জাতীয়
অধরার মামলা প্রত্যাহার করে ভণ্ড পীরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে
আরটিভির সাংবাদিক অধরা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে রাজারবাগ পীর সিন্ডিকেটের দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (১৪ জুলাই) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে সার্ক ফোয়ারা প্রাঙ্গণে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। ‘গণমাধ্যমকর্মী’ ব্যানারে মানববন্ধনটি আয়োজন করা হয়।
মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে অনেক কথা হয়েছে, অনেক প্রতিবাদ হয়েছে। অনেক বাদানুবাদ হয়েছে। আমাদের সামনে সরকারের পক্ষ থেকে একটি মূলা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। মূলাটা কি? মাননীয় মন্ত্রী বলেন সংশোধিত হবে, যেদিন সংসদে উত্থাপন হল, সেদিন মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার সাহেব সংসদে মিথ্যাচার করেছেন। যখন সাংবাদিকদের উপর নির্যাতন করা হয় তখন আইনমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, কোথাও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা হলে তিনি নিজেই একজন আইনজীবী হিসেবে সেই মামলা পরিচালনা করবেন। আজ পর্যন্ত তাকে একটি মামলাও পরিচালনা করতে দেখিনি।
তিনি আরও বলেন, আজ থেকে পাঁচদিন আগে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন যে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম সর্বোচ্চ স্বাধীনতা ভোগ করছে, তথ্যমন্ত্রীও এর পরের দিন একই কথা বলেছেন। আমরা অবশ্যই তা স্বীকার করছি। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম স্বাধীনতা ভোগ করছে এই অর্থে, একটি বা দুটি নয় এখন ৪০টির কাছাকাছি ইলেকট্রনিক চ্যানেল। সংখ্যার দিক থেকে সংবাদপত্র বা টেলিভিশনের স্বাধীনতা এসেছে, কিন্তু গুণের দিক থেকে সংবাদের দিক থেকে এখনো আমরা সংকোচন নীতিতে আছি।
সোহেল হায়দার চৌধুরী বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে এটি সংশোধন করা হবে। কিন্তু সংসদে যারা অংশীদার আছে তাদেরকে কি ডাকা হয়েছে? তাদেরকে কি বলা হয়েছে? কোন কোন ধারাগুলো সংশোধন করলে সাংবাদিক বিবর্তনমূলক ধারা বাতিল হবে? অথবা তোমরা খুশি হবে। তোমাদের পেশার নিরাপত্তা থাকবে। বরং আমরা দেখছি যখনই সংশোধনের কথা বলা হচ্ছে তখন একের পর এক মামলা হচ্ছে। মোরা চাই অধরা ইয়াসমিনের এই মামলা প্রত্যাহার করা হবে, অথবা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বাতিল এবং অগ্রহণযোগ্য ঘোষণা করে বিবৃতি প্রকাশ করবে।
ডিজিটাল আইন বাতিলের দাবি করে মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সরকার বলছে ডিজিটাল আইন সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে না, কিন্তু এখন দেখা যায় প্রতিদিনই ডিজিটাল আইনে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে। অধরা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে আইনের মামলাটি প্রত্যাহার করতে হবে। শুধু মামলা প্রত্যাহার করলে হবে না, এই ভণ্ড পীরের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে হবে।
বক্তারা আরও বলেন, নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল আইনের মামলার সংখ্যা তত বাড়তে থাকবে। আমরা প্রশাসনের সহযোগিতা চাই, আমরা প্রশাসনের সহায়ক শক্তি। মন্ত্রীরা বলছে- সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা নিতে হলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। কিন্তু সেটি না করে পুলিশ মামলা নিচ্ছে। এটা নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে একটু খেলা করা হচ্ছে। আপনারা সরাসরি বলে দেন সাংবাদিকরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে নিউজ করবে না।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন- ঢাকা রিপোর্টার ইউনিটির সভাপতি মোরসালিন নোমানী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক জিহাদুর রহমান জিহাদ, ঢাকা রিপোর্টার ইউনিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, ঢাকা রিপোর্টার ইউনিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শুক্কুর আলী শুভ, নুরুল ইসলাম হাসিব, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহনাজ শারমীন, জামিউল আহসান সিপু, রিপোর্টার এগ্রেইনস্ট করাপশন-(র্যাক) সাধারণ সম্পাদক জেমসন মাহবুব, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক নির্বাহী সদস্য গোলাম মুজতবা ধ্রুব, সাব-এডিটর কাউন্সিলের সাবেক সভাপতি নাসিমা আক্তার সোমা, বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনের প্রচার সম্পাদক এসএম ফয়েজ, ঢাকা রিপোর্টার ইউনিটির সাবেক নারী বিষয়ক সম্পাদক তাপসী রাবেয়া আঁখি, সাবেক কার্যনির্বাহী সদস্য হাসান জাবেদ, আরটিভির সিনিয়র রিপোর্টার সাইফুল ইসলাম উজ্জ্বল প্রমুখ।
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন