আন্তর্জাতিক
প্রেমিকের জন্য শিশুকে হত্যা, ‘দৃশ্যম’ মুভি দেখে মরদেহ লোপাট
প্রেমিকের শর্ত পূরণ করতেই আড়াই বছরের শিশুপুত্রকে খুন করে দেহ লোপাটের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছে এক মা। রোববার (২ জুলাই) ভারতের গুজরাটের সুরাতের ডিন্ডোলিতে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত ওই মহিলা সেখানকার একটি নির্মাণস্থলের শ্রমিক হিসাবে কর্মরতা। অভিযুক্তের নাম নয়না মাণ্ডবী। রোববার সুরাত পুলিশ খুনের অভিযোগে গ্রেপ্তার করে নয়নাকে। পুলিশ সূত্রে খবর, শিশুপুত্রকে খুন করার পর নয়না নিজে থেকেই থানায় তার ছেলের নামে নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ দায়ের করতে গিয়েছিলেন। এমনকি তার ছেলেকে কেউ অপহরণ করে নিয়েছেন, সেই অভিযোগও এনেছিলেন তিনি।
টানা তিন দিন ধরে অসত্য তথ্যপ্রদান করার পর শেষ পর্যন্ত পুলিশের হাতে ধরা পড়েন তিনি। নয়নার অভিযোগের উপর ভিত্তি করে তদন্তে নেমেছিল পুলিশ। এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখার সময় পুলিশ লক্ষ করে, নয়না তার ছেলেকে নিয়ে নির্মাণস্থলে প্রবেশ করলেও সেখান থেকে তার ছেলে কোথাও বার হয়নি। তারপরেই সন্দেহ জাগে পুলিশের। নয়না পরে পুলিশের কাছে তার প্রেমিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন।
নয়নার দাবি, তার প্রেমিক নাকি তার ছেলেকে অপহরণ করেছেন। নয়নার অভিযোগের উপর ভিত্তি করে তার প্রেমিককেও জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। তার দাবি, তিনি ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা। সুরাতে কোনও কালেই যাননি বলেও দাবি করেন নয়নার প্রেমিক। নয়নার কথায় অসঙ্গতি লক্ষ করায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। তার পর নিজে থেকেই সব স্বীকার করে নেন তিনি।
জিজ্ঞাসাবাদ চলাকালীন পুলিশকে নয়না জানান, তিনিও মূলত ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা। সেখানে এক যুবকের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয় তার। দু’জনে একসঙ্গে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলেও দাবি করেন নয়না। কিন্তু ছেলেকে নিয়ে গেলে নয়নার সঙ্গে থাকতে পারবেন না বলেও জানিয়েছিলেন নয়নার প্রেমিক। পুলিশের কাছে এমনটাই দাবি করেন নয়না। তাই প্রেমিকের সঙ্গে থাকবেন বলে শিশুপুত্রকে খুন করেন তিনি। খুন করার পর যেন ধরা না পড়েন, তাই অজয় দেবগন অভিনীত ‘দৃশ্যম’ ছবিটিও দেখেন তিনি। ওই ছবিতে দেখানো হয়েছিল মৃতদেহ মাটিতে পুঁতে রেখে কী ভাবে পুলিশকে অসত্য কথা বলে পার পেয়ে গিয়েছিলেন চরিত্রেরা।
‘দৃশ্যম’ ছবি দেখে নয়না ভাবেন, তিনিও একই ভাবে ধরা পড়ার হাত থেকে রক্ষা পাবেন। নির্মাণ সংস্থার ভিতর একটি গর্ত খুঁড়ে ছেলের দেহ সেখানেই পুঁতে দেন নয়না। তার পর পুলিশের কাছে গিয়ে ছেলের নামে নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ সূত্রে খবর, নয়না তার ছেলের দেহ কোথায় লুকিয়ে রেখেছেন, তা নিয়েও অসত্য বলেছেন তিনি। প্রথমে অন্য জায়গার হদিস দিয়ে নয়না দাবি করেছিলেন সেখানেই তিনি তার ছেলের মৃতদেহ পুঁতে রেখেছেন। পুলিশ সেখানে গিয়ে কোনও দেহ খুঁজে না পাওয়ায় আবার নয়নাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তার পর নয়না জানান, খুন করে পুকুরের জলে ফেলে দিয়েছেন তার ছেলের দেহ। সেখান থেকেও শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার হয়নি। শেষ পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদের সময় সঠিক তথ্য দেন নয়না। তিনি জানান, নির্মাণ স্থলের যে জায়গায় শৌচালয় তৈরি করা হচ্ছে, সেখানেই গর্ত খুঁড়ে তার ছেলের দেহ পুঁতেছেন তিনি। সেখান থেকেই উদ্ধার করা হয় শিশুর দেহ। পুলিশ আধিকারিক সূত্রে খবর, তদন্ত এখনও চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে, সেই আশ্বাসও দিয়েছে সুরাত থানার পুলিশ।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
আন্তর্জাতিক
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে হবে: যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়নের ব্যাপারটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেনো গণতন্ত্র, আইন ও বাংলাদেশি জনগণের আকাঙ্খা পূরণ করে-এমনটাই চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় বুধবার (৭ আগস্ট) ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে এমনটাই আশা করে বলে জানিয়েছেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। এদিন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ইরাকের এক সাংবাদিক জানতে চান, ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে তার বা অন্যদের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ হয়েছি কী? বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা পরিস্থিতিকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?’
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমরা এখনও যোগাযোগ করেনি। আমরা বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়ন পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখছি এবং আমরা এরইমধ্যে দেখেছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি তার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আপনি নিশ্চয়ই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে শুনেছেন যে. অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে তা যেনো গণতান্ত্রিক নীতিমালাকে, আইনের শাসন এবং সিদ্ধান্তে বাংলাদেশি জনগণের ইচ্ছা প্রতিফলিত হয়।
এসময় যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী একটি প্রশ্ন করেন। তার প্রশ্নটি ছিল, আপনি কি জানেন যে স্বৈরশাসক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করে নতুন সরকারকে হুমকি দিচ্ছেন, সহিংসতা উসকে দিচ্ছেন? তিনি সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন যিনি বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিলেন। দয়াকরে তার ব্যাপারে আপনার মন্তব্য জানাবেন কী?’
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘একজন সাধারণ নাগরিকের বিবৃতি নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমি এরইমধ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথা বলেছি এবং আমরা দেখতে চাই এই সরকার কী পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যায়।
এসময় মুশফিকুল ফজল আনসারী আরও জানতে চান, ‘দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রত্যাশা নিয়ে আপনার কী মন্তব্য?
জবাবে ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের মুখপাত্র বলেন, শনের প্রশ্নের উত্তরে আমি যেমনটি বলেছি – অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা দেখতে চাই ওই সিদ্ধান্তে যেনো গণতান্ত্রিক নীতি মেনে চলা হয় এবং জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ওই ব্রিফিংয়ে ফিলিস্তিনের গাজা, দক্ষিণ আমেরিকার ভেনিজুয়েলা, ইরাক ও ইরানের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
এমআর//
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন