চট্টগ্রাম
মায়ের পরকীয়ার কারণে প্রাণ গেল মেয়েরও
নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদীর গৃহবধূ নুরুন্নাহারের (৩২) সঙ্গে রং নম্বরে পরিচয় হয় ওমান প্রবাসী মো. আলতাফ হোসেনের (২৮)। পরিচয় থেকে তাদের মধ্যে হয় সম্পর্ক। কিন্তু কথা দিয়ে কথা না রাখায় গৃহবধূ নুরুন্নাহারকে কুপিয়ে হত্যা করেন আলতাফ। এ সময় নুরুন্নাহারের মেয়ে প্রিয়ন্তী (১৭) বিষয়টি দেখে ফেলায় তাকেও হত্যা করা হয়।
বুধবার (১৪ জুন) সন্ধ্যায় নোয়াখালীর সুধারাম মডেল থানায় সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল ইসলাম।
তিনি জানান, আটক হওয়া আলতাফ হোসেন ওমান প্রবাসী। রং নম্বরের এক ফোন কলে গৃহবধূ নুরুন্নাহারের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। এরপর তাদের দুজনের মধ্যে সম্পর্ক তৈরি হয়। ওমানে ভালো টাকা আয় করতে পারছিলেন না আলতাফ। নুরুন্নাহার তাকে ব্যবসার জন্য টাকা দেওয়ার আশ্বাস দেন। ওই আশ্বাসে আলতাফ দেশে ফিরে আসেন। কিন্তু নুরুন্নাহার তাকে প্রতিশ্রুত অর্থ দেননি এবং সম্ভবত দিতে অস্বীকার করেন। কথা দিয়ে কথা না রাখায় আজ সকালে নুরুন্নাহারের বাসায় গিয়ে তার গলায় ছুরি ধরেন আলতাফ। নিজেকে বাঁচাতে পাশের রুমে ঘুমিয়ে থাকা মেয়ে প্রিয়ন্তীর কাছে চলে যান নুরুন্নাহার। সেখানে গিয়ে ছুরিকাঘাতে নুরুন্নাহারকে হত্যা করেন আলতাফ। মেয়ে প্রিয়ন্তী ঘটনা দেখে ফেলায় তাকেও ছুরিকাঘাত করা হয়।
শহীদুল ইসলাম বলেন, আলতাফ হোসেন লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরবাদাম ইউনিয়নের চর মেহের গ্রামের মৃত আবুল কালামের ছেলে। তাকে বাসা ভাড়া নেওয়ার কৌশল করে ব্যবসার জন্য টাকা নিতে আসতে বলেছিলেন নুরুন্নাহার। টাকা না দেওয়ায় হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি রক্তমাখা ছুরি এবং ছুরির কভার উদ্ধার করেছে পুলিশ।
পুলিশ সুপার বলেন, আলতাফ হোসেনের উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত থেকে বাঁচতে প্রিয়ন্তী দৌড়ে নিচে নেমে নিচ তলার ভাড়াটিয়ার বাসার দরজায় ধাক্কা দিলে ভাড়াটিয়া দরজা খুলে দেন। দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে প্রিয়ন্তী ডাইনিং রুমের মেঝেতে অজ্ঞান হয়ে লুটিয়ে পড়ে। প্রিয়ন্তীর পিছু পিছু আসামি আলতাফ হোসেন দৌড়ে পালানোর চেষ্টাকালে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় পুলিশ তাকে আটক করে।
আসামি আলতাফকে আদালতে সোপর্দ করা হবে উল্লেখ করে পুলিশ সুপার বলেন, আমরা ঘটনার ছয় ঘণ্টার মধ্যে রহস্য উদঘাটন করেছি। সবার আগ্রহ ছিল বলেই আমরা বিষয়টিকে অধিক গুরুত্ব দিয়েছি। গৃহবধূর স্বামী ফজলে আজিম কচির দায়ের করা হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আলতাফকে আদালতে সোপর্দ করা হবে। যদি স্বেচ্ছায় জবানবন্দি না দেয় তাহলে রিমান্ড আবেদন করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) বিজয়া সেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. মোর্তাহীন বিল্লাহ, সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ারুল ইসলাম, সুধারাম মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মিজানুর রহমান পাঠান উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, বুধবার (১৪ জুন) সকালে পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের গুপ্তাংক এলাকার বার্লিংটন মোড়ের নিজ বাসায় নুরুন্নাহার ও তার মেয়ে প্রিয়ন্তীকে কুপিয়ে জখম করা হয়। মা ঘটনাস্থলেই মারা গেলেও মেয়ে কিছুক্ষণ বেঁচে ছিল। হাসপাতালে নেয়ার পর সে মারা যায়। এ ঘটনায় স্থানীয়রা দৌড়ে পালানোর সময় আলতাফ হোসেনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে।
নিহত নুরুন্নাহার নোয়াখালী পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের গুপ্তাংক এলাকার বার্লিংটন মোড়ের মানিক মিয়ার বাড়ির ফজলে আজিম কচির স্ত্রী। প্রিয়ন্তী তাদের মেয়ে।
প্রিয়ন্তীর হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে বুধবার (১৪ জুন) বিকেলে সড়ক অবরোধ করে তার নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হরিনারায়ণপুর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা। তাদের আধাঘণ্টার সড়ক অবরোধে সোনাপুর-চৌমুহনী সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে জেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা যুক্ত হয়। এ সময় তাদের হাতে ছিল ফাঁসির দাবি সম্বলিত বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড।
চট্টগ্রাম
কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় প্রাণ হারালেন দুই সাইকেল আরোহী
কর্ণফুলীতে পণ্যবাহী কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় দুই সাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। কাভার্ডভ্যানটি আটক করা হয়েছে।
বুধবার (৭ আগস্ট) বেলা একটার দিকে চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের ইছানগর বাংলাবাজার এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার নন্দনালী গ্রামের কামাল মণ্ডলের ছেলে চঞ্চল মণ্ডল (১৮) ও রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার ছোট পাগলা গ্রামের মোহাম্মদ আবদুল জলিলের ছেলে জাহিদুল ইসলাম (১৬)। তারা কর্ণফুলী উপজেলার ইছানগর গ্রামে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
চরপাথরঘাটার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আবু তাহের গণমাধ্যমকে বলেন, দুপুরে তারা তিনজন সাইকেল চালিয়ে কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন। এ সময় কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত হয়। অপরজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানো হয়। কাভার্ডভ্যানটি আটক করা হয়েছে।
এএম/
চট্টগ্রাম
রাতেও ট্রাফিক সামলাচ্ছেন ছাত্রীরা
সরকার পতনের পরে চট্রগ্রামে নগরীর থানাগুলো ফাঁকা পড়ে আছে। এ অবস্থায় নগরীর রাস্তায় নেই কোন ট্রাফিক পুলিশ। দিনভর রাস্তায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করেন সরকার পতনের আন্দোলন করা শিক্ষার্থীরা। তবে দিন পেরিয়ে রাত হলেও, রাস্তায় ছাত্রদের পাশপাশি ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা যায় ছাত্রীদেরও।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার অলী খা মসজিদ মোড় এলাকায় এমন চিত্র দেখতে পায় গণমাধ্যম।
নগরীর অলী খা মসজিদ মোড়ে শৃঙ্খলা রক্ষার কাজ করা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাইজা তাবাসসুম বলেন, দেশে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। এখন দেশকে এগিয়ে নিতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। নিজের দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে এখানে আসা। সকালে শুনেছি সড়কে ট্রাফিক পুলিশ নেই। তাই তারা কাজ করতে এসেছেন।
আসিফুর রহমান নামে আরেক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী জানান, শিফট সিস্টেম করে ছাত্ররা কাজ করছে। এখন তিনি দায়িত্ব পালন করছেন। নিজেদের ইচ্ছায় তারা এখানে এসেছেন।
আই/এ
চট্টগ্রাম
‘বালুখেকো’ চেয়ারম্যান সেলিম ও তার ছেলে গণপিটুনিতে নিহত
চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের আলোচিত ‘বালুখেকো’ খ্যাত চেয়ারম্যান সেলিম খান ও তার ছেলে নায়ক শান্ত খান গনপিটুনিতে নিহত হয়েছেন।
সোমবার (৫ আগস্ট) শেখ হাসিনা পদত্যাগ করার পর নিজ এলাকা থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় বালিয়া ইউনিয়নের ফরক্কাবাদ বাজারে এসে জনগণের তোপের মুখে পড়েন তারা। এরপর সেখানে নিজের পিস্তল থেকে গুলি করে উদ্ধার হয়ে আসতে পারলেও পার্শ্ববর্তী বাগাড়া বাজারে এসে জনতার মুখোমুখি হয়। তারপর সেখানে জনগণের পিটুনিতে নিহত হোন সেলিম খান ও তার ছেলে শান্ত খান।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শেখ মুহসীন আলম গণমাধ্যমে বলেন, তাদের মৃত্যুর বিষয় জেনেছি। তবে কেউ খবর দেয়নি। আর জানমালের নিরাপত্তার কারণে সেখানে কাউকে পাঠানো হয়নি।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সেলিম খান চাঁদপুর নৌ-সীমানায় পদ্মা-মেঘনা নদীতে শত শত ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যান। এসব ঘটনায় সে কারাভোগ করেন এবং দুদকে তার বিরুদ্ধে মামলা চলমান রয়েছে। সেলিম খান একজন আলোচিত প্রযোজকও। তিনি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান শাপলা মিডিয়ার কর্ণধার।
এছাড়া সেলিম খানকে পদ্মা-মেঘনার চর থেকে বিভিন্ন সময় বালু তোলাসহ নানা কারণে চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান পদ থেকে আজীবন বহিষ্কার করে আওয়ামী লীগ। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি।
এএম/
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন