ছাত্র-শিক্ষক
বিবাহিত হওয়া কি অপরাধ?
বিবাহিত ছাত্রীদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে থাকা নিয়ে যে বিধি-নিষেধ এবং প্রচলিত যে নিয়ম আছে তা বাতিলের দাবি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়েন পাঁচ হলের ছাত্রীরা।
শুক্রবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রীরা চারটি দাবি তুলে ধরেন। সেই সঙ্গে ছাত্রীরা প্রশ্ন তুলেছেন, বিবাহিত হওয়া অপরাধ কি না।
সংবাদ সম্মেলনে পাঁচটি হলের ছাত্রীদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন শামসুন নাহার হল সংসদের সাবেক সহ-সভাপতি শেখ তাসনিম আফরোজ ইমি। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল সংসদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিশমা, সুফিয়া কামাল হল সংসদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শারমিন, সুফিয়া কামাল হল সংসদের সাবেক পাঠকক্ষ সম্পাদক অর্পিতা প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে ইমি বলেন, বিবাহিত হওয়া কি অপরাধ? বিবাহিত স্ট্যাটাসের সঙ্গে হলে থাকার সম্পর্ক বা থাকতে না দেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা বা কারণ আমাদের কাছে নেই। একজন ছাত্রী বিবাহিত না অবিবাহিত, তা দেখে হলে সিট কেন বরাদ্দ হবে, যেখানে তিনি মেধা অনুযায়ী বৈধ সিট পান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া ছাত্র-ছাত্রীর হলে সিট পাওয়া অধিকার।
তিনি বলেন, করোনায় অনেক ছাত্র-ছাত্রীর বিয়ে হয়ে গেছে। তারা কোথায় যাবেন এখন? এত খরচ কোথায় থেকে বহন করবে ছাত্রীরা? একজন বিবাহিত ছাত্রীর যদি হলে থাকা অপরাধ হয়ে থাকে, তাহলে আমাদের মতে হলের হাউজ টিউটর ও প্রভোস্টদের অবিবাহিত হতে হবে, বিবাহিত হলে তারা কোয়ার্টারে থাকতে পারবেন না। তাদের স্বামী কি দায়িত্ব নিতে পারেন না?
অভিযোগ করে তিনি আরও বলেন, হল সংসদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কোনো কথাই শুনতে চাইছে না হল প্রশাসন, অথচ পাঁচ বছর আগে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যাওয়া ছাত্রলীগের হল কমিটির নেতারা এখনো হলে থাকেন। দ্বিচারিতা করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের হয়রানি আমরা আর সহ্য করব না। দাবি আদায় না হলে কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব আমরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের অন্য দাবিগুলো হলো শিক্ষার্থীদের প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকের মর্যাদা রক্ষায় সব ছাত্রী হলে ‘লোকাল গার্ডিয়ান’ বা ‘স্থানীয় অভিভাবকের’ পরিবর্তে ‘ইমার্জেন্সি কন্টাক্ট’ বা ‘জরুরি যোগাযোগ’ শব্দটি রাখা, আবাসিক শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দ্বারা যেকোনো ধরনের হয়রানি এবং অসহযোগিতামূলক আচরণ বন্ধ করে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া এবং শিক্ষা কার্যক্রম চলমান থাকা সাপেক্ষে অনাবাসিক ছাত্রীদের হলে প্রবেশের অধিকার পুনর্বহাল করা ও জরুরি প্রয়োজনে তাদের হলে অবস্থান করতে দেওয়া।
সম্প্রতি শামসুন নাহার হল ও বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলে বিবাহিত দুই ছাত্রীর সিট নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়। এরপর থেকেই পাঁচটি ছাত্রী হলের শিক্ষার্থীরা এ বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন।
ছাত্র-শিক্ষক
জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ করায় সরকারকে ঢাবি শিক্ষক সমিতির নেতাদের অভিনন্দন
সন্ত্রাসবিরোধী আইনে জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করায় সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি।
শুক্রবার (২ আগস্ট) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভুঁইয়া ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা এক যৌথ বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে হত্যা, ধর্ষণ ও লুণ্ঠনের সঙ্গে জামায়াতের সক্রিয় সম্পৃক্ততা ছিল। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের কারণে তাদের সংগঠনের রাজনীতি নিষিদ্ধ করায় সরকারকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি অভিনন্দন জানাচ্ছে।
শিক্ষক নেতারা বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাত্রির গণহত্যা ও ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী নিধনের নেতৃত্বদানকারী এবং ৩০ লাখ শহীদের রক্তে স্নাত, দুই থেকে ছয় লাখ নারীর সম্ভ্রম ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের বিরোধিতাকারী সংগঠন হচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও তার ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবির (তৎকালীন ছাত্র সংঘ)। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশেও তারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ও রাজপথে শিক্ষক-শিক্ষার্থী নির্যাতন ও হত্যার বহু ঘটনা ঘটিয়েছে।
তারা বলেন, এসব কারণে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্র শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে মনে করে। তবে এটিই যথেষ্ট নয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি রাষ্ট্রের সব পর্যায়ে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ বাস্তবায়নে সব ধরনের উদ্যোগ নেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছে।
জেএইচ
ছাত্র-শিক্ষক
শিক্ষার্থীদের মুক্তির দাবি ঢাবির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষকদের
চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবির প্রতি সমর্থন ও গ্রেপ্তারদের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষকরা। এছাড়া শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবির প্রতি সমর্থন এবং সংলাপের মাধ্যমে একটি সৌহার্দ্যপূর্ণ সমাধান আসবে বলে আশা করেন তারা।
রোববার (২৮ জুলাই) বিকেল সোয়া ৩টায় বিভাগের শিক্ষকদের পক্ষ থেকে বিভাগীয় চেয়ারম্যান অধ্যাপক জেরিন আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষকরা সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের প্রাণহানি, নির্বিচারে গ্রেপ্তার ও হয়রানির ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। আমরা বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন যে আমাদের ছাত্র মো. আবুল হাসনাত (হাসনাত আবদুল্লাহ), কোটাবিরোধী আন্দোলনের এক সমন্বয়ক গ্রেপ্তার হয়েছেন। আমরা তার এবং অন্য শিক্ষার্থীদের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।
এতে আরও বলা হয়, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে সংযম প্রদর্শন এবং আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবির প্রতি সমর্থন জানাচ্ছি এবং আশা করছি যে সংলাপের মাধ্যমে একটি সৌহার্দ্যপূর্ণ সমাধান আসবে।
এএম/
ছাত্র-শিক্ষক
শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে ওবায়দুল কাদেরের বৈঠক আজ
সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয় স্কিম’ বাতিলের দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করেছেন দেশের ৩৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) বিষয়টি সুরাহার জন্য শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
বুধবার (৩ জুলাই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের মূল ফটকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
এ সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির মহাসচিব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়া জানান, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আন্দোলনরত শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছেন। পরে আজ বসার জন্য সময় দেন তিনি। তবে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষকদের সর্বাত্মক কর্মবিরতি চলবে।
গেলো তিন দিন ধরে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলনের ফলে কার্যত অচল হয়ে আছে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। গতকালও সকাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করে কলা ভবনের মূল ফটকে অবস্থান নেন।
অন্যদিকে ‘কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ’ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন। ফলে শিক্ষার্থীরা বিভাগ, হল, ইনস্টিটিউট ও প্রশাসনিক ভবনের কোথাও কোনো ধরনের সেবা পাচ্ছে না। প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে অনেক শিক্ষার্থী সেবা নিতে এসে ফিরে যাচ্ছেন।
অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী মঙ্গলবার শিক্ষকদের চলমান আন্দোলনকে ‘অযৌক্তিক’ বলে মন্তব্য করেছেন। এ বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে নিজামুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘যারা প্রত্যয় স্কিম করেছেন, তারা হয়তো মন্ত্রীকে ভুল বুঝিয়েছেন। তিনি তার জায়গা থেকে কথা বলেছেন। আমরা যখন তাকে বোঝাতে পারব, তখন হয়তো তিনি আমাদের সঙ্গে একমত হবেন। তার বক্তব্যটি আমরা গ্রহণ করিনি।’
টিআর/