আন্তর্জাতিক
প্রথমবারের মতো মহাকাশে যাচ্ছেন সৌদি নারী নভোচারী
আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের (আইএসএস) উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা থেকে রোববার (২১ মে) রওনা দিচ্ছে একটি মিশন। যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি মহাকাশ সংস্থা অ্যাক্সিওম স্পেস আয়োজিত এ মিশনে থাকছেন সৌদি আরবের দুই নভোচারী। সৌদির নভোচারীরা এই প্রথম কক্ষপথ পরীক্ষাগারে যাবেন।
সৌদির এই দুই মহাকাশচারীর একজন রায়ানাহ বারনাভি। তিনি একজন স্তন ক্যানসার গবেষক। তিনি হতে যাচ্ছেন মহাকাশ ভ্রমণে যাওয়া সৌদির প্রথম কোনো নারী।
যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের কেপ ক্যানাভেরালের কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে স্থানীয় সময় আজ রোববার বিকেল ৫টা ৩৭ মিনিটে সৌদির এই দুই নভোচারীসহ চার সদস্যের মিশনটির যাত্রা শুরু হবে।
বারনাভির সঙ্গে এই মিশনে সৌদির অপর যে নভোচারী থাকছেন, তার নাম আলী আল-কারনি। তিনি পেশায় যুদ্ধবিমানের পাইলট। ১০ দিনের এ মহাকাশ মিশনে তাদের সঙ্গে থাকবেন নভোচারী পেগি উইটসন ও ধনকুবের পাইলট জন শফনার। পেগি মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসার একজন সাবেক মহাকাশচারী। তিনি চতুর্থবারের মতো আইএসএসে যাচ্ছেন। শফনার পেশায় ব্যবসায়ী। যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসি অঙ্গরাজ্যের এই ব্যক্তি মিশনটিতে পাইলট হিসেবে কাজ করবেন।
বারনাভি সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, সৌদিসহ এ অঞ্চলের প্রথম নারী নভোচারী হতে পারাটা তাঁর জন্য একটা বড় আনন্দ ও সম্মানের বিষয়। এই মিশনের অংশ হতে পেরে তিনি খুবই খুশি।
বারনাভি আরও বলেছিলেন, আইএসএসে থাকাকালে গবেষণা তো বটেই, ফিরে এসে শিশুদের সঙ্গে এই অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে তিনি অধীর হয়ে অপেক্ষা করছেন।
মিশনে সৌদির দ্বিতীয় নভোচারী আল-কারনি একজন পেশাদার যুদ্ধবিমানের পাইলট। তিনি বলেছিলেন, সব সময় অজানা বিষয় অনুসন্ধান, আকাশ-তারার রহস্য জানার ব্যাপারে তাঁর মধ্যে একটা প্রবল আগ্রহ কাজ করে এসেছে। এই আগ্রহ সরাসরি মেটাতে পারা তাঁর জন্য একটা বড় সুযোগ।
চার সদস্যের এই দল আইএসএসে থাকাকালে প্রায় ২০টি পরীক্ষা চালাবেন। এর একটি হলো, মহাকর্ষণ–শূন্য পরিস্থিতিতে স্টেম সেল কীভাবে কাজ করে, তা নিয়ে। তাঁরা আইএসএসে অবস্থান করা আরও সাতজনের সঙ্গে যোগ দেবেন।
উপসাগরীয় অঞ্চলের প্রথম দেশ হিসেবে ২০১৯ সালে মহাকাশ অভিযান শুরু করে সংযুক্ত আরব আমিরাত। ওই বছর দেশটির একজন নভোচারী মহাকাশে যান। দেশটির নভোচারী হাজ্জা আল-মানসৌরি আট দিন আইএসএসে অবস্থান করেন।
পরবর্তী সময়ে মহাকাশে যান আমিরাতের নভোচারী সুলতান আল-নিয়াদি। তিনি প্রথম আরব নভোচারী হিসেবে টানা ছয় মাস মহাকাশে অবস্থান করেন।
এর আগে ১৯৮৫ সালে সৌদি আরবের তখনকার যুবরাজ সুলতান বিন সালমান বিন আবদুল আজিজ প্রথম আরব মুসলিম হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের একটি অভিযানের অংশ হয়ে মহাকাশে ভ্রমণ করেছিলেন।
তিনি সৌদি বিমানবাহিনীর পাইলট ছিলেন। ২০১৮ সাল থেকে নতুন করে মহাকাশে নভোচারী পাঠানোর উদ্যোগ শুরু করে সৌদি আরব। যুবরাজ সালমানের ভিশন ২০৩০ এজেন্ডার অংশ এ মহাকাশ মিশন।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
আন্তর্জাতিক
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে হবে: যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়নের ব্যাপারটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেনো গণতন্ত্র, আইন ও বাংলাদেশি জনগণের আকাঙ্খা পূরণ করে-এমনটাই চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় বুধবার (৭ আগস্ট) ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে এমনটাই আশা করে বলে জানিয়েছেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। এদিন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ইরাকের এক সাংবাদিক জানতে চান, ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে তার বা অন্যদের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ হয়েছি কী? বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা পরিস্থিতিকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?’
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমরা এখনও যোগাযোগ করেনি। আমরা বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়ন পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখছি এবং আমরা এরইমধ্যে দেখেছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি তার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আপনি নিশ্চয়ই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে শুনেছেন যে. অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে তা যেনো গণতান্ত্রিক নীতিমালাকে, আইনের শাসন এবং সিদ্ধান্তে বাংলাদেশি জনগণের ইচ্ছা প্রতিফলিত হয়।
এসময় যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী একটি প্রশ্ন করেন। তার প্রশ্নটি ছিল, আপনি কি জানেন যে স্বৈরশাসক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করে নতুন সরকারকে হুমকি দিচ্ছেন, সহিংসতা উসকে দিচ্ছেন? তিনি সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন যিনি বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিলেন। দয়াকরে তার ব্যাপারে আপনার মন্তব্য জানাবেন কী?’
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘একজন সাধারণ নাগরিকের বিবৃতি নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমি এরইমধ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথা বলেছি এবং আমরা দেখতে চাই এই সরকার কী পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যায়।
এসময় মুশফিকুল ফজল আনসারী আরও জানতে চান, ‘দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রত্যাশা নিয়ে আপনার কী মন্তব্য?
জবাবে ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের মুখপাত্র বলেন, শনের প্রশ্নের উত্তরে আমি যেমনটি বলেছি – অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা দেখতে চাই ওই সিদ্ধান্তে যেনো গণতান্ত্রিক নীতি মেনে চলা হয় এবং জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ওই ব্রিফিংয়ে ফিলিস্তিনের গাজা, দক্ষিণ আমেরিকার ভেনিজুয়েলা, ইরাক ও ইরানের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
এমআর//
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন