আন্তর্জাতিক
পাকিস্তানের ক্ষমতা দখলের পরিকল্পনা নেই সেনাবাহিনীর: আইএসপিআর
যে রাজনৈতিক সংকটের ঘূর্ণাবর্তে বর্তমানে ঘুরপাক খাচ্ছে পাকিস্তান, তা থেকে দেশটিকে ‘উদ্ধার করতে’ সরাসরি ক্ষমতা গ্রহণের কোনো ইচ্ছে বা পরিকল্পনা সেনাবাহিনীর নেই। বললেন সামরিক বাহিনীর জনসংযোগ বিভাগের (ইন্টার-সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশন- আইএসপিআর) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী।
শুক্রবার (১২ মে) মেজর জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী জিও নিউজের সাংবাদিক শাজেব খানজাদাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব জানান।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর এই শীর্ষ মুখপাত্র বলেন, ‘আমি একদম স্পষ্টভাবে বলতে চাই— জেনারেল আসিম মুনির (পাকিস্তানের সেনাপ্রধান) এবং সামরিক বাহিনীর অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা সম্পূর্ণভাবে গণতন্ত্রের ওপর আস্থাশীল এবং গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থাকে সর্বান্তকরণে সমর্থন করেন। সুতরাং সেনা বাহিনীর ক্ষমতা গ্রহণের কোনো প্রশ্নই উঠতে পারে না। এসব একেবারেই অবান্তর কথাবার্তা।’
বর্তমানে যে ভয়াবহ রাজনৈতিক সংকটে পড়েছে পাকিস্তান, তার সূত্রপাত ২০২১ সালের ১০ এপ্রিল থেকে। ওই দিনই পার্লামেন্টের বিরোধী দলীয় আইনপ্রণেতাদের অনাস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে চ্যুত হন সফল ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিবিদ বনে যাওয়া ইমরান খান, যিনি ২০১৮ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে সামরিক বাহিনীর আশীর্বাদ নিয়েই দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন।। ক্ষমতা হারানোর পরপরই আগাম নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন ইমরান।
অন্যদিকে, ইমরান খান ও তার রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) আন্দোলন প্রতিহত করতে ইমরান খান ও পিটিআইয়ের কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দায়ের করতে থাকে পাকিস্তানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএলএন) শীর্ষ নেতা শেহবাজ শরীফের নেতৃত্বাধীন সরকার।
গেলো ২ বছরে পিটিআই ও সরকারের মধ্যকার বৈরিতা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে বর্তমানে দেশটির অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে প্রায় অচলাবস্থা শুরু হয়েছে। এই অবস্থাকে আরও ঘনীভূত করে তুলেছে পাকিস্তানে চলমান তীব্র অর্থনৈতিক সংকট।
এদিকে গেলো মঙ্গলবার (৯ মে) ইসলামাবাদ হাইকোর্টে মামলার শুনানিতে হাজিরা দিতে গিয়ে গ্রেপ্তার হন পিটিআইয়ের চেয়ারম্যান ইমরান খান। এই ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়া পিটিআইয়ের কর্মী-সমর্থকরা দেশজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ-ভাঙচুর করেন এবং সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি পাকিস্তানের ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো সেনা সদরদপ্তরসহ বিভিন্ন সেনাদপ্তর ও সেনানিবাসে হামলা চালান।
পরিস্থিতি এমন গুরুতর জায়গায় পৌঁছায় যে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বুধবার রাজধানী ইসলামাবাদসহ দেশজুড়ে সেনা নামাতে বাধ্য হয় পাকিস্তানের সরকার।
এদিকে সেনা নামার পর গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে— সেনাবাহিনীর উচ্চ ও মধ্যম পর্যায়ের বেশ কিছু কর্মকর্তা চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে পিটিআইয়ে যোগ দিচ্ছেন।
শুক্রবার সাক্ষাৎকারে এই গুঞ্জনও উড়িয়ে দিয়েছেন মেজর জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরি। এ প্রসঙ্গে জিওটিভিকে পাকিস্তান আইএসপিআরের মহাপরিচালক বলেন, ‘আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই, অভ্যন্তরীণ দুষ্কৃতিকারী ও বাইরের শত্রুদের হাজারো অপচেষ্টা সত্ত্বেও চিফ অব আর্মি স্টাফ আসিম মুনিরের নেতৃত্ব সেনাবাহিনীর সব কর্মকর্তা ও সেনাসদস্য ঐক্যবদ্ধ আছে।’
‘শত্রুরা সবসময়ই সেনাবাহিনীকে বিভক্ত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। কিন্তু তাদের এই স্বপ্ন সপ্নই থেকে যাবে। কর্মকর্তা ও সেনাসদস্যদের মধ্যে কেউ এখন পর্যন্ত পদত্যাগ করেননি, শৃঙ্খলাবিরোধী কোনো কাজও করেননি।’
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
আন্তর্জাতিক
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে হবে: যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়নের ব্যাপারটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেনো গণতন্ত্র, আইন ও বাংলাদেশি জনগণের আকাঙ্খা পূরণ করে-এমনটাই চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় বুধবার (৭ আগস্ট) ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে এমনটাই আশা করে বলে জানিয়েছেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। এদিন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ইরাকের এক সাংবাদিক জানতে চান, ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে তার বা অন্যদের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ হয়েছি কী? বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা পরিস্থিতিকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?’
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমরা এখনও যোগাযোগ করেনি। আমরা বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়ন পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখছি এবং আমরা এরইমধ্যে দেখেছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি তার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আপনি নিশ্চয়ই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে শুনেছেন যে. অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে তা যেনো গণতান্ত্রিক নীতিমালাকে, আইনের শাসন এবং সিদ্ধান্তে বাংলাদেশি জনগণের ইচ্ছা প্রতিফলিত হয়।
এসময় যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী একটি প্রশ্ন করেন। তার প্রশ্নটি ছিল, আপনি কি জানেন যে স্বৈরশাসক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করে নতুন সরকারকে হুমকি দিচ্ছেন, সহিংসতা উসকে দিচ্ছেন? তিনি সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন যিনি বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিলেন। দয়াকরে তার ব্যাপারে আপনার মন্তব্য জানাবেন কী?’
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘একজন সাধারণ নাগরিকের বিবৃতি নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমি এরইমধ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথা বলেছি এবং আমরা দেখতে চাই এই সরকার কী পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যায়।
এসময় মুশফিকুল ফজল আনসারী আরও জানতে চান, ‘দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রত্যাশা নিয়ে আপনার কী মন্তব্য?
জবাবে ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের মুখপাত্র বলেন, শনের প্রশ্নের উত্তরে আমি যেমনটি বলেছি – অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা দেখতে চাই ওই সিদ্ধান্তে যেনো গণতান্ত্রিক নীতি মেনে চলা হয় এবং জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ওই ব্রিফিংয়ে ফিলিস্তিনের গাজা, দক্ষিণ আমেরিকার ভেনিজুয়েলা, ইরাক ও ইরানের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
এমআর//
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন