বিএনপি
পদযাত্রা নয়, এটি জয়যাত্রা : মির্জা ফখরুল
অবৈধ হাসিনা সরকারের অধিনে নির্বাচন নয়। ৩৬ দলের একটাই ঘোষণা, সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। সরকারকে দেশের মানুষ দেখতে চায় না। সরকার পতনের এক দফা দাবিতে বিএনপির এটা পদযাত্রা নয় জয়যাত্রা। বলেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) সকালে রাজধানীর গাবতলীতে পদযাত্রা কর্মসূচি শুরুর আগে দেয়া বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
সরকার গণতন্ত্রকে কবরে পাঠিয়েছে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনের নামে তামাশা করা হয়েছে। সাপ পেটানোর মতো মারা হয়েছে হিরো আলমকে। এ সব তামাশা, প্রতারণা করে আর লাভ হবে না। এই সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচন নয়।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা ১৭ আসনের উপনির্বাচন দেখলাম। একদিকে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট থিংক ট্যাংক বিপরীতে হিরো আলম। খালি ভোটকেন্দ্র, কোথাও ভোটার উপস্থিতি নাই। নির্বাচন কমিশন একটা পঙ্গু। একটা ভোট পড়লে টেলিভিশন লাইভ করে, এটা লজ্জার।
মির্জা ফখরুল বলেন, হিরো আলম রাজনৈতিক ব্যক্তি নয় তাকেও পেটানো হলো। তামাশা করে কোন লাভ হবে না। ২০১৪ সালে ১৫৪ জনকে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় পাশ করিয়েছেন, ২০১৮ সালে রাতে ভোট করেছেন। এখন দেশের মানুষের পকেট খালি করছেন আর কর বাড়াচ্ছেন।
অসৎ ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বর্তমান সরকার অসৎ ব্যবসায়ীদের সরকার। চারিদিকে লুট-পাট হচ্ছে অথচ দেশের জনগণ কষ্টে আছে। সিঙ্গাপুর ও আমেরিকায় বাড়ি বানায় অসৎ ব্যবসায়ীরা। সরকার গণতন্ত্রকে কবরে পাঠিয়েছে। অবিলম্বে পদত্যাগ করেন।
তিনি আরও বলেন, ‘তোমরা যখন নিরপেক্ষ সরকারের চেয়েছিলে ক্ষমতায় এসেছিল তখন খুব মজা লাগছিল এখন কেন নয়।’
ডেঙ্গু রোগে উদ্বেগ প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ডেঙ্গু ভয়াবহ রুপ নিচ্ছে। অথচ উত্তরের মেয়র বিদেশে ঘুরছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী অবকাশ যাপন করতে বিদেশে গেছেন।
এর আগে আজ সকাল থেকেই ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে গাবতলীতে জড়ো হন বিপুল সংখ্যক বিএনপির নেতাকর্মী। স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো এলাকা।
রাজধানীর গাবতলীতে শুরু হওয়া পদযাত্রা শেষ হবে বাহাদুর শাহপার্কে গিয়ে। গাবতলী থেকে মগবাজার অংশে নেতৃত্ব দিচ্ছেন দলটির ঢাকা মহানগর উত্তরের নেতাকর্মীরা। আর মগবাজার থেকে বাকি সাড়ে ৫ কিলোমিটার পথে অংশ নেবে দক্ষিণের নেতাকর্মীরা। বিভিন্ন রুট ঘুরে পুরান ঢাকার রায় সাহেব বাজার মোড়ে পদযাত্রা শেষ হবে বিকেল ৪টায়।
যাত্রাপথ: গাবতলী– টেকনিক্যাল মোড়– মিরপুর-১– মিরপুর-১০ গোল চত্ত্বর– কাজীপাড়া– শেওড়াপাড়া– তালতলা(আগারগাঁও)– বিজয় স্মরণী– কাওরান বাজার– এফডিসি– মগবাজার– মালিবাগ– কাকরাইল– নয়াপল্টন (বিএনপি অফিস)– ফকিরাপুল– মতিঝিল (শাপলা চত্বর)– ইত্তেফাক মোড়– দয়াগঞ্জ– রায়সাহেব বাজার মোড় হয়ে বাহাদুর শাহ পার্ক।
গত বুধবার (১২ জুলাই) সরকারের পদত্যাগ দাবিতে এক দফা ঘোষণা করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দাবি বাস্তবায়নের প্রথম ধাপ হিসেবে সেদিনই পদযাত্রা কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
আগামীকাল বুধবারও (১৯ জুলাই) একই সময়ে আব্দুল্লাহপুর থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করবে দলটি।
এদিনের যাত্রাপথ হিসেবে দেখানো হয়েছে, আব্দুল্লাহপুর– বিমানবন্দর– কুড়িল বিশ্বরোড– নতুন বাজার– বাড্ডা– রামপুরা ব্রিজ– আবুল হোটেল– খিলগাঁও– বাসাবো– মুগদাপাড়া– সায়েদাবাদ–যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা।
এসি
বিএনপি
অন্তর্বর্তী সরকারকে অভিনন্দন জানালেন তারেক রহমান
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের জন্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং তার সহযোগী উপদেষ্টাদের অভিনন্দন জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপাসন তারেক রহমান। বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাত ১২টা ১২ মিনিটে নিজের ফেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এ অভিনন্দন জানান।
অভিনন্দন বার্তায় তারেক রহমান লিখেছেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের জন্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং তার সহযোগী উপদেষ্টাদের অভিনন্দন। যদি পেছনে ফিরে তাকাই গেলো ১৬ বছর ধরে শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী শাসনামলে বাংলাদেশের মানুষ ব্যাপক অধিকার লঙ্ঘন ও অবিচারের সম্মুখীন হওয়ার পর এই মুহুর্তটি এসেছে। আমাদের সাহসী ছাত্র-শিক্ষক, কর্মী, রিকশাচালক থেকে শুরু করে গৃহিণী, সাধারণ নাগরিক এবং রাজনৈতিক কর্মী- সমস্ত গণতন্ত্রপ্রেমী মানুষ ব্যাপকভাবে কোটা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছে
তিনি বলেন, এই বিক্ষোভ শুধু কোটা সংস্কার নিয়ে নয়, নজিরবিহীন দুর্নীতি, মূল্যস্ফীতি, বেকারত্ব, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা দমন-পীড়ন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান। আওয়ামী লীগের শাসনামলে অন্যায়ের মাত্রা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছিল।
নতুন সরকারের কাছে জনগণের প্রত্যাশার কথা তুলে ধরে বিএনপির এই নেতা বলেন, সেই শাসনের পতনের সাথে সাথে বাংলাদেশের জনগণ অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য স্বাধীনভাবে ভোটাধিকারের প্রত্যাশা করে যেন তারা তাদের গণতান্ত্রিক আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটাতে পারে।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশে বিএনপির অবস্থা তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, বিএনপি একটি পাবলিক ম্যান্ডেটসহ একটি নির্বাচিত সরকার গঠন এবং জনগণের সেবা করে একটি জবাবদিহিমূলক সংসদ, জনগণের অধিকার ও স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার এবং এর ফলে আইনের শাসন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠাকে সমর্থন করে।
উল্লেখ্য, নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়েছে। বঙ্গভবনের দরবার হলে বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে শপথ নিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টারা। প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে প্রথমে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন। এরপর বাকি ১৬ উপদেষ্টার মধ্যে ১৩ জন শপথ পাঠ করেন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুকী আযম।
জেএইচ
বিএনপি
ছাত্র-জনতার সমর্থনেই ড. ইউনূসকে সরকারের প্রধান করা হয়েছে: ফখরুল
ছাত্র-জনতার সমর্থনেই ড. ইউনূসকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান করা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নিতে যাওয়া নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে দেশে চলমান সহিংসতা ও সংকট কেটে যাবে। বলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে আহত নেতাকর্মীদের দেখতে রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় আবেগপ্লুত মির্জা ফখরুল বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতদের যে দৃশ্য দেখেছি তা সহ্য করার মতো না।
নতুন সরকার দেশে দ্রুত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করবে আশা প্রকাশ করে ফখরুল বলেন, অর্থনীতিকে সচল রাখার দ্রুত উদ্যোগ নিবে সরকার। অন্তবর্তীকালীন সরকার দেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করার কথা জানান তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ছাত্র ও আমাদের মনোনীত ব্যক্তি ড. ইউনূস। তার সফল নেতৃত্বে চলমান সহিংসতা ও সংকট কেটে যাবে বলে বিশ্বাস করি।
এএম/
বিএনপি
নির্বাচন আয়োজনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহায়তা করবে বিএনপি : ফখরুল
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে তিন মাসের মধ্যে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এসময়ে নির্বাচন আয়োজনে এ সরকরারকে বিএনপি পূর্ণ সহযোগিতা করবে বলেও জানান তিনি।
বুধবার (৭ আগস্ট) বিকেলে নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে এ দাবি জানান তিনি।
রাষ্ট্রপতির কাছে দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, কোনো বিলম্ব না করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করুন। এই সরকার যারা হবেন, তারা তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন করবেন; সেই ব্যবস্থা তারা করবেন এবং এর জন্য পূর্ণ সহযোগিতা বিএনপি তাকে দেবে।
বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারকে পদত্যাগ করে পালিয়ে যেতে হয়েছে। এ বিজয় ছাত্রদের, এ বিজয় আপনাদের। যে বিজয় অর্জিত হয়েছে, এটাকে রক্ষা করতে সবাই সচেতন থাকবেন। চক্রান্তকারীরা নতুন করে চক্রান্ত করতে পারে। তারা বিজয়কে বিলিয়ে দিতে পারে চক্রান্তের মধ্য দিয়ে। সেই সুযোগ যেন তাদের না দেয়া হয়। যারা এসব করছে তারা দেশের শক্র। এরা কোনো আন্দোলনকারী হতে পারে না।
হামলা বা ভাঙচুর হচ্ছে তারা বিএনপির লোক নয় দাবি করে তিনি আরও বলেন, যারা আজকে বিভিন্ন এলাকায়, বিভিন্ন শহরে বন্দরে ভাঙচুর করছে, লুটপাট করছে তারা কেউ বিএনপির লোক নয়। তারা ছাত্রদের কেউ না। তারা দুর্বৃত্ত, দুষ্কৃতকারী। এটা তাদেরই লোক যারা এদেশে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে চায়। সজাগ থাকবেন, সাবধান থাকবেন। বার বার বিজয় ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। এ বিজয় যেন ছিনিয়ে নিতে না পারে।
প্রসঙ্গত, সমাবেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও দলটির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
আই/এ
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন