দেশজুড়ে
তিন জেলায় পানিতে ডুবে প্রাণ হারালো ৯ শিশু
নোয়াখালী, বরিশাল ও ঠাকুরগাঁওয়ে পানিতে ডুবে ৯ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (৫ জুলাই) আলাদা আলাদা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নোয়াখালী
জেলার কোম্পানীগঞ্জ, কবিরহাট, সুবর্ণচর ও হাতিয়া উপজেলায় পানিতে পড়ে বুধবার দুপুরে দুই বোনসহ ৬টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
নিহতরা হলো, কোম্পানীগঞ্জের চর এলাহী ইউনিয়নের গাংচিল গ্রামের আক্তার হোসেনের ছেলে আবু বক্কর (৩), কবিরহাটের চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের রামেশ্বরপুর গ্রামের আবু নাছেরের ছেলে রিশাদ (৯) ও রিশান (৭), হাতিয়ার নলচিরা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মোহাম্মদ রিয়াজের মেয়ে নিহা আক্তার (৫) এবং সুবর্ণচর উপজেলার থানারহাট এলাকার সহোদর বোন দিয়া মনি ও রিয়া মনি।
কবিরহাটের চাপরাশিরহাট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. মহিউদ্দিন টিটু জানান, দুপুর ১টার দিকে মানসিক প্রতিবন্ধী বড়ভাই রিশাদ পুকুরের ঘাটলায় পা পিছলে পড়ে যায়। এ সময় ছোটভাই রিশান তাকে তুলতে গিয়ে সেও পানিতে ডুবে যায়। এতে দুজনই মারা যায়।
কোম্পানীগঞ্জের চরএলাহী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রাজ্জাক জানান, বাড়ির সবার অগোচরে গাংচিল গ্রামের আক্তার হোসেনের ছেলে আবু বক্কর পানিতে পড়ে মারা যায়।
হাতিয়ার নলচিরা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. মনছুর উল্যাহ জানান, বেলা ১১টার দিকে বাড়ির পাশে খেলতে গিয়ে পানিতে পড়ে যায় শিশু নিহা। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।
পুকুরে ডুবে রিয়া ও দিয়া নামে দুই বোনের মৃত্যুর খবর শুনেছেন জানিয়ে চরজব্বর থানার ওসি দেবপ্রিয় দাশ বলেন, পরিবারের অজান্তে খেলতে গিয়ে বাড়ির পাশের পুকুরে পড়ে যায় শিশু দুটি। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে পুকুর থেকে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক দুজনকেই মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় থানায় কেউ অভিযোগ করেনি। শিশু দুটির পরিবারের সদস্যরা কোনো অভিযোগ করলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এছাড়া, গেলো দুদিনে নোয়াখালীর সুবর্ণচর ও সেনবাগ উপজেলায় পানিতে ডুবে আরও তিন শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
বরিশাল
জেলার মুলাদী ও কাজিরহাট থানায় পুকুর ও নদীতে ডুবে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার বেলা ১১টায় মুলাদীর রামচর গ্রামে ও দুপুর ১২টার দিকে কাজিরহাটের কাদিরবাদ গ্রামে এ দুটি ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলো, মুলাদীর রামচর গ্রামের কায়েজ খলিফার ছেলে আল-হাসিন (৪) ও কাজিরহাটের কাদিরবাদ গ্রামের ইদ্রিস মোল্লার ছেলে মো. ইব্রাহীম (১৬)।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আল হাসিন প্রতিবেশী ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে পুকুরে গোসল করতে নেমে নিখোঁজ হয়। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
অন্যদিকে দুপুর ১২টার দিকে নদীতে গোসল করতে নেমে নিখোঁজ হয় মো. ইব্রাহীম। বিষয়টি তার মা বুঝতে পেরে খবর দিলে স্থানীয় লোকজন ও আত্মীয়রা এসে নদী থেকে তাকে উদ্ধার করে। পরে মুলাদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
খবর পেয়ে মুলাদী থানা পুলিশ মরদেহ দুটি তাদের হেফাজতে নিয়ে নেয়।
ঠাকুরগাঁও
জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় পানিতে ডুবে হাবিব (৬) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
বুধবার দুপুরে উপজেলার বড় পলাশবাড়ী ইউনিয়নের কইকুড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। শিশু হাবিব (৬) ওই উপজেলার বড়বাড়ী ইউনিয়নের ধনিবস্তি গ্রামের আবু সাঈদের বড় ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, ঈদের পরের দিন খালার বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল হাবিব। বুধবার সকালে খেলতে বের হয়ে নিখোঁজ হয় সে। এরপর খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে বাড়ির পাশেই পুকুরের পানিতে ভেসে উঠলে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে হাবিবের চাচা সোহেল রানা জানান, বিকেলে জানাজা শেষে পারিবারিক করবস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।
রাজশাহী
সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে পাবনায় সচেতনতামূলক সমাবেশ
সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও সকল প্রকার সন্ত্রাসী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে পাবনায় সচেতনতামূলক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) দুপুরে পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ বৈষম বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আয়োজনে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় দেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে সচেতনতামূলক বক্তব্য দেন এবং সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করার আহ্বান ও জানান। যাতে কোন অপশক্তি আবারও দেশটাকে অস্থিতিশীল তৈরি করতে না পারে তারও আহ্বান জানান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, এডওয়ার্ড কলেজের উপাধ্যক্ষ আব্দুল আউয়াল, বাংলা বিভাগের শিক্ষক মাহবুব, এডওয়ার্ড কলেজের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক বরকাতুল্লাহ ফাহাদ,স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক সিরাজুল মনিরা,রাব্বি রুহান ও এম এইচ অনিক।
এএম/
ঢাকা
মন্দির পাহারা দিচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থী ও বিএনপির নেতাকর্মীরা
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের তারাবো পৌরসভার আরিয়াব এলাকার সংখ্যালঘুদের মন্দির পাহারা দিচ্ছে শিক্ষার্থীরা ও বিএনপি’র নেতা কর্মীরা।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) সকাল থেকে পৌরসভার আরিয়াব দুর্গা মন্দিরসহ উপজেলার বিভিন্ন মন্দিরে উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থী ও বিএনপি নেতাকর্মীরা মন্দির কমিটির লোকজনদেরকে যে কোনো হামলার প্রতিরোধে আশ্বাস দিচ্ছেন।
তারা জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে এক দফা দাবির পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছাড়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক বিবাদ লাগাতে প্রস্তুত দুষ্কৃতকারী। তাই রূপগঞ্জের সাধারণ শিক্ষার্থী ও বিএনপি নেতাকর্মীরা উদ্যোগ নিয়েছে। যতদিন দেশ শঙ্কামুক্ত না হচ্ছে মন্দির ভাঙচুর প্রতিরোধে আমরা এভাবে পাহারায় থাকব।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী রাকিব ভূঁইয়া বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীরা সবসময় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে, তারই অংশ আজকের এই পাহারা।
তারাবো পৌরসভার বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফ হাসান আরব বলেন, দেশের এই ক্লান্তি লগ্নে কেউ যেন সংখ্যালঘু পরিবারের উপরে হামলা করে দেশকে অস্থিতিশীল করতে না পারে। সেজন্য শিক্ষার্থীদের সাথে বিএনপির নেতাকর্মীরা সবসময় পাহাড়া থাকবে।
এসয়ম উপস্থিত ছিলেন, তারাবো পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের বিএনপি’র সভাপতি আনিসুর রহমান ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক বাবুল শিকদার, সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম সাউথ, সহ-সভাপতি আবুল সাউদ, আলমগীর মীর, যুবদলের সভাপতি ৬ নং ওয়ার্ড মোখলেস সাউথ,মকবুল হোসেন, শিক্ষার্থী হাসান ভূঁইয়া, নীরব মিল্কি, আরিয়ান প্রমূখ।
এএম/
সিলেট
সুনামগঞ্জে ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করছে শিক্ষার্থীরা
সুনামগঞ্জের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়ক থেকে ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কারের কার্যক্রম শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা সড়কে যান চলাচলে শৃঙ্খলা ঠিক রাখতে ট্রাফিকের দায়িত্বও পালন করেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) সকাল থেকে সরেজমিন ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়। এছাড়া সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের গোবিন্দগঞ্জ এলাকায় দীর্ঘ দিনের জমে থাকা ময়লা আবর্জনা পরিস্কারে নামেন সাদা টি শার্ট পরিহিত একটি টিম। গোবিন্দগঞ্জ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবদুল ওয়াহিদ, হেক্সাস গোবিন্দগঞ্জের শিক্ষক রেদ্বওয়ান আহমদসহ অনেক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের দেখা গেছে ওই টিমে।
মহাসড়কের ময়লা-আবর্জনা অপসারণ করতে আসা শিক্ষার্থীরা জানান, কোটা সংস্কারসহ এক দফা দাবিতে সুনামগঞ্জের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের হাজার হাজার শিক্ষার্থী যেভাবে সড়কে নেমে এসেছিল, তেমনি শিক্ষর্থীরা মহাসড়ক থেকে ময়লা-আবর্জনা অপসারণে সড়কে নেমে এসেছেন।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ঝাড়ু দিয়ে মহাসড়ক পরিষ্কার করে ময়লা-আবর্জনা বস্তায় ভরে নির্দিষ্ট ডাম্পিং এরিয়ায় নিয়ে যান। আর তাদের পানি ও শুকনো খাবার দিচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
এলাকাবাসী জানিয়েছেন, সড়ক থেকে ময়লা-আবর্জনা অপসারণের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মহাসড়কে যান চলাচলে শৃঙ্খলা ঠিক রাখতে ট্রাফিক পুলিশের মতো কাজ করছে। সত্যিই এ দৃশ্য অনেক সুন্দর। আমাদের সবাইকে তাদের সাপোর্ট করা উচিৎ। এছাড়াও তারা গতরাতে মন্দির পাহারা দিয়েছে।
এএম/
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন