আন্তর্জাতিক
দাবানল মোকাবিলায় সামরিক সহায়তা চাইল কানাডার আলবার্টা
দাবানল ছড়িয়ে পড়ার কারণে আগেই জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিল কানাডার আলবার্টা প্রদেশ। তবে দাবানল কেবলই বাড়ছে এবং বিভিন্ন স্থানে সেটি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এই পরিস্থিতিতে দাবানল মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে সামরিক সহায়তার অনুরোধ জানিয়েছে প্রদেশটি। দিন দু’য়েক আগে দুর্যোগময় এ পরিস্থিতিকে ‘অভূতপূর্ব’ বলেও অভিহিত করেছিল কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার (৯ মে) আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা বিবিসি’র এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘অভূতপূর্ব’ দাবানলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কানাডার ফেডারেল সরকারের কাছে সামরিক সহায়তার অনুরোধ করেছে আলবার্টা প্রদেশ। স্থানীয় সময় সোমবার (৮ মে) বিকেল পর্যন্ত আলবার্টা প্রদেশজুড়ে ৯৪টি দাবানল জ্বলছে। আর এর মধ্যে ২৭টি নিয়ন্ত্রণের বাইরে রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
বিবিসি বলছে, দাবানল ভয়াবহ আকার ধারণ করায় ২৯ হাজারেরও বেশি মানুষকে তাদের বাড়িঘর ছেড়ে যেতে বলা হয়েছে। এর আগে দাবানলের কারণে প্রদেশটি গত সপ্তাহান্তে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে।
সোমবার আলবার্টার প্রাদেশিক সরকারের প্রধান ড্যানিয়েল স্মিথ বলেছেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সাথে কথা বলেছেন এবং ফেডারেল সরকারের কাছ থেকে সামরিক সহায়তাসহ দাবানল মোকাবিলায় অতিরিক্ত সাহায্য দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
ড্যানিয়েল স্মিথ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘সহায়তা করার জন্য প্রয়োজনে সেনাবাহিনীকে পাঠানো হবে বলে নিশ্চিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো।’
তিনি আরও বলেন, বিদ্যমান এ পরিস্থিতি প্রদেশের জন্য বেশ ‘চ্যালেঞ্জিং সময়’ বয়ে এনেছে কারণ অগ্নিনির্বাপক কর্মীরা আগুনের বিরুদ্ধে লড়াই করছে এবং একইসঙ্গে হুমকির মুখে থাকা বাসিন্দা ও হাসপাতালের রোগীদের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
ড্যানিয়েল স্মিথের ভাষায়, ‘নিজেদের সবকিছু ছেড়ে হাজার হাজার লোক তাদের বাড়িঘর এবং কর্মস্থল থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়েছেন। পেছনে ফেলে আসা সব কিছু তারা হারিয়ে ফেলবেন কিনা সেটাই তারা চিন্তা করছেন।’
আলবার্টার প্রাদেশিক সরকারের এই প্রিমিয়ার বলেছেন, যেসব প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিক সাত দিনের বেশি সময় ধরে তাদের বাড়িঘর ছেড়ে দূরে থাকতে বাধ্য হয়েছে তাদেরকে জরুরি আর্থিক সহায়তা হিসেবে ১ হাজার ২৫০ কানাডিয়ান ডলার প্রদান করবে প্রদেশিক কর্তৃপক্ষ।
বিবিসি বলছে, কুইবেক এবং অন্টারিওসহ অন্যান্য প্রদেশের অগ্নিনির্বাপক কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করার জন্য আলবার্টাতে গেছেন। দাবানল এই প্রদেশের পশ্চিম এবং উত্তর অংশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। এছাড়া রকি মাউন্টেইন ফুটহিলস বরাবর বেশ কয়েকটি এলাকাকেও গ্রাস করছে দাবানল।
দাবানলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলোর মধ্যে রয়েছে ড্রেটন ভ্যালি ও ফক্স লেক। প্রাদেশিক রাজধানী এডমন্টন থেকে প্রায় ১৪০ কিলোমিটার (৮৭ মাইল) পশ্চিমে ড্রেটন ভ্যালি এবং রাজধানী শহরের প্রায় ৫৫০ কিলোমিটার উত্তরে ফক্স লেক অবস্থিত। সেখানে ২০টি বাড়ি আগুনে পুড়ে গেছে।
আলবার্টা কানাডার একটি প্রধান তেল উৎপাদনকারী অঞ্চল। কিন্তু দাবানল ছড়িয়ে পড়ার পর প্রাথমিকভাবে সেখানে এসব অবকাঠামো ক্ষয়ক্ষতির মুখে না পড়লেও পরে আগুনের কারণে কিছু তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস কূপ এবং পাইপলাইন সিস্টেম বন্ধ হয়ে গেছে।
এতে করে কানাডার গ্যাস রপ্তানিও অনেকটা কমে গেছে। গত রোববার যুক্তরাষ্ট্রে কানাডিয়ান প্রাকৃতিক গ্যাস রপ্তানি ৬.৭ বিলিয়ন ঘনফুটে নেমে এসেছে। যা ২০২১ সালের এপ্রিল মাসের পর থেকে সর্বনিম্ন।
এছাড়া আলবার্টার পার্শ্ববর্তী প্রদেশ ব্রিটিশ কলাম্বিয়া এবং সাসকাচোয়ানের কিছু বাসিন্দাকেও তাদের বাড়িঘর থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। কারণ এসব প্রদেশও তাদের নিজস্ব দাবানল মোকাবিলায় লড়াই করছে।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
আন্তর্জাতিক
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে হবে: যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়নের ব্যাপারটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেনো গণতন্ত্র, আইন ও বাংলাদেশি জনগণের আকাঙ্খা পূরণ করে-এমনটাই চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় বুধবার (৭ আগস্ট) ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে এমনটাই আশা করে বলে জানিয়েছেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। এদিন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ইরাকের এক সাংবাদিক জানতে চান, ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে তার বা অন্যদের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ হয়েছি কী? বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা পরিস্থিতিকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?’
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমরা এখনও যোগাযোগ করেনি। আমরা বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়ন পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখছি এবং আমরা এরইমধ্যে দেখেছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি তার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আপনি নিশ্চয়ই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে শুনেছেন যে. অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে তা যেনো গণতান্ত্রিক নীতিমালাকে, আইনের শাসন এবং সিদ্ধান্তে বাংলাদেশি জনগণের ইচ্ছা প্রতিফলিত হয়।
এসময় যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী একটি প্রশ্ন করেন। তার প্রশ্নটি ছিল, আপনি কি জানেন যে স্বৈরশাসক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করে নতুন সরকারকে হুমকি দিচ্ছেন, সহিংসতা উসকে দিচ্ছেন? তিনি সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন যিনি বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিলেন। দয়াকরে তার ব্যাপারে আপনার মন্তব্য জানাবেন কী?’
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘একজন সাধারণ নাগরিকের বিবৃতি নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমি এরইমধ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথা বলেছি এবং আমরা দেখতে চাই এই সরকার কী পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যায়।
এসময় মুশফিকুল ফজল আনসারী আরও জানতে চান, ‘দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রত্যাশা নিয়ে আপনার কী মন্তব্য?
জবাবে ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের মুখপাত্র বলেন, শনের প্রশ্নের উত্তরে আমি যেমনটি বলেছি – অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা দেখতে চাই ওই সিদ্ধান্তে যেনো গণতান্ত্রিক নীতি মেনে চলা হয় এবং জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ওই ব্রিফিংয়ে ফিলিস্তিনের গাজা, দক্ষিণ আমেরিকার ভেনিজুয়েলা, ইরাক ও ইরানের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
এমআর//
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন