রংপুর
ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে ধরলার পাড়ে উপচে-পড়া ভিড়
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে বিনোদন কেন্দ্র না থাকায় ঈদের আনন্দ ও উৎসব উপভোগ করতে বেঁচে নিয়েছে দেশের উত্তরের দ্বিতীয় বৃহত্তম সড়ক সেতু ‘শেখ হাসিনা ধরলা সেতুটি’।
শনিবার ঈদের প্রথম দিন বিকালে ও ঈদের দ্বিতীয় দিন রোববার বিকালে শেখ হাসিনা ধরলা সেতু পাড়ে গিয়ে দেখা গেছে, শুধু ফুলবাড়ী উপজেলা নয় পার্শবর্তী উপজেলা নাগেশ্বরী ও লালমনিরহাটসহ বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে শেখ হাসিনা ধরলা সেতুর দুই পাড়ে উৎসব মুখর পরিবেশে হাজার হাজার দর্শনার্থীদের ঢলে মুখরিত। অনেকেই আবার শেখ হাসিনা ধরলা সেতুটি এক নজর দেখতে বিভিন্ন জায়গা থেকেও এসেছেন।
উত্তরের সীমান্ত ঘেষা জেলা কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার দ্বিতীয় বৃহত্তম সড়ক সেতু ‘শেখ হাসিনা ধরলা সেতুটি’ অবস্থিত। উপজেলা সদর থেকে শেখ হাসিনা ধরলা সেতুর দুরত্ব মাত্র ২ কিলোমিটার। ঈদে প্রিয়জনদের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করতে ছুটে আসেন শেখ হাসিনা ধরলা সেতুর পাড়ে। ধরলা পাড়েই খানিকটা বিনোদন ও ভালো লাগার অনুভুতি পেতে হাজারো মানুষের ঢল নামে।
সেতুর দুই পাড় দিয়ে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে নারী-পুরুষ, কিশোর-কিশোরীরা পরিবার পরিজন নিয়ে পায়ে হেঁটে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আবার কেউ কেউ ভ্যান, রিকসা, অটো, মোটর সাইকেল, বাইসাইকেল, মাইক্রোবাসসহ বিভিন্ন যানবাহনে সেতুর মাঝ খানে দাড়িয়ে প্রেমিক-প্রেমিকা, বন্ধু-বান্ধব ও পরিবার পরিজনদের সঙ্গে ছবি ও সেলফি তুলতে ব্যবস্ত সময় পাড় করছেন।
আবার অনেকেই ধরলায় ডিঙ্গি নৌকায় চড়ে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করছেন। কেউ কেউ আবার ধরলার চর গুলোতেই ঘুরে ঘুরে দেখছেন। সেতুর দুই পাড়ে ১০টি ফুচকা, চানাচুর, আইক্রিমের দোকানের পাশাপাশি চুরি-ফিতা ও বেলুনসহ বিভিন্ন রকমারীর দোকান বসেছে। সব গুলো দোকানেই তেক্রাদের উপচেপড়া ভির দেখা গেছে। শেখ হাসিান ধরলা সেতুর পাড়ে পর্যটন কেন্দ্রের দাবী জানিায়েছে স্থানীয়রাসহ দুর-দুরান্তর থেকে আসা দর্শনাথীরা।
স্থানীয় এমদাদুল হক মিলন ও শহিদুল ইসলাম জানান, এই এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন ছিল এই শেখ হাসিনা সেতুটি। ফুলবাড়ীবাসীর স্বপ্ন সত্যি হয়েছে। সেতুর উপর দিয়ে পায়ে হেঁটে যাওয়া ও ধরলায় ডিঙ্গি নৌকা করে প্রিয়জনরা আপন মনে ঘরছেন। কোন কোন দর্শনার্থী বাঁধে বসেই গল্প ও আড্ডায় ব্যস্ত সময় পাড় করেন। এই দুই স্থানীয় ব্যক্তি সেতু পাড়ে পর্যটন কেন্দ্রের পাশাপাশি সেতুর দুই পাড়ে ধরলার তীররক্ষা বাধের দুই পাশে সিমেন্টের বে জাতীয় কিছু বসার ব্যবস্থা করলে চটপটি ও ফুচকা ওয়ালাদের আগমনে দর্শক সমাগম বাড়তো। বর্তমানে সেতুটির উপর দিয়ে চলাচল ছাড়াও এখানে প্রতিদিন বিকালে শতশত দর্শনার্থী দুর-দুরান্ত থেকে এসে ভীর জমায়। বিশেষ করে সন্ধ্যার গোধুলি বেলায় সূর্য্যরে অস্ত যাওয়ার দৃশ্যটা মুগ্ধ করে তুলবে দুর-দুরান্তের দর্শনার্থীসহ এলাবাসীর। এ যেন প্রকৃতির এক সুন্দর্য্য অনুভবের যায়গা।
লালমনিরহাট থেকে সবজু মিয়া ও তুলি আক্তার জানান, ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পরিবারের সাথে শেখ হাসিনা ধরলা সেতুটি দেখতে এসেছি। অনেক ভাল ভাল ছবি ও সেলফি তুলে ফেসবুকে পোষ্ট করছি। সেই সাথে ধরলায় ডিঙ্গি নৌকায় ঘুরেছি। সব মিলিয়ে আমরা এবারের ঈদ-আনন্দটা খুবেই ভাল হয়েছে।
ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ ফজলুর রহমান জানান, ঈদের দিন ও ঈদের দ্বিতীয় দিন দুর-দুরান্তর থেকে আসা হাজারও দর্শনার্থী ফুলবাড়ী উপজেলার শেখ হাসিনা ধরলা সেতু পাড়ে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে ব্যাপক জনসমাগম ঘটেছে। দর্শনার্থীরা যেন আপন মনে সেতু পাড়ে তাদের প্রিয়জনদের সাথে ঘুরে পাড়ে সে লক্ষ্যে পুলিশের টহল জোড়দার করা হয়েছে। দর্শনার্থীরা যেন বিকাল ৪টা থেকে সন্ধা ৬ টা পর্যন্ত সেতু পাড়ে নির্বিঘেœ ঈদের আনন্দ উৎসব করে বাড়ী ফিরে না যাওয়া পর্যন্ত পুলিশ সেতু পাড়ে থাকবে বলে জানান অফিসার ইনচার্জ।
উল্লেখ্য , শেখ হাসিনা ধরলা সেতুটি প্রায় ১৯২ কোটি টাকা ব্যায়ে ১৯ টি স্প্যান বিশিষ্ট ৯৫০ মিটার পিসি গার্ডারের কাজ সম্পন্ন করে এলজিইডি। গত ২০১৮ সালের ৩ জুন রোববার সকাল সাড়ে ১০ টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শেখ হাসিনা ধরলা সেতুটির শুভ উদ্বোধনের মাধ্যমে সর্বসাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।
জাতীয়
রংপুরে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে কাউন্সিলরসহ নিহত ৫
রংপুরে অসহযোগ আন্দোলনে সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে রংপুর সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলরসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন। সাংবাদিকসহ প্রায় ৫০ জন আহত হয়েছেন। এরমধ্যে কয়েকজন গুরুতর অবস্থায় মেডিকেলে ভর্তি রয়েছেন।
রোববার (৪ আগস্ট) দুপুরের দিকে রংপুর নগরীতে সংঘর্ষ চলাকালে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত হারাধন রায় হারা রংপুর সিটি করপোরেশনের ৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, পশুরাম থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মহানগর পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি। নিহতের বিষয়টি গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন রসিক কাউন্সিলর শাহাজাদা আরমান শাহাজাদা।
নিহত অন্য চারজন হলেন নগরীর গুড়াতিপাড়ার স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা খরশু মিয়া, যুবলীগ নেতা মাসুম, হারাধন রায়ের ভাগ্নে এবং অপরজনের পরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
জানা যায়, সকাল থেকেই লাঠিসোটা নিয়ে রংপুর মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় ঘিরে অবস্থান নেন আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা। অন্যদিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ অবস্থান নেন নগরীর টাউনহল চত্বরে। এতে মুখোমুখি সংঘর্ষ শুরু হয়। ঘটনাস্থলে কয়েকজন গুরুতর আহত হন। তাদের উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
পরে জাহাজ কোম্পানি মোড় থেকে পায়রা চত্বরে পুনরায় অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করতে গিয়ে আটকে পড়েন পশুরাম থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কাউন্সিলর হারাধন রায় হারা। পরে পায়রা চত্বর থেকে পালিয়ে কালিবাড়ি মন্দিরে প্রবেশ করার সময় আন্দোলনকারীদের হাতে ধরা পড়েন হারাধন রায় হারা। সেখানেই এলোপাতাড়ি দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তাকে কোপাতে শুরু করেন। একপর্যায়ে মৃত্যু নিশ্চিত হলেও পুনরায় এলোপাতাড়ি আঘাত করেন তারা। পরে পরিবারের লোকজন ঘটনা জানার পর হারাধনের মরদেহ উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যান।
এদিকে রংপুর সিটি করপোরেশনের সামনে অবস্থান করা এনটিভির ক্যামেরাপারসন আরমান, চ্যানেল টোয়েন্টি ফোরের রিপোর্টার ফখরুল শাহীন, নিউজ টোয়েন্টিফোরের রিপোর্টার রেজাউল ইসলাম মানিক, একুশে টিভির ক্যামেরাম্যান আলী হায়দার রনি, ইত্তেফাকের ফটো সাংবাদিক রাশেদ রাব্বি, অনলাইনের মিজানসহ ১০ জন গণমাধ্যম কর্মীকে মারধর করেছেন আন্দোলনকারীরা।
উল্লেখ্য, রংপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলায় আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। রংপুর-২ (বদরগঞ্জ) আসনের আওয়ামী লীগের এমপি ডিউক চৌধুরীর বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ও পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে আগুন, গংগাচড়া আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর ও আগুন, মিঠাপুকুর উপজেলার পরিষদ চত্বরে ইউএনও অফিস, বেগম রোকেয়া অডিটোরিয়াম, আনসার ভিডিপিসহ বিভিন্ন দফতরে ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কোষাধ্যক্ষ এইচ এন আশিকুর রহমানের বাড়িতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।
এএম/
দেশজুড়ে
রংপুরে আ.লীগের এমপির বাসায় আগুন, লুটপাট
রংপুরের বদরগঞ্জে আওয়ামী লীগ সংসদ সদস্য আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী (ডিউক) ও পৌরসভার মেয়র আহসানুল হক চৌধুরীর (টুটুল) বাসায় আগুন দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। আগুন দেওয়ার পর লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।
প্রথমে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভকারীদের লাঠিপেটা ও ধাওয়া দিয়েছেন। পরে বিক্ষোভকারীরা একত্রিত হয়ে স্থানীয় দুপুর ১২টার দিকে আগুন দেয়। বিক্ষোভকারীরা লাঠি হাতে ওই দুই বাড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ করছে।
অন্যদিকে রংপুর শহরের সুপার মার্কেটের সামনে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় দুইজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন। রোববার (৪ আগস্ট) সকালে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের (রমেক) উপ-পরিচালক আক্তারুজ্জামান গণমাধ্যমকে নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, সকালে আন্দোলনকারীরা শহরের সুপার মার্কেট এলাকায় জড়ো হন। এ সময় আকস্মিকভাবে আওয়ামী লীগের ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা তাদের ধাওয়া দেন। আন্দোলনকারীরাও তাদের পাল্টা ধাওয়া দিলে শুরু হয় সংঘর্ষ। এতে উভয়পক্ষের ৩২ জন আহত হন। তাদের উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক দুজনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার আবু মারুফ হোসেন (অপরাধ) গণমাধ্যমকে বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে।
এনএস/
দেশজুড়ে
সংঘর্ষে রণক্ষেত্র রংপুর, নিহত ২
রংপুরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় দুইজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন।
রোববার (৪ আগস্ট) সকালে শহরের সুপার মার্কেটের সামনে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহত ও নিহতদের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায় নি।
রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের (রমেক) উপ-পরিচালক আক্তারুজ্জামান গণমাধ্যমকে নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, সকালে আন্দোলনকারীরা শহরের সুপার মার্কেট এলাকায় জড়ো হন। এ সময় আকস্মিকভাবে আওয়ামী লীগের ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা তাদের ধাওয়া দেন। আন্দোলনকারীরাও তাদের পাল্টা ধাওয়া দিলে শুরু হয় সংঘর্ষ। এতে উভয়পক্ষের ৩২ জন আহত হন। তাদের উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক দুজনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার আবু মারুফ হোসেন (অপরাধ) গণমাধ্যমকে বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে।
এনএস/
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন