বাংলাদেশ
ভেবেছিলাম মালালা প্রেম করে ‘লিভ ইন’ করবে : তসলিমা নাসরিন
সম্প্রতি বয়ে করেছেন পাকিস্তানের শিক্ষা ও নারী অধিকার কর্মী মালালা ইউসুফজাই। এই নোবলে জয়ীর বিয়ে নিয়ে বিশ্ববাসীরজানা আগ্রহ ছিল। তাকে যারা সমালোচান করেছেন তারাও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
আর মামলার বিয়েতে অবাক হয়েছিলেন ভারতে নির্বাসিত বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিন। মালালার বিয়ে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম একাধিক পোস্টও করেছিলেন তিনি। আজ শুক্রবার (১২ নভেম্বর) নিজের ফেসবুকে আরেকটি স্ঠ্রাটাস দিয়েছেন এই লেখিকা। তা হুবহু তুলে ধরা হলো।
এ বছরের জুলাই মাসে মালালা বলেছিল বিয়েতে সে বিশ্বাসী নয়, সে বুঝতেই পারেনা লোকে কেন বিয়ে করে, বলেছিল ভালোবাসলে বিয়ে কেন, লিভ ইন সম্পর্ক করলেই তো পারে। সেই মালালা ঠিক তিন মাস পর নভেম্বরেই বিয়ে করে বসলো। সে কি প্রেম করে বিয়ে করলো নাকি এরেঞ্জড ম্যারেজ, কে জানে!
ভেবেছিলাম মেয়েটি অক্সফোর্ডে পড়তে গিয়েছে, সেখানে একসময় পিএইচ ডি করবে, ডক্টরেট করবে। মেয়েটি তো মেয়েদের শিক্ষার কথাই বিশ্ব জুড়ে বলেছে। কট্টর পুরুষতান্ত্রিক সমাজে মেয়েদের বেশিদূর পড়তে দেওয়া হয় না, সেখানে সর্বোচ্চ শিক্ষা নিয়ে সে মেয়েদের প্রেরণা হবে। নিজে প্রতিষ্ঠিত হয়ে, স্বনির্ভর হয়ে মেয়েদের সে উৎসাহিত করবে। মালালা যে সুযোগ পেয়েছিল সে সুযোগ তো পৃথিবীর অধিকাংশ মেয়ে পায় না। সুযোগের সদব্যাবহার সে করতে পারতো। সে তো শুধু পাকিস্তানের সোয়াত ভ্যালির বালিকা মালালা ছিল না, সে ছিল দুনিয়ার কোটি বালিকার আইকন। কী শিখবে তারা মালালার কাছ থেকে! মেয়েরা যে সমাজে বাল্য বিবাহের শিকার, অল্প বয়সে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে বাধ্য হয়, পরনির্ভর জীবন মেনে নিতে বাধ্য হয় — সেই সমাজকে বদলে দিতে পারতো মালালা, কিন্তু সে চেষ্টা কি সে করলো!
ভেবেছিলাম মালালা যেহেতু বুদ্ধিমতী, সে কোনও স্মার্ট হ্যান্ডসাম প্রগ্রেসিভ যুবকের সঙ্গে প্রেম করে তার পছন্দের লিভ ইন সম্পর্ক করবে। যেহেতু ইংরেজের দেশে থাকে, কোনও ইংরেজের সঙ্গেই হয়তো। নিজে অক্সফোর্ডের অধ্যাপক হয়ে অক্সফোর্ডের আরেক অধ্যাপকের সঙ্গেই হয়তো। অথচ সর্বোচ্চ ডিগ্রি না নিয়েই মাত্র ২৪ বছর বয়সে বিয়ে করে বসলো মালালা, তাও এক পাকিস্তানি মুসলিমকে!
ওমা, যেইনা আমি টুইটারে আমার বিষ্ময় প্রকাশ করেছি, আমাকে ছিঁড়ে খেয়ে ফেলছিল হাজারো তালিবান এবং তালিবান পন্থী লোকেরা। সে কী কটাক্ষ মানুষের! ছি ছিঃ, সাদাকে বিয়ে করবে, ইংরেজকে বিয়ে করবে, ছি ছিঃ। কেউ কেউ বললো পাকিস্তানিদের মধ্যে কি প্রগতিশীল নেই? বলি নিশ্চয়ই আছে, স্মার্ট হ্যান্ডসাম প্রগ্রেসিভ তো ইমরান খানই ছিলেন! এক ইহুদি মেয়েকে বিয়ে করেছিলেন! সেই মেয়েকে তো তারপর ইসলাম গ্রহণ করালেন, এখন বাস করছেন এক বোরখাওয়ালির সঙ্গে, চোখ ছাড়া যার আর কিছু দেখা যায় না, যার চেহারা না দেখেই ইমরান খান বিয়ে করেছেন, ভবিষ্যত বলে দিতে পারেন মহিলা, এই বিশ্বাস তাঁর।
সাদাকে, ছিঃ সাদাকে কেন বিয়ে করবে মালালা ছিঃ। ছিঃ ছিঃ তে আমার টুইটার ভেসে গেল। কী! এই বর্ণবাদীরা ভুলে গেছে সাদারাই মালালাকে বিখ্যাত বানিয়েছে! সাদারা চিকিৎসা করেছে, জীবন বাঁচিয়েছে, সাদারা তাদের দেশে আশ্রয় দিয়েছে, সাদারা বই লিখে দিয়েছে, ফান্ড গড়ে দিয়েছে, সাদারা নিরাপত্তা দিয়েছে, নিশ্চিন্তি দিয়েছে, নোবেল দিয়েছে। সাদারা সব দেবে, কিন্তু কোনও সাদার সঙ্গে প্রেম করা চলবে না, সাদাকে বিয়ে করা চলবে না। তাহলেই ছিঃ।
মালালা যদি পড়াশোনা আর চালিয়ে না যায়, আমি অবাক হবো না। যদি কিছুদিন পর বোরখা পরে, অবাক হবো না। যদি স্বামীকে তালাক দেয়, তাতেও অবাক হবো না।
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ