বাংলাদেশ
ইউনিফর্ম না পরলে শাস্তি দেবে বিমান
বিমানের নির্বাহী পদে দায়িত্ব পালনকারী পাইলটদের ফ্লাইট পরিচালনা শেষে অফিসে উপস্থিতি শতভাগ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সম্প্রতি আদেশ জারি করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। শৃঙ্খলার অংশ হিসেবে এবার আরও কঠোর হচ্ছে সংস্থাটি।
বিভিন্ন পদে কর্মরত কর্মচারীদের ইউনিফর্ম ঠিকমতো না পরলে শাস্তির আওতায় আনবে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এ এয়ারলাইন্স। ইতোমধ্যে বিষয়টি দেখভালে একটি ভিজিলেন্স টিম বা তদারকি দল গঠন করা হয়েছে। বিমানের যে কর্মীদের ইউনিফর্ম পরায় অনীহা আছে, তাদের তালিকা তৈরি করবে এ টিম।
এ বিষয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একজন উপ-মহাপরিদর্শক (ডিজিএম) সমমর্যাদার কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানায়, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালক (প্রশাসন) জিয়াউদ্দীন আহমেদ এ বিষয়ে একটি আদেশ দিয়েছেন। ইউনিফর্মের তদারকি করতে তিন সদস্যের টিম হয়েছে। ওই টিম নিজস্ব রুটিন অনুযায়ী বিমান বাংলাদেশের বিভিন্ন দফতরে আকস্মিক পরিদর্শনে যাবে।
বিমানের ক্যাপ্টেন ও ক্রুদের নির্ধারিত শার্ট ও শাড়ি রয়েছে। এর বাইরে যারা বিভিন্ন শাখা অফিস বা ডেস্কে চাকরি করছেন, তাদের মধ্যে পুরুষদের সাদা শার্ট-প্যান্ট এবং নারীদের শাড়ি পরা বাধ্যতামূলক।
বিমানের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে, সম্প্রতি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালক (প্রশাসন) জিয়াউদ্দীন আহমেদের জারি করা আদেশে যে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে, সেই কমিটির আহ্বায়ক হয়েছেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (প্রকিউরমেন্ট) মুহাম্মদ নিজাম উদ্দীন আহাম্মেদ। কমিটির সদস্য হিসেবে রয়েছেন বিমানের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম-নিরাপত্তা) মেজর তাইজ ইবনে আনোয়ার এবং সদস্য-সচিব করা হয়েছে বিমানের ব্যবস্থাপক (নিরাপত্তা) মুহাম্মদ মাসুদ পারভেজ রানাকে।
ভিজিলেন্স টিমকে প্রধানত দুটি কাজ করতে দেওয়া হয়েছে। প্রথমটি হলো, বিমানের যে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ইউনিফর্ম পরার বিধান রয়েছে, তাদের পরিপূর্ণ ইউনিফর্ম নিশ্চিত করা। এজন্য তারা বিমানের বিভিন্ন পরিদফতর, বিভাগ, উপ-বিভাগ, শাখা ও সেলস সেন্টার পরিদর্শন করবেন। দ্বিতীয়টি হলো, ইউনিফর্ম পরার নির্দেশনা পাওয়া যে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যথাযথভাবে ইউনিফর্ম পরছেন না, তাদের তালিকা প্রস্তুত করে বিমানের প্রশাসন পরিদফতরে পাঠানো। তালিকা পেয়ে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে বিমানের প্রশাসন পরিদফতর।
শাস্তির ধরন সম্পর্কে সুস্পষ্টভাবে না জানা গেলেও বিমানের একজন কর্মকর্তা বলেন, কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী যদি ইউনিফর্ম না পরেন অথবা আংশিক পরেন, সেক্ষেত্রে তালিকা ধরে তাদের কাছে মৌখিক ব্যাখ্যা চাওয়া হবে। এরপর তাদের শাস্তি (প্রযোজ্য হলে) দেওয়া হবে। শাস্তি হিসেবে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চূড়ান্ত সতর্ক করা, লিখিত মুচলেকা নেওয়া এমনকি বেতন কাটা হতে পারে।
পাইলটদের শৃঙ্খলায় আনতে বিমানের উদ্যোগ
সম্প্রতি নির্বাহী পাইলটদের শৃঙ্খলায় আনতে অফিসে উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করেছে বিমান। বিমানের প্রশাসন পরিদফতর থেকে জারি করা এক আদেশে বলা হয়েছে, ২ জানুয়ারি থেকে নির্বাহী পদে দায়িত্ব পালনকারী পাইলটদের ফ্লাইট ডিউটি সম্পন্ন শেষে ‘বেজ’-এ আসার নিয়ম অনুযায়ী বিশ্রাম নিয়ে যথাসময়ে অফিসে উপস্থিত থাকতে হবে এবং ফেস আইডি মেশিনের মাধ্যমে হাজিরা নিশ্চিত করতে হবে।
বিমানের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, সম্প্রতি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পাইলটদের মধ্যে অফিসে উপস্থিতিতে অনীহা দেখা গেছে। এছাড়া করোনা পরিস্থিতিতে বেতন কাটা, পরবর্তীতে সমন্বয় না করা নিয়ে পাইলটদের একাধিকবার আল্টিমেটাম দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
বেশ কয়েকবার পাইলটরা প্রয়োজনের সময় ফ্লাইট পরিচালনায় অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। এতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিমান, নষ্ট হয়েছে সুনাম। পাইলটদের আচরণে শৃঙ্খলার অভাব দেখা গেছে। তাদের মধ্যে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে বিমান বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেগুলোর মধ্যে পাইলটদের অফিসে উপস্থিতি নিশ্চিত করা অন্যতম।
এদিকে কাটা বেতন সমন্বয়সহ স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে কয়েক মাস ধরে আন্দোলন করেছিলেন পাইলটরা। সেই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বিমানের সিনিয়র পাইলট ও পাইলট অ্যাসোসিয়েশনের (বাপা) সভাপতি ক্যাপ্টেন মাহবুবুর রহমান। ২০২১ সালের নভেম্বরে তাকে চাকরিচ্যুত করে বিমান। ঠিক কী কারণে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে, সেটি সুনির্দিষ্ট করে না জানালেও অনেকেই বলেছেন বিমানের ক্ষতি করায় তাকে সরানো হয়েছে।
পাইলটদের সঙ্গে বিমানের দূরত্ব শুরু হয় ২০২০ সালে। ওই বছরের মে মাস থেকে বিমানের পাইলটদের বেতন ২৫ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কাটার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তবে ২০২১ সালের ১৩ জুলাই বিমানের পরিচালক (প্রশাসন) জিয়াউদ্দীন আহমেদের একটি অফিস আদেশে সংস্থাটির সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন কাটার সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়। কিন্তু পাইলটদের বেতন কাটার বিষয়টি বহাল থাকে। এরপর থেকেই ক্ষুব্ধ হন পাইলটরা।
মুক্তা মাহমুদ
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ