খুলনা
শিক্ষকের থাপ্পড়ে স্কুলছাত্রের মৃত্যু, গ্রেপ্তার ৪ শিক্ষক
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে শিক্ষকের থাপ্পড়ে স্কুলছাত্র নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় পাঁচ শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। স্কুল প্রাঙ্গণ থেকে চারজন শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত শিক্ষকদের জেল হাজতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
গ্রেপ্তারকৃত চারজন শিক্ষক হলেন, নলতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোনায়েম পাড়, সহকারী প্রধান শিক্ষক মুহিদ, হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অবকাশ খাঁ, অপর শিক্ষক হলেন শীতার্থ। পলাতক রয়েছেন মনিরুল ইসলাম।
সোমবার (১৭ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মৃত স্কুলছাত্রের বাবা দিনু চন্দ্র বাদী হয়ে পাঁচ শিক্ষকের বিরুদ্ধে কালিগঞ্জ থানায় দায়ের করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন কালিগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন রহমান।
তিনি বলেন, আটককৃত শিক্ষকদের মধ্যে একজন স্বীকারোক্তি দিয়েছেন মৃত ওই শিক্ষার্থীকে তিনি কয়েকটা চড় থাপ্পড় মেরেছিলেন, তবে কোনো প্রকার লাঠিচার্জ করেননি।
এর আগে রোববার (১৬ জুলাই) রাতে ওসি মামুন রহমান বলেন, বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ ও অফিস কক্ষের জিনিসপত্র ভাঙচুর করেছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়েছে। নিহত স্কুলছাত্রের মরদেহ ময়নাতদন্তে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। এই ঘটনায় প্রধান শিক্ষকসহ চারজন শিক্ষককে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, রোববার দুপুরে কালিগঞ্জের নলতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকের চড় থাপ্পড়ে প্রতাপ চন্দ্র দাশ নামে নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
নিহতের বিষয়টি জানাজানি হলে শিক্ষার্থীরা মৃত ছাত্রের মরদেহ স্কুল প্রাঙ্গনে নিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় স্কুলের অফিস কক্ষসহ বিদ্যালয়ের বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। শিক্ষকদের অফিস কক্ষে অবরুদ্ধ করে অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তি দাবি জানায় নিহতের সহপাঠীরা। এ সময় শিক্ষকদের একটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়ার পাশাপাশি সাতটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে তারা।
রোববার বিকেলে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা জানায়, সহপাঠীর জন্মদিন উপলক্ষ্যে স্কুলের ছাদে কেক কাটে প্রতাপ চন্দ্র দাশসহ কয়েকজন শিক্ষার্থীরা। কেক কাটার পরে শিক্ষার্থীরা টিকটক ভিডিও তৈরি করছিল। বিষয়টি নজরে পড়ে সহকারী শিক্ষক অবকাশ খাঁর। তিনি সেখানে গিয়ে শিক্ষার্থীদের নিষেধ করার এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে যায়। এ সময় শিক্ষক শিক্ষার্থীদের চড় কিল ঘুষি মারেন। এর পরপরই বাড়ি চলে যায় প্রতাপসহ তার বন্ধুরা। বাড়িতে গিয়ে বমি শুরু হয় প্রতাপের। এ সময় পরিবারের সদস্যরা স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
খুলনা
কুষ্টিয়া কারাগার থেকে পালাল অর্ধশতাধিক আসামি
কুষ্টিয়া জেলা কারাগার থেকে অন্তত অর্ধশতাধিক আসামি পালিয়েছে গেছেন বলে জানা গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শতাধিক রাউন্ড গুলি ছোড়েন কারারক্ষীরা। এ ঘটনায় অন্তত ১৫ জন কারারক্ষী আহত হয়েছেন।
বুধবার (৭ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে এই ঘটনার পর সেনাসদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন।
তবে জেলা প্রশাসক এহেতেশাম রেজা গণমাধ্যমে বলছেন, ১২-১৩ জনের মতো আসামি পালিয়েছেন। পলাতকদের তালিকা করার পর বিস্তারিত জানানো যাবে।
কারা সূত্রে জানা গেছে, কুষ্টিয়া বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী জামিন পান। দুপুর আড়াইটার দিকে বের হওয়ার কথা ছিল। তাদের সঙ্গে বের হতে হট্টগোল শুরু করেন কারাবন্দীরা। এ সময় কারারক্ষীরাও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গুলি চালান। তবে এর আগেই অর্ধশত আসামি পালিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কুষ্টিয়া কারাগারের জেলার আবু মুসা গণমাধ্যমে জানান, কারাগার থেকে ঠিক কত জন কয়েদি পালিয়ে গেছে তা সঠিক হিসাব জানা যায়নি।
এএম/
খুলনা
মাগুরায় ছাত্রদল নেতা নিহত, আহত ১০
কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিনে মাগুরা শহরের ঢাকা রোড়ে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় জেলা শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক মেহেদী হাসান রাব্বী নিহত হয়েছেন। এছাড়াও আহত হয়েছেন পুলিশের তিন সদস্যসহ ১০ জন।
রোববার সকাল ১১টার দিকে এ সংঘর্ষে ঘটে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সকাল ১১টার দিকে পারনান্দুয়ালী এলাকা থেকে বিএনপি একটি মিছিল নিয়ে শহরে ঢুকতে গেলে পুলিশি বাধার সম্মুখিন হয়। ঘটনাস্থলে বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর ইট পাটকেট নিক্ষেপ করে। এ সময় পুলিশ তাদের ধাওয়া করে রাবার বুলেট নিক্ষেপ ও গুলি করলে জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক মেহেদেী হাসান রাব্বী নিহত হন।
জেলা শাখা ছাত্রদলের সভাপতি আব্দুর রহিম গণমাধ্যমকে জানান, ‘রাব্বি পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে। তার বুকে গুলি লেগেছে।’
মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আমর প্রশাদ বিশ্বাস জানান, আহত তিন পুলিশ সদস্যসহ ১০ জনকে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জেডএস/
খুলনা
কনস্টেবল সুমন হত্যায় মামলা, অজ্ঞাত পরিচয়ে আসামি ১২০০
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় খুলনায় পুলিশ কনস্টেবল সুমন ঘরামী হত্যার ঘটনায় অজ্ঞাত পরিচয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
লবণচরা থানার এসআই মোস্তফা সাকলাইন বাদী হয়ে শুক্রবার (২ আগস্ট) রাতে লবণচরা থানায় মামলাটি করেন। মামলায় অজ্ঞাত পরিচয় ১ হাজার ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলায় এখনও কেউ গ্রেপ্তার নেই বলে জানান লবণচরা থানার ওসি মমতাজুল হক।
এছাড়া কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে শুক্রবার বিকেলে ভাঙচুর ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে খুলনা সদর ও সোনাডাঙ্গা থানায় আলাদা দুটি মামলা হয়েছে।
নিহত সুমন ঘরামীর বাড়ি বাগেরহাট জেলার কচুয়া উপজেলায়। স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন নগরীর বয়রা এলাকায়। তিনি খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সোনাডাঙ্গা জোনের সহকারী কমিশনার সৌমেন বিশ্বাসের দেহরক্ষী ছিলেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় খুলনার মোহাম্মদনগর এলাকায় পিটুনিতে নিহত হন তিনি। সমুনের স্ত্রী মিতু বিশ্বাস। তাদের ৬ বছর বয়সি স্নিগ্ধা নামে এক মেয়ে রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের উদ্ধৃত্তি দিয় পুলিশ জানায়, বিকেলে খুলনায় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত এ সংঘর্ষ চলে। সন্ধ্যার পরে আবার সোনাডাঙ্গা এলাকায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন দেয় বিক্ষোভকারীরা।
সংঘর্ষের এ ঘটনায় পুলিশ কনস্টেবল সুমন গুরুতর আহত হন। পরে রাতে খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। জানা গেছে, এ ঘটনায় আহত হয়েছেন পুলিশের আরও ৩০ সদস্য।
এসি//
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন