আন্তর্জাতিক
গাজা-লেবাননের পর সিরিয়ায় ইসরায়েলের হামলা
সিরীয় ভূখণ্ড থেকে ইসরায়েলের দিকে রকেট ছোড়ার জবাবে সিরিয়ায় পাল্টা গোলা নিক্ষেপ করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। লেবানন, গাজা, অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেন ও পশ্চিম তীরে ক্রমবর্ধমান সহিংসতার মধ্যেই সিরিয়ায় এ হামলা চালালো দখলদার ইসরায়েল।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, রোববার (৯ এপ্রিল) ভোরে সিরিয়ার ভূখণ্ড থেকে দুই দফায় ইসরায়েলের উদ্দেশ্যে রকেট হামলা চালানো হয়। এর মধ্যে প্রথম দফায় ছোড়া তিনটি রকেটের একটি ইসরায়েলি অধিকৃত গোলান উপত্যকায় গিয়ে পড়ে। দ্বিতীয় দফায়ও তিনটি রকেট ছোড়া হয়। এর জেরে উত্তর ইসরায়েলে সতর্কতা সাইরেন বেজে ওঠে। তবে কেউ হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনার জবাবে সিরিয়ায় রকেট নিক্ষেপের স্থানে গোলা ও ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছে ইসরায়েল। তবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি সিরীয় সরকার।
লেবানন ভিত্তিক আল-মায়াদিন টিভি জানিয়েছে, সিরীয় ভূখণ্ড থেকে ইসরায়েলে রকেট হামলার দায় স্বীকার করেছে ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ আন্দোলনের সশস্ত্র শাখা আল-কুদস ব্রিগেড।
আল-আকসা মসজিদে ইসরায়েলি পুলিশের সশস্ত্র অভিযানের ফলে ইসরায়েলি-ফিলিস্তিনি উত্তেজনা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে সিরিয়া থেকে ইসরায়েলে এই রকেট হামলা চালানো হলো।
এর আগে, গত বুধবার (৫ এপ্রিল) পূর্ব জেরুজালেমে অবস্থিত মুসলিমদের তৃতীয় পবিত্রতম স্থাপনা আল-আকসা মসজিদে ফিলিস্তিনি মুসল্লিদের ওপর হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। সে সময় গ্রেপ্তার করা হয় কমপক্ষে ৪০০ ফিলিস্তিনিকে।
এর পরের দিন আল-আকসায় ফের তাণ্ডব চালায় ইসরায়েলিরা। এসময় মসজিদে ইবাদত করতে যাওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপর স্টান গ্রেনেড ও রাবার বুলেট ছোড়া হয়। আল-আকসা থেকে জোর করে বের করে দেয়া হয় ফিলিস্তিনি মুসল্লিদের।
পবিত্র মসজিদটিতে ইসরায়েলি তাণ্ডবের পর অবরুদ্ধ পশ্চিম তীরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এতে আহত হন বহু ফিলিস্তিনি। এছাড়া নাবলুসে ইসরায়েলি বাহিনীর ছোড়া বিষাক্ত গ্যাসে কমপক্ষে ১২ ফিলিস্তিনি আহত হন। হেবরনের উত্তর সিটি সংলগ্ন বাইত উমর, জেনিন-বেথেলহেমেও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
পাশাপাশি, ইসরায়েলি বাহিনী দাবি করেছে, বৃহস্পতিবার লেবানন থেকে ইসরায়েলের উদ্দেশ্যে ৩৪টি রকেট ছোড়া হয়েছে। এর মধ্যে ২৫টি আকাশেই ধ্বংস করা হয় এবং চারটি রকেট ইসরায়েলের ভূমিতে গিয়ে আঘাত হানে।
এগুলো ছিল লেবানন থেকে চলতি বছরে প্রথম এবং ২০০৬ সালে হিজবুল্লাহ বাহিনীর সঙ্গে ৩৪ দিনের যুদ্ধের পর থেকে ইসরায়েলের দিকে সর্বোচ্চ রকেট ছোড়ার ঘটনা।
এর পরপরই গাজা ও লেবাননে বিমান হামলা চালায় দখলদার ইসরায়েল। তাতে উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়। শুক্রবার তেল আবিবে একটি গাড়ি-ধাক্কায় এক ইতালীয় নাগরিক নিহত এবং আরও পাঁচ পর্যটক আহত হলে চাপে পড়ে ইসরায়েলিরা। তার কয়েক ঘণ্টা আগে অধিকৃত পশ্চিম তীরে একটি অবৈধ ইসরায়েলি বসতির কাছে একজন ফিলিস্তিনির গুলিতে দুই ইসরায়েলি নারী নিহত ও আরেকজন আহত হন।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
আন্তর্জাতিক
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে হবে: যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়নের ব্যাপারটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেনো গণতন্ত্র, আইন ও বাংলাদেশি জনগণের আকাঙ্খা পূরণ করে-এমনটাই চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় বুধবার (৭ আগস্ট) ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে এমনটাই আশা করে বলে জানিয়েছেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। এদিন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ইরাকের এক সাংবাদিক জানতে চান, ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে তার বা অন্যদের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ হয়েছি কী? বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা পরিস্থিতিকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?’
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমরা এখনও যোগাযোগ করেনি। আমরা বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়ন পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখছি এবং আমরা এরইমধ্যে দেখেছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি তার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আপনি নিশ্চয়ই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে শুনেছেন যে. অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে তা যেনো গণতান্ত্রিক নীতিমালাকে, আইনের শাসন এবং সিদ্ধান্তে বাংলাদেশি জনগণের ইচ্ছা প্রতিফলিত হয়।
এসময় যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী একটি প্রশ্ন করেন। তার প্রশ্নটি ছিল, আপনি কি জানেন যে স্বৈরশাসক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করে নতুন সরকারকে হুমকি দিচ্ছেন, সহিংসতা উসকে দিচ্ছেন? তিনি সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন যিনি বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিলেন। দয়াকরে তার ব্যাপারে আপনার মন্তব্য জানাবেন কী?’
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘একজন সাধারণ নাগরিকের বিবৃতি নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমি এরইমধ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথা বলেছি এবং আমরা দেখতে চাই এই সরকার কী পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যায়।
এসময় মুশফিকুল ফজল আনসারী আরও জানতে চান, ‘দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রত্যাশা নিয়ে আপনার কী মন্তব্য?
জবাবে ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের মুখপাত্র বলেন, শনের প্রশ্নের উত্তরে আমি যেমনটি বলেছি – অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা দেখতে চাই ওই সিদ্ধান্তে যেনো গণতান্ত্রিক নীতি মেনে চলা হয় এবং জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ওই ব্রিফিংয়ে ফিলিস্তিনের গাজা, দক্ষিণ আমেরিকার ভেনিজুয়েলা, ইরাক ও ইরানের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
এমআর//
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন