জাতীয়
আস্থার কারণে বাংলাদেশকে দায়িত্ব দিলো জাতিসংঘ
চলতি বছরের ডিসেম্বরে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ ঘানায় বসছে জাতিসংঘের পিসকিপিং মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলন। জাতিসংঘের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রী পর্যায়ের প্রস্তুতিমূলক সভা এ মাসের শেষের দিকে ঢাকায় হতে যাচ্ছে। সভার মূল আলোচনায় থাকবে শান্তি মিশনে নারীদের অংশগ্রহণ।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশে জাতিসংঘের পিসকিপিং মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনের প্রস্তুতিমূলক সভা করতে যাচ্ছে। এটি আগামী ২৫ ও ২৬ জুন ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে। এতে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার প্রধানসহ একশর বেশি অতিথি যোগ দেয়ার কথা রয়েছে।
ঢাকায় হতে যাওয়া সভার বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, মূল সম্মেলন হবে ঘানায়। সেখানে যে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে তার প্রিলিমিনারি সব কিছুই এখানে হবে। আলাপ-আলোচনা, দরকষাকষি, পর্যালোচনা কিংবা কোনো কিছু যদি সাইনও হয়ে থাকে সব এখানে (ঢাকায়) হবে। পরে ঘানায় ফাইনালাইজেশনটা হবে। যার জন্য আমাদের এখানে যেটা হচ্ছে, এটা খুবই গুরত্বপূর্ণ।
মন্ত্রণালয়ের এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, জাতিসংঘের প্রতি বছর পিসকিপিং মিনিস্ট্রিয়াল হয়। এ বছর ডিসেম্বরে ঘানায় সম্মেলন হবে। আর কো-চেয়ার হিসেবে থাকবে কানাডা। মূলত প্রস্তুতিমূলক সভা ঢাকায় হবে। জাতিসংঘ থেকে আমাদের অনুরোধ করা হয়েছে। আমরা আগে একবার করেছি ২০১৭ সালে। এবার সিদ্ধান্ত হয়েছে, আমরা আয়োজন করব। ইতোমধ্যে তারিখ চূড়ান্ত হয়েছে। আগামী ২৫ ও ২৬ জুন এটা ঢাকায় হবে। আমাদের অনেক দায়িত্ব এ সভা নিয়ে। আমাদের সঙ্গে কানাডা সহযোগী আয়োজক। তারা উন্নত দেশ হিসেবে অর্থায়ন করবে।
সভায় মূল আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে এ কর্মকর্তা বলেন, মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে জাতিসংঘ সামগ্রিক ইস্যুতে গুরুত্ব দিয়ে থাকে। বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ-আলোচনা বা পর্যালোচনা হবে। তবে মূল ফোকাস হিসেবে থাকছে উইমেন ইন পিসকিপিং। পিসকিপিং-এ নারীদের অংশগ্রহণ।
জানা গেছে, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ এবং পুলিশ এ সভার সমন্বয় করবে। এছাড়া জাতিসংঘের বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন, ঢাকার কানাডিয়ান দূতাবাস এবং জাতিসংঘের সদরদপ্তর সভার প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করছে।
মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র বলছে, ইতোমধ্যে সম্মেলনে যোগ দিতে সম্মতি জানিয়েছে জাতিসংঘের ডিপার্টমেন্ট অব পিস অপারেশনের আন্ডার সেক্রেটারি এবং জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি (লজিস্টিক)। এছাড়া বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা সভা অংশ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
সম্মেলনের প্রস্তুতিমূলক সভা থেকে বাংলাদেশ কীভাবে উপকৃত হতে পারে জানতে চাইলে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, পিসকিপিং-এ বাংলাদেশ একটা লিডিং রোল প্লে করছে। ওই কনফিডেন্স থেকে জাতিসংঘ আমাদের অনুরোধ করেছে এটা করার জন্য। জাতিসংঘের আস্থার জায়গা থেকেই কিন্তু ঢাকায় এ ধরনের সভার প্রস্তাব দেওয়া। শান্তিমিশনে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক শান্তির বিষয়ে বাংলাদেশ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। নারীদের শান্তিমিশনে অংশগ্রহণ আমাদের কাছে গুরত্বপূর্ণ। এসব কারণে এটা আমরা ঢাকায় করছি।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ভারত মহাসাগরীয় সম্মেলন আমরা খুব ভালোভাবে ঢাকায় আয়োজন করেছি। এ ধরনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন সফলভাবে সম্পন্ন করায় বাংলাদেশের প্রতি সবার আস্থা তৈরি হচ্ছে। সেজন্য জাতিসংঘ বাংলাদেশকে এত বড় একটা দায়িত্ব দিল। এতে করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের অবস্থান আরও শক্তিশালী হচ্ছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, সবশেষ দক্ষিণ কোরিয়ায় জাতিসংঘের পিসকিপিং মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলন হয়েছিল। ওই সম্মেলনে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন যোগ দিয়েছিলেন। আশা করা হচ্ছে, ডিসেম্বরে ঘানায় মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে যোগ দেবেন ড. মোমেন।
উল্লেখ্য, গত মার্চের শেষে ঢাকায় ইউনেস্কোর ইন্টারগভর্নমেন্টাল ওশনোগ্রাফিক কমিশনের রিজিওনাল কমিটি ফর দ্য সেন্ট্রাল ইন্ডিয়ান ওশানের (আইওসিআইএনডিআইও) ৯ম সভা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর মে মাসের শুরুতে ঢাকায় দুদিনব্যাপী ভারত মহাসাগরীয় সম্মেলনের ষষ্ঠ আসর বসে।
এদিকে, আজ (১৩ জুন) থেকে সিলেটে দুই দিনব্যাপী ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশনের (আইওরা) জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সভা বসছে। এছাড়া চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে ঢাকায় বসবে দুই দিনব্যাপী কমনওয়েলথ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ফোরাম। প্রথমবারের মতো এটি ঢাকায় হতে যাচ্ছে।
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন