বরিশাল
শিক্ষককে দাঁড়াতে বলেই চড়-থাপ্পড়
কাউন্সিলর প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাওয়ায় বরিশাল শের-ই-বাংলা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার (৩০ মে) রাত ৯টার দিকে নথুল্লাবাদ সংলগ্ন কাউনিয়া খালপাড় সড়কে এই ঘটনা ঘটে।
আহত শিক্ষকের দাবি, বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ২০নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী সাজ্জাদ সেরনিয়াবাতের পক্ষে কাজ করায় এই হামলা চালানো হয়েছে।
ভুক্তভোগী হারুন অর রশিদ বলেন, মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে নথুল্লাবাদ খালপাড় সড়ক থেকে বাসায় ফিরছিলাম। তখন আমি মোবাইলে কথা বলতেছি। পিছন থেকে তিনজন মাস্ক পরিহিত যুবক এসে ডাক দিলো, স্যার দাঁড়ান কথা আছে। আমি দাঁড়াতেই চড়-থাপ্পড়, কিল-ঘুষি ও লাথি মারতে লাগলো। এক পর্যায়ে তারা আমাকে তুলে খালে ফেলে দিতে চেষ্টা করে। পরবর্তীতে আমার চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনে আমি সাজ্জাদ সেরনিয়াবাতের পক্ষে ভোট চেয়েছি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বর্তমান কাউন্সিলর ও প্রার্থী জিয়াউর রহমান বিপ্লব হামলার কাজ করিয়েছেন। তার সঙ্গে আগে থেকেই ঝামেলা চলে আসছিল। তিনি বিনা কারণে আমাকে স্কুল থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন। তার ছাড়া আর কারো সঙ্গে আমার বিরোধ নেই। আমাকে মারধরের ঘটনা সেই ঘটিয়েছে।
এ বিষয়ে ঘুড়ি প্রতীকের কাউন্সিলর প্রার্থী ওবায়দুল হক ওরফে সাজ্জাদ সেরনিয়াবাত বলেন, হারুন অর রশিদ স্যার আমার পক্ষে নির্বাচনে মানুষের কাছে ভোট চেয়েছেন। এজন্য তার উপরে হামলা হয়েছে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ঠেলাগাড়ি প্রতিকের কাউন্সিলর প্রার্থী জিয়াউর রহমান বিপ্লব। তিনি বলেন, এমন কোনো ঘটনার সঙ্গে আমি জড়িত নই। ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর অনেক অভিযোগ রয়েছে। আমি বর্তমান কাউন্সিলর। বিগত পাঁচ বছর মানুষকে সেবা দিয়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছি। তাকে কেন হামলা করাতে যাবো? মূলত আমাকে হেয় করতে পরিকল্পিতভাবে এসব অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
জিয়াউর রহমান দাবি করেন, সাবেক ওই শিক্ষক মদ পান করেন। এমনও হতে পারে মদ খেয়ে খালে পড়ে গিয়ে দাবি করছেন তাকে মারধর করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন এয়ারপোর্ট থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) লোকমান হোসেন বলেন, এখন পর্যন্ত এমন কোনো ঘটনার অভিযোগ কেউ থানায় দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বরিশাল
ববিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের মিটিংয়ে ছাত্রলীগের হামলা
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) মধ্যে কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী শিক্ষার্থীদের মিটিংয়ে হামলা চালায় ছাত্রলীগ। এই ঘটনায় কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়।
সোমবার (২৯ জুলাই) দুপুরে ববির গ্রাউন্ড ফ্লোরে এ ঘটনা ঘটে। এরপর শিক্ষার্থীরা গেট থেকে বের হওয়ার সময় দ্বিতীয় দফায় আবার হামলা চালায় ছাত্রলীগ। আহতদের মধ্যে আন্দোলনের সমন্বয়ক সুজয় শুভসহ ১০ আহত শিক্ষার্থীকে বরিশাল শের ই বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের ববি সমন্বয়ক সুজয় শুভ বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে আমাদের পরবর্তী কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণে ২০ শিক্ষার্থী ববির গ্রাউন্ড ফ্লোরে মিটিং করছিলাম। এসময় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ নেতা একে আরাফাতের নেতৃত্বে ২০-৩০ ছাত্রলীগ নেতাকর্মী লাঠি, রড ও পাইপ নিয়ে হামলা চালায়। এসময় ছাত্রলীগের মাহমুদুল হাসান তমাল, আল সামাদ শান্ত, খালেদ হাসান, শাহরিয়ার সান, সাব্বির, জাইফ, সাইফ, শরিফুল ইসলাম, রাকিবুল ইসলামকে আমরা সনাক্ত করতে পেরেছি। হামলার পর ক্যাম্পাস থেকে চলে যাওয়ার সময় দ্বিতীয় দফায় হামলা চালানো হয়। এতে কমপক্ষে ১৫ শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। আমাদের মিটিংকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই পুলিশ, বিজিবি ও র্যাব ক্যাম্পাসের সামনে অবস্থান নেয়। তাদের সামনেই আমাদের বেধরক মারধর করে ছাত্রলীগ।
বরিশাল নগর পুলিশের বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রহমান মুকুল বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের মিটিং শেষ দিকে ছিলো। তখন কোটা সংস্কার নিয়ে সরকারের প্রজ্ঞাপনকে সমর্থন জানানো কিছু শিক্ষার্থী গেট দিয়ে প্রবেশ করে। তখন কোটা সংস্কার আন্দোলনের শিক্ষার্থী ও অন্য এক গ্রুপের শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। তারা ছাত্রলীগ কিনা তা বলতে পারবো না, তবে তারাও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ নেতা অভিযুক্ত একে আরাফাতের মোবাইল নম্বরে কল দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
এদিকে রোববার কোটা সংস্কার আন্দোলনের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে গ্রাফিতি অংকন করতে গেলে হামলার উদ্দেশে জড়ো হয়েছিলো ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এমন অভিযোগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের।
কেএস/
দেশজুড়ে
বিপৎসীমার ওপরে বরিশালের ১০ নদীর পানি, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
বরিশাল বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ ১০টি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে বরিশাল নগরীসহ অন্যান্য জেলা ও উপজেলার নিম্নাঞ্চল জোয়ারের পানিতে দিনে দুইবার প্লাবিত হচ্ছে। তবে এ পরিস্থিতিকে বন্যা বলা যাবে না। এটি মৌসুমি পানি প্রবাহ বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) রাতে বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) জলানুসন্ধান বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী তাজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পাউবো জানায়, বরিশাল জেলার কীর্তনখোলা নদীর পানি বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার, ঝালকাঠিতে বিষখালী নদীতে ৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বরগুনা জেলার বেতাগী উপজেলা পয়েন্টে বিষখালী নদীর পানি ২৪ সেন্টিমিটার, ভোলা জেলার দৌলতখান উপজেলা পয়েন্টে মেঘনা নদী ৮৯ সেন্টিমিটার, তজুমদ্দিন উপজেলা পয়েন্টে মেঘনা ১ দশমিক ৭ সেন্টিমিটার, পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ উপজেলা পয়েন্টে পায়রা নদীর পানি ৮ সেন্টিমিটার, বরগুনা সদর উপজেলা পয়েন্টে বিষখালী নদীর পানি ২১ সেন্টিমিটার, পাথরঘাটা উপজেলা পয়েন্টে বিষখালী নদীর পানি ৭ সেন্টিমিটার, পিরোজপুর জেলার বলেশ্বর নদীর পানি ১৫ সেন্টিমিটার ও উমেদপুর পয়েন্টে কচা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার আন্ধারমানিক নদী তীরবর্তী বাসিন্দা আরশাদ আলী বলেন, মঙ্গলবার থেকেই নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। যারা বেড়িবাঁধের বাইরে থাকেন তাদের ঘরে পানি ঢুকে গেছে। এজন্য বাধের কূলে এক ঘরে তিনি আশ্রয় নিয়েছেন। পানি কমলে ঘরে ফিরবেন।
এদিকে নদীর পানির উচ্চতা বাড়ায় কেবল উপকূলীয় এলাকা নয়। জেলা শহরের ভিতরেও জোয়ারের পানি প্রবেশ করে মানুষের দূর্ভোগ বাড়িয়েছে।
আই/এ
বরিশাল
বরিশাল থেকে লঞ্চ ও বাস চলাচল শুরু
বরিশালে কারফিউ শিথিলের সময় বাড়ানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) সকাল ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত জেলা এবং মেট্রেপলিটন এলাকায় সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল করা হয়েছে। এ দিন বরিশাল নদী বন্দর থেকে সব রুটে লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে; সড়ক পথেও চলছে যাত্রীবাহী বাস।
বরিশাল নদী বন্দর কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, নির্দেশনা অনুযায়ী সীমিত পরিসরে বুধবার (২৪ জুলাই) বরিশালের অভ্যন্তরীণ রুটে ছোট লঞ্চ চলাচল করেছে। তবে সন্ধ্যা ৬ টার কারফিউ কঠোর থাকায় ঢাকা-বরিশাল রুটে লঞ্চ চলাচল করেনি।
নগরবাসী জানান, নগরে গণপরিবহন চলছে এবং ব্যাংক-বিমা-অফিস-আদালতের কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়েছে। কারফিউ শিথিল হওয়াতে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়াতে প্রয়োজনীয় কাজে আসা ব্যক্তিরা অনেকটা স্বস্তি পাচ্ছেন তারা। পরিস্থিতি এমনই থাকুক, আর কোনো অস্থির বা অস্থিতিশীল পরিবেশ চান না নগরবাসী।
উল্লেখ্য, কারফিউ শুরুর পর গেলো ২০ জুলাই থেকে বরিশাল নদী বন্দর থেকে সব রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ ছিল।
জেডএস//
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন