বাংলাদেশ
ইউপি নির্বাচনে এক আওয়ামী লীগ প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিলে মাঠে নেমেছেন দলীয় নেতাকর্মীরা
পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলায় ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের এক প্রার্থীর দলীয় প্রতীক বাতিলের দাবিতে মাঠে নেমেছে ইউনিয়নের দলীয় নেতাকর্মীরা।
আলোয়া খাওয়া ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক দলীয় মনোনিত নৌকা প্রার্থী মো.মোজাক্কারুল আলম এর মননোয়ন বাতিল চেয়ে প্রধানমন্ত্রী ও চেয়ারম্যান, স্থানীয় সরকার নির্বাচন মনোনয়ন বোর্ড এর কাছে আবেদন করেছেন একই ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ সামসুজ্জোহা।
মো.মোজাক্কারুল আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগে স্থানীরা বলেছেন, সাধারণ সম্পাদকের পদ অপব্যবহার করে এলাকায় নানা অনিয়ম দূর্নীতি এবং শৃংঙ্খলা ভংঙ্গের একাধিক কাজ কর্ম তিনি করেছেন।
যে কারণে এলাকার সাধারন ভোটার সহ দলীয় নেতাকর্মীদের ক্ষোভ রয়েছে বলেও জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়দের দাবী নৌকা প্রর্তীক প্রাপ্ত এই নেতার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ থাকায় আসন্ন নির্বাচনে দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করলে এই ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থীর জয় অনিশ্চিত হবে।
ইউনিয়ন সভাপতি সহ দলের অন্যান্ন নেতা কর্মীরা ইতিমধ্যে নানা সভা সমাবেশে তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছেন।
তারা বলেন, ২০০৩ সালে ছাত্র ইউনিয়ন,জাগপা হয়ে আওয়ামীলীগে অনুপ্রবেশ করেন এই নেতা।
একই ইউনিয়নে দলের সভাপতি সামসুজ্জোহার অভিযোগ, আটোয়ারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদ মোঃ তৌহিদুল ইসলামের সাথে ঘনিষ্ঠতা থাকার সুবাদে ২০০৩ সাল থেকেই আলোয়াখোওয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। রাজনীতিতে স্বকৃীয় না থাকলেও পদ ভাঙ্গিয়ে এলাকায় নানা রকমের দূর্নীতি অনিয়ম এবং স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে দলীয় এবং সাধারন মানুষের সাথে প্রতারণা একাধিক অভিযোগ থাকলেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি তার বিরুদ্ধে।
তিনি বলেন, সাধারন সম্পাদকের পদে থাকার সুবাদে ইউনিয়নের ভিজিডি ভিজিএফ, ১০ টাকার রেশোনিং কার্ড, কৃষি প্রনোদনা, সার কীটনাশক, এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রতিষ্ঠানে চাকুরী দেয়ার প্রলোভন সহ মুজিবর্বষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর ঘর বরাদ্দ দেয়ার আশ্বাসে বিভিন্ন জনের নিকট থেকে প্রতারনা করে অর্থ নিয়েছেন তিনি। এসব নিয়ে তার বিরুদ্ধে স্পষ্ট অভিযোগও রয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
এছাড়াও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, তার বড় ভাই সেফাউল আলম আলোয়াখোওয়া ইউপির বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি এবং বর্তমানে আটোয়ারী উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ।
তার আপন বড় বোন ফারাতুন নাহার প্যারিস ঠাকুরগাও জেলা মহিলা দলের বর্তমান আহবায়ক। এই কারনে নিজ এলাকায় বিএনপি জামাত ঘেষা রাজনীতি করে আসছেন তারা। বিষয়টি আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ কোন ভাবেই মেনে নিতে পারে না।
এসব বিষয় পর্যালোচনা করে গেল ১৬ অক্টোবর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ অফিসের দলীয় সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উপজেলা আওয়ামী মৎস্য লীগ এর আহবায়ক মোঃ কামরুজ্জামানকে ১ নং প্রার্থী হিসেবে উল্লেখ করে উপজেলা ও জেলা আওয়ামীলীগ অফিসে চিঠি পাঠানো হয়। কিন্ত অজ্ঞাত কারনে সাধারন সম্পাদক মোঃ মোজাক্কারুল আল কে নৌকার মননোয়ন প্রদান করা হয়। এ ঘটনার পর থেকে এলাকায় সাধারন ভোটার এবং নেতা কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
আলোয়াখোয়া ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক বদিউজ্জামান বলেন, সাধারণ সম্পাদক রাজনীতি করেন দলকে ব্যবহার করে । দলের চেয়ে ব্যক্তি স্বার্থই তার কাছে বড় । তাকে নৌকার প্রার্থী হিসেবে মননোয়ন দেয়া হয়েছে, কিন্ত তার জয়ের কোন সম্ভবনা নেই।
এলাকার বড় সিঙ্গিয়া গ্রামের মোঃ শাহীনুর রহমান, বর্ষালুপাড়া গ্রামের আপেল হোসেন বলেন, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক প্রধান মন্ত্রীর ঘর বরাদ্দ দেয়ার জন্যে আমাদের কাছ থেকে ২০ হাজার করে টাকা নিয়েছে। এখন ঘরও দেয়না টাকাও দেয়না। একই ইউনিয়নের মোলানী সেন পাড়া গ্রামের সুসেন চন্দ্র সেন বলেন, বাড়িতে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্যে সাধারন সম্পাদক আমার নিকট থেকে ৬০ হাজার টাকা নিয়েছেন কিন্তু বিদ্যুৎ এর ব্যবস্থা করে দেননি এবং টাকাও দেননি।
বড় সিঙ্গিয়া গ্রামের নুর ইসলাম জানান, এলাকার একটি মাদ্রাসার নৈশ্য প্রহরীর চাকুরীর জন্যে কমিটির সভাপতি হিসেবে উক্ত মোঃ মোজাক্কারুল আলম আমার নিকট থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা নেয়। কিন্ত অন্য জনের নিকট থেকে বেশি টাকা নিয়ে আমাকে আর চাকুরী দেননি। আমার টাকা ফেরতও দেননি।
এলাকার মানুষের এমন হাজারো অভিযোগের প্রেক্ষিতে দলীয় সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে আওয়ামী লীগের আলোয়াখোয়া ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ সামসুজ্জোহা আলোয়া খাওয়া ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক দলীয় মনোনিত নৌকা প্রার্থী মো.মোজাক্কারুল আলমের মননোয়ন বাতিল চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাছে আবেদন করেন।
মুক্তা মাহমুদ
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ