লাইফস্টাইল
বাইপাস নয়, অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি খুলবে হার্টের ব্লকেজ
হার্টে একাধিক ব্লকেজ থাকলে কী করা উচিত? ওষুধ, অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি, স্টেন্ট নাকি সার্জারি? তবে হার্টে ব্লকের কথা শুনলে নিরাশ হবেন না। আশার কথা শোনালেন বিশিষ্ট কার্ডিওলজিস্ট ডা. উদয়শঙ্কর দাস।
হার্টের অসুখের মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ সমস্যা হল ব্লকেজ বা হার্টে রক্ত চলাচলের পথ সংকীর্ণ হয়ে যাওয়া। আসলে এ দেশের মানুষের মধ্যে হার্টে একের বেশি ব্লক থাকা খুব সাধারণ ঘটনা। নিত্য এমন রোগীর সংখ্যা বেড়ে চলেছে। এমনকী, অল্পবয়সিরাও বাদ নেই। এর পোশাকি নাম- মাল্টি ভেসেলস করোনারি ডিজিজ।
আক্রান্তের সম্ভাবনা কেন বেশি?
প্রথমত, জিনগত কারণ এক্ষেত্রে অনেকটাই দায়ী। পরিবারে কারও থাকলে পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে এই সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। এছাড়া অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল, উচ্চরক্তচাপ, ধূমপানের অভ্যাসকেও হার্টের সমস্যার জন্য দায়ী করা হয়। তার উপরে বিনা চিকিৎসায় রোগী থাকেন নিজের মতো। যখন বোঝেন তখন হয়তো অনেক দেরি হয়ে যায়। তারপর চলে একের বেশি ব্লকেজ নিয়ে প্রাণপণ বেঁচে থাকার লড়াই। আসলে, ওবেসিটি, ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল থেকে ধীরে ধীরে কিডনি, হার্ট বিকল হতে থাকে। এটা একটা চক্রের মতো। একটা রোগ ধরলে আর একটা রোগ আসার পথ আরও সহজ হয়ে যায়। তাই প্রতি পদে সাবধান হতে হবে।
একাধিক ব্লকেজের উপযুক্ত চিকিৎসা
রোগীর হার্টে একের বেশি ব্লক থাকলে ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে ওষুধ দিয়ে পর্যাপ্ত চিকিৎসা করা সম্ভব হয় না। সেক্ষেত্রে অপারেশনই ভরসা। তবে এখন অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করেই একাধিক ব্লকেজ ঠিক করা সম্ভব হচ্ছে। গেলো কুড়ি বছরে দেখা গেছে, অপেক্ষাকৃতভাবে বাইপাস সার্জারির সংখ্যা কমে অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টির সংখ্যা বাড়ছে। কারণ, বাইপাসের মতো বড় অপারেশন চলাকালীন বা পরবর্তী সময়ে রোগীর অনেক শারীরিক জটিলতা তৈরি হতে পারে। কিন্তু অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত তার ও যন্ত্রপাতির গুণগত মান এখন অনেক ভাল, যার দ্বারা যে কোনও ধরনের জটিল হার্টের ব্লকেজ অনেক সহজে ঠিক করে দেওয়া হচ্ছে। আগে অনেক ব্লকেজ অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করে খোলা দুঃসাধ্য ছিল। এখন অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টিতে ব্যবহৃত টেকনোলজি ও হার্ডওয়্যার দুই খুব বেশি উন্নত। তাই জটিল ব্লকেজও ঠিক করে দেয়া সম্ভব হচ্ছে।
অপারেশনের পূর্ববর্তী ও পরবর্তী জটিলতাও এক্ষেত্রে কম। উন্নত প্রযুক্তি ও অভিজ্ঞ ডাক্তারের দ্বারা অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করা হচ্ছে। ফলে রোগী বুক কেটে বাইপাস সার্জারি এখন অতীত। আসলে এক্ষেত্রে সুবিধা অনেক বেশি। অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টিতে ভেন্টিলেশনের প্রয়োজন পড়ে না। রোগী প্রক্রিয়ার দু’ঘণ্টা পর উঠে বসে খাওয়া-দাওয়া করতে পারেন এবং দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে হাসপাতাল থেকে বাড়িও ফিরতে পারেন। তবে যারা খুব বয়স্ক, একাধিক জটিল অসুখ রয়েছে, যেমন লিভার, কিডনি ও ফুসফুসের অবস্থা খুব খারাপ,তাদের ক্ষেত্রে অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করার আগে অনেক ভেবে সিদ্ধান্ত নিতে হয়।
স্কোরিং সিস্টেমেও এগিয়ে অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি
সিনট্যাক্স স্কোরিং সিস্টেমের মাধ্যমে হার্টের ব্লকের ধরন দেখা হয়। সঙ্গে ব্লকের সংখ্যা, কোথায় ব্লক, ক্যালশিয়ামের উপস্থিতি, কতদিন ধরে ব্লক রয়েছে, আর্টারি কতটা বাঁকা বা আর্টারির দু’দিকেই ব্লক কি না ইত্যাদি দেখা হয়। এই স্কোরিং ২২-এর নিচে থাকলে অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি ও ৩৩-এর বেশি হলে বাইপাসের সিদ্ধান্ত নেয়া হতো আগে। বর্তমানে কিন্তু এই স্কোরিং বেশি থাকলেও অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করা সম্ভব হচ্ছে। তাই ধীরে ধীর বাইপাস সার্জারির প্রয়োজনীয়তা কমছে।
অনেকে উপসর্গ বুঝতেই পারছেন না
আজকালকার জীবনধারা অদ্ভুত। সারাদিন বসে বসে কাজ, হাঁটা-চলার বালাই নেই। যদি হার্টের ব্লকেজ আসে সেটা আগে থেকে কিছু লক্ষণ দেখলে বোঝা যায়। কিন্তু তার জন্য তো হাঁটাচলা করা বা সিঁড়ি দিয়ে ওঠা-নামা করা প্রয়োজন। সেই সময় হাঁপিয়ে গেলে বা কষ্ট হলে তা হার্টের কোনও সমস্যার পূর্বলক্ষণ রূপে গণ্য করা হয়। কিন্তু এখন এইটুকু পরিশ্রমই তো কেউ করে না। তাহলে উপসর্গই বা দেখা দেবে কী করে। ফলে হার্টের সমস্যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সুপ্তই থেকে যাচ্ছে। তাই সাইলেন্টলি হার্টের ব্লকেজ বাড়ছে। তারপর হঠাৎ করেই একদিন হার্ট অ্যাটাক।
অনেক সময় কোনও প্রয়োজনে ট্রেডমিল টেস্ট করলে হার্টে একাধিক ব্লকেজ বা মাল্টি ভেসেল বা ট্রিপল ভেসেল করোনারি আর্টারি ডিজিজে কেউ আক্রান্ত কি না তা নির্ণয় হয়। এদিকে রোগী এতদিন কিছু বুঝতেই পারেননি। এমন উদাহরণ ঝুড়ি ঝুড়ি। তাই ভাল থাকতে কায়িক পরিশ্রম করুন ও কম খান। আর যেটুকু খাবেন পুষ্টিকর খাবার খান। তা হলেই হার্ট ভাল থাকবে, হার্টে সমস্যা হলেও তা আগাম জানান দেবে।
পরামর্শ
মুখে ঘা দূর করতে মেনে চলুন ৫ উপায়
খাওয়া দাওয়ার সময় বা কথা বলার সময়ে মুখে ঘা হলে বেশ সমস্যায় পড়তে হয়। এই সমস্যা দীর্ঘদিন সহ্য না করাই উত্তম। এই সমস্যা কিন্তু একসময় মুখে আলসারেরও লক্ষণ হতে পারে। মুখের আলসারকে সামান্য ঘা ভেবে অবহেলা করলেই বিপদে পড়বেন। কোষ্ঠকাঠিন্য, হরমোন জনিত সমস্যার কারণে মুখের ভিতরে আলসার হতে পারে। অনেকে আবার ব্রেসেস পড়েন, তাঁদেরও মাঝেমাঝে এই সমস্যা হয়। শরীরে ভিটামিন সি ও ভিটামিন বি, আয়রন, জিঙ্ক, ফোলেটের ঘাটতির কারণেও মুখের ঘা থেকে আলসার হতে পারে।
মুখে ঘা হলে কিছুদিনের জন্য ঝাল, টক জাতীয় খাবার এড়িয়ে যাওয়াই ভাল। না হলে মুখে জ্বালা অনুভূত হবে। মুখে ঘা হলে মুক্তি পেতে পারেন ৫ উপায়ে ।
১) মুখের ঘা কমাতে হালকা গরম পানিতে সামান্য লবন মিশিয়ে কুলকুচি করুন। এতে আরাম পাবেন। দিনে তিন থেকে চার বার করলে ব্যথা ও ঘা দুটোই কমে আসবে।
২) ঘায়ের জায়গায় সামান্য মধু লাগিয়ে রাখতে পারেন, ভালো উপকার পাবেন। কয়েক ঘণ্টা অন্তর অন্তর মধু লাগালে সুফল পাবেন।
৩) ঘায়ের জায়গায় বিশুদ্ধ নারিকেল তেল লাগিয়ে রাখলেও বেশ আরাম পাবেন।
৪) যে কোনও ঘায়ের জন্য ভালো প্রাকৃতিক ঔষধ হতে পারে হলুদ। মুখে যে জায়গায় ঘা হয়েছে, সেই স্থানে হলুদ বাটা লাগিয়ে রাখতে পারেন। কিছু দিন ব্যবহার করলেই ঘায়ের তীব্র জ্বালা-যন্ত্রণা কমে আসবে।
৫) বেকিং সোডা ঘা সারাতে দারুণ উপকারী একটি জিনিস। এক কাপ পানিতে এক চা চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে কুলকুচি করলে ঘা কমে যাবে। এছাড়া বেকিং সোডার সঙ্গে সামান্য পানি মিশিয়ে একটা ঘন পেস্ট তৈরি করে নিতে পারেন। সেই পেস্ট ক্ষতস্থানে লাগিয়ে রাখলেও বেশ উপকার পেতে পারেন।
জেডএস/
লাইফস্টাইল
জুতো-মোজার দুর্গন্ধ দূর হবে যেভাবে
এসে গেছে বৃষ্টির দিন। দিনভর ঘ্যানঘ্যানে বৃষ্টিতে বাড়ি থেকে বের হওয়াই সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ। বাড়ি থেকে বেরিয়েই কাকভেজাহয়ে অফিসে যাচ্ছে মানুষ। জুতো থেকে মোজা, সব ভিজে একেবারে চুপচুপে। সেই জুতো-মোজা পরেই সারাদিন কাটিয়ে দেয়া।
সবশেষে ঘরে পৌছে জুতো খুলতেই বিকট গন্ধ! এই পরিস্থিতির সম্মুখীন অনেকেই হচ্ছেন নিশ্চয়ই? এই সমস্যা দূর করতে ঘরোয়া কিছু টিপসে খুব সহজেই দূর করতে পারবেন জুতো, মোজার এই বাজে গন্ধ।
আসুন জেনে নেই তাহলে –
১. ছোট্ট একটি কাপড়ে অল্প পরিমাণ বেকিং সোডা নিয়ে ছোট পুটলি বানিয়ে মোজার মধ্যে রেখে দিন। দেখবেন মোজা থেকে দুর্গন্ধ দূর হবে।
২. ন্যাপথোলিন গুঁড়ো করে নিয়ে ট্যালকম পাউডারের সঙ্গে তা মিশিয়ে জুতোর মধ্যে ছড়িয়ে দিন। দেখবেন জুতোয় আর দুর্গন্ধ হচ্ছে না।
৩. বাড়িতে ফিরেই ভিজে জুতো ভালো করে শুকনো কাপড় দিয়ে মুছে নিন। তারপর জুতোর মধ্যে কিছু পরিমাণ বেকিং সোডা ছিটিয়ে দিন।
পরের দিন জুতোর ভিতর ভালো করে মুছে ফেলুন। দেখবেন গন্ধ দূর হয়েছে।
৪. জুতোর মধ্যে এক টুকরো ফেব্রিক সফটনার সিট রেখে দিন রাতে। পরদিন সেটি বের করে জুতো পরুন। বাজে গন্ধ একেবারে দূর হয়ে যাবে।
৫. বাড়িতে ফিরে জুতো ধুয়ে হেয়ার ড্রায়ার চালিয়ে হালকা শুকিয়ে নিন। এবার এক টুকরো কাপড় বা তুলো লবঙ্গ তেলে ভিজিয়ে জুতোর মধ্যে রেখে দিন সারারাত। জুতোর দুর্গন্ধ দূর হবে।
৬. ফুটন্ত জলে টি ব্যাগ ফেলে রাখুন ২ মিনিট। টি ব্যাগ ঠাণ্ডা হলে জুতোর মধ্যে রেখে দিন। এক ঘণ্টা পর তা সরিয়ে জুতোর ভেতরের অংশ ভাল করে মুছে নিন। দুর্গন্ধের পাশাপাশি দূর হবে তাতে থাকা ব্যাকটেরিয়াও।
জেডএস//
রেসিপি
ম্যাংগো পুডিং তৈরির রেসিপি
আমের সিজনে অনেকেই আমের পাল্প ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করেন। সেই ম্যাংগো পাল্প দিয়েই ম্যাংগো পুডিং বানানো যাবে। আর আমের সিজনে তো ফ্রেশ আমই ব্যবহার করতে পারবেন। ছোট বাচ্চাদের জন্য এটি বেশ হেলদি একটি ডেজার্ট আইটেম। মাত্র ৪টি উপাদান দিয়েই ইয়াম্মি ইয়াম্মি ম্যাংগো পুডিং বানিয়ে নেয়া যায়। চলুন দেরি না করে রেসিপিটি জেনে নেই এখনই।
উপকরণ
ঘন দুধ- ১ কাপ
চিনি- স্বাদ অনুযায়ী ( আমি হাফ কাপ দেই )
আম- ২টি
ডিম- ২টি
ম্যাংগো পুডিং তৈরির পুরো প্রণালী
১. প্রথমে আম ছোট ছোট করে কেটে নিন। দুধ জ্বাল দিয়ে ঘন করুন এবং ঠাণ্ডা করে নিন।
২. এবার ব্লেন্ডার জগে আম, চিনি, দুধ ও ডিম সবকিছু দিয়ে ভালোভাবে ব্লেন্ড করে নিন।
৩) মিশ্রণটি মোটামুটি ঘন ও থকথকে হবে। যদি বেশি ঘন হয়ে যায়, লিকুইড দুধ মিশিয়ে নিতে হবে।
৪. এবার একটি স্টিলের টিফিন বক্সে পুডিংয়ের মিশ্রণ ঢেলে নিতে হবে।
৫. বড় সসপ্যানে পানি ফুটতে দিন। এবার একটি স্ট্যান্ড প্যানে সেট করে তার উপর স্টিলের টিফিন বক্সটি রাখুন।
৬. বাটির ঢাকনা ভালোভাবে আটকাবেন এবং পানি যেন ভেতরে না যেতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখবেন।
৭. চুলার আঁচ মিডিয়াম রাখুন, ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করে চেক করুন পুডিং জমেছে কি না।
৮. পুডিং জমে গেলে চুলা নিভিয়ে দিন। এরপর রুম টেম্পারেচারে ঠাণ্ডা করে নিতে হবে।
ব্যস, আমের পুডিং বানানো হয় গেলো! চাইলে ফ্রিজে রেখে ম্যাংগো পুডিং ভালোভাবে সেট করে নিতে পারেন। সেট হয়ে গেলে টিফিন বক্স থেকে পুডিংটি একটি প্লেটে সাবধানে উল্টিয়ে ঢেলে নিন। এবার ছুরি দিয়ে পিস পিস করে কেটে সার্ভ করুন। আর এটি ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা খেতে কিন্তু বেশি মজা লাগে। সব উপকরণগুলো বাসাতে থাকলে আজই বানিয়ে নিন দারুন মজাদার ডেজার্টটি।
জেএইচ
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন