উত্তর আমেরিকা
ডলার সংকটে পড়ার শঙ্কায় মার্কিন সরকার
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী জানেত ইয়েলেন সতর্কতা দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সরকার হয়ত আগামী ১ জুন থেকে নগদ অর্থের সংকটে পড়বে। এ সমস্যা উত্তরণে ঋণ সীমা বাড়ানো বা বাতিল করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। এ ব্যাপারে কংগ্রেসের উদ্দেশ্যে সোমবার (১ মে) একটি চিঠিও পাঠিয়েছেন মার্কিন অর্থমন্ত্রী।
মঙ্গলবার (২ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
পৃথিবীর অন্যান্য দেশগুলোর মতো যুক্তরাষ্ট্রেও ঋণ সীমা নির্ধারণ করা আছে। এর বাইরে দেশটির সরকার ঋণ দিতে বা নিতে পারে না। তবে বর্তমান মার্কিন প্রশাসনের ঋণের পরিমাণ ওই সীমার কাছে চলে এসেছে।
ঋণ সীমার কাছে পৌঁছে যাওয়া মানে যুক্তরাষ্ট্রের সরকার কয়েকদিন পর আর কোনো ঋণ নিতে পারবে না।
যুক্তরাষ্ট্রের আইনসভার নিম্নকক্ষ কংগ্রেসের সদস্যদের উদ্দেশ্যে পাঠানো চিঠিতে অর্থমন্ত্রী এই সমস্যা সমাধানে ‘দ্রুত পদক্ষেপ’ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি দ্রুত সময়ের মধ্যে বর্তমানে ঋণ সীমা ৩১ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন থেকে বাড়ানো বা এ সীমা বাতিল করার অনুরোধ জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আগামী ৯ মে এ নিয়ে কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন।
যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৬০ সাল থেকে ঋণ সীমা মোট ৭৮ বার বাড়ানো বা কমানো হয়েছে।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নিম্নকক্ষের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বিরোধী দল রিপাবলিকান পার্টি। বাইডেন প্রশাসন ঋণ সীমা বাড়ানোর বিষয়টি জানানোর পর রিপাবলিকানরা দাবি করেছে, বাইডেনের অর্থনেতিক নীতিতে পরিবর্তন আনতে হবে এবং অনেক খাতে ব্যয় সংকোচন করতে হবে। যার মধ্যে শিক্ষার্থীদের ঋণ মওকুফ এবং পরিবেশ বান্ধব ঋণের বিষয়টি রয়েছে। এসব দাবি মেনে নিলে তারা ঋণ সীমা বৃদ্ধির অনুমোদন দেবে বলে জানিয়েছে।
কিন্তু বাইডেনের দল ডেমোক্রেটিক পার্টি রিপাবলিকানদের এমন দাবির তীব্র সমালোচনা করেছেন। প্রেসিডেন্ট নিজে বলেছেন, এ নিয়ে কোনো আলোচনা বা আপস করা হবেনা।
তবে ইউসএস চেম্বার অব কমার্সসহ যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের বড় সংগঠনগুলো রিপাবলিকানদের দাবির ব্যাপারে আলোচনা করার জন্য প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে ইতোমধ্যে চাপ প্রয়োগ করেছেন।
যদি মার্কিন সরকার সত্যি সত্যি নগদ অর্থের সংকটে পড়ে যায় তাহলে এর প্রভাব অনেক বড় হবে। যদিও যুক্তরাষ্ট্র কখনো এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়নি।
কিন্তু যদি এবার হয়— তাহলে দেশটিতে অর্থনৈতিক টালমাটাল পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। অনেক মানুষ চাকরি হারাবেন। যা দেশকে মন্দার দিকে নিয়ে যেতে পারে।
এছাড়া যদি ঋণ সীমা বৃদ্ধি না করা হয়, তাহলে অর্থ নিতে না পারার কারণে সরকার সাধারণ সরকারি কর্মচারী, সামরিক বাহিনীর সদস্যদের বেতন দিতে পারবে না। সামাজিকখাতে নিয়োগকৃত কর্মচারী এবং সামরিক যন্ত্রাংশ সরবরাহকারীদের পাওনা অর্থ দিতে পারবে না।
এর প্রভাব এতই বেশি হবে যে, যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ আবহাওয়ার সংবাদ দেওয়া এবং নেওয়ার বিষয়টিও বাধাগ্রস্ত হবে। কারণ জাতীয় আবহাওয়া সেবা দেওয়া হয় ফেডারেল সরকারের অর্থায়নে।
কংগ্রেসের উদ্দেশ্যে লেখা চিঠিতে অর্থমন্ত্রী জানেত ইয়েলেন জানিয়েছেন, আগের বিভিন্ন অভিজ্ঞতা থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা অনুযায়ী ঋণ সীমা বাড়ানোর বিষয়টির জন্য শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করা ঝুঁকিপূর্ণ, অপেক্ষা করলে বিষয়টি ব্যবসা ও সাধারণ মানুষের বিশ্বাসের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। ফলে এর আগেই এটির সমাধান করতে হবে।
তবে তিনি আবার জানিয়েছেন, ঠিক কখন মার্কিন সরকার অর্থ সংকটে পড়বে এটি নিশ্চিত করে তারা বলতে পারছেন না।
সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয় ঋণের পরিমাণ জুনের মধ্যে ৭২৬ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত বৃদ্ধি করতে চাইছে। প্রাথমিক অবস্থায় যে ধারণা করা হয়েছিল এটি তার চেয়ে ৪৪৯ বিলিয়ন ডলার বেশি।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রত্যাশার চেয়ে কম ট্যাক্স পাওয়া, সরকারের উচ্চ ব্যয় এবং কোয়ার্টার ক্যাশ ব্যালেন্স শুরুর কারণে এ ধরনের পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
উত্তর আমেরিকা
গাজার পরিস্থিতি নিয়ে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীকে চাপ দিলেন কামলা হ্যারিস
গাজার মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে চাপ প্রয়োগ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কামলা হ্যারিস।
যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ( ২৫ জুলাই) হোয়াইট হাউজে নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ বিষয়ে নেতানিয়াহুকে চাপ প্রয়োগ করেন। এর মধ্য দিয়ে কামলা প্রেসিডেন্ট হলে ইসরাইল ইস্যুতে কিভাবে যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে পরিবর্তন আনবেন তা স্পষ্ট হয়। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।
বৈঠকের পর সাংবাদিকদের কামলা বলেন, ‘ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকার আছে। কিন্তু সেটি কীভাবে করা হচ্ছে তা গুরুত্বপূর্ণ।’
তিনি বলেন, ‘আমি গাজায় ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতি সম্পর্কে আমার উৎকণ্ঠা জানিয়েছে। আমি চুপ করে থাকব না।’
হ্যারিসের এই তীক্ষ্ণ ও জোরালো মন্তব্যের মধ্য দিয়ে তিনি কিভাবে নেতানিয়াহুকে মোকাবেলা করছেন সে বিষয়ে বাইডেনের সঙ্গে তার পার্থক্য পরিষ্কার হয়ে উঠেছে।
এর কয়েক ঘন্টা আগে, প্রেসিডেন্ট বাইডেন নেতানিয়াহুর সঙ্গে হোয়াইট হাউজে বৈঠক করেন। গেলো ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর বাইডেনের ইসরাইলে সফর শেষে এটিই নেতানিয়াহুর সঙ্গে তার প্রথম মুখোমুখি আলোচনা। এই আলোচনায় গাজায় ৯ মাস ধরে চলা সংঘাতে একটি যুদ্ধবিরতির জন্য নেতানিয়াহুকে চাপ দেন বাইডেন।
এদিকে হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, যুদ্ধবিরতির বিষয়ে এখনও ইসরাইল এবং হামাসের মধ্যে ব্যবধান রয়ে গেছে তবে আমরা আগের চেয়ে এখন চুক্তির কাছাকাছি আছি। যা আগে কখনও ছিলাম না।
নেতানিয়াহুর এই সফর এমন সময় হলো যখন মার্কিন রাজনীতিতে পরিবর্তন এসেছে। রোববার ( ২১ জুলাই) ৮১ বছরের বাইডেন ডেমোক্র্যাটদের চাপে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন এবং দলের ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট মনোনয়নের জন্য হ্যারিসকে সমর্থন করেন।
জেএইচ
উত্তর আমেরিকা
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দৌঁড়ে ‘শেষ পর্যন্ত’ থাকছেন বাইডেন
২০২৪ সালের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের লড়াইয়ে জো বাইডেন সরে যাচ্ছেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নির্বাচনী দৌঁড় থেকে কেউ তাকে বাইরে ঠেলে দিচ্ছে না। তিনি দলের মনোনীত প্রেসিডেন্ট প্রার্থী। সব চাপ উপেক্ষা করে লড়াইয়ে ‘শেষ পর্যন্ত’ থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আমেরিকার এই প্রেসিডেন্ট।
স্থানীয় সময় বুধবার (৩ জুলাই) ডেমোক্রেটিক দলের নির্বাচনী প্রচারাভিযানে থাকা কিছু কর্তা ব্যক্তির সঙ্গে এক ফোনালাপে তিনি এ কথা বলেন।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি দেয়া প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
জো বাইডেন গেলো সপ্তাহে তার দুর্বল বিতর্কের জন্য ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন। নির্বাচনী দৌঁড় থেকে সরে যেতে তার ওপর চাপ কার্যত বেড়েই চলেছে। এমনকি নিজের দল ডেমোক্রেটিক পার্টির ভেতর থেকেও চাপের মুখে পড়েছেন তিনি। এমন পরিস্থিতিতেই বাইডেনের এই ফোনকল।
বিবিসির প্রতিবেদন বলছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বুধবার তার প্রচারণা কর্মীদের সঙ্গে ফোন কলে কথা বলেন এবং ডেমোক্র্যাটিক আইন প্রণেতা ও গভর্নরদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এসময় আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়াইয়ে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
আসন্ন এই নির্বাচনকে সামনে রেখে গেলো বৃহস্পতিবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের আটলান্টায় সিএনএনের স্টুডিওতে ট্রাম্প ও বাইডেনের মধ্যে বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়।
বিতর্কে পররাষ্ট্রনীতি, অর্থনীতি, সীমান্ত ইস্যু, সামাজিক নিরাপত্তা, চাইল্ড কেয়ার, কংগ্রেস ভবনে হামলার ঘটনা এবং গর্ভপাতসহ বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলেন জো বাইডেন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই বিতর্কে বাইডেনের পারফরম্যান্স ছিল অত্যন্ত দুর্বল। অনেকেই বলছেন, ৮০ বছরের বেশি বয়সী বাইডেনের এবার আর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা উচিত নয়। কারণ, তিনি ঠিকমতো কথা বলতে পারছেন না। বিতর্কের সময় প্রতিপক্ষের কথার জবাবও দিতে পারছেন না।
নির্বাচনী প্রচারণার শুরু থেকেই বাইডেনের বয়স এবং কর্মক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সাবেক এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট।
এমন অবস্থায় বুধবার প্রচারণা কর্মীদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটিক আইন প্রণেতা ও গভর্নরদের সঙ্গে বৈঠক করেন বাইডেন। এর মাধ্যমে তিনি মূলত গেলো সপ্তাহের বিতর্কে নড়বড়ে পারফরম্যান্সের পরে তাকে নির্বাচনী লড়াই বাদ দেয়ার আহ্বানগুলো ঝেড়ে ফেলেন।
তবে ডেমোক্রেটিক পার্টির অনেকেই মনে করছেন, দলের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে জো বাইডেনের আগামী নভেম্বরের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা উচিত হবে না।
টিআর/
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন