খুলনা
রিকশাচালককে মারধর করা সেই আইনজীবীকে শোকজ
যশোরে রিকশাচালককে প্রকাশ্যে মারধরের ঘটনায় সেই নারী আইনজীবীকে শোকজ করেছে যশোর জেলা আইনজীবী সমিতি।
মঙ্গলবার (৯ মে) সকালে আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু মোর্তজা স্বাক্ষরিত নোটিশ আইনজীবী আরতি রানির বাড়িতে পাঠানো হয়। গেলো রোববার (৭ মে) দুপুরে যশোর আদালতের সামনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সড়কে এক রিকশাচালককে মারধরের অভিযোগ ওঠে আইনজীবী আরতি রানী ঘোষের বিরুদ্ধে।
ওই ঘটনার ভিডিও সোমবার (৮ মে) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়।
এ বিষয়ে আবু মোর্তজা গণমাধ্যমকে বলেন, আইনজীবীদের প্রতীক কালো গাউন পরা অবস্থায় রিকশাচালককে প্রকাশ্যে মারধরের ঘটনায় আইনজীবীদের জন্য মর্যাদাহানিকর। এ বিষয়ে বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য আরতি রানি ঘোষকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়েছে। ওই নোটিশে আগামী তিন দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
অভিযুক্ত আইনজীবীর নাম আরতি রানি ঘোষ শহরের আম্বিকা বসু লেনের মৃত নীলরতন ঘোষের স্ত্রী। আর ভুক্তভোগী রিকসাচালক সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের আব্দুলপুর সিজালি গ্রামের সাইফুল ইসলাম।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ৬ মিনিট ৩৯ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা গেছে, কালো গাউন পরা ৫০ বছর বয়সী এক নারী আইনজীবী রিকশাচালকের শার্টের কলার ধরে রিকশা থেকে নামিয়ে একের পর এক চড় মারছেন। মারতে মারতে তাকে রিকশার চাবি নিয়ে পৌরসভায় যেতে বলেন। জামার কলার ধরে বারবার রিকশাচালককে পৌরসভায় নিয়ে লাইসেন্স বাতিল করার হুমকিও দেন।
ভিডিওতে আরও দেখা যায়, মারধরের সময় রিকশাচালক হাত উচু করে মাফ চান। আকুতি-মিনতি করলেও ওই আইনজীবী তাকে ছাড়েননি, এলোপাতাড়ি চড় মারতে থাকেন। এ সময় পথচারীরা আইনজীবীকে থামানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। ভিডিওতে অপর এক পথচারীর মুখে শোনা যায়, অভিযুক্ত আইনজীবী রিকশাচালককে জুতা পেটাও করেছেন। তারা এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে আইনজীবী রিকশাচালককে চড়-থাপ্পড় মেরেই যাচ্ছিলেন। একপর্যায়ে এক নারী এগিয়ে এসে প্রতিবাদ করলে শান্ত হন তিনি। এ সময় ওই রিকশাচালক তার রিকশা নিয়ে চলে যান।
ঘটনার দিন তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, তিনি কোর্ট শেষে ফেরার পথে সড়ক পার হতে গেলে ওই রিকশাচালক তাকে ধাক্কা দেন। এতে তিনি পড়ে গিয়ে আহত হন। এ কারণে তাকে (রিকশাচালক) মারধর করেন। উত্তেজিত হয়ে মারধর করে ফেলেছেন বলে সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেছেন তিনি।
এমন আচরণ করা ঠিক হয়েছে কিনা এ প্রশ্নে আরতি রানি বলেন, ‘ওকে কি পুজো করব?’ রিকশাচালককে মেরে তিনি সঠিক কাজ করেছেন বলেও জানান।
খুলনা
কুষ্টিয়া কারাগার থেকে পালাল অর্ধশতাধিক আসামি
কুষ্টিয়া জেলা কারাগার থেকে অন্তত অর্ধশতাধিক আসামি পালিয়েছে গেছেন বলে জানা গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শতাধিক রাউন্ড গুলি ছোড়েন কারারক্ষীরা। এ ঘটনায় অন্তত ১৫ জন কারারক্ষী আহত হয়েছেন।
বুধবার (৭ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে এই ঘটনার পর সেনাসদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন।
তবে জেলা প্রশাসক এহেতেশাম রেজা গণমাধ্যমে বলছেন, ১২-১৩ জনের মতো আসামি পালিয়েছেন। পলাতকদের তালিকা করার পর বিস্তারিত জানানো যাবে।
কারা সূত্রে জানা গেছে, কুষ্টিয়া বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী জামিন পান। দুপুর আড়াইটার দিকে বের হওয়ার কথা ছিল। তাদের সঙ্গে বের হতে হট্টগোল শুরু করেন কারাবন্দীরা। এ সময় কারারক্ষীরাও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গুলি চালান। তবে এর আগেই অর্ধশত আসামি পালিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কুষ্টিয়া কারাগারের জেলার আবু মুসা গণমাধ্যমে জানান, কারাগার থেকে ঠিক কত জন কয়েদি পালিয়ে গেছে তা সঠিক হিসাব জানা যায়নি।
এএম/
খুলনা
মাগুরায় ছাত্রদল নেতা নিহত, আহত ১০
কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিনে মাগুরা শহরের ঢাকা রোড়ে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় জেলা শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক মেহেদী হাসান রাব্বী নিহত হয়েছেন। এছাড়াও আহত হয়েছেন পুলিশের তিন সদস্যসহ ১০ জন।
রোববার সকাল ১১টার দিকে এ সংঘর্ষে ঘটে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সকাল ১১টার দিকে পারনান্দুয়ালী এলাকা থেকে বিএনপি একটি মিছিল নিয়ে শহরে ঢুকতে গেলে পুলিশি বাধার সম্মুখিন হয়। ঘটনাস্থলে বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর ইট পাটকেট নিক্ষেপ করে। এ সময় পুলিশ তাদের ধাওয়া করে রাবার বুলেট নিক্ষেপ ও গুলি করলে জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক মেহেদেী হাসান রাব্বী নিহত হন।
জেলা শাখা ছাত্রদলের সভাপতি আব্দুর রহিম গণমাধ্যমকে জানান, ‘রাব্বি পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে। তার বুকে গুলি লেগেছে।’
মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আমর প্রশাদ বিশ্বাস জানান, আহত তিন পুলিশ সদস্যসহ ১০ জনকে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জেডএস/
খুলনা
কনস্টেবল সুমন হত্যায় মামলা, অজ্ঞাত পরিচয়ে আসামি ১২০০
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় খুলনায় পুলিশ কনস্টেবল সুমন ঘরামী হত্যার ঘটনায় অজ্ঞাত পরিচয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
লবণচরা থানার এসআই মোস্তফা সাকলাইন বাদী হয়ে শুক্রবার (২ আগস্ট) রাতে লবণচরা থানায় মামলাটি করেন। মামলায় অজ্ঞাত পরিচয় ১ হাজার ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলায় এখনও কেউ গ্রেপ্তার নেই বলে জানান লবণচরা থানার ওসি মমতাজুল হক।
এছাড়া কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে শুক্রবার বিকেলে ভাঙচুর ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে খুলনা সদর ও সোনাডাঙ্গা থানায় আলাদা দুটি মামলা হয়েছে।
নিহত সুমন ঘরামীর বাড়ি বাগেরহাট জেলার কচুয়া উপজেলায়। স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন নগরীর বয়রা এলাকায়। তিনি খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সোনাডাঙ্গা জোনের সহকারী কমিশনার সৌমেন বিশ্বাসের দেহরক্ষী ছিলেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় খুলনার মোহাম্মদনগর এলাকায় পিটুনিতে নিহত হন তিনি। সমুনের স্ত্রী মিতু বিশ্বাস। তাদের ৬ বছর বয়সি স্নিগ্ধা নামে এক মেয়ে রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের উদ্ধৃত্তি দিয় পুলিশ জানায়, বিকেলে খুলনায় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত এ সংঘর্ষ চলে। সন্ধ্যার পরে আবার সোনাডাঙ্গা এলাকায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন দেয় বিক্ষোভকারীরা।
সংঘর্ষের এ ঘটনায় পুলিশ কনস্টেবল সুমন গুরুতর আহত হন। পরে রাতে খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। জানা গেছে, এ ঘটনায় আহত হয়েছেন পুলিশের আরও ৩০ সদস্য।
এসি//
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন