অপরাধ
তরমুজ চুরির অভিযোগে শিশুকে শিকলে বেঁধে নির্যাতন
লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে তরমুজ চুরির অপবাদ দিয়ে গোয়ালঘরের খুঁটির সঙ্গে শিকলে বেঁধে ৯ বছর বয়সি এক শিশুকে নির্যাতন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় শিশুটির বড় বোনকেও বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালী আব্দুল মান্নান দম্পতির বিরুদ্ধে।
গেলো বুধবার দুপুরে উপজেলার চরলরেন্স ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড গুদাম রোডসংলগ্ন মান্নান মিস্ত্রির বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্থানীয় বেলালের ছেলে আরাফাত (১২) আলমগীরের ছেলে আল আমিন (১০) আব্দুল মান্নানের ছেলে
হৃদয় (১৭) ও ভুক্তভোগী আবু তাহেরের ছেলে রিফাত (৯) মিলে গত ২৭ মার্চ রাতে স্থানীয় কৃষক মো. রিপনের ক্ষেত থেকে ছয়টি তরমুজ চুরি করে। হৃদয় দুটি ও বাকিরা একটি করে ভাগ করে নেয়। এর মধ্যে হৃদয় তরমুজ ক্ষেতের মালিক কৃষক রিপনের আপন ভাগ্নে।
ভুক্তভোগী শিশু রিফাত জানায়, ২৭ মার্চ রাতে প্রতিবেশী হৃদয়ের প্রলোভনে পড়ে রিফাতসহ চারজন মিলে স্থানীয় কৃষক রিপনের ক্ষেত থেকে ছয়টি তরমুজ চুরি করে। পর দিন চুরির বিষয়ে জানাজানি হলে কৃষক রিপন এলাকার মুরব্বিদের নিকট বিচারপ্রার্থী হন। মুরব্বিরা বুধবার বিকালে সালিশবৈঠকের তারিখ দেন। ওই সালিশবৈঠকে তরমুজ চুরির মূল পরিকল্পনাকারী হৃদয়ের নাম না বলতে রিফাতকে চাপ দেয় হৃদয় ও তার মা কুলসুম বেগম। রিফাত তাতে রাজি না হলে সালিশবৈঠকের আগে বুধবার দুপুর ১২টার দিকে হৃদয় তাকে রাস্তা থেকে জোর করে তুলে নিয়ে বাড়ির গোয়ালঘরের খুঁটির সঙ্গে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখে। এ সময় হৃদয়ের মা কুলসুম বেগম বাবা আব্দুল মান্নান ও হৃদয় তাকে মারধর করে বলে জানায় রিফাত।
শিশু রিফাতের বাবা মো. আবু তাহের বলেন, বুধবার দুপুর থেকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করার পর প্রতিবেশী এক নারী জানায় মান্নান ও তার স্ত্রী কুলসুম আমার ছেলে রিফাতকে শেকল দিয়ে বেঁধে রেখেছে। পরে আমার বড় মেয়ে রিফাতকে ছাড়িয়ে আনতে গেলে আমার মেয়েটাকেও ওরা লাঠি দিয়ে নির্মমভাবে মেরেছে। মেয়েটার সারা শরীর কালো হয়ে ফুলে উঠেছে। তাকে কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি আরও বলেন, আমরা খুবই অসহায়। এ এলাকায় আপন বলতে আমাদের কেউ নেই। কয়েক বছর আগে মেঘনার ভাঙনের শিকার হলে সবুজ নামে এক লোক দয়া করে তার বাড়িতে আমাদের থাকতে দিয়েছেন। অসহায় গরিব বলে আমার শিশু ছেলেটাকে ওরা এভাবে মারধর করেছে। এ ঘটনায় বিচার দাবি করেন তিনি।
এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বেলাল হোসেন জানান, রিফাতকে শেকলে বেঁধে রেখেছে শুনে আমি মান্নানের বাড়িতে ছুটে গিয়ে দেখি রিফাত বাঁধা। তার বড় বোন ছাড়িয়ে আনতে গেলে তাকেও মারধর করতে দেখেছি। পরে মান্নানের স্ত্রীকে ধমক দিলে রিফাতকে ছেড়ে দেয়া হয় বলে জানান তিনি।
এদিকে শিশু রিফাতকে বেঁধে রাখার কথা স্বীকার করলেও মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত মান্নানের স্ত্রী কুলসুম বেগম। এর বেশি কথা বলতে রাজি হননি তিনি।
এ ব্যাপারে কমলনগর থানার ওসি মোহাম্মদ সোলাইমান জানান, অভিযুক্ত হৃদয় ও তার পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি। দুই পক্ষকেই থানায় আসতে বলা হয়েছে।
অপরাধ
রাজধানীতে বস্তা ভর্তি টাকাসহ একটি গাড়ি আটক করলেন শিক্ষার্থীরা
রাজধানীর উত্তরায় একটি প্রাইভেটকার থেকে এক বস্তা টাকাসহ একটি শটগান উদ্ধার করেছেন শিক্ষার্থীরা। এই ঘটনায় তিনজনকে হেফাজতে নিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
বুধবার (৭ আগস্ট) এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা গণমাধ্যমে জানান, রাজধানীর উত্তরার একটি বাসার গ্যারেজ থেকে গাড়িটি জব্দ করা হয়। এ সময় তিনজনকে হেফাজতে নেয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। পরে গাড়ি থেকে এক বস্তা টাকা উদ্ধার করে হেফাজতে নেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় স্থানীয় জনতা ও শিক্ষার্থীরা উল্লাস করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, আওয়ামী লীগ ঘরোয়ানার একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের এমডির গাড়ি থেকে এ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। গাড়ি থেকে এক বস্তা টাকাসহ একটি শটগান উদ্ধার করে উত্তরা টাউন কলেজের শিক্ষার্থীসহ অনান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এএম/
অপরাধ
কাশিমপুর কারাগার থেকে পালিয়েছে ২০৯ বন্দি, নিহত ৬
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২০৯ জন বন্দি পালিয়েছেন। পালিয়ে যাওয়ার সময় নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জন বন্দি নিহত হয়েছেন।
বুধবার (৭ আগস্ট) বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান,গেলো মঙ্গলবার বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দিরা কারাগার ভেঙে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কারারক্ষীরা তাদের নিভৃত করার চেষ্টা করলে বন্দিরা কারারক্ষীদের ওপর চড়াও হয়। বন্দিদের কেউ দেয়াল ভেঙে, কেউ দেয়াল টপকে, আবার কেউ দেয়ালের সঙ্গে বিদ্যুতের পাইপ লাগিয়ে কারারক্ষীদের মারধর করে পালিয়ে যেতে চান।
একপর্যায়ে সেনাবাহিনীকে খবর দিলে তারা কমান্ডো অভিযান চালিয়ে বিদ্রোহ দমন করেন।এসময়ে বন্দিদের মধ্যে ২০৯ জন দেয়াল টপকে পালিয়ে গেছে।বন্দিদের ঠেকাতে নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, নিহতদের নাম পরিচয় পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন সিনিয়র জেল সুপার।
আই/এ
অপরাধ
কাশিমপুর কারাগারে তীব্র উত্তেজনা, সেনাবাহিনীর শক্ত অবস্থান
গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে বন্দিরা মুক্তির দাবিতে উত্তেজনা শুরু করেছেন। কারারক্ষীদের জিম্মি করে অনেকে দলবদ্ধভাবে বের হয়ে আসার চেষ্টা করছেন। খবর পেয়ে সেনা সদস্যরা এসে প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) দুপুরের দিকে এ পরিস্থিতি দেখা গেছে। এসময়ে ওই এলাকার আকাশে হেলিকপ্টার চক্কর দিতে দেখা যায়।
কারা কর্তৃপক্ষ জানান, কাশিমপুর কারা কমপ্লেক্সে পৃথক চারটি কারাগার রয়েছে। এর মধ্যে বিডিআর বিদ্রোহ মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি, ফাঁসি ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত দুর্ধর্ষ জঙ্গি বন্দিরা রয়েছে। এছাড়া রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার অনেক নেতাকর্মীও ওই কারাগারে রয়েছে।
জানা যায়, বেলা ১১টার দিকে কিছু বন্দি কারাগারের অভ্যন্তরে থাকা কারারক্ষীদের জিম্মি করে মুক্তির দাবিতে বিদ্রোহ শুরু করে। এসময়ে কারারক্ষীরা তাদের শান্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। আগে থেকেই সেখানে অল্প সংখ্যক সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন। উত্তেজনা আরও বেড়ে গেলে দুপুর দেড়টার দিকে অতিরিক্ত সেনা সদস্য হেলিকপ্টার যোগে কারা অভ্যন্তরে এসে বন্দিদের নিয়ন্ত্রণ করেন।
প্রসঙ্গত, কারা অভ্যন্তরে বিদ্রোহের খবর পেয়ে বন্দিদের স্বজনরা সকাল থেকেই কারাগারের সামনে অবস্থান করেন। এ সময় তাদের সঙ্গে আন্দোলনকারীরা যোগ দিয়ে বিক্ষোভ করে। কারাগারের বাইরে একটি ঝুট গুদামে অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরে সেনা সদস্যরা বাইরের বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে দেন।
আই/এ
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন