছে প্রায় ১০ মিনিট। এরপর পুরো হাতিরঝিলে যানজট নেই।
তবে হাতিরঝিলের মহানগর প্রকল্পের সামনের সড়কে খোঁড়াখুঁড়ি করায় যানবাহনের মহানগর প্রকল্পের সামনে থেকে হাতিরঝিলের এফডিসি মোড় পর্যন্ত সড়কে যানবাহনের চাপ বেশি ছিল। এ সময় এফডিসি মোড় থেকে সোনারগাঁও মোড়ের রাস্তাটিতে যানবাহনের তীব্র চাপ দেখা গেছে। এ সড়কে যানবাহনের চাপ বেশি দেখে সাতরাস্তা দিয়ে মেয়র আনিসুল হক সড়ক ঘুরে কারওয়ান বাজার আসতে গিয়েও ব্যাপক যানজটে পড়তে হয়েছে। এ সময় মেয়র আনিসুল হক সড়কের বিসিক ভবনের সামনে থেকে কারওয়ান বাজার রেলগেট পর্যন্ত তীব্র যানজট দেখা গেছে। সেখান থেকে কারওয়ান বাজারের আম্বর শাহ মসজিদের সামনে পর্যন্ত আসতে প্রায় ৪০ মিনিট সময় লেগেছে।
নগরীর যানজট পরিস্থিত নিয়ে কথা হয় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমানের সঙ্গে। তিনি যানজটের তিনটি কারণের কথা উল্লেখ করেন। মুনিবুর রহমান বলেন, রমজান মাসে অফিসের সময় কমে যাওয়ায় পুরো ১২ ঘণ্টার চাপ এখন ৮ ঘণ্টায় ঠেকেছে। সংগত কারণেই যানজট বেড়ে গেছে। এর পাশাপাশি রাজধানীতে বিভিন্ন স্থানে চলছে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ। এতে যানজট পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। আর তৃতীয় কারণ হলো, গুলশান বা উত্তরার মতো যেসব সড়কে দ্রুতগতির যান বেশি চলাচল করে, সেখানে হঠাৎ যানজটের সৃষ্টি হলে এর প্রভাব অন্য এলাকাগুলোতেও পড়ে। এ প্রসঙ্গে মুনিবুর রহমান গতকাল অফিস ছুটির পর গুলশানের যানজটের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, গুলশানের যানজটের প্রভাব বিজয় সরণি পর্যন্ত ঠেকেছিল গতকাল।
জনদুর্ভোগ
শনির আখড়ায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অবস্থানে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক বন্ধ
কোটা আন্দোলনে ঘিরে শিক্ষার্থীদের নয় দফা দাবি নিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যাত্রাবাড়ীর কাজলা ও শনির আখড়া অংশে অবস্থান নিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। ফলে স্বাভাবিক যান চলাচল বন্ধ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের।
শনিবার (০৩ আগস্ট) দুপুর থেকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক বন্ধ করে বিক্ষোভ করছে। ফলে ঢাকা অভিমুখি সব প্রবেশ ও বাইর হওয়ার সব পথ বন্ধ।
সারাদেশে কোটাবিরোধী আন্দোলনে হতাহতের ঘটনায় প্রতিবাদ ও নয় দফা দাবির বাস্তবায়নের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
উল্লেখ্য, ‘সারা দেশে ছাত্র-নাগরিকের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা করে খুনের প্রতিবাদ ও ৯ দফা দাবিতে শুক্রবার নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তারা আজ (শনিবার) সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল ও রোববার থেকে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে।
জেডএস/
জনদুর্ভোগ
ইন্টারনেট বন্ধে দৈনিক ক্ষতি ১০ হাজার কোটি টাকা
কোটা আন্দোলন ও উদ্ভুত পরিস্থিতিতে টানা ৫ দিন ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকার পর স্বল্প পরিসরে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ চালু করা হয়েছে। এ সময় প্রতিদিন গ্রাহকরা প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে বলে জানিয়েছে গ্রাহক অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন।
বুধবার (২৪ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়েছে। এ অবস্থায় সারাদেশে দ্রুত ইন্টারনেট সেবা চালুর দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন।
সংগঠনটির সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, গত ১৭ তারিখ থেকে সারা দেশে বন্ধ হয়ে গেছে মুঠোফোন ভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা এবং ১৮ তারিখ থেকে সারাদেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রয়েছে। এতে করে ১৩ কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সঙ্গে আরও ৫ কোটি গ্রাহক ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প কারখানা, চিকিৎসা, শিক্ষা, ব্যাংক-বীমা, সফটওয়্যার শিল্পে ধস নেমেছে। একইভাবে টেলিযোগাযোগ শিল্পে ৩০ শতাংশ ব্যাবসা কমেছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সরকারি সকল ইউটিলিটি গ্রাহকদের বিশেষ করে গ্যাস, বিদ্যুৎ, সুপেয় পানি, এটিএম বুথে টাকা উত্তোলন, মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় ব্যাপক বিপর্যয় নেমে এসেছে। সব মিলিয়ে দৈনিক গ্রাহকদের ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। তাই সারাদেশে দ্রুত মুঠোফোন ভিত্তিক ইন্টারনেট ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা চালু করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে ইন্টারনেটের সকল এক্সেস যেনো ব্যবহার করা যায় সেই ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।
এ সময় ইন্টারনেট এখন জাতিসংঘ ঘোষিত মৌলিক মানবাধিকার বলেও জানান মহিউদ্দিন আহমেদ।
বিল গ্রহণ না করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, সরকার ও বিটিআরসির কাছে আমাদের দাবি থাকবে যে, অব্যাহত ইন্টারনেট সেবা চালুর সাথে সাথে ব্যবহার উপযোগী করে তোলার। কোনোভাবেই তা পরের রিচার্জের সঙ্গে যুক্ত করা যুক্তিযুক্ত নয়। কারণ গ্রাহক ইতোমধ্যে ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছে। একইভাবে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবায় এক দেশ এক রেট গাইডলাইন অনুসারে একটানা ৩ দিন বন্ধ থাকলে ১৫ দিনের বিল পরিশোধ না করতে বলা হয়েছে এবং ৭ দিন একটানা বন্ধ থাকলে সারা মাসের বিল না দেয়ার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৬ দিন একটানা বন্ধ হয়ে আছে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট। তাই নিয়ন্ত্রণ কমিশন বিটিআরসির কাছে আবেদন গ্রাহকদের থেকে আগস্ট ২০২৪ মাসের বিল না নেয়া হয়, তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার।
গুজব না ছড়ানোর আহ্বান জানিয়ে মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন জানায়, গ্রাহকদের কাছে অনুরোধ করছি কোনোভাবেই যেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে দেয়া না হয়। ভয়ভীতি তৈরি হয় এমন কিছু পোষ্ট না করা হয়। একইসঙ্গে দেশের সুনাম ক্ষুন্ন হয় বহির্বিশ্বে এমন মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকুন।
এএম/
জনদুর্ভোগ
যেসব অংশে মেট্রোরেল বন্ধ
নিরাপত্তার শঙ্কায় মেট্রোরেলের শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া, মিরপুর-১০, মিরপুর-১১ স্টেশন বন্ধ রয়েছে। তবে মতিঝিল থেকে আগারগাঁও এবং দিয়বাড়ি থেকে পল্লবী অংশে মেট্রোরেল চলছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) দুপুর দুপুর ২টা ২৫ মিনিট থেকে যাত্রীদের নিরাপত্তার শঙ্কায় সাময়িকভাবে মিরপুর-১১, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া ও শেওড়াপাড়া স্টেশনে মেট্রো চলাচল বন্ধ করা হয়।
মেট্রোরেলের বন্ধ স্টেশনগুলো চালু হলে তাৎক্ষণিক জানানো হবে। এদিন দুপুরে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে মিরপুর ১০ এলাকা রণক্ষেত্রে রূপ নেয়।
উল্লেখ্য, এ সময় কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীরা পুলিশ বক্সে এবং বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেলে আগুন দেয়। এরপরই নিরাপত্তার শঙ্কায় কিছু অংশে মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
এএম/
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন