অপরাধ
ঈদে বেড়ানোর নামে ইজিবাইক ছিনতাই, অতঃপর হত্যা
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় শুক্র ও শনিবার অভিযান চালিয়ে অটোরিকশা ছিনতাইয়ের মূল পরিকল্পনাকারীসহ চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১০। মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানের ইজিবাইক চালক শাহাদাত হাওলাদার নামে ওই ব্যক্তির মৃত্যু নিশ্চিত করে তাকে সেতু থেকে ফেলে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী জুয়েল বেপারী, সাজ্জাদ শেখ, ইসমাইল হোসেন, লিমন মাতুব্বর, মোহাম্মদ সোহাগ, রোমান শিকদার ও জাকির হোসেন।
শনিবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন র্যাব-১০-এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন।
র্যাব জানায়, অটোরিকশাটি সিরাজদিখানের মো. জাকির হোসেনের কাছে তারা বিক্রি করেন। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী- শনিবার ভোরে সিরাজদিখান থেকে জাকিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। জাকিরের গ্যারেজ থেকে ছিনতাই করা অটোরিকশাসহ বিভিন্ন সময়ে ছিনতাই করা আরও পাঁচটি অটোরিকশা উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, রাজধানীর কদমতলীর মদিনাবাগ এলাকায় বসবাসকারী শাহাদাত হাওলাদার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ চুনকুটিয়া এলাকায় একটি গ্যারেজ থেকে অটোরিকশা ভাড়া করে চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। গেলো শনিবার (২৩ এপ্রিল) আনুমানিক বিকেল ৪টায় প্রতিদিনের মতো তিনি গ্যারেজ থেকে অটোরিকশা নিয়ে বের হন। ওইদিন রাতে শাহাদাত বাসায় না ফিরলে তার পরিবারের লোকজন তাকে মোবাইল ফোনে কল দিয়ে বন্ধ পান।
র্যাব আরও জানায়, রোববার (২৪ এপ্রিল) সকাল আনুমানিক পৌনে ১০টায় শাহাদাতের মোবাইল থেকে কল দিয়ে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি জানান, মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান এলাকার কুচিয়ামোড়া রেলওয়ে ব্রিজের নিচে একটি মরদেহ পড়ে আছে। সংবাদ পেয়ে শাহাদাতের পরিবারের লোকজন দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে তার মাথা, মুখ ও কপালে জখম অবস্থায় মরদেহ দেখতে পায়। তাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে সিরাজদিখান থানা পুলিশ শাহাদাতের মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় শাহাদাতের ভাই শহিদুল ইসলাম জসিম সিরাজদিখান থানায় অজ্ঞাতনামা দুই থেকে তিনজনের নামে দস্যুতাসহ হত্যার মামলা করেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে র্যাব-১০-এর অধিনায়ক জানান, গেলো ২২ এপ্রিল ঈদের দিন জুয়েল, সাজ্জাদ, লিমন, রোমান, ইসমাইল ও সোহাগ মিলে মাওয়ায় ঘুরতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ঘণ্টায় ৩২০ টাকা হিসেবে শাহাদাতের অটোরিকশা ভাড়া করেন। বেড়ানোর সময় তারা অটোরিকশাটি ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করেন। কিন্তু ঈদের দিন হওয়ায় পরবর্তী দিন অটোরিকশার ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী- তারা শাহাদাতকে ঈদের দিন এক হাজার ৯০০ টাকা ভাড়া দেন। পরের দিনও তারা ঘুরতে যাবেন বলে অটোরিকশাচালকের মোবাইল নম্বর নিয়ে রাখেন।
র্যাবের কর্মকর্তা আরও জানান, পরের দিন ২৩ এপ্রিল বিকেল আনুমানিক ৫টায় পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী শাহাদাতকে মোবাইলে কল করে কদমতলী লাবণী রেস্টুরেন্টের সামনে ডেকে আনেন আসামিরা। সেখান থেকে জুয়েল, সাজ্জাদ ও লিমন অটোরিকশায় ওঠেন এবং কিছুক্ষণ পর ইসমাইলকে ফোন দিয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কালীগঞ্জ খালপাড়ে অবস্থান করতে বলেন। কালীগঞ্জ এলাকা থেকে ইসমাইলকে সঙ্গে নিয়ে তারা মাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন। তারা শ্রীনগরসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন।
তিনি আরও বলেন, আনুমানিক রাত ১১টায় সিরাজদিখান কুচিয়ামোড়া রেলওয়ে ব্রিজের ওপরে এসে অটোরিকশা থামিয়ে গল্প করতে থাকেন আসামিরা। এর কিছুক্ষণ পর আশপাশে কোনো লোকজন দেখতে না পেয়ে জুয়েল, সাজ্জাদ, ইসমাইল ও লিমন শাহাদাতের মুখ, মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি কিলঘুষি মারতে থাকেন। ওই সময় শাহাদাত চিৎকার করলে জুয়েল তার মুখ চেপে ধরেন। মারামারির একপর্যায়ে শাহাদাত অজ্ঞান হয়ে পড়লে দুর্বৃত্তরা তাকে সেতু থেকে নিচে ফেলে দিয়ে অটোরিকশাটি নিয়ে পালিয়ে যান।
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার জাকির জানান, তিনি ছিনতাই করা অটোরিকশাটি আসামিদের কাছ থেকে ২৫ হাজার টাকায় কেনেন। পরে অটোরিকশার রঙ ও কাঠামো পরিবর্তন করে অন্য জায়গায় বিক্রির পরিকল্পনা করেছিলেন। এছাড়া তিনি হত্যাকাণ্ডে জড়িত চক্রটির কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে চোরাই বা ছিনতাই করা অটোরিকশা অল্প দামে কিনে সেগুলোর রঙ ও কাঠামো পরিবর্তন করে বিক্রি করতেন।
জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, গ্রেপ্তাররা বিভিন্ন সময়ে অটোরিকশা ভাড়া করে তাদের সুবিধাজনক স্থানে নিয়ে গিয়ে দেশীয় ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ছিনতাই করতেন। পরে সেগুলোগুলো ২০-৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে গ্যারেজ মালিক জাকিরের কাছে বিক্রি করতেন। গ্রেপ্তারকৃত জুয়েল, লিমন ও ইসমাইলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় হত্যাচেষ্টা ও চুরিসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
অপরাধ
রাজধানীতে বস্তা ভর্তি টাকাসহ একটি গাড়ি আটক করলেন শিক্ষার্থীরা
রাজধানীর উত্তরায় একটি প্রাইভেটকার থেকে এক বস্তা টাকাসহ একটি শটগান উদ্ধার করেছেন শিক্ষার্থীরা। এই ঘটনায় তিনজনকে হেফাজতে নিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
বুধবার (৭ আগস্ট) এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা গণমাধ্যমে জানান, রাজধানীর উত্তরার একটি বাসার গ্যারেজ থেকে গাড়িটি জব্দ করা হয়। এ সময় তিনজনকে হেফাজতে নেয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। পরে গাড়ি থেকে এক বস্তা টাকা উদ্ধার করে হেফাজতে নেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় স্থানীয় জনতা ও শিক্ষার্থীরা উল্লাস করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, আওয়ামী লীগ ঘরোয়ানার একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের এমডির গাড়ি থেকে এ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। গাড়ি থেকে এক বস্তা টাকাসহ একটি শটগান উদ্ধার করে উত্তরা টাউন কলেজের শিক্ষার্থীসহ অনান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এএম/
অপরাধ
কাশিমপুর কারাগার থেকে পালিয়েছে ২০৯ বন্দি, নিহত ৬
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২০৯ জন বন্দি পালিয়েছেন। পালিয়ে যাওয়ার সময় নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জন বন্দি নিহত হয়েছেন।
বুধবার (৭ আগস্ট) বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান,গেলো মঙ্গলবার বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দিরা কারাগার ভেঙে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কারারক্ষীরা তাদের নিভৃত করার চেষ্টা করলে বন্দিরা কারারক্ষীদের ওপর চড়াও হয়। বন্দিদের কেউ দেয়াল ভেঙে, কেউ দেয়াল টপকে, আবার কেউ দেয়ালের সঙ্গে বিদ্যুতের পাইপ লাগিয়ে কারারক্ষীদের মারধর করে পালিয়ে যেতে চান।
একপর্যায়ে সেনাবাহিনীকে খবর দিলে তারা কমান্ডো অভিযান চালিয়ে বিদ্রোহ দমন করেন।এসময়ে বন্দিদের মধ্যে ২০৯ জন দেয়াল টপকে পালিয়ে গেছে।বন্দিদের ঠেকাতে নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, নিহতদের নাম পরিচয় পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন সিনিয়র জেল সুপার।
আই/এ
অপরাধ
কাশিমপুর কারাগারে তীব্র উত্তেজনা, সেনাবাহিনীর শক্ত অবস্থান
গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে বন্দিরা মুক্তির দাবিতে উত্তেজনা শুরু করেছেন। কারারক্ষীদের জিম্মি করে অনেকে দলবদ্ধভাবে বের হয়ে আসার চেষ্টা করছেন। খবর পেয়ে সেনা সদস্যরা এসে প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) দুপুরের দিকে এ পরিস্থিতি দেখা গেছে। এসময়ে ওই এলাকার আকাশে হেলিকপ্টার চক্কর দিতে দেখা যায়।
কারা কর্তৃপক্ষ জানান, কাশিমপুর কারা কমপ্লেক্সে পৃথক চারটি কারাগার রয়েছে। এর মধ্যে বিডিআর বিদ্রোহ মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি, ফাঁসি ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত দুর্ধর্ষ জঙ্গি বন্দিরা রয়েছে। এছাড়া রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার অনেক নেতাকর্মীও ওই কারাগারে রয়েছে।
জানা যায়, বেলা ১১টার দিকে কিছু বন্দি কারাগারের অভ্যন্তরে থাকা কারারক্ষীদের জিম্মি করে মুক্তির দাবিতে বিদ্রোহ শুরু করে। এসময়ে কারারক্ষীরা তাদের শান্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। আগে থেকেই সেখানে অল্প সংখ্যক সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন। উত্তেজনা আরও বেড়ে গেলে দুপুর দেড়টার দিকে অতিরিক্ত সেনা সদস্য হেলিকপ্টার যোগে কারা অভ্যন্তরে এসে বন্দিদের নিয়ন্ত্রণ করেন।
প্রসঙ্গত, কারা অভ্যন্তরে বিদ্রোহের খবর পেয়ে বন্দিদের স্বজনরা সকাল থেকেই কারাগারের সামনে অবস্থান করেন। এ সময় তাদের সঙ্গে আন্দোলনকারীরা যোগ দিয়ে বিক্ষোভ করে। কারাগারের বাইরে একটি ঝুট গুদামে অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরে সেনা সদস্যরা বাইরের বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে দেন।
আই/এ
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন