আইন-বিচার
সাগর-রুনি হত্যা মামলা: প্রতিবেদন পেছানোর সেঞ্চুরি
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যাকাণ্ডের পর পেরিয়েছে সাড়ে ১১ বছর। নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের পর তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তারা বলেছিলেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই খুনিদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনা হবে। এরপর শত শত ৪৮ ঘণ্টা পেরিয়েছে। কূল-কিনারা হয়নি আলোচিত এ মামলার। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে মামলার তদন্ত প্রতিবেদনও জমা হয়নি। প্রতিবেদন দিতে এরই মধ্যে ৯৯ বার সময় নিয়েছে তদন্তকারী সংস্থা।
সোমবার (৭ আগস্ট) মামলার প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য রয়েছে। আদালত থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য মতে, এখনো প্রতিবেদন দাখিল হয়নি। প্রতিবেদন দাখিলের জন্য এদিন (৭ আগস্ট) আবারও নতুন দিন ধার্য করা হবে। ফলে প্রতিবেদন দাখিল ১০০ বারের মতো পেছাবে।
দীর্ঘ সময় পেরিয়েও মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল না হওয়ায় হতাশ সাগর-রুনির পরিবার। তদন্ত সংস্থা র্যাব বলছে, গুরুত্ব সহকারে মামলাটি তদন্ত করা হচ্ছে। রাষ্ট্রপক্ষ বলছে, মামলার তদন্ত সংস্থা যদি তদন্ত করতে না পারে অন্য কোনো সংস্থা দিয়ে তদন্ত করা যেতে পারে।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক গোলাম মোস্তফা সারোয়ার ওরফে সাগর সারোয়ার ও তার স্ত্রী এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন নাহার রুনা ওরফে মেহেরুন রুনি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের বাসায় খুন হন। তখন বাসায় ছিল তাদের সাড়ে চার বছরের ছেলে মাহির সারোয়ার মেঘ। হত্যাকাণ্ডের পর রুনির ভাই নওশের আলম রোমান শেরেবাংলা নগর থানায় একটি মামলা করেন।
চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের পর তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তারা বলেছিলেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই খুনিদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনা হবে। অথচ এরপর শত শত ঘণ্টা পেরিয়েছে। এত সময় পার হলেও এখনো মামলার বিচারই শুরু করা যায়নি। যদিও এই সাংবাদিক দম্পতির হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে বিভিন্ন সময় রাজপথে আন্দোলন করেছেন তাদের সহকর্মীরা।
দীর্ঘ সাড়ে ১১ বছরে মামলার তদন্তকারী সংস্থাও পরিবর্তন হয়েছে কয়েকবার। প্রথমে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন শেরেবাংলা নগর থানার এক উপ-পরিদর্শক (এসআই)। চারদিন পর চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার তদন্তভার হস্তান্তর হয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে। দুই মাসেরও বেশি সময় তদন্ত করে ডিবি রহস্য উদ্ঘাটনে ব্যর্থ হয়। পরে হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল হত্যা মামলাটির তদন্তভার যায় র্যাবে।
মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর ১০ বছর ১০ মাস গড়ালেও র্যাব এখনো কোনো প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি।
এদিকে মামলার পর রুনির বন্ধু তানভীর রহমানসহ মোট আটজনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার অন্য আসামিরা হলেন বাড়ির নিরাপত্তাকর্মী এনাম আহমেদ ওরফে হুমায়ুন কবির, রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মিন্টু ওরফে বারগিরা মিন্টু ওরফে মাসুম মিন্টু, কামরুল হাসান অরুন, পলাশ রুদ্র পাল ও আবু সাঈদ। এদের মধ্যে তানভীর ও পলাশ রুদ্র জামিনে। অন্য আসামিরা এখনো কারাগারে।
এ বিষয়ে মামলার বাদী নওশের আলম রোমান বলেন, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের সাড়ে ১১ বছর হয়ে গেলো। মামলার তদন্ত প্রতিবেদনও দাখিল করেনি তদন্তকারী সংস্থা। এতদিনে প্রতিবেদন দাখিল না হওয়ায় হতাশ আমাদের পরিবার। মামলার তদন্ত সংস্থা র্যাবকে এলিট ফোর্স বলা হয়। এলিট ফোর্স দীর্ঘ দিনেও প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি। তারা ব্যর্থতা স্বীকার করে সংবাদ সম্মেলন করতে পারে।
তিনি আরও বলেন, গত সাড়ে ১১ বছরে আমার চোখের সামনে অনেক আলোচিত হত্যা মামলার বিচার শেষ হয়েছে। সেসব মামলার আসামিদের শাস্তি হয়েছে। কিন্তু কোনো অদৃশ্য শক্তির কারণে সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত আটকে আছে? সরকারের কাছে আমাদের পরিবারের দাবি এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য যেন দ্রুত উদ্ঘাটন করে।
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র্যাবের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার মো. শফিকুল আলম বলেন, মামলাটি গুরুত্বপূর্ণ। গুরুত্ব সহকারে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ হলে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল্লাহ আবু বলেন, সাগর-রুনি হত্যা মামলাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মামলাটির দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা উচিত। মামলার তদন্ত সংস্থা র্যাব যদি তদন্ত করতে না পারে অন্য কোনো সংস্থা দিয়ে তদন্ত করানো যেতে পারে।
ডিএমপির প্রসিকিউশন বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ আনিসুর রহমান বলেন, সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার প্রতিবেদন এখনো পাইনি।
আইন-বিচার
নতুন অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান
রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামান।
বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তাকে এ নিয়োগ দেন।
রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, ‘রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয় আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামানকে পুনরাদেশ না দেয়া পর্যন্ত অ্যাটর্নি জেনারেল পদে নিয়োগ প্রদান করলেন।’
উল্লেখ্য, আ.লীগ সরকারের পতনের পর পদত্যাগ করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। বুধবার (০৭ আগস্ট) রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। তার স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন মো. আসাদুজ্জামান।
২০২০ সালের ৮ অক্টোবর রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এ এম আমিন উদ্দিনকে অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেন। এর আগে তিনি ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
এসি//
আইন-বিচার
পদত্যাগ করেছেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর
পদত্যাগ করেছেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর। বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেন।
পদত্যাগ করার বিষয়টি এস এম মুনীর নিজেই গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও আরেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মো. মোরসেদ পদত্যাগ করেন।
২০২০ সালের ১ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক এবং জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম মুনীরকে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।
প্রসঙ্গত, ছাত্র-জনতার চূড়ান্ত আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেশত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। গেলো ৫ আগস্ট দুপুর আড়াইটায় বঙ্গভবন থেকে একটি সামরিক হেলিকপ্টার তাকে নিয়ে ভারতের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এ সময় তার সঙ্গে তার ছোট বোন শেখ রেহানা ছিলেন। ভারতে যাওয়ার আগে রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র দেন শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে বড় বড় পদে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তাদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। আবার অনেকেই স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করছেন।
এসি//
আইন-বিচার
সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণের সেই ভাস্কর্যটি উপড়ে ফেলা হয়েছে
সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে হাইকোর্ট এনেক্স ভবনের সামনে থাকা গ্রিক দেবী থেমিসের ভাস্কর্যটি ভাঙচুরের পর উপড়ে ফেলা হয়েছে।তবে কে বা কারা ভাস্কর্যটি ভেঙেছে তা জানা যায়নি।
বুধবার (৭ আগস্ট) দুপুরে ভাস্কর্যটি মাটিতে পরে থাকতে দেখা যায়। এর আগে,গেলো মঙ্গলবার সকালে ইস্পাতের তৈরি ভাস্কর্যটির হাত ও দাঁড়িপাল্লা ধরে থাকা হাত ভাঙা অবস্থায় দেখা গিয়েছিলো।
সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা জানান, গ্রিক দেবী থেমিসের আদলে ন্যায়বিচারের প্রতীক হিসেবে গড়ে তোলা ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। তবে কে বা কারা এটি করেছেন, তা তাদের জানা নেই।
এর আগে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্টে প্রবেশের মূল ফটকের বরাবর থাকা লিলি ফোয়ারায় প্রথমে ভাস্কর্যটি বসানো হয়। হেফাজতসহ কয়েকটি ইসলামি সংগঠনের দাবির মুখে ২০১৭ সালের মে মাসে ভাস্কর্যটি সরিয়ে এনেক্স ভবনের সামনে স্থাপন করা হয়।
আই/এ
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন