ক্রিকেট
সিয়ামের লেগ স্পিনার হওয়ার স্বপ্নে বাধা আর্থিক সঙ্কট
সবুজ ঘাসের মাঠে বল ঘুড়াচ্ছে ছিপছিপে এক কিশোর। হঠাৎ বোলিং করতে পিচের দিকে ছুটে গেলো সে। অপর প্রান্তে ব্যাট করছে একজন ব্যাটার। ডানহাতের কাঁধ বাকিয়ে কব্জির মোচড় দিয়ে বল ডেভিভারি তার। বল লেগের দিক থেকে অফের দিকে ঘুরে যায় অনায়সে। অপরিপক্ক পিচে বলের টার্ন দেখলে চোখ ফেরানো মুশকিল। এ-টুকু বয়সেই তার লেগ স্পিন ঘূর্ণিতে কুপোকাত হচ্ছেন ব্যাটাররা। শুনতে গল্পের মতো হলেও এটা বাস্তব সত্য। রীতিমতো বিস্ময় জাগানো স্পিন রহস্য তার। দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা তার মাঝে অজি কিংবদন্তি শেন ওয়ার্নকে খুঁজছেন। কেউ-বা বলছেন, আফগান তারকা রশিদ খানের প্রতিচ্ছবি সে।
এই বিস্ময় বালকের বাড়ি দেশের উত্তরের সবশেষ জেলা কুড়িগ্রামে। তার নাম সামিউল হক সিয়াম। সীমান্তবর্তী ভূরুঙ্গামারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা, দেলোয়ার হোসেন দুলু মাস্টারের ছেলে সে। ভূরুঙ্গামারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ছে সিয়াম। ডানহাতি লেগ স্পিনার হিসেবে ইতোমধ্যে নিজ এলাকা এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বেশ ভাইরাল এই বিস্ময় বালক।
এলাকার মানুষের ভাষ্য, ভালো কোচের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ পেলে সিয়াম লেগ স্পিনার হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতে পারে। খেলার সঙ্গী রাফিক বলে, ‘সিয়াম লেগ স্পিনার হিসেবে খুব ভালো বোলিং করে। ওর বল খেলতে বেশ বেগ পেতে হয়। প্রশিক্ষণ নিলে সে অনেক বড় ক্রিকেটার হতে পারবে।’
মানুষের প্রশংসায় উচ্ছ্বসিত সিয়াম বলে, ‘৭ বছর বয়স থেকে ক্রিকেট খেলি। শেনওয়ার্ন, রশিদ খানের বোলিং দেখে লেগ স্পিনার হবার ইচ্ছে জাগে। স্বপ্ন দেখি ভবিষ্যতে জাতীয় দলে খেলার। সুযোগ পেলে বিশ্বকাপ জয়ে ভূমিকা রাখব।’
দরিদ্র পরিবারের সন্তান সিয়ামের ক্রিকেট খেলার প্রতি আগ্রহ জন্ম নেয় সাত বছর বয়স থেকেই। তার অনুসরনীয় ক্রিকেটার হলেন অস্ট্রেলিয়ার শেনওয়ার্ন। জাতীয় দলে খেলার পাশাপাশি লাল-সবুজ জার্সি গায়ে বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন দেখে এই ক্ষুদে বালক। লেগ স্পিনার হবার সুবাদে এলাকায় বিভিন্ন টুর্নামেন্টে অংশ নেয় সে। জেলা বয়স ভিত্তিক অনুর্ধ্ব-১৪ দলে সুযোগ পেলেও অর্থাভাবে কুড়িগ্রাম স্টেডিয়াম যাওয়া সম্ভব হয় না তার। এরকম শত বাধার মাঝেও এগিয়ে যাচ্ছে সিয়াম। ভালো কোচের অধীনে প্রশিক্ষণ নিতে পারলে দেশের সেরা একজন লেগ স্পিনার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তার মধ্যে।
সিয়ামের বাবা দেলোয়ার হোসেন দুলু বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে সিয়াম ক্রিকেট খেলায় আগ্রহী। আমিও তাকে উৎসাহ দিয়ে আসছি। কিন্তু অস্বচ্ছলতার কারণে ছেলের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে পারিনি। কুড়িগ্রামে অনুর্ধ্ব-১৪ দলে সুযোগ পেলেও টাকার অভাবে তাকে সেখানে পাঠাতে পারিনি।’
বেশির ভাগ সময়েই বল পিচে পড়ার পর ঘুরে অফ সাইডে টার্ন করছে আবার কখনো-বা স্টাম্প উপড়ে ফেলছে। বলের লাইন-লেন্থ নিয়ন্ত্রনের পাশাপাশি বলের টপস্পিন বনাম সাইড স্পিনের পরিমাণে সামঞ্জস্য ঘটাতে পারে এই কিশোর স্পিনার। সিয়ামের বোলিং স্টাইল রীতিমত বিস্ময় সৃর্ষ্টি হয়েছে দেশজুড়ে। স্থানীয় বয়স ভিত্তিক অনুর্ধ্ব-১৪ দলে সুযোগ পাওয়া প্রতিভাবান এই ক্রিকেটারকে, ভালো প্রশিক্ষণ দিতে পারলে ভবিষ্যতে জাতীয় দলেও একসময় লেগ স্পিনারের অভাব ঘুচবে।
কুড়িগ্রাম ক্রীড়া সংস্থার কোচ বিজন কুমার দাস বলেন, 'সিয়ামকে আমি ওর বোলিং অ্যাকশন দেখে বয়সভিত্তিক অনূর্ধ্ব-১৪ দলে ডেকেছি। একজন খেলোয়াড় হিসেবে স্মার্টনেস, বোলিং কৌশলে গ্রামের ছেলে হিসেবে কিছুটা দুর্বলতা আছে। এটা থাকা স্বাভাবিক। তবে সিয়ামকে ভালো প্রশিক্ষণ দেয়া গেলে দেশের লেগ স্পিনারের ঘাটতি পূরণে ভূমিকা রাখতে পারবে।'
মেধাবী এ কিশোরের বড় বাঁধা আর্থিক টানাপোড়েন। তাকে সহযোগিতা করতে স্থানীয় ক্রীড়া সংস্থা এগিয়ে এলেও তা অপ্রতুল। কুড়িগ্রাম ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সাইদ হাসান লোবান বলেন, 'সিয়ামের বিষয়টি সামাজিক মাধ্যমে জানতে পেরেছি। পারিবারিক অস্বচ্ছলতার কারণে সে এখানে আসতে পারেনি। তবে আসলে আমার পক্ষ থেকে তার থাকার ব্যবস্থা ও খেলার সরঞ্জামাদি দিয়ে সহযোগিতা করতে পারি।’
কিশোর সিয়াম এখন আলোচনায় তার স্পিন ভেল্কিতে। দেশের লেগ স্পিনার ঘাটতি দূর করতে অপার সম্ভবনাময় এই ক্রিকেটার শতবাধা পেড়িয়ে স্বপ্ন পূরনের পথে কতোদূর এগিয়ে যাবে তা নিয়ে ভাবনায় স্বজন ও শুভাকাঙ্খীরা।
হাসিব মোহাম্মদ
ক্রিকেট
ক্রিকেট বোর্ডে পরিবর্তন প্রসঙ্গে যা বললেন বিজয়
পাকিস্তান ‘এ’ দলের বিপক্ষে সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ ‘এ’ দল। এছাড়াও বাংলাদেশ জাতীয় দলের সফর আছে একই সময়ে। বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) গণমাধ্যমের সাথে কথা বলেছেন এনামুল হক বিজয়।
বিজয় বাংলাদেশ ‘এ’ দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করবেন। বর্তমানে দেশের পরিস্থিতি কিছুটা অস্থির। সোমবার (৫ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। এরপর থেকে দেশের বিভিন্ন স্তরে পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে, কিছু জায়গায় পরিবর্তনের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে।
বিসিবির বিভিন্ন জায়গায় পরিবর্তনের দাবিও তোলা হয়েছে। এমনকি ক্রিকেটারদের মধ্যে ইমরুল কায়েস ও রুবেল হোসেনও এই প্রসঙ্গে ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। দলে সুযোগ পাওয়া বা না পাওয়া নিয়ে এনামুল হক বলেন, ‘এটা তো হতেই থাকবে। এটা আপনিও কখনো বলতে পারবেন না যে আপনার সঙ্গে হয়নি। এটা হতেই থাকে। তারপরও এটা সামনে যত কম হয় সেই আশা আমরা করবো।’
বোর্ডের বিভিন্ন স্তরে পরিবর্তনের কথা অনেকেই উচ্চারণ করেছেন শেখ হাসিনা চলে যাওয়ার পরপর। এই পরিবর্তন প্রসঙ্গে এনামুল হক বলেন,
‘আমার কাছে মনে হয় এটার (ক্রিকেট বোর্ড) বড় আলোচনা জরুরী। দুজন একজনের কথায় আসলে এটা হবে না। ব্যক্তিগতভাবে বললে, আমি চাই বড় গ্রুপ যারা আমরা সবাই ক্রিকেট নিয়ে কাজ করি তারা একত্রে বসে আলোচনা করে এটা করা। যারা ক্রিকেট খেলেছি, কেউ খেলেছে বা সামনে কেউ খেলবে। বড় ধরনের আলোচনা দরকার। যার যেটা প্রয়োজন সেটা তারা বলবে। যেখানে যে আছে।’
এম এইচ//
ক্রিকেট
পাকিস্তানের টেস্ট দলে এইচপি কোচ হলেন টিম নিলসন
টিম নিলসনকে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) নতুন হাই পারফরম্যান্স (এইচপি) কোচ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ সামনে রেখে এই নিয়োগ দিয়েছে পাকিস্তান বোর্ড।
পাকিস্তানের লাল বলের ক্রিকেটে দায়িত্বে আছেন জেসন গিলেস্পি। যার কোচিং স্টাফে যুক্ত হতে যাচ্ছেন টিম নিলসন। ইতোমধ্যে এই দুই কোচ পাকিস্তান শাহীন’স এ দলের ট্রেনিং ক্যাম্প পর্যবেক্ষণ করেছেন।
বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ সামনে রেখে আগস্টের ১১ তারিখ থেকে শুরু হতে যাচ্ছে পাকিস্তানের ট্রেনিং ক্যাম্প। রাওয়ালপিন্ডিতে দুই দল প্রথম ম্যাচটি খেলবে আগস্টের ২১ থেকে ২৫ তারিখ। আর দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচটি দুই দল খেলবে আগস্টের ৩০ থেকে সেপ্টেম্বরের ৩ তারিখ পর্যন্ত।
সাউথ অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটে গিলেস্পির সাথে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে নিলসনের। সবমিলিয়ে তার অভিজ্ঞতার ঝুলি বেশ ভারী।
সম্প্রতি পিসিবি বাংলাদেশ সিরিজের জন্য স্কোয়াড ঘোষণা করেছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের বিপক্ষে খেলার জন্যেও দল ঘোষণা করেছে পাকিস্তান শাহীন’স।
এম এইচ//
ক্রিকেট
দুই মাসের ছুটি চান অলরাউন্ডার সাইফউদ্দিন
বাংলাদেশ ‘এ’ দলের পাকিস্তান সফর থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। মানসিকভাবে বেশ ভেঙে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। এই প্রেক্ষিতে সকল ধরনের ক্রিকেট থেকে ২ মাসের ছুটি চেয়েছেন তিনি।
পাকিস্তান ‘এ’ দলের বিপক্ষে চারদিনের দুই ম্যাচের সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ, পাশাপাশি ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের দলে ছিলেন সাইফউদ্দিন। এই মাসের শুরুতে একজন নির্বাচক ইমেইল করেন এই অলরাউন্ডার। এরপর জানিয়ে দেন, তিনি ক্রিকেট থেকে আপাতত বিরতি নিতে চান এবং তা দুই মাসের জন্য।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের একজন কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
জুনে অনুষ্ঠিত আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে যুক্ত হতে না পারা এবং গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি খেলতে কানাডায় যেতে না পারা- সাইফউদ্দিনের জন্য বেশ হতাশার ছিল। এসব কারণেই তিনি আগামী ২ মাস সব ধরনের ক্রিকেট থেকে নিজেকে দূরে রাখতে চান। এই সিদ্ধান্তকে ইতিবাচকভাবে দেখার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
গত মে মাসে, বাংলাদেশের হয়ে সবশেষ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলেছিলেন সাইফউদ্দিন।
এম এইচ//