জাতীয়
ওটিটি প্লাটফর্ম নিয়ে বাস্তবভিত্তিক নীতি গ্রহণ করবে সরকার
নিজস্ব কৃষ্টি লালন ও বিশ্ববাস্তবতার সাথে তাল মিলিয়ে ওটিটি বা ‘ওভার দ্য টপ’ প্লাটফর্ম নিয়ে বাস্তবভিত্তিক নীতি গ্রহণ করবে সরকার। বলেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
বুধবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে ওটিটি প্লাটফর্ম বিষয়ে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদেরকে তিনি একথা জানান।
এসময় তথ্যসচিব কামরুন নাহার, বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক হারুন অর রশীদ, চলচ্চিত্রকার অমিতাভ রেজা চৌধুরী, পিপলু খান, বিএফডিসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুজহাত ইয়াসমিন, ফিল্ম আর্কাইভের মহাপরিচালক নিজামুল কবীর, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক স. ম. গোলাম কিবরিয়া প্রমুখ বৈঠকে অংশ নেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে এবং সমগ্র পৃথিবীতে ওটিটি প্লাটফর্মের মাধ্যমে বিনোদন, সিনেমা, নাটকসহ নানা কন্টেন্ট রিলিজ করা একটি ক্রমবর্ধমান বাস্তবতা। এগুলো মানুষ যেকোন জায়গা থেকে উপভোগ করতে পারে। মানুষের জন্য এটি একটি ইউজার-ফ্রেন্ডলি মাধ্যম হওয়ায় ধীরে ধীরে মানুষ ওটিটি প্লাটফর্মে অনেক বেশি অভ্যস্ত হচ্ছে।
‘এই বাস্তবতায় আমরা আরও দেখতে পাই, বাংলাদেশে অনেকগুলো কন্টেন্ট নিয়ে পত্রপত্রিকায় নানাধরণের প্রতিবেদন এসেছিল, নানা প্রশ্ন উঠেছিল, বিশেষ করে এগুলো আমাদের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপট, কৃষ্টি, ঐতিহ্যের সাথে সাংঘর্ষিক বলে অনেকগুলো প্রতিবেদন বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছিল’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, যেহেতু সম্প্রচারের কাজও তথ্য মন্ত্রণালয়ের হাতে ন্যস্ত, এ ব্যাপারে সবাই যাতে সতর্ক থাকে সেটি আমরা বলেছিলাম।
বিভিন্ন দেশে এই ওটিটি প্লাটফর্মকে নিয়মনীতির মধ্যে আনার জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়েছে এবং অতি সম্প্রতি এ ধরণের বাস্তবতার প্রেক্ষিতে ভারতেও ওটিটি প্লাটফর্মে যেকোনো কন্টেন্ট নিয়মনীতির মাধ্যমে এবং সরকারকে জানিয়ে আপলোড করার জন্য একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে, জানান ড. হাছান।
এদিনের বৈঠক সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, ওটিটি প্লাটফর্ম নিয়ে বাস্তবভিত্তিক নীতি গ্রহণ এবং দেশীয় উদ্যোক্তাদের কাজের সুযোগ তৈরি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমাদের দেশে এখন অন্য দেশের ওটিটি প্লাটফর্ম কাজ করছে, রেভিনিউ নিয়ে যাচ্ছে। যেহেতু এদেশে জনপ্রিয় ওটিটি প্লাটফর্ম সেভাবে নেই, আমাদের নির্মাতারাও বিদেশী প্লাটফর্ম ব্যবহারে অনেকক্ষেত্রে বাধ্য হচ্ছে। আমরা চাই, এদেশে বিশ্বমানের ওটিটি প্লাটফর্ম গড়ে উঠুক যা শুধু দেশের মানুষকেই বিনোদন দেবে না, অন্য দেশ থেকেও যাতে আমরা আয় করতে পারি, তেমন ওটিটি প্লাটফর্ম আমরা করবো। এই বাস্তবতায় চলচ্চিত্র, নাটক, ওয়েবসিরিজ মুক্তি দেবার জন্য সরকারের চলচ্চিত্র প্রকাশনা অধিদপ্তরের মাধ্যমে ওটিটি প্লাটফম করতে পারি কি না- সে বিষয়েও প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি।
একইসাথে আমাদের কৃষ্টি-সংস্কৃতির সাথে সাংঘর্ষিক কোনো কন্টেন্ট যাতে আপলোড না হয়, তরুণ সমাজকে বিভ্রান্ত বা বিপথগামী করতে না পারে, বরং দেশ, সমাজ ও তরুণদের মনন গঠনে, দেশকে স্বপ্নের ঠিকানায় নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে যাতে এই প্লাটফর্মগুলো কাজ করতে পারে, সেজন্য এটিকে নিয়মনীতির মধ্যে আনা প্রয়োজন উল্লেখ করে এজন্য খুব সহসা একটা বড় কমিটি করে দেবার কথা জানান ড. হাছান মাহমুদ।
একইসাথে নিজস্ব কৃষ্টি লালন ও বিশ্ববাস্তবতার সাথে তাল মিলিয়ে ওটিটি প্লাটফর্ম নিয়ে বাস্তবভিত্তিক নীতি পুরো চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নয়নেই সহায়ক হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী এসময় বলেন, বাংলাদেশে চলচ্চিত্র শিল্পের যাত্রা শুরু হয়েছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে। আমাদের চলচ্চিত্র বহু কালজয়ী ছবির যেমন জন্ম দিয়েছে, বহু কালজয়ী অভিনেতা- অভিনেত্রীরও জন্ম দিয়েছে, স্বাধিকার আন্দোলন থেকে স্বাধীনতা সংগ্রামে ও স্বাধীনতা পরবর্তীকালে দেশ গঠনে ভূমিকা রেখেছে। তবে বাস্তবতা এই যে, আমাদের দেশে চলচ্চিত্র সেই জায়গায় নেই। সেকারণে আমরা চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নয়নের জন্য এক হাজার কোটি টাকার বিশেষ ঋণ তহবিল গঠনসহ ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। আশা করছি এই উদ্যোগগুলোর ফলে আগামী দু’বছর পর চলচ্চিত্র শিল্পের দৃশ্যপট পুরো পাল্টে যাবে।
এস
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ