আন্তর্জাতিক
বুরকিনা ফাসোতে সন্ত্রাসীদের হামলা, নিহত ৪৪
সহিংসতায় বিধ্বস্ত পশ্চিম আফ্রিকার দেশ বুরকিনা ফাসোয় সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হামলায় প্রায় ৪৪ জন নিহত হয়েছেন।
গেলো বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) আফ্রিকার এই দেশটির উত্তরাঞ্চলে দু’টি মারাত্মক হামলা ও প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে।
রোববার (৯ এপ্রিল) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গেলো বৃহস্পতিবার উত্তর বুরকিনা ফাসোতে দু’টি মারাত্মক হামলায় প্রায় ৪৪ জন নিহত হয়েছেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। দেশটির নাইজার সীমান্তের কাছে সাহেল অঞ্চলের কৌরাকাউ এবং টন্ডোবি গ্রামে এই জোড়া হামলার ঘটনা ঘটে।
অবশ্য কোনও গোষ্ঠী এই হামলা চালানোর কথা স্বীকার করেনি। তবে হামলার শিকার ওই এলাকায় সহিংসতা খুবই সাধারণ বিষয় এবং কর্মকর্তারা এই হামলার জন্য ‘সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী’কে দায়ী করেছেন।
মূলত আল-কায়েদা এবং ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর সঙ্গে যুক্ত জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো এই অঞ্চলে সক্রিয় রয়েছে।
সাহেল অঞ্চলের লেফটেন্যান্ট-গভর্নর রোডলফ সোরঘো বলেছেন, ‘ঘৃণ্য ও বর্বর হামলার’ পেছনে থাকা হামলাকারীদের ‘সরিয়ে দেয়া হয়েছে’। অন্যান্য গ্রামবাসীও হামলায় আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে, তবে তাদের সংখ্যা ঠিক কত তা স্পষ্ট নয়।
সোরঘো বলেছেন, ‘হামলার শিকার এলাকাকে স্থিতিশীল করার জন্য পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে এবং কাজ চলছে’।
একজন বাসিন্দা বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেছেন, হামলার সময় ‘বিশাল সংখ্যক সন্ত্রাসী গ্রামে ঢুকে পড়ে’ এবং তিনি সারা রাত ধরে গোলাগুলির শব্দ শুনতে পান। তিনি বলেন, ‘শুক্রবার সকালে আমরা দেখি, রাতে হওয়া হামলায় কয়েক ডজন মানুষ মারা গেছে।’
এএফপি আরও জানিয়েছে, কয়েকদিন আগে গবাদি পশু চুরির চেষ্টাকারী দুই সন্ত্রাসীকে পিটিয়ে হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে।
এছাড়া বৃহস্পতিবার রাতের এই হত্যাকাণ্ডটি সেতেঙ্গা গ্রামের কাছে ঘটে, যেখানে গত জুন মাসে কয়েক ডজন লোক নিহত হয়েছিলেন।
বিবিসি বলছে, বুরকিনা ফাসো এবং এর প্রতিবেশী দেশগুলো ২০১৩ সাল থেকে জিহাদি বিদ্রোহের মুখোমুখি হয়েছে। সংকটের সময় হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন এবং ২০ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। সহিংসতার কারণে পশ্চিম আফ্রিকার এই দেশটিতে উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।
একপর্যায়ে লেফটেন্যান্ট কর্নেল পল-হেনরি দামিবার নেতৃত্বে বুরকিনা ফাসোর সামরিক বাহিনী সহিংসতা বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে গত বছরের জানুয়ারিতে দেশটির ক্ষমতা দখল করে। কিন্তু তিনি এসব আক্রমণ ও সহিংসতা বন্ধ করতে ব্যর্থ হন এবং সেপ্টেম্বরে দ্বিতীয় আরেকটি অভ্যুত্থানে তাকে অপসারণ করেন ক্যাপ্টেন ইব্রাহিম ট্রাওরে।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সাল থেকে সশস্ত্র মিলিশিয়া গোষ্ঠীগুলোর ক্রমবর্ধমান হামলা মোকাবিলায় রীতিমতো সংগ্রাম করছে বুরকিনা ফাসো। সশস্ত্র এসব গোষ্ঠীগুলোর বেশিরভাগই জঙ্গিগোষ্ঠী আল কায়দা এবং আইএস’র সঙ্গে সম্পৃক্ত। এছাড়া গত এক দশকে আফ্রিকার এই দেশটিতে সহিংসতা অনেক বেড়েছে এবং জোরালো হয়েছে। আর এতে প্রতি বছর হাজার হাজার বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন।
এছাড়া সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বুরকিনা ফাসো, নাইজার এবং মালির বিস্তৃত এলাকাজুড়ে জঙ্গিগোষ্ঠী আল কায়েদা এবং ইসলামিক স্টেটের সঙ্গে সম্পর্কিত জিহাদিদের হামলা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে পশ্চিম আফ্রিকার সাহেল অঞ্চল থেকে কয়েক মিলিয়ন সাধারণ মানুষ তাদের বাড়ি-ঘর থেকে উচ্ছেদ হয়েছেন। এসব হামলা ও সহিংসতায় নিহত হয়েছেন হাজার হাজার বেসামরিক মানুষ।
এছাড়া সাহারার দক্ষিণে সাহেল অঞ্চলে ২০ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
আন্তর্জাতিক
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে হবে: যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়নের ব্যাপারটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেনো গণতন্ত্র, আইন ও বাংলাদেশি জনগণের আকাঙ্খা পূরণ করে-এমনটাই চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় বুধবার (৭ আগস্ট) ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে এমনটাই আশা করে বলে জানিয়েছেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। এদিন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ইরাকের এক সাংবাদিক জানতে চান, ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে তার বা অন্যদের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ হয়েছি কী? বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা পরিস্থিতিকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?’
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমরা এখনও যোগাযোগ করেনি। আমরা বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়ন পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখছি এবং আমরা এরইমধ্যে দেখেছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি তার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আপনি নিশ্চয়ই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে শুনেছেন যে. অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে তা যেনো গণতান্ত্রিক নীতিমালাকে, আইনের শাসন এবং সিদ্ধান্তে বাংলাদেশি জনগণের ইচ্ছা প্রতিফলিত হয়।
এসময় যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী একটি প্রশ্ন করেন। তার প্রশ্নটি ছিল, আপনি কি জানেন যে স্বৈরশাসক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করে নতুন সরকারকে হুমকি দিচ্ছেন, সহিংসতা উসকে দিচ্ছেন? তিনি সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন যিনি বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিলেন। দয়াকরে তার ব্যাপারে আপনার মন্তব্য জানাবেন কী?’
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘একজন সাধারণ নাগরিকের বিবৃতি নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমি এরইমধ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথা বলেছি এবং আমরা দেখতে চাই এই সরকার কী পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যায়।
এসময় মুশফিকুল ফজল আনসারী আরও জানতে চান, ‘দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রত্যাশা নিয়ে আপনার কী মন্তব্য?
জবাবে ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের মুখপাত্র বলেন, শনের প্রশ্নের উত্তরে আমি যেমনটি বলেছি – অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা দেখতে চাই ওই সিদ্ধান্তে যেনো গণতান্ত্রিক নীতি মেনে চলা হয় এবং জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ওই ব্রিফিংয়ে ফিলিস্তিনের গাজা, দক্ষিণ আমেরিকার ভেনিজুয়েলা, ইরাক ও ইরানের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
এমআর//
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন