অন্যান্য
আলেমদের মুক্তির দাবি হেফাজত আমিরের
মাওলানা মামুনুল হকসহ কারাগারে বন্দী আলেমদের দ্রুত মুক্তি দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী। অন্যথায় সরকারের পরিণতি ভালো হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
শনিবার (২২ জুলাই) রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে কাজী বশির মিলনায়তনে ওলামা-মাশায়েখ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন।
আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমি অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হৃদয়ে বলছি, দীর্ঘ প্রায় দুই বছর ধরে মিথ্যা ও সাজানো মামলায় মাওলানা মামুনুল হক, মুফতি মুনীর হোসাইন কাসেমী, মুফতি নূর হোসেন নূরানী, মুফতি মাহমুদুল হাসান গুনবী ও মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানীসহ আরও অনেক আলেম কারাগারে বন্দী আছেন। অতি সাধারণ মামলায় তাদের এত দীর্ঘ সময় সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে সরকার বন্দি করে রেখেছে। আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পরও তারা মুক্তি পাচ্ছে না। নতুন মামলা দিয়ে আটকিয়ে রাখা হচ্ছে। কঠোর গোয়েন্দা নজরদারি ও প্রশাসনিক চাপ প্রয়োগ করে দেশের কওমি মাদরাসাগুলোকে শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় রাখা হয়েছে। জুমার খুতবা ও ওয়াজ-মাহফিল নিয়ন্ত্রণ করার বার বার চেষ্টা হয়েছে। সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের ধর্মীয় ও নাগরিক স্বাধীনতাও খর্ব করা হয়েছে।
হেফাজত আমির বলেন, সরকারের এই নির্দয় আচরণ যে রাজনৈতিক প্রতিহিংসাপ্রসূত তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এটি সুস্পষ্ট আইনি অধিকার হরণ এবং মানবাধিকারের লঙ্ঘন। যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এসব কারণে সরকার ওলামায়ে কেরাম ও বৃহত্তর ইসলামি জনতার সমর্থন হারিয়েছে। আজ বন্দী আলেমেদের মুক্তির দাবি গণদাবিতে পরিণত হয়েছে। আমি সরকারকে বলব, যদি নিজেদের ভালো চান, অবিলম্বে কারাবন্দি সকল আলেমকে মুক্তি দিন। হয়রানি বন্ধ করুন।
সভাপতির বক্তব্যে শায়খুল হাদিস পরিষদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক মাওলানা মাহফুজুল হক বলেন, আমরা বাহ্যত চারজন উলামার মুক্তি দাবি করছি কিন্তু প্রকৃতপক্ষে আমরা সবাই বন্দী। আমরা ওলামা মাশায়েখ ও সাধারণ মানুষের কাছে গিয়ে দেখেছি তাদের হৃদয়ে আগুন জ্বলছে। যদি অতি দ্রুত আলেমদের মুক্তি না দেন, তাহলে তাদের হৃদয়ের আগুনে আপনারা পুড়ে যাবেন। আলেম-উলামাসহ সর্বস্তরের তওহীদি জনতার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে দেশ ও জাতিকে মুক্তি দিন।
খতমে নবুওয়ত সংরক্ষণ কমিটির আমির মাওলানা আব্দুল হামীদ আলেমদের মুক্তি দাবি করে বলেন, দাবি পূরণ করলে হাসিনারই লাভ। এই দেশ মুসলমানদের দেশ। আপনি ক্ষমতায় এসে খুন করেছেন, এর জবাব দিতে হবে। আপনাদের নিজেদের-ই পায়ের তলে মাটি নেই। আলেমদের মুক্তি দিয়ে নিজেদের চিন্তা করুন, নয়তো পরিণতি দেখার জন্য অপেক্ষা করুন।
হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান বলেন, আমাদের বৃহত্তর ঐক্য আজ হয়ে গেছে। তিন দফা দাবির ওপর আজ দেশের সকল মুসলমান ঐক্যবদ্ধ। সরকারের প্রতি আহ্বান, আপনারা যদি জাতিকে বাঁচাতে চান, আলেমদের বদদোয়া থেকে বাঁচতে চান, তাহলে অবিলম্বে আলেমদের মুক্তি দিন। এটা কথার কথা নয়। সরকারের দায়িত্বশীলদের ভালোভাবে ভাবার অনুরোধ করছি।
সম্মেলনে শায়খুল হাদিস পরিষদের পক্ষ থেকে মাওলানা মামুনুল হকসহ কারাবন্দী উলামায়ে কেরামের মুক্তি ও সারা দেশে আলেম-উলামাসহ তাওহিদী জনতার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে আগামী ২০ আগস্ট দেশব্যাপী জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদাণের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
এএম/
অন্যান্য
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছে জামায়াত
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। দলটির আমীর ডা. শফিকুর রহমান বৃহস্পতিবার রাতে এক বিবৃতিতে বলেন, ‘শান্তিতে নোবেল বিজয়ী আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মাদ ইউনূসকে প্রধান করে ৮ আগস্ট বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। এই সরকারের নিকট ছাত্র-জনতার অনেক প্রত্যাশা। আমরা আশা করি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ছাত্রসমাজ ও দেশবাসীর প্রত্যাশা পূরণে সক্ষম হবেন।’
জামায়াত আমীর বলেন, ‘গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন। ছাত্র-জনতার বহু ত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ে দেশ স্বৈরশাসক মুক্ত হয়েছে।’
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মাদ ইউনূসসহ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সব উপদেষ্টাকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমরা প্রশাসন, বিচার বিভাগ ও নির্বাচন কমিশনসহ রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করার এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যবস্থা করে জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিগণের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করার আহ্বান জানাচ্ছি।’
বঙ্গভবনে বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মাদ ইউনূস এবং অন্যান্য উপদেষ্টাগণ শপথ নিয়েছেন। শপথ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, তিন বাহিনীর প্রধানগণ, সামরিক ও বেসামরিক প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাবৃন্দ, ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকবৃন্দ, বিশিষ্ট সাংবাদিক, কলামিস্ট, বুদ্ধিজীবী, আইনজীবী, প্রকৌশলী, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, কবি-সাহিত্যিক, লেখক, গবেষকসহ দেশের বিশিষ্ট নাগরিকগণ উপস্থিত ছিলেন।
শপথ অনুষ্ঠানে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান, নায়েবে আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান (সাবেক এমপি) ও ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোঃ তাহের (সাবেক এমপি), সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, জনাব হামিদুর রহমান আযাদ (সাবেক এমপি), মাওলানা আবদুল হালিম ও এডভোকেট মোয়ায্যম হোসাইন হেলাল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য জনাব সাইফুল আলম খান মিলন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি জনাব মতিউর রহমান আকন্দ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর জনাব নূরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর জনাব সেলিম উদ্দিন প্রমুখ।
জেএইচ
অন্যান্য
ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শন শেষে যা বললেন জামায়াতের আমীর
কোনো বাহবা বা রাজনৈতিক ফায়দার জন্য আমরা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মন্দির পাহারা দিচ্ছি না, মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে থাকার জন্য এ কাজে নেমেছি। আপনাদের প্রয়োজনে জাতির প্রয়োজনে যদি কখনো জামায়াতকে অনুভব করেন সেটাই হবে আমাদের শ্রেষ্ঠ উপহার। তখন যেন প্রত্যাশা অনুযায়ী সাড়া দিতে পারি। বলেছেন জামায়াত ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) সকালে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনকালে এসব কথা বলেন তিনি।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, দেশের কোনো জায়গায় জামায়াতে ইসলামী বা ছাত্র সংগঠনে যারা কাজ করেন তারা যদি দৃষ্টিভঙ্গির বাইরে গিয়ে কিছু করেন তাহলে তিনি হবেন দুর্বৃত্ত। আমাদের সুনির্দিষ্ট করে বলবেন। তখন দেখবেন আমরা কী করি, কী করব সেটাও জানবেন। আমরা সঠিক পথে থাকলে পরিবেশ ও মানুষ সাক্ষ্য দেবে।
তিনি আরও বলেন, বিশেষভাবে এই পরিস্থিতিতে একটা বিষয়ে সহযোগিতা চাইতে এসেছি, ঢাকাসহ সারাদেশে আমাদের নামে, আমাদের ব্যানারে, আমাদের স্লোগান ব্যবহার করে কোনো দুর্বৃত্ত অপকর্ম করছে কি না তা জানাবেন। যদি কেউ কিছু করে এমন তথ্য জানাবেন। কোনো দুর্বৃত্তকে প্রশ্রয় দেব না, বরং সেই দুর্বৃত্তকে সমুচিত জবাব দিয়ে দেব।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের। সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরার সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরার সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মুহা. দেলাওয়ার হোসেন, মুহা. কামাল হোসাইন ও ড. আবদুল মান্নান প্রমুখ।
এএম/
অন্যান্য
১৩ বছর পর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জামায়াত নেতারা
প্রায় ১৩ বছর ধরে বন্ধ ছিল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়। মগবাজারের কার্যালয়ের পাশাপাশি পুরানা পল্টনে জামায়াতের ঢাকা মহানগরী কার্যালয়ের দশাও ছিল একই। টানা চার মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্র-জনতার আন্দোলনের চাপে পদত্যাগ করতে বাধ্য হওয়ার পর পাল্টে যায় রাজনৈতিক দৃশ্যপট। স্বস্তি নেমে আসে জামায়াত-বিএনপিসহ দীর্ঘদিন কোণঠাসা হয়ে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোর শিবিরে। এরইঅংশ হিসেবে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আজান ও মোনাজাতের মধ্য দিয়ে প্রবেশ করেন জামায়াতের নেতাকর্মীরা।
সোমবার (৫ আগস্ট) রাতে তারা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যান। এ সময় গেটের সামনে দাঁড়িয়ে একজন উচ্চস্বরে আজান দেন। পরে মোনাজাত করা হয়।
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন