বিএনপি
বিএনপি ও সমমনা দলের পদযাত্রার রোডম্যাপ
সরকারের পদত্যাগসহ নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার একদফা দাবিতে দেয়া কর্মসূচি আজ মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) শুরু করতে যাচ্ছে বিএনপি। দাবি আদায়ে দেয়া দুদিনের পদযাত্রার কর্মসূচির প্রথম দিন আজ মাঠে নামছে বিএনপি। একই দাবিতে মাঠে নামছে সমমনা দল ও জোটগুলো।
আজ গাবতলী থেকে রায়সাহেব বাজার মোড় পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার পদযাত্রা করবে দলটি। সুশৃঙ্খলভাবে কর্মসূচি পালনে দলটি গঠন করেছে ‘শৃঙ্খলা টিম’।
আগামীকাল বুধবারও একই কর্মসূচি পালন করবে দলটি। বিএনপির এ কর্মসূচির প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করেছে সমমনা দলগুলো। অর্থাৎ তারা পৃথকভাবে এই কর্মসূচি পালন করবে বলে জানা গেছে।
বিএনপির রোডম্যাপ অনুযায়ী গাবতলী-টেকনিক্যাল মোড়-মিরপুর (১)-মিরপুর (১০) গোলচত্বর- কাজীপাড়া-শেওড়াপাড়া-তালতলা (আগারগাঁও)-বিজয় সরণি-কাওরান বাজার-এফডিসি-মগবাজার-মালিবাগ-কাকরাইল-নয়াপল্টন (পার্টি অফিস)- ফকিরাপুল-মতিঝিল (শাপলা চত্বর)-ইত্তেফাক মোড়-দয়াগঞ্জ হয়ে রায়সাহেব বাজার মোড় (বাহাদুর পার্ক) হবে এ পদযাত্রা।
একদফা দাবিতে বুধবার (১৯ জুলাই) শুধু ঢাকা মহানগরে পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি। এদিন সকাল ১০টায় আব্দুল্লাহপুর থেকে শুরু করবে, যা যাত্রাবাড়ী (চৌরাস্তা) পর্যন্ত গিয়ে শেষ হবে।
ছয় ঘণ্টার এ কর্মসূচি আব্দুল্লাহপুর থেকে শুরু করবে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি। রামপুরা ব্রিজে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি যুক্ত হবে। রোডম্যাপ অনুযায়ী আব্দুল্লাহপুর- বিমানবন্দর-কুড়িল বিশ্বরোড-নতুন বাজার-বাড্ডা-রামপুরা ব্রিজ-আবুল হোটেল-খিলগাঁও-বাসাবো-মুগদাপাড়া-সায়েদাবাদ হয়ে যাত্রাবাড়ী (চৌরাস্তা) পর্যন্ত।
নয় স্পট থেকে পদযাত্রা করবে সমমনা দলগুলো: একই দাবিতে রাজধানীর আরও নয় স্পট থেকে পদযাত্রা বের করবে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা সমমনা দল ও জোটগুলো। কর্মসূচি সফলে তারাও ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে।
সকাল ১১টায় মিরপুর-১২ নম্বর থেকে কর্মসূচি শুরু করবে ৬ দলীয় এই জোট। এতে জোটের শীর্ষ নেতারাও অংশ নেবেন। মঞ্চের অন্যতম নেতা বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক জানান, তাদের পদযাত্রা আগারগাঁওয়ে গিয়ে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। আশা করছি এতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সাধারণ জনগণও অংশ নেবে।
একদফা দাবিতে মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটায় কাকরাইল মোড় থেকে পদযাত্রা শুরু করবে ১২ দলীয় জোট। মতিঝিল শাপলা চত্বর পর্যন্ত পদযাত্রা হবে। বুধবার বিকাল ৩টায় কমলাপুর স্টেডিয়াম থেকে যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা পর্যন্ত পদযাত্রা করবে এই জোট।
একই দাবিতে সকাল ১১টায় পূর্বপান্থপথস্থ এফডিসিসংলগ্ন এলডিপির কার্যালয়ের সামনে থেকে পদযাত্রা শুরু করবে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)। পদযাত্রাটি মগবাজার, মালিবাগ, কাকরাইল, নয়াপল্টন হয়ে মতিঝিলে গিয়ে শেষ হবে। বুধবার সকাল ১১টায় রাজধানীর একই স্থান থেকে পদযাত্রা শুরু করে মগবাজার, মালিবাগ রেলগেট, খিলগাঁও হয়ে যাত্রাবাড়ী গিয়ে শেষ করবে দলটি।
দুপুর ১২টা থেকে বিজয়নগর থেকে পদযাত্রা শুরু করবে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট। পদযাত্রাটি কাকরাইল-নয়াপল্টন-ফাকিরাপুল-মতিঝিল-ইত্তেফাক মোড়, দয়াগঞ্জ হয়ে রায়সাহেব মোড়ে গিয়ে শেষ হবে। বুধবার এই জোট একই কর্মসূচি পালন করবে। কমলাপুর স্টেডিয়াম থেকে পদযাত্রা শুরু করে সায়েদাবাদ হয়ে যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তায় গিয়ে শেষ করবে।
এছাড়া মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে পদযাত্রা শুরু করবে ড. রেজা কিবরিয়া নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদ। পৃথকভাবে পদযাত্রা করবে নুরুল হক নুর নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদ। তারা বিকাল ৪টায় পুরানা পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু করে মগবাজার, কাওরান বাজার হয়ে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন পর্যন্ত গিয়ে শেষ করবে।
সকাল সাড়ে ১০টায় পুরানা পল্টন থেকে শুরু করে দৈনিক বাংলা- মতিঝিল হয়ে টিকাটুলী পর্যন্ত পদযাত্রা করবে বাংলাদেশ লেবার পার্টি। গণফোরাম চত্বর থেকে বিকাল ৩টায় শুরু করে জাতীয় প্রেস ক্লাব পর্যন্ত পদযাত্রা করবে গণফোরাম (একাংশ) ও বাংলাদেশ পিপলস পার্টি। এছাড়া সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় প্রেস ক্লাব থেকে পদযাত্রা শুরু করে শাহবাগ হয়ে ধানমন্ডি গিয়ে শেষ করবে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য জোট।
বিএনপি
অন্তর্বর্তী সরকারকে অভিনন্দন জানালেন তারেক রহমান
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের জন্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং তার সহযোগী উপদেষ্টাদের অভিনন্দন জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপাসন তারেক রহমান। বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাত ১২টা ১২ মিনিটে নিজের ফেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এ অভিনন্দন জানান।
অভিনন্দন বার্তায় তারেক রহমান লিখেছেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের জন্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং তার সহযোগী উপদেষ্টাদের অভিনন্দন। যদি পেছনে ফিরে তাকাই গেলো ১৬ বছর ধরে শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী শাসনামলে বাংলাদেশের মানুষ ব্যাপক অধিকার লঙ্ঘন ও অবিচারের সম্মুখীন হওয়ার পর এই মুহুর্তটি এসেছে। আমাদের সাহসী ছাত্র-শিক্ষক, কর্মী, রিকশাচালক থেকে শুরু করে গৃহিণী, সাধারণ নাগরিক এবং রাজনৈতিক কর্মী- সমস্ত গণতন্ত্রপ্রেমী মানুষ ব্যাপকভাবে কোটা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছে
তিনি বলেন, এই বিক্ষোভ শুধু কোটা সংস্কার নিয়ে নয়, নজিরবিহীন দুর্নীতি, মূল্যস্ফীতি, বেকারত্ব, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা দমন-পীড়ন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান। আওয়ামী লীগের শাসনামলে অন্যায়ের মাত্রা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছিল।
নতুন সরকারের কাছে জনগণের প্রত্যাশার কথা তুলে ধরে বিএনপির এই নেতা বলেন, সেই শাসনের পতনের সাথে সাথে বাংলাদেশের জনগণ অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য স্বাধীনভাবে ভোটাধিকারের প্রত্যাশা করে যেন তারা তাদের গণতান্ত্রিক আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটাতে পারে।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশে বিএনপির অবস্থা তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, বিএনপি একটি পাবলিক ম্যান্ডেটসহ একটি নির্বাচিত সরকার গঠন এবং জনগণের সেবা করে একটি জবাবদিহিমূলক সংসদ, জনগণের অধিকার ও স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার এবং এর ফলে আইনের শাসন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠাকে সমর্থন করে।
উল্লেখ্য, নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়েছে। বঙ্গভবনের দরবার হলে বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে শপথ নিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টারা। প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে প্রথমে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন। এরপর বাকি ১৬ উপদেষ্টার মধ্যে ১৩ জন শপথ পাঠ করেন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুকী আযম।
জেএইচ
বিএনপি
ছাত্র-জনতার সমর্থনেই ড. ইউনূসকে সরকারের প্রধান করা হয়েছে: ফখরুল
ছাত্র-জনতার সমর্থনেই ড. ইউনূসকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান করা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নিতে যাওয়া নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে দেশে চলমান সহিংসতা ও সংকট কেটে যাবে। বলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে আহত নেতাকর্মীদের দেখতে রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় আবেগপ্লুত মির্জা ফখরুল বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতদের যে দৃশ্য দেখেছি তা সহ্য করার মতো না।
নতুন সরকার দেশে দ্রুত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করবে আশা প্রকাশ করে ফখরুল বলেন, অর্থনীতিকে সচল রাখার দ্রুত উদ্যোগ নিবে সরকার। অন্তবর্তীকালীন সরকার দেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করার কথা জানান তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ছাত্র ও আমাদের মনোনীত ব্যক্তি ড. ইউনূস। তার সফল নেতৃত্বে চলমান সহিংসতা ও সংকট কেটে যাবে বলে বিশ্বাস করি।
এএম/
বিএনপি
নির্বাচন আয়োজনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহায়তা করবে বিএনপি : ফখরুল
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে তিন মাসের মধ্যে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এসময়ে নির্বাচন আয়োজনে এ সরকরারকে বিএনপি পূর্ণ সহযোগিতা করবে বলেও জানান তিনি।
বুধবার (৭ আগস্ট) বিকেলে নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে এ দাবি জানান তিনি।
রাষ্ট্রপতির কাছে দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, কোনো বিলম্ব না করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করুন। এই সরকার যারা হবেন, তারা তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন করবেন; সেই ব্যবস্থা তারা করবেন এবং এর জন্য পূর্ণ সহযোগিতা বিএনপি তাকে দেবে।
বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারকে পদত্যাগ করে পালিয়ে যেতে হয়েছে। এ বিজয় ছাত্রদের, এ বিজয় আপনাদের। যে বিজয় অর্জিত হয়েছে, এটাকে রক্ষা করতে সবাই সচেতন থাকবেন। চক্রান্তকারীরা নতুন করে চক্রান্ত করতে পারে। তারা বিজয়কে বিলিয়ে দিতে পারে চক্রান্তের মধ্য দিয়ে। সেই সুযোগ যেন তাদের না দেয়া হয়। যারা এসব করছে তারা দেশের শক্র। এরা কোনো আন্দোলনকারী হতে পারে না।
হামলা বা ভাঙচুর হচ্ছে তারা বিএনপির লোক নয় দাবি করে তিনি আরও বলেন, যারা আজকে বিভিন্ন এলাকায়, বিভিন্ন শহরে বন্দরে ভাঙচুর করছে, লুটপাট করছে তারা কেউ বিএনপির লোক নয়। তারা ছাত্রদের কেউ না। তারা দুর্বৃত্ত, দুষ্কৃতকারী। এটা তাদেরই লোক যারা এদেশে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে চায়। সজাগ থাকবেন, সাবধান থাকবেন। বার বার বিজয় ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। এ বিজয় যেন ছিনিয়ে নিতে না পারে।
প্রসঙ্গত, সমাবেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও দলটির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
আই/এ
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন