আন্তর্জাতিক
টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়ে পর্যটকসহ সাবমেরিন নিখোঁজ
আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশে টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়ে এক বিলিয়নিয়ারসহ পর্যটকবাহী সাবমেরিন নিখোঁজ হয়েছে। সোমবার (১৯ জুন) এই ঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার (২০ জুন) আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা বিবিসি’র এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক বিলিয়নিয়ারসহ পাঁচ আরোহী নিয়ে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ পরিদর্শনে গিয়েছিল একটি ছোট সাবমেরিন। এটির সন্ধানে ব্যাপক উদ্ধার কার্যক্রম চলছে। খুব দ্রুত উদ্ধার করা সম্ভব না হলে আরোহীদের ভাগ্য করুণ পরিণতি নেমে আসতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, এতে খুব বেশি অক্সিজেন মজুত নেই।
খবরে বলা হয়েছে, নিখোঁজ সাবমেরিনের অন্যতম আরোহী ছিলেন ৫৮ বছর বয়স্ক ব্রিটিশ বিলিওনিয়ার হ্যামিশ হার্ডিং। এটি ছিল ২০২৩ সালে মনুষ্যবাহী মিনি সাবমেরিনটির প্রথম ও একমাত্র মিশন।
খবরে বলা হয়েছে, কানাডার দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলের কাছে এক জায়গায় প্রায় উধাও হয়ে গেছে সাবমেরিনটি। সেটির সন্ধানে ব্যাপক অভিযান চলছে। বোস্টন কোস্ট গার্ড এই অনুসন্ধান অভিযান পরিচালনা করছে। তবে তারা এই বিষয়ে এখনও কোনও বিবৃতি দেয়নি।
ওশানগেট এক্সপেডিশনস নামে এক বেসরকারি সংস্থা ডুবোজাহাজের মাধ্যমে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের কাছে নিয়ে যায় পর্যটকদের। আট দিনের যাত্রার জন্য আড়াই লাখ মার্কিন ডলারের (আড়াই কোটি টাকার বেশি) টিকিট কাটতে হয়।
কানাডার নিউফাউন্ডল্যান্ড উপকূল থেকে তারা যাত্রা শুরু করে। ওশানগেট এক্সপেডিশনস এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে জানিয়েছে, তাদের পরিচালিত সাবমেরিনের সঙ্গে তাদের যাবতীয় সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ঠিক কতজন নিখোঁজ, তা জানানো হয়নি। তবে সূত্রের খবর ৫ জন পর্যটক এবং কয়েকজন ক্রু সদস্য ছিলেন সাবমেরিনটিতে।
ওশানগেট এক্সপিডিশনস জানিয়েছে, সাবেমরিনটিতে থাকা ব্যক্তিদের উদ্ধারে সব উপায় অবলম্বন করা হচ্ছে। ডুবোজাহাজটির সঙ্গে যোগাযোগ পুনঃস্থাপনের জন্য আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে বেশ কয়েকটি সরকারি সংস্থা এবং গভীর সমুদ্রের অভিযান পরিচালনাকারী সংস্থা। এর জন্য আমরা তাদের কাছে গভীরভাবে কৃতজ্ঞ।
সাবমেরিনটির যাত্রীদের সকলের পরিচয় না পাওয়া গেলেও ব্রিটিশ ব্যবসায়ী তথা অভিযাত্রী হামিশ হার্ডিং তাদের একজন বলে জানিয়েছে তার পরিবার। গত বছর ‘দ্য ব্লু অরিজিন’ সংস্থার রকেটে চড়ে তিনি মহাকাশ যাত্রা করেছিলেন।
টাইটানিক পরিদর্শন যাত্রার আগে তিনি বলেন, নিউফাউন্ডল্যান্ডে এই বছর আবহাওয়া খুবই খারাপ। তাই সোমবারের অভিযানটিই ২০২৩ সালের একমাত্র টাইটানিক পরিদর্শন অভিযান। পরের অভিযান হবে ২০২৪ সালের জুনে।
— OceanGate Expeditions (@OceanGateExped) June 19, 2023
এই যাত্রায় দশ ঘণ্টা সাবমেরিনটির পানির নিচে থাকার কথা ছিল। তবে দশ ঘণ্টা পার হলেও তাদের দেখা মেলেনি।
১৯১২ সালের এপ্রিলে ইংল্যান্ডের সাউদাম্পটন থেকে নিউইয়র্ক রওনা দিয়েছিল তৎকালীন বিখ্য়াত জাহাজ টাইটানিক। দাবি করা হয়েছিল, জাহাজটি কখনও ডুববে না। কিন্তু, প্রথম যাত্রারই মাঝপথে একটি আইসবার্গের সঙ্গে সংঘর্ষে আটলান্টিকে ডুবে গিয়েছিল জাহাজটি। মৃত্যু হয়েছিল প্রায় দেড় হাজার মানুষের। তারপর থেকে সমুদ্রপৃষ্ঠের প্রায় ১২,৫০০ ফুট নিচে পড়ে রয়েছে জাহাজটির ধ্বংসাবশেষ।
১৯৮৫ সালে কানাডা উপকূল থেকে প্রায় ৬৫০ কিলোমিটার দূরে প্রথমবার আবিষ্কার হয়েছিল টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ। ডুবে যাওয়ার সময় মাঝখান থেকে ভাগ হয়ে সমুদ্র তলদেশে দুটি অংশে পড়ে আছে টাইটানিক। ১৯৯৭ সালের টাইটানিকের ডুবে যাওয়া এবং তার ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কারের কাহিনি অবলম্বন করে একটি চলচ্চিত্র বানিয়েছিলেন হলিউডি চিত্র পরিচালক জেমস ক্যামেরন। বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় সিনেমা হয়ে আছে টাইটানিক।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
আন্তর্জাতিক
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে হবে: যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়নের ব্যাপারটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেনো গণতন্ত্র, আইন ও বাংলাদেশি জনগণের আকাঙ্খা পূরণ করে-এমনটাই চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় বুধবার (৭ আগস্ট) ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে এমনটাই আশা করে বলে জানিয়েছেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। এদিন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ইরাকের এক সাংবাদিক জানতে চান, ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে তার বা অন্যদের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ হয়েছি কী? বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা পরিস্থিতিকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?’
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমরা এখনও যোগাযোগ করেনি। আমরা বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়ন পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখছি এবং আমরা এরইমধ্যে দেখেছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি তার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আপনি নিশ্চয়ই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে শুনেছেন যে. অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে তা যেনো গণতান্ত্রিক নীতিমালাকে, আইনের শাসন এবং সিদ্ধান্তে বাংলাদেশি জনগণের ইচ্ছা প্রতিফলিত হয়।
এসময় যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী একটি প্রশ্ন করেন। তার প্রশ্নটি ছিল, আপনি কি জানেন যে স্বৈরশাসক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করে নতুন সরকারকে হুমকি দিচ্ছেন, সহিংসতা উসকে দিচ্ছেন? তিনি সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন যিনি বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিলেন। দয়াকরে তার ব্যাপারে আপনার মন্তব্য জানাবেন কী?’
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘একজন সাধারণ নাগরিকের বিবৃতি নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমি এরইমধ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথা বলেছি এবং আমরা দেখতে চাই এই সরকার কী পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যায়।
এসময় মুশফিকুল ফজল আনসারী আরও জানতে চান, ‘দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রত্যাশা নিয়ে আপনার কী মন্তব্য?
জবাবে ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের মুখপাত্র বলেন, শনের প্রশ্নের উত্তরে আমি যেমনটি বলেছি – অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা দেখতে চাই ওই সিদ্ধান্তে যেনো গণতান্ত্রিক নীতি মেনে চলা হয় এবং জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ওই ব্রিফিংয়ে ফিলিস্তিনের গাজা, দক্ষিণ আমেরিকার ভেনিজুয়েলা, ইরাক ও ইরানের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
এমআর//
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন