অপরাধ
ধর্ষণের বিষয় ধামাচাপা দিতেই হত্যা করা হয় আয়নীকে: পিবিআই
চট্টগ্রাম নগরের পাহাড়তলী থানা এলাকার আবিদা সুলতানা আয়নী (১০)। বিড়াল ছানার প্রতি ছিল যার প্রচণ্ড লোভ। কেউ বিড়াল ছানা দেবে বলে ডাকলেই ছুটে যেত চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ুয়া শিশুটি। আর এ সুযোগই কাজে লাগান সবজি বিক্রেতা মো. রুবেল (৩৫)। কৌশলে আয়নীকে ডেকে এক আত্মীয়ের বাসায় নিয়ে ধর্ষণ করেন। তারপর ধর্ষণের বিষয়টি ধামাচাপা দিতে গলা টিপে হত্যা করা হয় আয়নীকে।
বুধবার (২৯ মার্চ) দুপুরে রুবেলকে আটক ও তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর এসব তথ্য দিয়েছেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কর্মকর্তারা।
পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার (এসপি) নাইমা সুলতানা জানান, ২১ মার্চ বিড়াল ছানা দেবে বলে আয়নীকে দেখা করতে বলেন রুবেল। এরপর তাকে একটি ভবনের চতুর্থ তলায় নিজের ফুফুর বাসায় নিয়ে যান। বিকেল আনুমানিক ৫টার দিকে শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়। এরপর ঘটনা জানাজানি হওয়ার আশঙ্কায় আয়নীকে গলা টিপে হত্যা করেন রুবেল।
তিনি আরও বলেন, কয়েকদিন আগে ওই এলাকায় একটি বলাৎকারের ঘটনা জানাজানি হয়। এটিও এরকমভাবেই জানাজানি হয়ে যাবে এ আশঙ্কায় রুবেল শিশু আয়নীকে হত্যা করেন। বিকেলে হত্যার পর ওইদিন রাতে আয়নীর মরদেহ বস্তায় ভরে পার্শ্ববর্তী একটি ডোবায় ফেলে দেয়া হয়।
রুবেলের দেয়া স্বীকারোক্তি মোতাবেক বুধবার ভোরে আয়নীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এসপি নাইমা সুলতানা বলেন, আয়নীর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
নিখোঁজের ৮ দিনের মাথায় বুধবার ভোরে আব্দুর কাজীর দিঘীরপাড়া এলাকা থেকে আবিদা সুলতানা আয়নীর (১০) মরদেহ উদ্ধার করা হয়। গত ২১ মার্চ থেকে নিখোঁজ ছিল আয়নী।
আয়নী নিখোঁজ হওয়ার পর তার মা বিবি ফাতেমা একাধিকবার পাহাড়তলী থানা পুলিশের শরণাপন্ন হয়েছিলেন। রুবেল তার মেয়েকে নিয়ে গেছেন বলে পুলিশকে জানিয়েছিলেও। কিন্তু মামলা নেয়নি পাহাড়তলী থানা পুলিশ। নিরুপায় হয়ে ফাতেমা শেষ পর্যন্ত মামলা দায়ের করেন আদালতে। আদালত অভিযোগ শুনে নিয়মিত মামলা দায়েরের জন্য থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। আদালতের আদেশ এখনো থানায় এসে পৌঁছায়নি। এরইমধ্যে পুলিশের বিশেষায়িত সংস্থা পিবিআই শিশু আয়নীর মরদেহ উদ্ধার করল।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিবি ফাতেমা চট্টগ্রাম পিবিআই কার্যালয়েও যোগাযোগ করেন। পিবিআই কর্মকর্তারা অভিযোগ শোনার পর যাচাই-বাছাই করে মঙ্গলবার অভিযুক্ত রুবেলকে হেফাজতে নেয়। এরপর তাকে রাতভর জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কিন্তু কোনোভাবে মুখ খুলছিলেন না রুবেল। পিবিআই কর্মকর্তাদের টানা জিজ্ঞাসাবাদে একপর্যায়ে ভোর রাতে মুখ খোলেন তিনি। জানান শিশু আয়নীকে তিনিই হত্যা করেছেন। বস্তায় ভরে তার মরদেহ ফেলে দেন পার্শ্ববর্তী ডোবায়। সঙ্গে সঙ্গে তাকে নিয়ে অভিযানে গিয়ে পিবিআই কর্মকর্তারা আয়নীর মরদেহ উদ্ধার করে।
আয়নীর মরদেহ উদ্ধারের পর তা মা ফাতেমা বিলাপ করতে করতে বলেন, ‘আমি পুলিশকে বলেছিলাম রুবেল আমার শিশুকে নিয়ে গেছে। কিন্তু তারা উল্টো আমাকে বলে রুবেল নাকি ভালো ছেলে। রুবেল এ কাজ করতে পারে না। তোমার মেয়ে প্রেম করে! আমার ১০ বছরের মেয়ে কীভাবে প্রেম করে? আপনারা বলেন? এখন আমার বুক খালি হয়ে গেল।
অপরাধ
রাজধানীতে বস্তা ভর্তি টাকাসহ একটি গাড়ি আটক করলেন শিক্ষার্থীরা
রাজধানীর উত্তরায় একটি প্রাইভেটকার থেকে এক বস্তা টাকাসহ একটি শটগান উদ্ধার করেছেন শিক্ষার্থীরা। এই ঘটনায় তিনজনকে হেফাজতে নিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
বুধবার (৭ আগস্ট) এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা গণমাধ্যমে জানান, রাজধানীর উত্তরার একটি বাসার গ্যারেজ থেকে গাড়িটি জব্দ করা হয়। এ সময় তিনজনকে হেফাজতে নেয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। পরে গাড়ি থেকে এক বস্তা টাকা উদ্ধার করে হেফাজতে নেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় স্থানীয় জনতা ও শিক্ষার্থীরা উল্লাস করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, আওয়ামী লীগ ঘরোয়ানার একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের এমডির গাড়ি থেকে এ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। গাড়ি থেকে এক বস্তা টাকাসহ একটি শটগান উদ্ধার করে উত্তরা টাউন কলেজের শিক্ষার্থীসহ অনান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এএম/
অপরাধ
কাশিমপুর কারাগার থেকে পালিয়েছে ২০৯ বন্দি, নিহত ৬
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২০৯ জন বন্দি পালিয়েছেন। পালিয়ে যাওয়ার সময় নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জন বন্দি নিহত হয়েছেন।
বুধবার (৭ আগস্ট) বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান,গেলো মঙ্গলবার বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দিরা কারাগার ভেঙে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কারারক্ষীরা তাদের নিভৃত করার চেষ্টা করলে বন্দিরা কারারক্ষীদের ওপর চড়াও হয়। বন্দিদের কেউ দেয়াল ভেঙে, কেউ দেয়াল টপকে, আবার কেউ দেয়ালের সঙ্গে বিদ্যুতের পাইপ লাগিয়ে কারারক্ষীদের মারধর করে পালিয়ে যেতে চান।
একপর্যায়ে সেনাবাহিনীকে খবর দিলে তারা কমান্ডো অভিযান চালিয়ে বিদ্রোহ দমন করেন।এসময়ে বন্দিদের মধ্যে ২০৯ জন দেয়াল টপকে পালিয়ে গেছে।বন্দিদের ঠেকাতে নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, নিহতদের নাম পরিচয় পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন সিনিয়র জেল সুপার।
আই/এ
অপরাধ
কাশিমপুর কারাগারে তীব্র উত্তেজনা, সেনাবাহিনীর শক্ত অবস্থান
গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে বন্দিরা মুক্তির দাবিতে উত্তেজনা শুরু করেছেন। কারারক্ষীদের জিম্মি করে অনেকে দলবদ্ধভাবে বের হয়ে আসার চেষ্টা করছেন। খবর পেয়ে সেনা সদস্যরা এসে প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) দুপুরের দিকে এ পরিস্থিতি দেখা গেছে। এসময়ে ওই এলাকার আকাশে হেলিকপ্টার চক্কর দিতে দেখা যায়।
কারা কর্তৃপক্ষ জানান, কাশিমপুর কারা কমপ্লেক্সে পৃথক চারটি কারাগার রয়েছে। এর মধ্যে বিডিআর বিদ্রোহ মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি, ফাঁসি ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত দুর্ধর্ষ জঙ্গি বন্দিরা রয়েছে। এছাড়া রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার অনেক নেতাকর্মীও ওই কারাগারে রয়েছে।
জানা যায়, বেলা ১১টার দিকে কিছু বন্দি কারাগারের অভ্যন্তরে থাকা কারারক্ষীদের জিম্মি করে মুক্তির দাবিতে বিদ্রোহ শুরু করে। এসময়ে কারারক্ষীরা তাদের শান্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। আগে থেকেই সেখানে অল্প সংখ্যক সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন। উত্তেজনা আরও বেড়ে গেলে দুপুর দেড়টার দিকে অতিরিক্ত সেনা সদস্য হেলিকপ্টার যোগে কারা অভ্যন্তরে এসে বন্দিদের নিয়ন্ত্রণ করেন।
প্রসঙ্গত, কারা অভ্যন্তরে বিদ্রোহের খবর পেয়ে বন্দিদের স্বজনরা সকাল থেকেই কারাগারের সামনে অবস্থান করেন। এ সময় তাদের সঙ্গে আন্দোলনকারীরা যোগ দিয়ে বিক্ষোভ করে। কারাগারের বাইরে একটি ঝুট গুদামে অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরে সেনা সদস্যরা বাইরের বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে দেন।
আই/এ
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন