আন্তর্জাতিক
সুদান থেকে ফিরতে ইচ্ছুকদের দূতাবাসের হটলাইনে যোগাযোগের অনুরোধ
সুদানের সেনাবাহিনী ও আধা সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে চলমান লড়াইয়ে এখন পর্যন্ত চার শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। সৃষ্টি হয়েছে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির। হামলায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে রাজধানী খার্তুমে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস ও ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদের বাসভবন।
এমন পরিস্থিতিতে সুদানে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের মধ্যে যারা দেশে প্রত্যাবর্তন করতে চায় তাদেরকে খার্তুমের বাংলাদেশ দূতাবাসের হটলাইন নাম্বারে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ফেসবুক পেজের এক পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
পোস্টে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ প্রত্যাবর্তনে ইচ্ছুক সুদানে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকদের বাংলাদেশ দূতাবাসের হটলাইন নাম্বারে দ্রুত যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে।
হটলাইন নাম্বারগুলো হলো
মো. ইকরামুল হক (তৃতীয় সচিব)
+২৩৪ ৯০৯ ৭৫৫ ১৭৯০
মো. জাহাঙ্গীর আলম (প্রশাসনিক কর্মকর্তা)
+৮৮০১৭৩৭১২৫৩৪৯
এর আগে বুধবার (২৬ এপ্রিল) সুদানে বাংলাদেশ মিশনের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স তারেক আহমেদ জানান, ‘যে এলাকায় বাংলাদেশ দূতাবাস ও বাংলাদেশ হাউস অবস্থিত সেখানে নিরাপত্তা ও সুরক্ষা পরিস্থিতি এখনও অস্থিতিশীল। আমাদের কর্মীরা এখন পর্যন্ত দূতাবাস প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে পারেনি। সুদানে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সরিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদিও কিছুই চূড়ান্ত নয়, আমরা আশা করছি যে এই মাসের মধ্যে বা আগামী মাসের প্রথম দিকে সম্পন্ন হবে। এখন সরিয়ে নিতে আগ্রহী এমন প্রবাসীদের তথ্য সংগ্রহ করছি।’
হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সুদানে বাংলাদেশ দূতাবাসের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গুলিতে দূতাবাস ও ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতের বাসভবন ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তবে এ হামলায় কেউ হতাহত হননি। আরএসএফ ও সেনাদের সংঘর্ষের মধ্যে ২২ এপ্রিল বাংলাদেশ দূতাবাসের জানালা ও দেয়াল ভেদ করে গুলি ঢুকে পড়ে।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, সুদানে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকদের নিরাপদে অন্য দেশের মাধ্যমে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। খার্তুমে বাংলাদেশ দূতাবাস ইতিমধ্যে এই বার্তা সেখানে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের মধ্যে প্রচার শুরু করেছে। সুদানে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনা হবে।
মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম তার ফেসবুক পেজে এক স্ট্যাটাসে এই তথ্য জানান।
ফেসবুক পোস্টে শাহরিয়ার আলম আরও বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ওপরে নির্ভর করবে, কীভাবে কোন পদ্ধতিতে তারা যাত্রা করবেন। সবাইকে দূতাবাসের নির্দেশনা মেনে নিবন্ধন এবং প্রয়োজনীয় কাজ করার অনুরোধ করছি। বাংলাদেশের সাংবাদিকদের অনুরোধ করছি দূতাবাসে যোগাযোগ না করার জন্য। কারণ, সকলেই ব্যস্ত এবং রুটগুলো নিরাপত্তার খাতিরে না জানানোই ভালো। আমরা সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন জানিয়েছিলেন, সুদানে ক্ষমতার লড়াইয়ে চরম বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হলেও দেশটিতে বাংলাদেশি মিশন চালু রাখা হবে। সেখানে প্রায় দেড় হাজার বাংলাদেশির অবস্থানের কথা বিবেচনা করে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
সুদানে চলমান সংঘর্ষের মধ্যে গত শনিবার মিসর, পাকিস্তান ও কানাডার দেড় শতাধিক নাগরিককে সরিয়ে নেয়া হয়। সমুদ্রপথে সৌদি আরবের জেদ্দা বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয় তাদের। এ ছাড়া যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র তাদের কূটনীতিক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সরিয়ে নিয়ে গেছে। কূটনীতিকদের সরিয়ে নেয়ার পর খার্তুমে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
আন্তর্জাতিক
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে হবে: যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়নের ব্যাপারটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেনো গণতন্ত্র, আইন ও বাংলাদেশি জনগণের আকাঙ্খা পূরণ করে-এমনটাই চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় বুধবার (৭ আগস্ট) ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে এমনটাই আশা করে বলে জানিয়েছেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। এদিন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ইরাকের এক সাংবাদিক জানতে চান, ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে তার বা অন্যদের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ হয়েছি কী? বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা পরিস্থিতিকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?’
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমরা এখনও যোগাযোগ করেনি। আমরা বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়ন পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখছি এবং আমরা এরইমধ্যে দেখেছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি তার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আপনি নিশ্চয়ই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে শুনেছেন যে. অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে তা যেনো গণতান্ত্রিক নীতিমালাকে, আইনের শাসন এবং সিদ্ধান্তে বাংলাদেশি জনগণের ইচ্ছা প্রতিফলিত হয়।
এসময় যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী একটি প্রশ্ন করেন। তার প্রশ্নটি ছিল, আপনি কি জানেন যে স্বৈরশাসক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করে নতুন সরকারকে হুমকি দিচ্ছেন, সহিংসতা উসকে দিচ্ছেন? তিনি সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন যিনি বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিলেন। দয়াকরে তার ব্যাপারে আপনার মন্তব্য জানাবেন কী?’
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘একজন সাধারণ নাগরিকের বিবৃতি নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমি এরইমধ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথা বলেছি এবং আমরা দেখতে চাই এই সরকার কী পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যায়।
এসময় মুশফিকুল ফজল আনসারী আরও জানতে চান, ‘দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রত্যাশা নিয়ে আপনার কী মন্তব্য?
জবাবে ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের মুখপাত্র বলেন, শনের প্রশ্নের উত্তরে আমি যেমনটি বলেছি – অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা দেখতে চাই ওই সিদ্ধান্তে যেনো গণতান্ত্রিক নীতি মেনে চলা হয় এবং জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ওই ব্রিফিংয়ে ফিলিস্তিনের গাজা, দক্ষিণ আমেরিকার ভেনিজুয়েলা, ইরাক ও ইরানের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
এমআর//
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন