এশিয়া
উত্তর ভারতে বন্যা, এ পর্যন্ত ১৪৫ জনের প্রাণহানি
৬ দিন ধরে নজিরবিহীন বর্ষণ ও তার জেরে সৃষ্ট বন্যা-ভূমিধসে ব্যাপক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে উত্তর ভারত। গত চার দিনের ভারী বর্ষণ-বন্যা-ভূমিধসে ভারতের এই অংশের বিভিন্ন রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ১৪৫ জনের।
শনিবার (১৫ জুলাই) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
ভারতের কেন্দ্রীয় দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ঘটেছে হিমাচল রাজ্যে। উত্তর ভারতের হিমালয় পর্বতমালা ঘেঁষা এই রাজ্যটিতে গত কয়েক দিনে বর্ষণ-বন্যা-ভূমিধসে মারা গেছেন ৯১ জন। এছাড়া একই কারণে উত্তরপ্রদেশে ১৪ জন, উত্তরাখণ্ডে ১৬ জন, পাঞ্জাবে ১১ জন এবং হরিয়ানায় ১৬ জন মারা গেছেন।
রাজধানী নয়াদিল্লির অবস্থাও বেহাল। অতিবর্ষণজনিত কারণে যমুনা নদীর পানি উপচে পড়ে ঢুকে পড়েছে শহরের ভেতর। একই সময়ে প্রধান কয়েকটি পানি নিষ্কাশন নালা বা ড্রেনেজ ব্যবস্থার ধসে পড়ায় ব্যাপক পরিস্থিতিকে আরও বিপর্যয়কর করে তুলেছে। বৃহস্পতিবার দিল্লির বিভিন্ন এলাকায় বন্যার পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে তিন শিশুর। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল সেনার সাহায্য চেয়েছেন।
উত্তর ভারতের হিমালয় পর্বতমালা ঘেঁষা অপর রাজ্য উত্তরাখণ্ডে ১৭ জুলাই পর্যন্ত ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তর (আইএমডি)। দপ্তরের উত্তরাখণ্ড শাখা কার্যালয়ের প্রধান বিক্রম সিংহ ইন্ডিয়া টুডেকে বলেন, ‘রাজ্যের হরিদ্বার, পাউরি ও গাঢ়োয়ালে বৃষ্টির প্রভাব সব থেকে বেশি পড়তে পারে। ১৬ জুলাই রবিবার বৃষ্টির তীব্রতা বাড়তে পারে। মানুষকে আরও সতর্ক থাকতে হবে।’
বিক্রম সিংহ আরও জানান, বুধবার উত্তরাখণ্ডের রুরকিতে ৩০০ মিলিমিটার, হরিদ্বারের কাছে লাকসারে ২২০ মিলিমিটার এবং পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের সম্ভলে ২১২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া বুধবার রুদ্রপ্রয়াগে বৃষ্টি হয়েছে ১০০ মিলিমিটার।
গত ৮ জুলাই থেকে টানা বৃষ্টি শুরু হয়েছে উত্তর ও উত্তরপূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোতে। এর মধ্যে উত্তরাখণ্ড, হরিয়ানা, হিমাচল প্রদেশে এখনই থামছেই না বৃষ্টি। আইএমডির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের আবহাওয়াবিদ সুরেন্দ্র পাল দৈনিক আনন্দবাজারকে বলেন, ‘বৃষ্টির তীব্রতা আগের থেকে কমেছে। তবে এখনও থামেনি। প্রবল বৃষ্টির কারণে ইতিমধ্যে মাটি এতটাই নরম হয়ে উঠেছে যে, তার পানিধারণ ক্ষমতা কমে গিয়েছে। সে কারণে বিশেষত পাহাড়ি এলাকাগুলোতে বন্যা এবং ধসের সম্ভাবনা আরও বাড়ছে।’
গেলো ছয়দিনের বৃষ্টিতে ইতোমধ্যে দিল্লির লালকেল্লা, রাজঘাট জলমগ্ন। পানি ঢুকেছে সুপ্রিম কোর্টেও। বন্যার কারণে ১৬ জুলাই রোববার পর্যন্ত বন্ধ দিল্লির সব স্কুল বন্ধ ঘোষণা করেছে রাজ্যসরকার। শুক্রবারও দিল্লি এবং আশপাশের এলাকায় হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে আইএমডি।
মহারাষ্ট্রের রাজধানী মুম্বাইয়েও বৃষ্টি শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে শহরে অনেক এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে।
বন্যাজনিত কারণে হিমাচলের লাহৌল, স্পিতিতে পাঁচ দিন আটকে থাকার পর বৃহস্পতিবার উদ্ধার করা হয়েছে ২৫৬ জন পর্যটককে। এছাড়া রাজ্যের সাংলা এবং কিন্নরে আটকে থাকা ১০০ জন পর্যটককে হেলিকপ্টারে করে তুলে আনা হয়েছে।
আইএমডির তথ্য অনুযায়ী, ১৭ জুলাই থেকে আবার মধ্যপ্রদেশে বৃষ্টি বাড়তে পারে। এত পূ্র্বাভাসে আইএমডি জানিয়েছে, ১৬ জুলাই উত্তর পশ্চিম বঙ্গোপসাগর নিম্নচাপ শুরু হতে পারে। সেই সঙ্গে নতুন করে পশ্চিমী ঝঞ্ঝার কারণে আগামী দিনে হিমালয়ের পার্বত্য অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমান আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
এশিয়া
শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর যা বললেন পুতুল
ছাত্র-জনতার ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন শেখ হাসিনা। দেশে গঠিত হচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে মায়ের পদত্যাগ ও দেশত্যাগ নিয়ে এবার মুখ খুলেছেন মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। জানিয়েছেন তার প্রতিক্রিয়া।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে যেতে বাধ্য হওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে এ বিষয়ে আবেগঘন পোস্ট দিয়েছেন মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল।
পোস্টে তিনি লিখেছেন, আমার দেশ বাংলাদেশ যাকে আমি ভালোবাসি, সেখানে প্রাণহানির ঘটনায় হৃদয় ভেঙে গেছে। আরও হৃদয়বিদারক যে, আমি এই কঠিন সময়ে আমার মাকে দেখতে ও আলিঙ্গন করতে পারিনি। আমি আরডি হিসেবে আমার দায়িত্ব পালনের বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছি।
প্রসঙ্গত, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল বর্তমানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে দায়িত্বপালন করছেন।
জিএমএম/
এশিয়া
ভারতীয় গণমাধ্যম বাংলাদেশ নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে: পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের স্থানীয় গণমাধ্যমে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। জানিয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। এ ব্যাপারে রাজ্যের বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এ আহ্বান জানানো হয়।
পোস্টে বলা হয়, কিছু স্থানীয় টিভি চ্যানেলে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে যেভাবে রিপোর্টিং হচ্ছে, তা খুবই দৃষ্টিকটুভাবে সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক এবং ভারতের প্রেস কাউন্সিলের নিয়মাবলীর পরিপন্থী। দর্শকদের অনুরোধ, এই ধরনের কভারেজ দেখার সময় নিজস্ব বিচারবিবেচনা প্রয়োগ করুন এবং মাথায় রাখুন যে, চ্যানেলের দেখানো ফুটেজের সত্যতা কিন্তু কোনও নিরপেক্ষ তৃতীয় সংস্থা দিয়ে যাচাই করা নয়। একতরফা বিদ্বেষমূলক এবং বিভ্রান্তিকর প্রচারের ফাঁদে পা দেবেন না। শান্ত থাকুন, শান্তি বজায় রাখুন।
সোমবার (৫ আগস্ট) পদত্যাগ করে ভারত চলে যান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকেই ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলার মিথ্যা তথ্য ছড়ানো শুরু করে।
এমনকি বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় লিটন দাসের বাড়িতে হামলা হয়েছে বলে খবর বের হয়। পরে জানা যায়, মাশরাফির বাড়িতে হামলার ভিডিও ব্যবহার করে সেটি লিটন দাসের বাড়ি বলে গুজব ছড়ানো হয়েছে।
জিএমএম/
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন