জাতীয়
সামাজিক ন্যায়বিচারই টেকসই উন্নয়নের ভিত্তি রচনা করতে পারে : প্রধানমন্ত্রী
একমাত্র সামাজিক ন্যায়বিচারই স্থায়ী শান্তি ও টেকসই উন্নয়নের ভিত্তি রচনা করতে পারে। বিশ্বব্যাপী শান্তিপূর্ণ, ন্যায্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনের প্রয়াসে সামাজিক ন্যায়বিচারকে আমাদের বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ বুধবার (১৪ জুন) সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় প্যালেস ডি নেশনস-এ ‘ওয়ার্ল্ড অব ওয়ার্ক সামিট-২০২৩’ এর পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, এই শীর্ষ সম্মেলনের মাধ্যমে একটি বৈশ্বিক জোট প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টসহ সকল আন্তর্জাতিক উন্নয়ন এজেন্ডার কেন্দ্রে সামাজিক ন্যায়বিচারকে স্থান দেওয়ার একটি সুযোগ করে দিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে তিনি বাংলাদেশের দৃষ্টিকোণ থেকে পাঁচটি পরামর্শ দিয়েছেন:
শেখ হাসিনা তার প্রথম পরামর্শে বলেন, এই জোটটিকে একটি মান-নির্ধারক বা দরকষাকষির ফোরামের পরিবর্তে একটি পরামর্শমূলক বা অ্যাডভোকেসি প্ল্যাটফর্ম হিসাবে গড়ে তোলাই বাঞ্ছনীয় হবে।
দ্বিতীয়ত, বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সামাজিক ন্যায়বিচারকে এক আন্তর্জাতিক মহল কর্তৃক অন্য মহলের বিরূদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের বিষয়ে এই জোটকে সতর্ক থাকতে হবে।
তৃতীয়ত, এই জোটকে একটি নিয়মতান্ত্রিক বহুপক্ষীয় বাণিজ্য ব্যবস্থার আওতায় সামাজিক ন্যায়বিচারকে একটি সংরক্ষণবাদী হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার না করে, বরং এর ব্যাপক প্রসারে ভুমিকা রাখার বিষয়ে প্রচারণা চালাতে হবে।
চতুর্থত, শোভনকর্ম এবং উৎপাদনশীল কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সম্পৃক্ত করার জন্য এ জোটের বিষয়ে আইএলও’র নিজস্ব অংশীজনদের থেকে ব্যাপক সমর্থন নিশ্চিত করতে হবে।
পরিশেষে, আমাদের তরুণ সমাজকে সামাজিক ন্যায়বিচারের প্রবক্তা হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এ জোটকে মনোযোগী হতে হবে।
তিনি বলেন ‘বর্তমান শতাব্দীর বহুমাত্রিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বিশ্বের জন্য আমাদের একটি নতুন সামাজিক চুক্তি তৈরি করতে হবে। এই সামাজিক চুক্তির মূল উদ্দেশ্য হবে- টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে সবার জন্য সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পেশাগত স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা বিষয়ক দুটি নতুন মৌলিক আইএলও সনদ অনুস্বাক্ষরের বিষয়টিও আমরা সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছি। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে, শ্রম অধিকার নিয়ে সোচ্চার কয়েকটি উন্নত দেশ এখন পর্যন্ত নিজেরা অধিকাংশ মৌলিক আইএলও সনদ অনুস্বাক্ষর করেনি। যেমন, একটি বড়ো শিল্পোন্নত দেশ মাত্র দুটি মৌলিক সনদ অনুস্বাক্ষর করেছে।’
শিশুশ্রমের ন্যূনতম বয়স নির্ধারণে বাংলাদেশ সম্প্রতি আইএলও সনদ ১৩৮ অনুস্বাক্ষর করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার আটটি ঝুঁকিপূর্ণ খাতকে শিশু শ্রমমুক্ত ঘোষণা করেছে।
তিনি বলেন ‘এছাড়া, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত এক লাখ শিশুকে উপানুষ্ঠানিক ও কারিগরি শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার কার্যক্রম চলছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি একটি সুস্থ ও নিরাপদ আগামী প্রজন্মের স্বার্থে দেশ শিশু শ্রমের অভিশাপ থেকে মুক্তি চাই।’
শেখ হাসিনা বলেন, তারা আইএলও’র সুপারিশ অনুযায়ী ২০১৩ ও ২০১৮ সালে দুইবার বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ সংশোধন করেছেন। অধিকন্তু, বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা, ২০১৫-এ সংশোধন করা হয়েছে। এ বছর নাগাদ শ্রম আইন, ২০০৬-এ আরও সংশোধনী আনার কাজ চলছে। ইতোমধ্যেই বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ প্রয়োগর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
শ্রম আপীল ট্রাইব্যুনাল ও সাতটি শ্রম আদালতের সঙ্গে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার আরও ছয়টি শ্রম আদালত প্রতিষ্ঠা করেছে। এছাড়া, সামাজিক অংশীদারদের অংশগ্রহণে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (এডিআর) কার্যক্রম প্রাতিষ্ঠানিকভাবে জোরদার করা হচ্ছে। পাশাপাশি, দেশের কারখানাগুলোর জন্য একটি ‘শিল্প পুলিশ’ ইউনিট গঠন করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের সব তৈরি পোশাক কারখানার নিরাপত্তা ও কাজের পরিবেশের মূল্যায়ন করা হয়েছে এবং রপ্তানিমুখী কারখানাগুলোতে সে অনুযায়ী প্রতিকার করা হয়েছে। বিশ্বের শীর্ষ ১০০টি পরিবেশবান্ধব পোশাক কারখানার অর্ধেকেরও বেশি এখন বাংলাদেশে অবস্থিত।
তিনি বলেন, ‘এই অর্জনকে এগিয়ে নিতে আমরা একটি ‘গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড পলিসি’ প্রণয়ন করেছি এবং আমি আশা করি আমাদের আন্তর্জাতিক ক্রেতারা পণ্যের ন্যায্য মূল্য পরিশোধের মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব এই ধরনের উদ্যোগকে উৎসাহিত করবেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত একটি জাতীয় গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করছে এবং ৩২টি শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রের মাধ্যমে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা শ্রমিকদের নিয়মিত চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন। তিনি বলেন, সরকার কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা এবং কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করতে শ্রম পরিদর্শকের সংখ্যা ৭১১ জনে উন্নীত করেছে। আইএলও’র প্রযুক্তিগত সহায়তায় একটি ওয়েব-ভিত্তিক “শ্রম পরিদর্শন ব্যবস্থাপনা অ্যাপ্লিকেশন (লিমা)” চালু করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, শ্রমিক, নিয়োগকর্তা এবং সরকারের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি ত্রিপক্ষীয় পরামর্শক পরিষদ (টিসিসি) দেশের সামগ্রিক শ্রম পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও অগ্রগতি অব্যাহত রেখেছে। পোশাক শিল্পের জন্য আলাদা টিসিসি গঠন করা হয়েছে। তিনি বলেন, “আমাদের সরকারই গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ১৬০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮,০০০ টাকা করেছে। আমরা বিভিন্ন শিল্প খাতে সম্মিলিত দর কষাকষির মাধ্যমে ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণের জন্য একটি নীতি কাঠামো প্রণয়নের পরিকল্পনা করেছি।”
শেখ হাসিনা শ্রমিকদের জন্য অনলাইন ট্রেড ইউনিয়ন রেজিস্ট্রেশনসহ তার সরকারের নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন রেজিস্ট্রেশনের হার ২০১৩ সালে ৬০ শতাংশ থেকে ২০২২ সালে ৯০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। গার্মেন্টস সেক্টরে ট্রেড ইউনিয়নের সংখ্যা গত নয় বছরে বেড়েছে নয়গুণ। এছাড়াও, শ্রমিক ও নিয়োগকর্তাদের ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধন প্রক্রিয়ার বিষয়ে নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে এবং রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড) এবং নন-ইপিজেড এলাকার জন্য দুটি পৃথক টোল-ফ্রি হেল্প-লাইন চালু করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “পোশাক কারখানার শ্রমিকদের পারিশ্রমিক ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা প্রদানে স্বচ্ছতা ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে তাদের বিবরণ সহ ডাটাবেস তৈরি করা হচ্ছে। শ্রম আইনে নারী শ্রমিকদের জন্য চার মাসের বেতনসহ ছুটি ও মাতৃত্বকালীন সুবিধার বিধান রাখা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রাম শিল্পাঞ্চলে সাশ্রয়ী মূল্যে ১৫৩০ জন কর্মজীবী নারীর জন্য বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিভিন্ন কারখানা ও প্রতিষ্ঠানে ৬,৪৩০টি দিবা-যতœ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। আমরা শিল্প ও কর্মক্ষেত্রে নারীর প্রতি সব ধরনের সহিংসতা বা হয়রানির বিরুদ্ধে ‘জিরো-টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করার আহ্বান জানিয়েছি। সম্প্রতি, আমি আমাদের জাতীয় জিডিপিতে মহিলাদের অবৈতনিক গৃহকর্মের অবদান যুক্ত করার নির্দেশনা দিয়েছি।” তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ লেবার ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন’ এর তত্ত্বাবধানে শ্রমিক ও তাদের পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন খাতে আর্থিক সহায়তা পাচ্ছেন। এছাড়াও, রপ্তানিমুখী শিল্পে শ্রমিকদের পরিবারসহ তাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সহায়তার জন্য শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি “কেন্দ্রীয় তহবিল” প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ২০২২ সালে, গার্মেন্টস সেক্টরে শ্রমিকদের জন্য একটি “কর্মসংস্থান ইনজুরি ইন্স্যুরেন্স স্কিম” পাইলট ভিত্তিতে চালু করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার রূপকল্প-২০৪১-এর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার অঙ্গীকার করেছে। সে লক্ষ্যে গবেষণা ও উন্নয়নের জন্য আগামী অর্থবছরের বাজেটে ৯.২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিশেষ বরাদ্দ রাখা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে গবেষণা ও উদ্ভাবন কেন্দ্রের মাধ্যমে প্রায় ৮০ হাজার যুবক-যুবতীকে উন্নত প্রযুক্তিতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। দেশের ৬ লক্ষ ৫০হাজার আইটি ফ্রিল্যান্সারকে মূলধারার অর্থনীতির ধারায় আনতে নিবন্ধিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘২০৩০ সালের মধ্যে কারিগরি শিক্ষায় ভর্তির হার বর্তমান ১৭ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আমরা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য তরুণ প্রজন্মকে প্রস্তুত করতে সমুদ্র গবেষণা, অ্যারোনটিক্স, বায়োটেকনোলজি, ন্যানোটেকনোলজি এবং সীমান্ত প্রযুক্তির বিষয়ে বিশেষায়িত ইনস্টিটিউট স্থাপন করছি।’ তিনি বলেন, সরকার সামগ্রিক অভিবাসন খরচ কমাতে এবং অভিবাসী কর্মীদের সহজে ঋণ প্রদানের জন্য “প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক” প্রতিষ্ঠা করেছে। বাংলাদেশ নিরাপদ, সুশৃঙ্খল এবং নিয়মিত অভিবাসন নিশ্চিত করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে চলেছে।
প্রধানমন্ত্রী মানবিক গতিশীলতা এবং সামগ্রিক কর্মপরিবেশের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের বিষয়ে মনোযোগ দেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার পর সামরিক স্বৈরশাসকরা দেশ পরিচালনা করত। ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে আসার পর তিনি ১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের সুযোগ পান। তিনি বলেন, “আমি দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তনের জন্য কাজ শুরু করেছি। আমার একমাত্র লক্ষ্য তাদের ভাগ্য পরিবর্তন করা এবং বাংলাদেশকে একটি শান্তিপূর্ণ ও উন্নত সোনার বাংলায় পরিণত করা। আমি বাংলাদেশের মেহনতি মানুষের জন্য আমার জীবন উৎসর্গ করেছি।”
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন