বাংলাদেশ
নীল অর্থনীতির সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নীল অর্থনীতির অমিত সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় তিনি এই নির্দেশ প্রদান করেন। রাজধানীর শেরেবাংলানগর এনইসি সম্মেলনকক্ষে একনেক চেয়ারপার্সন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভা অনুষ্ঠিত হয়। পরে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম সাংবদিকদের ব্রিফ করেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, একনেক সভায় পরিবেশ উন্নয়নসহ ১১ প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩ হাজার ৬৫৫ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৩ হাজার ১২৯ কোটি ৮৭ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ১০ হাজার ৫২৬ কোটি ১১ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে।
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, সরকার যখন ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ প্রণয়ন করে, তখন মূলত নীল অর্থনীতির বিষয়টি সামনে আসে। তিনি বলেন, ডেল্টা প্লানে নীল অর্থনীতির জন্য একটি পৃথক অধ্যায় রাখা হয়েছে। যেখানে ডেল্টা প্লান বাস্তবায়নের জন্য তহবিল সংগ্রহে ‘ব্লু বন্ড’ চালু করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ইত্যেমধ্যে অনেক দেশ এ ধরনের বন্ড ইস্যু করেছে। আমরাও যখন নীল অর্থনীতির সম্ভাবানাকে আরও আকর্ষনীয় করতে পারবো, তখন এ ধরনের বন্ড ইস্যু করা যেতে পারে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশের সুমদ্র সীমার রায়ের পর বহু বছর অতিবাহিত হলেও সমন্বিত প্রচেস্টার অভাবে নীল অর্থনীতির অগ্রগতি তেমন হচ্ছে না। নীল অর্থনীতিকে আরও এগিয়ে নিতে ডেল্টা উইং গঠন করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য ড. মো. কাওসার আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী নীল অর্থনীতির জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় গঠনের পক্ষে নন। তিনি জানান, কীভাবে নীল অর্থনীতির উদ্যোগসমূহকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া যায় এবং অর্থনীতিতে এর অবদান জিডিপিতে যুক্ত করা যায়, সে সম্পর্কে তারা একটি প্রতিবেদন তৈরি করছে।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, সর্বশেষ খানা আয় ও ব্যয় জরিপ আগামীকাল প্রকাশ করা হবে। এর সারসংক্ষেপ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করা হয়েছে। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী জরিপের ফলাফল দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন। বিশেষ করে কোভিড-১৯ অতিমারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের নেতিবাচক প্রভাব সত্ত্বেও দারিদ্র হারের নিম্নমুখী প্রবণতা দেখে তিনি সন্তুষ্ট হন।
জিডিপিতে নারীদের অবদান গণনার বাইরে থাকার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি গ্রহণযোগ্য নয়, কারণ নারীদের পারিবারিক অবদান যোগ করা হলে জিডিপি অনেক বেশি হতো। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, নারীদের কাজের অবদান নির্ণয়য়ের জন্য বিআইডিএসকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আগামী অর্থবছরের বাজেটে হবে না। কিন্তু তারপরের বাজেট থেকে নারীদের অবদান হিসাব করে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হিসাব ধরা হবে। প্রকল্পে বেশি পরামর্শক না নেওয়ার অনুশাসন দিয়েছেন সরকার প্রধান। অনুমোদিত প্রকল্পে একজনের বেশী পরামর্শক না নেওয়ার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী একনেক সভায় বলেছেন, এখন থেকে আর স্লুইস গেট বানানো যাবে না। তবে যেখানে বন্যার কারণে রাস্তাঘাট ভেঙ্গে গেছে, সেখানে যেন কালভার্ট করা হয়। পানির চাপ যেন বাধাগ্রস্ত না হয়।
একনেকে অনুমোদিত প্রকল্পসমূহ হলো- বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ‘এক্সপোর্ট কম্পিটিটিভনেস ফর জবস (২য় সংশোধন)’ প্রকল্প। শিল্প মন্ত্রণালয়ের ‘সার সংরক্ষণ ও বিতরণ সুবিধার্থে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ৩৪টি বাফার গুদাম নির্মাণ (প্রথম সংশোধন)’ প্রকল্প, পরিবেশ,বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের ‘বাংলাদেশ এনভায়রমেন্টাল সাসটেইনেবিলিটি অ্যান্ড ট্রান্সফরমেশন’ প্রকল্প, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘বন্যা ব্যবস্থাপনা পুনর্গঠন জরুরি সহায়তা প্রকল্প’। স্থানীয় সরকার বিভাগের দু’টি প্রকল্প রয়েছে যথাক্রমে-‘এডিবির সহায়তায় বন্যা ২০২২-এ ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামীণ অবকাঠামো পুনর্বাসন’ প্রকল্প এবং ‘বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার পুননির্মাণে জরুরি সহায়তা’ প্রকল্প। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের ‘সিলেট চারখাই-শেওলা মহাসড়ক উন্নয়ন’ প্রকল্প, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ‘২০২২ সালের বন্যায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশ রেলওয়ের সিলেট-ছাতকবাজার সেকশন (মিটারগেজ পুনর্বাসন)’ প্রকল্প, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ‘পাকিস্তানের ইসলামাবাদে বাংলাদেশ চ্যান্সারি কমপ্লেক্স নির্মাণ (চতুর্থ সংশোধন)’ প্রকল্প, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের ‘বাংলাদেশ ভূমি জরিপ শিক্ষার উন্নয়ন (প্রথম সংশোধন)’ প্রকল্প, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের ‘একসেলেরেটিং ট্রান্সপোর্ট অ্যান্ড ট্রেড কানেক্টিভিটি ইন ইস্টার্ন সাউথ এশিয় (একসেস) বাংলাদেশ ফেজ ১ (বিএলপিএ কম্পোনেন্ট)’ প্রকল্প।
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন